চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে আবারো শীতলক্ষ্যার বিষাক্ত বর্জ্য ও কেমিক্যালযুক্ত পানির কারণে পানি দূষণ হওয়ায় মাছ মরে ভেসে উঠছে। হুমকির মুখে মৎস্যজীবীরা।
গতকাল শুক্রবার ও শনিবার ভোর থেকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে এখলাছপুর মেঘনা পাড়ের বিভিন্ন স্থানে এমন চিত্র দেখা গেছে। এতে করে নদীপাড়ের মানুষজনের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
প্রতিদিনের এত শুক্রবার ও শনিবার ভোরে মাছ স্বীকারে নদীতে নামেন স্থানীয় জেলেরা। তখনই তারা দেখতে পান পানিতে ভেসে রয়েছে অসংখ্য মরা মাছ।
বিশেষ করে জাটকা, চেউয়া, বাইলা, টেংরা, পুটি, চাপিলাসহ অসংখ্য ছোট-বড় দেশীয় প্রজাতির মাছ। এদিকে পচা মাছের দুর্গন্ধে নদীপাড়ের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
দূষণ হওয়ার কারণে এখন নদীর পানি খাওয়া ও ব্যবহার করতে পারছে না তারা। বার বার নদীতে মাছ মারা যাচ্ছে এবং পানি দূষণ হচ্ছে, তার সমাধান চান এলাকাবাসী। মাছ মরায় চিন্তিত মেঘনা পাড়ে জেলেরা। কারণ এভাবে মাছ মারা পড়লে সামনে কাক্সিক্ষত মাছ স্বীকার করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে আছেন দুশ্চিন্তায়।
ষাটনল এলাকার জেলে পলাশ বর্মন বলেন, এই নদীই আমাদের জীবন। কিন্তু এখন এই পানিতে মাছ তো নেই, বরং বিষ ছড়িয়ে গেছে। কয়েক বছর ধরেই এমন হচ্ছে। কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এভাবে চলতে থাকলে মাছ শূন্য হয়ে যাবে নদী।
স্থানীয় নারী সেলিনা বেগম বলেন, নদীতে আমরা সবাই গোসল করি। এখন তো মনে হচ্ছে পানিতে হাত দিলেও অসুস্থ হয়ে যাবে।
দশানী এলাকার মাছ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, আজকে যা দেখলাম, তাতে আগামী কয়েক মাস নদী থেকে মাছ পাওয়া কঠিন হবে।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, এটি নিছক মাছ মরার ঘটনা নয়, এটি একটি জলজ পরিবেশগত দুর্যোগ। শীতলক্ষ্যা থেকে আসা দূষিত পানির প্রবাহ একাধিকবার এই এলাকায় বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। ২০২৩ সালের মার্চ ও ২০২৪ সালের আগস্ট মাসেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। তখনও মেঘনার পানি দূষিত হয়ে মাছ মারা গেছে। তবে এবার পরিমাণ আরও বেশি দেখা যাচ্ছে।
পরিবেশ আন্দোলনের সংগঠন ‘মতলবের মাটি ও মানুষ’ এর সভাপতি শামীম খান বলেন, ‘নদীকে কেন্দ্র করে হাজারো পরিবার জীবন নির্বাহ করে। বারবার দূষণে নদী মৃত প্রায়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। প্রয়োজন দ্রুত আন্তঃজেলা পরিবেশ কমিশন গঠন এবং কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, মেঘনা নদীতে মাছ মরে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে গত ৩০ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর ও মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সেখানকার রিপোর্ট অনুযায়ী নদীর পানিতে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায়, পিএইচ ও অক্সিজেনের হার কমে গিয়েছিল।
এছাড়া নদীর তলদেশ দিয়ে কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ও কেমিক্যালযুক্ত পানি বয়ে যাচ্ছে।
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে আবারো শীতলক্ষ্যার বিষাক্ত বর্জ্য ও কেমিক্যালযুক্ত পানির কারণে পানি দূষণ হওয়ায় মাছ মরে ভেসে উঠছে। হুমকির মুখে মৎস্যজীবীরা।
গতকাল শুক্রবার ও শনিবার ভোর থেকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে এখলাছপুর মেঘনা পাড়ের বিভিন্ন স্থানে এমন চিত্র দেখা গেছে। এতে করে নদীপাড়ের মানুষজনের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
প্রতিদিনের এত শুক্রবার ও শনিবার ভোরে মাছ স্বীকারে নদীতে নামেন স্থানীয় জেলেরা। তখনই তারা দেখতে পান পানিতে ভেসে রয়েছে অসংখ্য মরা মাছ।
বিশেষ করে জাটকা, চেউয়া, বাইলা, টেংরা, পুটি, চাপিলাসহ অসংখ্য ছোট-বড় দেশীয় প্রজাতির মাছ। এদিকে পচা মাছের দুর্গন্ধে নদীপাড়ের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
দূষণ হওয়ার কারণে এখন নদীর পানি খাওয়া ও ব্যবহার করতে পারছে না তারা। বার বার নদীতে মাছ মারা যাচ্ছে এবং পানি দূষণ হচ্ছে, তার সমাধান চান এলাকাবাসী। মাছ মরায় চিন্তিত মেঘনা পাড়ে জেলেরা। কারণ এভাবে মাছ মারা পড়লে সামনে কাক্সিক্ষত মাছ স্বীকার করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে আছেন দুশ্চিন্তায়।
ষাটনল এলাকার জেলে পলাশ বর্মন বলেন, এই নদীই আমাদের জীবন। কিন্তু এখন এই পানিতে মাছ তো নেই, বরং বিষ ছড়িয়ে গেছে। কয়েক বছর ধরেই এমন হচ্ছে। কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এভাবে চলতে থাকলে মাছ শূন্য হয়ে যাবে নদী।
স্থানীয় নারী সেলিনা বেগম বলেন, নদীতে আমরা সবাই গোসল করি। এখন তো মনে হচ্ছে পানিতে হাত দিলেও অসুস্থ হয়ে যাবে।
দশানী এলাকার মাছ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, আজকে যা দেখলাম, তাতে আগামী কয়েক মাস নদী থেকে মাছ পাওয়া কঠিন হবে।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, এটি নিছক মাছ মরার ঘটনা নয়, এটি একটি জলজ পরিবেশগত দুর্যোগ। শীতলক্ষ্যা থেকে আসা দূষিত পানির প্রবাহ একাধিকবার এই এলাকায় বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। ২০২৩ সালের মার্চ ও ২০২৪ সালের আগস্ট মাসেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। তখনও মেঘনার পানি দূষিত হয়ে মাছ মারা গেছে। তবে এবার পরিমাণ আরও বেশি দেখা যাচ্ছে।
পরিবেশ আন্দোলনের সংগঠন ‘মতলবের মাটি ও মানুষ’ এর সভাপতি শামীম খান বলেন, ‘নদীকে কেন্দ্র করে হাজারো পরিবার জীবন নির্বাহ করে। বারবার দূষণে নদী মৃত প্রায়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। প্রয়োজন দ্রুত আন্তঃজেলা পরিবেশ কমিশন গঠন এবং কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, মেঘনা নদীতে মাছ মরে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে গত ৩০ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর ও মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সেখানকার রিপোর্ট অনুযায়ী নদীর পানিতে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায়, পিএইচ ও অক্সিজেনের হার কমে গিয়েছিল।
এছাড়া নদীর তলদেশ দিয়ে কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ও কেমিক্যালযুক্ত পানি বয়ে যাচ্ছে।