নেত্রকোনা : এভাবেই পাহাড়ি মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে চোরাই পথ -সংবাদ
গাছ কাটলে কি ফাঁসি হয় ? সংবাদ কর্মীদের কাছে উল্টো প্রশ্ন করেছেন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রভাবশালী বিএনপি নেতা সাইদুর রহমান।
ওই ইউনিয়নের কাঠালবাড়ি এলাকায় কাঁচা সড়কে মাটি কাটতে গিয়ে পাহাড়ের ২০-২৫টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যে গাছগুলো সরকারি বন বিভাগের আওতাধীন। খবর পেয়ে গাছ ও পাহাড়ের পাশে মাটি কাটতে নিষেধ করায় বনরক্ষীদের সঙ্গে অসদাচরণ এর অভিযোগ উঠায় সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সংবাদ প্রকাশ করলে গাছ কাটার অপরাধে কি ফাঁসি হয়ে যাবে কি না উল্টো জানতে চান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নে সীমান্ত সড়কের পাশেই রয়েছে কাঠলাবাড়ি এলাকা। যেই গ্রাম দিয়ে গত কয়েকমাস আগেও ভারতীয় চিনিসহ বিভিন্ন পন্য আমদানি করত চোরা কারবারিরা। কিন্তু যাতায়তের পথটি সরু হওয়ায় কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতো স্থানীয় অর্ধশত আদিবাসী পরিবার ও চোরাই ব্যবসায়ীদের। এমতাবস্থায় বর্তমানে স্থানীয় ইনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় প্রায় এক কিলোমিটার সড়কটি প্রশস্তকরণ করে মাটি কাটা হচ্ছে। কিন্তু সড়কটির দু’পাশে সরকারি বনায়নের গাছ ও পাহাড়গুলোর বেশকিছু অংশ কাটা হয়েছে। এতে বর্ষায় পাহাড় ধসেরও আশঙ্কা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে লেঙ্গারা এলাকার বনরক্ষী মো. আখতারুল ইসলাম জানান, চৈতানগর মৌজার ২৩২নং দাগে গাছ ও মাটি কাটতে নিষেধ করায় স্থানীয় চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছেন। এবং এই সড়কে বনরক্ষী কাউকে আসতে নিষেধ করেন। স্থানীয় অনেক মানুষের সামনেই তার সাইকেল নদীতে ফেলে দেয়ারও হুমকি প্রদর্শন করেন চেয়ারম্যান। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন তিনি। আরও জানান, বিশাল এলাকাজুড়ে সরকারি বনায়ন থাকলেও জনবল না থাকায় সবদিকে খেয়াল রাখা বেশ কষ্টসাধ্য তবুও চেষ্টা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কমপক্ষে ১০ জন ব্যক্তি জানান, কাঠালবাড়ি এলাকাটি একেবারে সীমান্ত ঘেঁষা। এই রুটে সহজেই ভারতীয় নানা পণ্য আমদানি করে চোরা কারবারিরা। কয়েকমাস আগেও আওয়ামী লীগের সাবেক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এই গ্রামটিকে নিরাপদ রুট হিসেবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। তারা পালিয়ে যাওয়ার পর এখন আগের সেই সিন্ডকেট নেই । তবে নতুন করে প্রশস্ত সড়ক নির্মাণে ভবিষ্যতে অনায়াসেই ট্রাক-পিকাপে ভরে মালামাল পরিবহন সম্ভব হবে। সেই পথ পাকাপোক্ত করতেই সড়কটিতে মাটি কাটা হয়েছে। তবে সুফল ভোগ করবেন এখানকার স্থানীয় আদিবাসীরা। যদিও সড়কটি নির্মাণের নামে পাহাড়ের নিচের অংশে মাটি ও গাছ কেটে ফেলায় ভারি বর্ষায় ধসের আশঙ্কাও বেড়েছে।
এ ব্যাপারে লেঙ্গুরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, স্থানীয় মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে চলতি অর্থবছরে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে মাটি কাটার কাজ করা হচ্ছে। শ্রমিক না থাকায় ভেকু দিয়েই মাটি কাটা হয়েছে। পাহাড় ও গাছ কাটা হয়নি। যে গাছগুলো পরে আছে সেগুলো ঝড়ে পরেছে। বনরক্ষীকে গালমন্দ করেননি তিনি। তবে সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করলে গাছ কাটার দায়ে কি ফাঁসি হবে কিনা ? উল্টো প্রশ্ন করেন তিনি। এদিকে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাইজুল ওয়াসীমা নাহাত জানান, গাছ ও পাহাড় কাটাসহ বনরক্ষীকে গালমন্দের বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সড়কটির প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
নেত্রকোনা : এভাবেই পাহাড়ি মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে চোরাই পথ -সংবাদ
শনিবার, ১০ মে ২০২৫
গাছ কাটলে কি ফাঁসি হয় ? সংবাদ কর্মীদের কাছে উল্টো প্রশ্ন করেছেন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রভাবশালী বিএনপি নেতা সাইদুর রহমান।
ওই ইউনিয়নের কাঠালবাড়ি এলাকায় কাঁচা সড়কে মাটি কাটতে গিয়ে পাহাড়ের ২০-২৫টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যে গাছগুলো সরকারি বন বিভাগের আওতাধীন। খবর পেয়ে গাছ ও পাহাড়ের পাশে মাটি কাটতে নিষেধ করায় বনরক্ষীদের সঙ্গে অসদাচরণ এর অভিযোগ উঠায় সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সংবাদ প্রকাশ করলে গাছ কাটার অপরাধে কি ফাঁসি হয়ে যাবে কি না উল্টো জানতে চান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নে সীমান্ত সড়কের পাশেই রয়েছে কাঠলাবাড়ি এলাকা। যেই গ্রাম দিয়ে গত কয়েকমাস আগেও ভারতীয় চিনিসহ বিভিন্ন পন্য আমদানি করত চোরা কারবারিরা। কিন্তু যাতায়তের পথটি সরু হওয়ায় কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতো স্থানীয় অর্ধশত আদিবাসী পরিবার ও চোরাই ব্যবসায়ীদের। এমতাবস্থায় বর্তমানে স্থানীয় ইনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় প্রায় এক কিলোমিটার সড়কটি প্রশস্তকরণ করে মাটি কাটা হচ্ছে। কিন্তু সড়কটির দু’পাশে সরকারি বনায়নের গাছ ও পাহাড়গুলোর বেশকিছু অংশ কাটা হয়েছে। এতে বর্ষায় পাহাড় ধসেরও আশঙ্কা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে লেঙ্গারা এলাকার বনরক্ষী মো. আখতারুল ইসলাম জানান, চৈতানগর মৌজার ২৩২নং দাগে গাছ ও মাটি কাটতে নিষেধ করায় স্থানীয় চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছেন। এবং এই সড়কে বনরক্ষী কাউকে আসতে নিষেধ করেন। স্থানীয় অনেক মানুষের সামনেই তার সাইকেল নদীতে ফেলে দেয়ারও হুমকি প্রদর্শন করেন চেয়ারম্যান। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন তিনি। আরও জানান, বিশাল এলাকাজুড়ে সরকারি বনায়ন থাকলেও জনবল না থাকায় সবদিকে খেয়াল রাখা বেশ কষ্টসাধ্য তবুও চেষ্টা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কমপক্ষে ১০ জন ব্যক্তি জানান, কাঠালবাড়ি এলাকাটি একেবারে সীমান্ত ঘেঁষা। এই রুটে সহজেই ভারতীয় নানা পণ্য আমদানি করে চোরা কারবারিরা। কয়েকমাস আগেও আওয়ামী লীগের সাবেক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এই গ্রামটিকে নিরাপদ রুট হিসেবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। তারা পালিয়ে যাওয়ার পর এখন আগের সেই সিন্ডকেট নেই । তবে নতুন করে প্রশস্ত সড়ক নির্মাণে ভবিষ্যতে অনায়াসেই ট্রাক-পিকাপে ভরে মালামাল পরিবহন সম্ভব হবে। সেই পথ পাকাপোক্ত করতেই সড়কটিতে মাটি কাটা হয়েছে। তবে সুফল ভোগ করবেন এখানকার স্থানীয় আদিবাসীরা। যদিও সড়কটি নির্মাণের নামে পাহাড়ের নিচের অংশে মাটি ও গাছ কেটে ফেলায় ভারি বর্ষায় ধসের আশঙ্কাও বেড়েছে।
এ ব্যাপারে লেঙ্গুরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, স্থানীয় মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে চলতি অর্থবছরে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে মাটি কাটার কাজ করা হচ্ছে। শ্রমিক না থাকায় ভেকু দিয়েই মাটি কাটা হয়েছে। পাহাড় ও গাছ কাটা হয়নি। যে গাছগুলো পরে আছে সেগুলো ঝড়ে পরেছে। বনরক্ষীকে গালমন্দ করেননি তিনি। তবে সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করলে গাছ কাটার দায়ে কি ফাঁসি হবে কিনা ? উল্টো প্রশ্ন করেন তিনি। এদিকে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাইজুল ওয়াসীমা নাহাত জানান, গাছ ও পাহাড় কাটাসহ বনরক্ষীকে গালমন্দের বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সড়কটির প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।