দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : উপজেলার সদর থেকে তোলা কৃষ্ণচূড়া ফুল -সংবাদ
প্রকৃতি মানেই স্বস্তির জায়গা, আর তা যদি হয় ফুলে ফুলে সজ্জিত তাহলে তো কথাই নেই। ঋতু চক্রে প্রতি দুই মাস পর পর নানা রঙের ফুল প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তোলে। এমনই এক ফুল কৃষ্ণচূড়া এই গ্রীষ্মের প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলেছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পথে প্রান্তে ।
জানা গেছে, কৃষ্ণচূড়া এক ধরনের বৃক্ষ জাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এটির ইংরেজি নাম ফ্লেম ট্রি। এটি ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্গত একটি গাছ। এটি গুলমোহর নামেও পরিচিত। সাধারণত বসন্তে এ ফুল ফোটে। তবে এটি বসস্ত কালে ফুটলেও গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত চলে এ ফুলের প্রদর্শন। এ ফুল চার পাপড়িবিশিষ্ট। পাপড়িগুলো ৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়ার পাতা সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার লম্বা হয় এবং ২০ থেকে ৪০টি উপপত্র বিশিষ্ট। সাধারণত এ গাছে ফুল আসলেই গাছটি সহজেই নজরে আসে। এর ফুল মন কেড়ে নেওয়ার মতো সুন্দর হয়। এ ফুলের ঝলমলে রঙের খেলায় যে কেউ সহজে আকৃষ্ট হয়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন সড়কের পাশে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে, বাড়িঘর ও জলাশয়ের পাশে মনভোলানো সৌন্দর্য দিয়ে প্রকৃতিকে করে তুলেছে লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার ফুল। গাঢ় লাল রঙের ফুলে ফুলে সেজে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার প্রতিটি শাখা প্রশাখা। অসম্ভব সুন্দরের বর্ণছটায় কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিতে দিয়েছে এক নতুন মাত্রা। এ ফুলের মনকাড়া সৌন্দর্যে চলতি পথে পথচারীরা থমকে দাঁড়াচ্ছেন। কৃষ্ণচূড়ার এমন বাহারি রূপে বিমোহিত হয়ে কেউ কেউ মোবাইল ফোনে তুলছেন স্থির চিত্র, কেউ কেউ নিচ্ছেন ভিডিও চিত্র। উঠতি বয়সী কিশোরী ও তরুণীদের খোঁপা ও চুলের বেনিতে শোভা পাচ্ছে এ ফুল। শিশুরাও খেলছে এ ফুলে।
স্থানীয় দশমী গ্রামের হাফিজুল বলেন, এই গ্রীষ্মে প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলা ফুলগুলোর মধ্যে সৌন্দর্যে অন্যতম কৃষ্ণচূড়া ফুল। এ ফুলের সৌন্দর্য প্রতিবছরই মানুষ মন খুলে উপভোগ করেন। প্রতিদিন সকালে আশপাশের শিশুরা গাছের নিচ থেকে ঝরা ফুল কুড়িয়ে নেয়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন কেউ লাল রং ছড়িয়ে দিয়েছে। ছোটবেলায় কৃষ্ণচূড়া গাছের তলা থেকে এ ফুল কুড়িয়ে বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে রাখতাম। ছোটবেলা থেকেই এ ফুলের প্রতি আমার বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। তাই প্রতিবার কৃষ্ণচূড়া ফুটলে আমি তা মন খুলে অবলোকন করি।
স্কুল শিক্ষক কাবিল উদ্দিন বলেন, কৃষ্ণচূড়া একটি পরিচিত গাছ। এ গাছ মনোমুগ্ধকর ফুলের জন্য বিখ্যাত। আজ থেকে তিন-চার দশক আগেও এ উপজেলায় প্রচুর কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল। নতুন করে তেমন একটা এ গাছ রোপণ হচ্ছে না বলে দিন দিন এ গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এ গাছে ফুল আসলে ফুলের সৌন্দর্যে প্রকৃতি রঙিন হয়ে ওঠে। এ ফুলের টুকটুকে লাল রং সহজেই আকৃষ্ট করে। তাই এ ফুলের প্রতি মানুষের আলাদা একটা টান রয়েছে। সবুজ গাছগাছালির মধ্যে লাল রঙা কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিতে এনেছে ভিন্ন আমেজ। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে বৈশাখের আকাশে কৃষ্ণচূড়া তার রূপ মেলে ধরেছে। নিসর্গপ্রেমীরা এই ফুলের রূপ দেখে মুগ্ধ। সবুজ গাছের ফাঁকে পথে প্রান্তে, সড়কের ধারে, উদ্যানে, অফিস, বাসাবাড়ির ভেতরে কৃষ্ণচূড়া গাছের ডালে ডালে ফুটে আছে ফুল। গাছে ফোটা কৃষ্ণচূড়া পথিকের ক্লান্তি ভুলিয়ে দিচ্ছে।
কৃষিবিদদের মতে, কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস মাদাগাসকার দ্বীপে। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এটি ‘গুলমোহর’ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সর্বত্র এ গাছ আছে। কৃষ্ণচূড়া মধ্যম আকৃতির পত্র ঝরা বৃক্ষ। বীজ থেকে এর চারা হয়। শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। দেখা যায়, অনেক বড় গাছে ফুল ফোটে না। আবার ছোট গাছে ফুল ফোটে। শীর্ষ মঞ্জরিতে ফুল হয়। এপ্রিল থেকে জুলাই মাসজুড়ে ওই ফুল শোভা বর্ধন করে। বসন্তে শুরু, বর্ষায় শেষ এই ফুলের সৌন্দর্য। গ্রীষ্মের এই সময়ে কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তপ্ত রোদে আগুনের মতো জ্বলে থাকে এই ফুল। সবুজের মধ্যে উজ্জ্বল লাল এই ফুল। উষ্ণ আবহাওয়ায় এই ফুল হয়। দৃষ্টিনন্দন এই ফুল মনকে উৎফুল্ল করে।
সময়ের বিবর্তনে ওই গাছ কমে গেছে। এই গাছ যেমন ছায়া দেয়, তেমনি এর ফুল মানুষকে আকৃষ্ট করে। এই ফুলের ওপর পাখি এসে বসে। কিচিরমিচির করে । এতে প্রকৃতি মোহনীয় সাজে সেজে উঠে। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদেও মন ভালো করে দিচ্ছে চোখ জুড়ানো কৃষ্ণচূড়া ফুল। এ ফুলের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন ফুলপ্রেমীসহ সব বয়সী মানুষ। আর বেশি করে কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগালে সবুজ প্রকৃতির মাঝে লাল হয়ে ফুটে থাকা নয়নাভিরাম কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অলংকৃত করে তুলবে। সবাইকে নিজ উদ্যোগে কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছ লাগাতে অনুরোধ করছি।
দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : উপজেলার সদর থেকে তোলা কৃষ্ণচূড়া ফুল -সংবাদ
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
প্রকৃতি মানেই স্বস্তির জায়গা, আর তা যদি হয় ফুলে ফুলে সজ্জিত তাহলে তো কথাই নেই। ঋতু চক্রে প্রতি দুই মাস পর পর নানা রঙের ফুল প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তোলে। এমনই এক ফুল কৃষ্ণচূড়া এই গ্রীষ্মের প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলেছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পথে প্রান্তে ।
জানা গেছে, কৃষ্ণচূড়া এক ধরনের বৃক্ষ জাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এটির ইংরেজি নাম ফ্লেম ট্রি। এটি ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্গত একটি গাছ। এটি গুলমোহর নামেও পরিচিত। সাধারণত বসন্তে এ ফুল ফোটে। তবে এটি বসস্ত কালে ফুটলেও গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত চলে এ ফুলের প্রদর্শন। এ ফুল চার পাপড়িবিশিষ্ট। পাপড়িগুলো ৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়ার পাতা সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার লম্বা হয় এবং ২০ থেকে ৪০টি উপপত্র বিশিষ্ট। সাধারণত এ গাছে ফুল আসলেই গাছটি সহজেই নজরে আসে। এর ফুল মন কেড়ে নেওয়ার মতো সুন্দর হয়। এ ফুলের ঝলমলে রঙের খেলায় যে কেউ সহজে আকৃষ্ট হয়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন সড়কের পাশে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে, বাড়িঘর ও জলাশয়ের পাশে মনভোলানো সৌন্দর্য দিয়ে প্রকৃতিকে করে তুলেছে লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার ফুল। গাঢ় লাল রঙের ফুলে ফুলে সেজে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার প্রতিটি শাখা প্রশাখা। অসম্ভব সুন্দরের বর্ণছটায় কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিতে দিয়েছে এক নতুন মাত্রা। এ ফুলের মনকাড়া সৌন্দর্যে চলতি পথে পথচারীরা থমকে দাঁড়াচ্ছেন। কৃষ্ণচূড়ার এমন বাহারি রূপে বিমোহিত হয়ে কেউ কেউ মোবাইল ফোনে তুলছেন স্থির চিত্র, কেউ কেউ নিচ্ছেন ভিডিও চিত্র। উঠতি বয়সী কিশোরী ও তরুণীদের খোঁপা ও চুলের বেনিতে শোভা পাচ্ছে এ ফুল। শিশুরাও খেলছে এ ফুলে।
স্থানীয় দশমী গ্রামের হাফিজুল বলেন, এই গ্রীষ্মে প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলা ফুলগুলোর মধ্যে সৌন্দর্যে অন্যতম কৃষ্ণচূড়া ফুল। এ ফুলের সৌন্দর্য প্রতিবছরই মানুষ মন খুলে উপভোগ করেন। প্রতিদিন সকালে আশপাশের শিশুরা গাছের নিচ থেকে ঝরা ফুল কুড়িয়ে নেয়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন কেউ লাল রং ছড়িয়ে দিয়েছে। ছোটবেলায় কৃষ্ণচূড়া গাছের তলা থেকে এ ফুল কুড়িয়ে বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে রাখতাম। ছোটবেলা থেকেই এ ফুলের প্রতি আমার বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। তাই প্রতিবার কৃষ্ণচূড়া ফুটলে আমি তা মন খুলে অবলোকন করি।
স্কুল শিক্ষক কাবিল উদ্দিন বলেন, কৃষ্ণচূড়া একটি পরিচিত গাছ। এ গাছ মনোমুগ্ধকর ফুলের জন্য বিখ্যাত। আজ থেকে তিন-চার দশক আগেও এ উপজেলায় প্রচুর কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল। নতুন করে তেমন একটা এ গাছ রোপণ হচ্ছে না বলে দিন দিন এ গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এ গাছে ফুল আসলে ফুলের সৌন্দর্যে প্রকৃতি রঙিন হয়ে ওঠে। এ ফুলের টুকটুকে লাল রং সহজেই আকৃষ্ট করে। তাই এ ফুলের প্রতি মানুষের আলাদা একটা টান রয়েছে। সবুজ গাছগাছালির মধ্যে লাল রঙা কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিতে এনেছে ভিন্ন আমেজ। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে বৈশাখের আকাশে কৃষ্ণচূড়া তার রূপ মেলে ধরেছে। নিসর্গপ্রেমীরা এই ফুলের রূপ দেখে মুগ্ধ। সবুজ গাছের ফাঁকে পথে প্রান্তে, সড়কের ধারে, উদ্যানে, অফিস, বাসাবাড়ির ভেতরে কৃষ্ণচূড়া গাছের ডালে ডালে ফুটে আছে ফুল। গাছে ফোটা কৃষ্ণচূড়া পথিকের ক্লান্তি ভুলিয়ে দিচ্ছে।
কৃষিবিদদের মতে, কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস মাদাগাসকার দ্বীপে। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এটি ‘গুলমোহর’ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সর্বত্র এ গাছ আছে। কৃষ্ণচূড়া মধ্যম আকৃতির পত্র ঝরা বৃক্ষ। বীজ থেকে এর চারা হয়। শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। দেখা যায়, অনেক বড় গাছে ফুল ফোটে না। আবার ছোট গাছে ফুল ফোটে। শীর্ষ মঞ্জরিতে ফুল হয়। এপ্রিল থেকে জুলাই মাসজুড়ে ওই ফুল শোভা বর্ধন করে। বসন্তে শুরু, বর্ষায় শেষ এই ফুলের সৌন্দর্য। গ্রীষ্মের এই সময়ে কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তপ্ত রোদে আগুনের মতো জ্বলে থাকে এই ফুল। সবুজের মধ্যে উজ্জ্বল লাল এই ফুল। উষ্ণ আবহাওয়ায় এই ফুল হয়। দৃষ্টিনন্দন এই ফুল মনকে উৎফুল্ল করে।
সময়ের বিবর্তনে ওই গাছ কমে গেছে। এই গাছ যেমন ছায়া দেয়, তেমনি এর ফুল মানুষকে আকৃষ্ট করে। এই ফুলের ওপর পাখি এসে বসে। কিচিরমিচির করে । এতে প্রকৃতি মোহনীয় সাজে সেজে উঠে। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদেও মন ভালো করে দিচ্ছে চোখ জুড়ানো কৃষ্ণচূড়া ফুল। এ ফুলের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন ফুলপ্রেমীসহ সব বয়সী মানুষ। আর বেশি করে কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগালে সবুজ প্রকৃতির মাঝে লাল হয়ে ফুটে থাকা নয়নাভিরাম কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অলংকৃত করে তুলবে। সবাইকে নিজ উদ্যোগে কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছ লাগাতে অনুরোধ করছি।