রামু (কক্সবাজার) : বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মিত পুরাতন ব্রিজটির লোহার পাটাতনে মরিচা ধরে ছিদ্র হয়ে গেছে -সংবাদ
কক্সবাজারের রামু উপজেলার প্রাণকেন্দ্র চৌমুহনী স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত পুরাতন মরিচ্যা আরাকান সড়কের শিকল ঘাট বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মিত পুরাতন বেইলি ব্রিজটি বর্তমানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্রিজের লোহার পাটাতনগুলো মরিচা ধরে ক্ষয়ে ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। মাঝে মধ্যে কিছু সংস্কার করে যানবাহন চলাচল উপযোগী রাখার চেষ্টা করলেও তা খুব বেশি কাজে আসছে না। সবমিলিয়ে সেতুগুলো নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেতু দিয়ে ১৫ টনের বেশি যানবাহন চলাচল না করার জন্য সেতুর দুই পাশে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই সড়ক দিয়ে অসংখ্য পর্যটক, চাকরিজীবী পথচারি ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়ত রয়েছে। রামু থেকে মরিচ্যা পর্যন্ত চলাচলে কোনো জটিলতা না থাকলেও, শিকল ঘাট এলাকায় পৌঁছাতেই শুরু হয় ভোগান্তি। এ ছাড়া শিকল ঘাট বেইলি সেতুটি প্রস্থ ছোট হওয়ায় উভয় পাশে সব সময় লেগে থাকে দীর্ঘ যানজট এবং জরাজীর্ণ বেইলি সেতুর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কোনোরকম সংস্কার করা হলে ভোগান্তি কমছে না পথচারিদের। অন্যদিকে সেখানে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলায় প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজটে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। তাই দ্রুত নতুন সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, ১৯৯৩ সালে পুরাতন মরিচ্যা আরাকান সড়কের শিকল ঘাট বাঁকখালী নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করার দায়িত্ব পায় সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সেতুটি নির্মাণ করার পর ৪২ বছর পার হয়ে গেছে। প্রতিদিন এই বেইলি ব্রিজ দিয়ে ২০ হাজার মানুষ পারাপার করছে। সংস্কারবিহীন এই সেতুর অবস্থা এখন খুবই নাজুক। এদিকের বেইলি ব্রিজের পার্শ্বে আরেকটি নতুন নির্মাধীন ব্রিজের নির্মাণকাজ চলছে ধীর গতিতে। ৩৫ কোটি টাকার বাজেটের এই ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে। এটি বাস্তবায়নে কাজ করছেন ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসান টেকনো বিল্ডার্স। ব্রিজের ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হলেও ভূমি অধিগ্রহণ ঝটিলতায় থেমে আছে শেষ অংশের কাজ। রামু উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ফয়েজ উদ্দিন রাসেদ জানান, দুর্ভোগের অপর নাম হচ্ছে শিকল ঘাট বেইলি ব্রিজ। ব্রিজটি এমনিতে জরাজীর্ণ তার মাঝে প্রস্থ ছোট হওয়ায় প্রতিদিন রাজারকুল থেকে রামু আসার সময় দীর্ঘক্ষণ ধরে যানজটে আটকা পড়ে দুভোর্গ পোহাতে হয়। বর্ষার আগে যেন নতুন ব্রিজের কাজ শেষ করে হাজার হাজার জনসাধারণকে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তার ওপর দিয়েই চলছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। আর সেতুতে রাতের আঁধারে কোনো আলোর ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিনই ভ্যানগাড়ি, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও লোকজন ভাঙা অংশে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ব্রিজের পাশের দোকানদার রুবেল ইসলাম বলেন, ব্রিজ পারাপারের সময় প্রতিদিন অনেক গাড়ি আটকা পড়ে। কারণ, ব্রিজটি সরু হওয়ায় একদিকে গাড়ি উঠলে অন্য দিকের গাড়ি অপেক্ষায় থাকে। দীর্ঘদিনের এই দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে এই ব্রিজটির পাশে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলছে। এলাকাবাসী আশা করছেন, নতুন ব্রিজটি নির্মাণ শেষ হলে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির অবসান ঘটবে। বর্তমানে সেনাবাহিনী ও বিজিবির বড় গাড়িগুলো এই ব্রিজ ব্যবহার না করে লিংক রোড হয়ে টেকনাফের রাস্তা ব্যবহার করছে। তবে নতুন ব্রিজটি চালু হলে রামু-মরিচ্যা সড়কে হয়তো তাদের চলাচল এই ব্রিজ দিয়ে হবে। এলাকাবাসীর দাবি, নতুন ব্রিজ নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুরনো ব্রিজটির সংস্কার করে সাময়িকভাবে যানবাহনের চলাচল নিরাপদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্যথায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী জানান, জমি অধিগ্রহণ শেষে দ্রুত বাকি কাজ শুরু করার কথা জানিয়ে বলেন জেলা প্রশাসক কর্তৃক ভূমি অধিগ্রহণ কাজ চলছে। ভূমি অধিগ্রহণ কাজ শেষ হলেই দ্রুত সেতুর শেষ অংশের কাজ শুরু করা হবে। রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, পুরাতন বেইলি ব্রিজের পরবর্তীতে নতুন ব্রিজের কাজ করার কথা, সেখানে কাজ খুব ধীরগতিতে চলছে। নতুন ব্রিজের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।
রামু (কক্সবাজার) : বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মিত পুরাতন ব্রিজটির লোহার পাটাতনে মরিচা ধরে ছিদ্র হয়ে গেছে -সংবাদ
শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
কক্সবাজারের রামু উপজেলার প্রাণকেন্দ্র চৌমুহনী স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত পুরাতন মরিচ্যা আরাকান সড়কের শিকল ঘাট বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মিত পুরাতন বেইলি ব্রিজটি বর্তমানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্রিজের লোহার পাটাতনগুলো মরিচা ধরে ক্ষয়ে ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। মাঝে মধ্যে কিছু সংস্কার করে যানবাহন চলাচল উপযোগী রাখার চেষ্টা করলেও তা খুব বেশি কাজে আসছে না। সবমিলিয়ে সেতুগুলো নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেতু দিয়ে ১৫ টনের বেশি যানবাহন চলাচল না করার জন্য সেতুর দুই পাশে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই সড়ক দিয়ে অসংখ্য পর্যটক, চাকরিজীবী পথচারি ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়ত রয়েছে। রামু থেকে মরিচ্যা পর্যন্ত চলাচলে কোনো জটিলতা না থাকলেও, শিকল ঘাট এলাকায় পৌঁছাতেই শুরু হয় ভোগান্তি। এ ছাড়া শিকল ঘাট বেইলি সেতুটি প্রস্থ ছোট হওয়ায় উভয় পাশে সব সময় লেগে থাকে দীর্ঘ যানজট এবং জরাজীর্ণ বেইলি সেতুর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কোনোরকম সংস্কার করা হলে ভোগান্তি কমছে না পথচারিদের। অন্যদিকে সেখানে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলায় প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজটে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। তাই দ্রুত নতুন সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, ১৯৯৩ সালে পুরাতন মরিচ্যা আরাকান সড়কের শিকল ঘাট বাঁকখালী নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করার দায়িত্ব পায় সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সেতুটি নির্মাণ করার পর ৪২ বছর পার হয়ে গেছে। প্রতিদিন এই বেইলি ব্রিজ দিয়ে ২০ হাজার মানুষ পারাপার করছে। সংস্কারবিহীন এই সেতুর অবস্থা এখন খুবই নাজুক। এদিকের বেইলি ব্রিজের পার্শ্বে আরেকটি নতুন নির্মাধীন ব্রিজের নির্মাণকাজ চলছে ধীর গতিতে। ৩৫ কোটি টাকার বাজেটের এই ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে। এটি বাস্তবায়নে কাজ করছেন ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসান টেকনো বিল্ডার্স। ব্রিজের ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হলেও ভূমি অধিগ্রহণ ঝটিলতায় থেমে আছে শেষ অংশের কাজ। রামু উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ফয়েজ উদ্দিন রাসেদ জানান, দুর্ভোগের অপর নাম হচ্ছে শিকল ঘাট বেইলি ব্রিজ। ব্রিজটি এমনিতে জরাজীর্ণ তার মাঝে প্রস্থ ছোট হওয়ায় প্রতিদিন রাজারকুল থেকে রামু আসার সময় দীর্ঘক্ষণ ধরে যানজটে আটকা পড়ে দুভোর্গ পোহাতে হয়। বর্ষার আগে যেন নতুন ব্রিজের কাজ শেষ করে হাজার হাজার জনসাধারণকে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তার ওপর দিয়েই চলছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। আর সেতুতে রাতের আঁধারে কোনো আলোর ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিনই ভ্যানগাড়ি, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও লোকজন ভাঙা অংশে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ব্রিজের পাশের দোকানদার রুবেল ইসলাম বলেন, ব্রিজ পারাপারের সময় প্রতিদিন অনেক গাড়ি আটকা পড়ে। কারণ, ব্রিজটি সরু হওয়ায় একদিকে গাড়ি উঠলে অন্য দিকের গাড়ি অপেক্ষায় থাকে। দীর্ঘদিনের এই দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে এই ব্রিজটির পাশে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলছে। এলাকাবাসী আশা করছেন, নতুন ব্রিজটি নির্মাণ শেষ হলে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির অবসান ঘটবে। বর্তমানে সেনাবাহিনী ও বিজিবির বড় গাড়িগুলো এই ব্রিজ ব্যবহার না করে লিংক রোড হয়ে টেকনাফের রাস্তা ব্যবহার করছে। তবে নতুন ব্রিজটি চালু হলে রামু-মরিচ্যা সড়কে হয়তো তাদের চলাচল এই ব্রিজ দিয়ে হবে। এলাকাবাসীর দাবি, নতুন ব্রিজ নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুরনো ব্রিজটির সংস্কার করে সাময়িকভাবে যানবাহনের চলাচল নিরাপদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্যথায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী জানান, জমি অধিগ্রহণ শেষে দ্রুত বাকি কাজ শুরু করার কথা জানিয়ে বলেন জেলা প্রশাসক কর্তৃক ভূমি অধিগ্রহণ কাজ চলছে। ভূমি অধিগ্রহণ কাজ শেষ হলেই দ্রুত সেতুর শেষ অংশের কাজ শুরু করা হবে। রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, পুরাতন বেইলি ব্রিজের পরবর্তীতে নতুন ব্রিজের কাজ করার কথা, সেখানে কাজ খুব ধীরগতিতে চলছে। নতুন ব্রিজের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।