আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) : নির্মাণাধীন ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র -সংবাদ
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় স্বায়ত্তশাসিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র হিসেবে ইউনাইটেড চট্টগ্রাম পাওয়ার লিমিটেড (ইউসিপিএল) নামের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের প্লান্ট ইনচার্জ রিয়াজুল হাসান।
জানা যায়, ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের বাক্তিগত খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতিমালা এবং ২০১০ সালের দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ উন্নয়ন (বিশেষ বিধান) আইন (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নির্মাণ, মালিকানা ও পরিচালনার ভিত্তিতে ইউনাইটেড চট্টগ্রাম পাওয়ার লিমিটেড নামক কোম্পানিকে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প গড়ে তোলা ও পরিচালনার অনুমোদন প্রদান করেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
এই প্রকল্পের নাম করণ করা হয় ‘৫৯০ মেগাওয়াট (নেট) গ্যাস/এল.এন.জি ভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট’ করে।
সরেজমিনে আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের রাঙাদিয়া এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নের জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, এখনো প্রকল্পের কনস্ট্রাকশনের কাজ চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে ইঞ্জিন বসানোসহ যাবতীয় কাজ বাস্তবায়ন করবে চায়না একটি কোম্পানি।
ইউসিপিএল সূত্রে জানা যায়, ১২.৫ একর আয়তনের জায়গায় এই পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৫৮.৫০ কোটি টাকা এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২২ বছর। বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা অনুযায়ী বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি রেড ক্যাটাগরির আওতায় হওয়ায় সম্পূর্ণ পরিবেশগত ভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া প্রকল্পের জন্য ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার না করে কর্ণফুলী নদীর পানি রিফাইন্ড করে ব্যবহার করা হবে যার কারণে স্থানীয়দের মাঝে খাবার পানির বিষয়ে কোনোরকম প্রভাব পরবেনা বলেও জানান এই প্রকল্পে নিয়োজিত কর্মকর্তা।
প্রকল্পের বিষয়ে প্রকল্পের প্লান্ট ইনচার্জ রিয়াজুল হাসান বলেন, বর্তমানে দেশে সোলার, কয়লা, ডিজেল, পারমাণবিকসহ বিভিন্ন পাওয়ার প্লান্ট চালু রয়েছে। এখানের গ্যাস ভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট চালু হচ্ছে।
যা অন্যান্য পাওয়ার প্লান্টের চেয়ে সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব। প্রকল্প বাস্তবায়নের সব ধরনের পরীক্ষা-নিরিক্ষা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে? সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হবে। এই পাওয়ার প্লান্ট থেকে জাতীয় গ্রেডে ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুগ হবে বলেও জানান তিনি।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কর্ণফুলী নদীর পানি এবং মাছের প্রভাবের বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. রাশিদুল হক বলেন, ইউনাইটেড চট্টগ্রাম পাওয়ার লিমিটেডের প্রকল্পটি নিয়ে সরেজমিনে দেখা হয়েছে, প্রকল্পের সব বিষয়াদি ইতিমধ্যে আমাদের জানানো হয়েছে। যেহেতু এটি গ্যাস নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র সেহেতু অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মত ক্ষতিকারক বর্জ্য নির্গত হয়ে সমুদ্র কিংবা সমুদ্রের মাছের ক্ষতি করার সম্ভাব্যতা অনেক কম। তবুও এবিষয়ে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পরবে কি-না এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মোজাহিদুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সংরক্ষণ বিধিমালা অনুযায়ী বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি রেড ক্যাটাগরির আওতায় হওয়ায় এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক পরিবেশ মূল্যায়ন (আইইই) ও পরিবেশ প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) পরিক্ষীণ করা প্রয়োজন ছিলো, ইতিমধ্যে তারা তা সম্পূর্ণ করছে। আশেপাশের স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করেছে।
সম্পূর্ণ পরিবেশ নীতিমালা মেনে তারা এটা করছে, তারপরও পরিবেশের ক্ষতিকর এমন কোনো বিষয় দেখা দিলো সেবিষয়ে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) : নির্মাণাধীন ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র -সংবাদ
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় স্বায়ত্তশাসিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র হিসেবে ইউনাইটেড চট্টগ্রাম পাওয়ার লিমিটেড (ইউসিপিএল) নামের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের প্লান্ট ইনচার্জ রিয়াজুল হাসান।
জানা যায়, ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের বাক্তিগত খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতিমালা এবং ২০১০ সালের দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ উন্নয়ন (বিশেষ বিধান) আইন (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নির্মাণ, মালিকানা ও পরিচালনার ভিত্তিতে ইউনাইটেড চট্টগ্রাম পাওয়ার লিমিটেড নামক কোম্পানিকে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প গড়ে তোলা ও পরিচালনার অনুমোদন প্রদান করেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
এই প্রকল্পের নাম করণ করা হয় ‘৫৯০ মেগাওয়াট (নেট) গ্যাস/এল.এন.জি ভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট’ করে।
সরেজমিনে আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের রাঙাদিয়া এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নের জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, এখনো প্রকল্পের কনস্ট্রাকশনের কাজ চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে ইঞ্জিন বসানোসহ যাবতীয় কাজ বাস্তবায়ন করবে চায়না একটি কোম্পানি।
ইউসিপিএল সূত্রে জানা যায়, ১২.৫ একর আয়তনের জায়গায় এই পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৫৮.৫০ কোটি টাকা এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২২ বছর। বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা অনুযায়ী বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি রেড ক্যাটাগরির আওতায় হওয়ায় সম্পূর্ণ পরিবেশগত ভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া প্রকল্পের জন্য ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার না করে কর্ণফুলী নদীর পানি রিফাইন্ড করে ব্যবহার করা হবে যার কারণে স্থানীয়দের মাঝে খাবার পানির বিষয়ে কোনোরকম প্রভাব পরবেনা বলেও জানান এই প্রকল্পে নিয়োজিত কর্মকর্তা।
প্রকল্পের বিষয়ে প্রকল্পের প্লান্ট ইনচার্জ রিয়াজুল হাসান বলেন, বর্তমানে দেশে সোলার, কয়লা, ডিজেল, পারমাণবিকসহ বিভিন্ন পাওয়ার প্লান্ট চালু রয়েছে। এখানের গ্যাস ভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট চালু হচ্ছে।
যা অন্যান্য পাওয়ার প্লান্টের চেয়ে সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব। প্রকল্প বাস্তবায়নের সব ধরনের পরীক্ষা-নিরিক্ষা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে? সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হবে। এই পাওয়ার প্লান্ট থেকে জাতীয় গ্রেডে ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুগ হবে বলেও জানান তিনি।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কর্ণফুলী নদীর পানি এবং মাছের প্রভাবের বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. রাশিদুল হক বলেন, ইউনাইটেড চট্টগ্রাম পাওয়ার লিমিটেডের প্রকল্পটি নিয়ে সরেজমিনে দেখা হয়েছে, প্রকল্পের সব বিষয়াদি ইতিমধ্যে আমাদের জানানো হয়েছে। যেহেতু এটি গ্যাস নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র সেহেতু অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মত ক্ষতিকারক বর্জ্য নির্গত হয়ে সমুদ্র কিংবা সমুদ্রের মাছের ক্ষতি করার সম্ভাব্যতা অনেক কম। তবুও এবিষয়ে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পরবে কি-না এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মোজাহিদুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সংরক্ষণ বিধিমালা অনুযায়ী বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি রেড ক্যাটাগরির আওতায় হওয়ায় এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক পরিবেশ মূল্যায়ন (আইইই) ও পরিবেশ প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) পরিক্ষীণ করা প্রয়োজন ছিলো, ইতিমধ্যে তারা তা সম্পূর্ণ করছে। আশেপাশের স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করেছে।
সম্পূর্ণ পরিবেশ নীতিমালা মেনে তারা এটা করছে, তারপরও পরিবেশের ক্ষতিকর এমন কোনো বিষয় দেখা দিলো সেবিষয়ে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।