বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) : তিন বন্ধুর খামারের মহিষ -সংবাদ
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে গরু-মহিষের খামার গড়ে লাভবান হচ্ছেন তিন বন্ধু। ক্রেতাদের নজর কাড়ছে গোলাপি মহিষ।
উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের খিতাপচর গ্রামে ২০১৯ সালে ‘মজু ভা-ার মা-বাবা অ্যাগ্রো ফার্ম’ গড়ে তোলেন স্থানীয় মো. ইস্কান্দার, মো. শাহাদাত হোসেন ও মো. জহিরুল হক। এই তিনজনের মধ্যে ইস্কান্দার হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স সম্পন্ন করেছেন।
তিনি চাকরির দ্বারস্থ না হয়ে তার দুই বন্ধু শাহাদাত ও জহিরুলকে নিয়ে ৬টি মহিষ লালন পালনের মধ্য দিয়ে খামার গড়েন। এক বছরের মাথায় সাফল্য পেয়ে বেড়ে যায় উৎসাহ। এখন পরিণত হয়েছে বাণিজ্যিক খামারে। বর্তমানে তাদের খামারে রয়েছে ৫০টির এত গরু-মহিষ। প্রতি মাসে ১০-১৫টি মহিষ বিক্রি করে থাকেন।
ইস্কান্দার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে পারিবারিকভাবে মহিষ লালন পালন দেখে আসছি। মহিষ লালন পালনে গরুর চেয়ে খরচ কম হয়। আর বাজারে মহিষের মাংসের চাহিদাও রয়েছে।
সারা বছরই মহিষের চাহিদা থাকে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় তিন বন্ধু ৫ লাখ টাকা পুঁজি দিয়ে এ খামার গড়েছি।’ পরে যুক্ত করেছি গরু। সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে একটি সমন্বিত খামারে রূপান্তর করার কথা জানান তারা। প্রথমে তিন বন্ধু মিলে গরু-মহিষ লালন পালনের কাজ করলে এখন ৩ জন শ্রমিক রেখেছেন। প্রতিজন শ্রমিককে মাসিক ২০ হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক দিচ্ছেন তারা।
ইস্কান্দার আরও বলেন, এবার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য ১০টি গরু এবং খামারে ১৮টি মহিষ রয়েছে। এর মধ্যে ‘এলবিনো বাফেলো’ গোলাপি মহিষ ৮টি। মহিষগুলো গোলাপি রঙের হওয়ায় ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। এই রঙের মহিষগুলো সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার থেকে ক্রয় করে খামারে এনে লালন পালন করে বিক্রি করি। সারা বছরই মহিষ বিক্রি হয়। তবে মহিষকে দানাদার বা কৃত্রিম কোনো খাদ্য দেয়া হয় না। সরাসরি বিল আর মাঠের সবুজ ঘাসের ওপর নির্ভর করা হয়।
ওষুধ দিয়ে মোটাতাজা করা পশুর মাংস, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই নিজস্ব জমির ঘাষ দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি খাবার দেয়া হয় গরু-মহিষকে। কোরবানির জন্য সুস্থ, সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান পশুর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিষয়টি মাথায় রেখে আগামী কোরবানির ঈদে ক্যামিকেল মুক্ত খাবারের মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে গরু-মহিষ উপহার দেয়ার কথা জানান মো. ইস্কান্দার।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালখালীতে ছোট ও বড় ১ হাজার ৮০০টি খামারে কোরবানির পশু উৎপাদিত হয়েছে ৩০ হাজার ১৫০টি। এর মধ্যে গরু ২৪ হাজার ৯৩৪টি, মহিষ ২ হাজার ৭৮০টি, ছাগল ২ হাজার ৩২৪টি ও ভেড়া ১১২টি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুমন তালুকদার বলেন, ‘তরুণরা এগিয়ে আসলেই জাতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। সরকারি প্রাণিসম্পদ বিভাগ সার্বক্ষণিক খামারিদের সঙ্গে রয়েছে। একই সঙ্গে সব ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বোয়ালখালীতে এ বছর কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে ২৯ হাজার ৭৪২টি। চাহিদার বিপরীতে ৩০ হাজার ১৫০টি পশু উৎপাদন হয়েছে। এ ছাড়া মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানির পশু আনছে। ফলে বাজারে পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) : তিন বন্ধুর খামারের মহিষ -সংবাদ
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে গরু-মহিষের খামার গড়ে লাভবান হচ্ছেন তিন বন্ধু। ক্রেতাদের নজর কাড়ছে গোলাপি মহিষ।
উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের খিতাপচর গ্রামে ২০১৯ সালে ‘মজু ভা-ার মা-বাবা অ্যাগ্রো ফার্ম’ গড়ে তোলেন স্থানীয় মো. ইস্কান্দার, মো. শাহাদাত হোসেন ও মো. জহিরুল হক। এই তিনজনের মধ্যে ইস্কান্দার হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স সম্পন্ন করেছেন।
তিনি চাকরির দ্বারস্থ না হয়ে তার দুই বন্ধু শাহাদাত ও জহিরুলকে নিয়ে ৬টি মহিষ লালন পালনের মধ্য দিয়ে খামার গড়েন। এক বছরের মাথায় সাফল্য পেয়ে বেড়ে যায় উৎসাহ। এখন পরিণত হয়েছে বাণিজ্যিক খামারে। বর্তমানে তাদের খামারে রয়েছে ৫০টির এত গরু-মহিষ। প্রতি মাসে ১০-১৫টি মহিষ বিক্রি করে থাকেন।
ইস্কান্দার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে পারিবারিকভাবে মহিষ লালন পালন দেখে আসছি। মহিষ লালন পালনে গরুর চেয়ে খরচ কম হয়। আর বাজারে মহিষের মাংসের চাহিদাও রয়েছে।
সারা বছরই মহিষের চাহিদা থাকে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় তিন বন্ধু ৫ লাখ টাকা পুঁজি দিয়ে এ খামার গড়েছি।’ পরে যুক্ত করেছি গরু। সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে একটি সমন্বিত খামারে রূপান্তর করার কথা জানান তারা। প্রথমে তিন বন্ধু মিলে গরু-মহিষ লালন পালনের কাজ করলে এখন ৩ জন শ্রমিক রেখেছেন। প্রতিজন শ্রমিককে মাসিক ২০ হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক দিচ্ছেন তারা।
ইস্কান্দার আরও বলেন, এবার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য ১০টি গরু এবং খামারে ১৮টি মহিষ রয়েছে। এর মধ্যে ‘এলবিনো বাফেলো’ গোলাপি মহিষ ৮টি। মহিষগুলো গোলাপি রঙের হওয়ায় ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। এই রঙের মহিষগুলো সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার থেকে ক্রয় করে খামারে এনে লালন পালন করে বিক্রি করি। সারা বছরই মহিষ বিক্রি হয়। তবে মহিষকে দানাদার বা কৃত্রিম কোনো খাদ্য দেয়া হয় না। সরাসরি বিল আর মাঠের সবুজ ঘাসের ওপর নির্ভর করা হয়।
ওষুধ দিয়ে মোটাতাজা করা পশুর মাংস, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই নিজস্ব জমির ঘাষ দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি খাবার দেয়া হয় গরু-মহিষকে। কোরবানির জন্য সুস্থ, সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান পশুর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিষয়টি মাথায় রেখে আগামী কোরবানির ঈদে ক্যামিকেল মুক্ত খাবারের মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে গরু-মহিষ উপহার দেয়ার কথা জানান মো. ইস্কান্দার।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালখালীতে ছোট ও বড় ১ হাজার ৮০০টি খামারে কোরবানির পশু উৎপাদিত হয়েছে ৩০ হাজার ১৫০টি। এর মধ্যে গরু ২৪ হাজার ৯৩৪টি, মহিষ ২ হাজার ৭৮০টি, ছাগল ২ হাজার ৩২৪টি ও ভেড়া ১১২টি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুমন তালুকদার বলেন, ‘তরুণরা এগিয়ে আসলেই জাতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। সরকারি প্রাণিসম্পদ বিভাগ সার্বক্ষণিক খামারিদের সঙ্গে রয়েছে। একই সঙ্গে সব ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বোয়ালখালীতে এ বছর কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে ২৯ হাজার ৭৪২টি। চাহিদার বিপরীতে ৩০ হাজার ১৫০টি পশু উৎপাদন হয়েছে। এ ছাড়া মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানির পশু আনছে। ফলে বাজারে পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।