alt

সারাদেশ

৩শ’বর্ষী ‘ঝাউদি গিরি’ অবহেলায় : সংরক্ষণ দাবি

রিপন চন্দ্র মল্লিক, মাদারীপুর : শনিবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২২

মাদারীপুর : মগদের দিক নির্দেশনার কাজে ব্যবহৃত ধংসপ্রায় ‘ঝাউদি গিরি’ স্তম্ভ -সংবাদ

মাদারীপুরের মগদের দিক নির্দেশনার কাজে ব্যবহৃত স্তম্ভ ‘ঝাউদি গিরি’ এখন জমি-জমা পরিমাপের মূল স্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার করা হচেছ। একশ ফুট উচ্চতার এই গিরিটি এখন কালের গর্ভে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দশকে প্রায় দশ ফুটেরও বেশি মাটির নিচে দেবে গেছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এক সময় পুরোপুরি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই সুউচ্চ গিরিটিকে এখন জমি-জমা পরিমাপ করার মূলস্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। মাদারীপুরের ইতিহাস ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নিয়ে ঝাউদি গিরিটিকে স্থানীয়রা সংরক্ষণ করার দাবি জানিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মতান্তরে প্রায় সাড়ে তিন’শ বছর আগে ১৭১৫ সাল থেকে ১৭২০ সালের মধ্যে আরাকানের মগ দস্যুরা মাদারীপুর অঞ্চলে আসে। তখন তারা দিক নির্দেশনার জন্য গহীন জঙ্গলে ঘেরা এই অঞ্চলে দুই শতাংশ জমির ওপরে একশ ফুট উচ্চতার এই গিরিটি নির্মাণ করে। যা ঝাউদি এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় এটি ‘ঝাউদি গিরি’ নামে পরিচিতি পায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদারীপুর শহর দক্ষিণে মোবারকদী এলাকা হয়ে কয়েক কিলোমিটার পথ আরো দক্ষিণের দিকে গেলেই ঝাউদি গিরি। গিরিটি কয়েক দশকে প্রায় দশ ফুটের বেশি মাটির নিচে দেবে গেছে। তবে, এখনো ৭০ ফুটের মত মাটির উপরে গিরিটি টিকে আছে। গিরিটির ছাদ অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে। ইটগুলো পুরনো হয়ে যাওয়ায় অনেক স্থানে ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়ে গেছে। পশ্চিম পাশের দেওয়ালে বড় একটি ফাটলও দেখা দিয়েছে। গিরিটির পশ্চিম ও পূর্ব দিকে দুটি বড় প্রবেশ পথ রয়েছে। বর্তমানে গিরিটি পুরোপুরি অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংসে হতে চলেছে। গিরিটি যে স্থানে নির্মিত হয়েছে সেই জমির মালিক দাবি করা ঝাউদি এলাকাবার বাসিন্দা রোকেয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এই গিরিটি বর্তমানে যে স্থানে অবস্থিত এই এখন আমাদের। আমার স্বামী সিরাজ ভুইয়া এই জমিটি কিনেছে। গিরিটির চারপাশের গাছ-গাছালি সব আমাদের। আমরাই এগুলো ভোগ দখল করে খাই। তবে, এই গিরিটি কখন এখানে বানানো হয়েছিল তিনি তা বলতে পারেননি। তবে, গিরিটিকে কেন্দ্র করে আমাদের এলাকার লোকজনে জমি জমা মাপঝোপ করে।’

বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সদস্য সুবল বিশ^াস বলেন, ‘মাদারীপুরের ঝাউদি গিরি মগদের এই অঞ্চলে বিচরণের একটি কালের সাক্ষী হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। অযত্ন আর অবহেলায় ঝাউদি গিরি ইতিহাসটুকুও এখন আর অনেকেই জানেন না। সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর যদি গিরিটিকে তাদের অধীনে নিয়ে সংস্কার করে সংরক্ষণ করত। তাহলে গিরিটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানতে পারত। সরকার সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে কয়েকশ বছর ধরে ঝাউদিতে দাড়িয়ে থাকা এই গিরিটি একসময় হারিয়ে যাবে।’

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘ঝাউদি গিরি কি? এটিই এখন স্থানীয়রা ভাল করে বলতে পারি না। সরকারিভাবে যদি এটিকে আরও অনেক আগেই সংরক্ষণ করা হতো, তাহলে কমবেশি অনেকেই মাদারীপুরের ঝাউদি গিরি সম্পর্কে কমবেশি ধারণা রাখতে পারতো। তাই সরকারের কাছে দাবি করছি, মাদারীপুর অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য যেসকল স্থাপনা রয়েছে সেগুলোকে সংরক্ষণ করা হোক। আমি দাবি করছি, মাদারীপুরে প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ হিসেবে ঝাউদি গিরিটিকে দ্রুত সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হোক।’

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মাদারীপুরে যে সকল ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্থাপনা রয়েছে। সেইগুলোকে সংরক্ষণের জন্য একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে সদর উপজেলার ঝাউদি গিরিও রয়েছে। আমি আশা করছি, ঝাউদি গিরিটিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় নিয়ে আসা হলে এটিকে নতুন ভাবে সংস্কার করে দীর্ঘস্থায়ী ভাবে সংরক্ষণ করা যাবে।

সিলেট সীমান্তে ভারতের রাত্রিকালীন কারফিউ জারি, বিজিবির নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে

ছবি

জোড়া খুন মামলায় ‘ছোট সাজ্জাদের’ স্ত্রী তামান্না গ্রেপ্তার

ছবি

ঈদগাঁওতে একসঙ্গে ৬ সন্তান জন্ম দিলেন গৃহবধূ

ছবি

মুন্সিগঞ্জে লঞ্চে দুই তরুণীকে মারধর, ভিডিও ভাইরালের পর নেহাল আহমেদ নামে যুবক আটক

জমি নিয়ে সংঘর্ষে বসতঘর ভাঙচুর, আহত ১০

ছবি

সিয়ামের মৃত্যুর প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি শিক্ষার্থীদের

গাংনীতে ট্রলিচাপায় শিশু নিহত

আকিকার মাংস নিয়ে সংঘর্ষ বাড়িঘর ভাঙচুর, আহত ১৫

ভারতীয় তোতাপুরি ছাগল-দুম্বাসহ পাচারকারী আটক

শরণখোলায় সুন্দরবন থেকে আসা হরিণ উদ্ধার

স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যু

এক হাজার টাকায় স্ত্রীকে বিক্রি, নির্যাতনের পর হত্যা, গ্রেপ্তার ৪

স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ায় আগুনে পুড়ল ভাড়া বাড়ির ৫ কক্ষ

ফিলিং স্টেশনে যানবাহনের গ্যাস যাচ্ছে কলকারখানা বাসাবাড়ি ও হোটেল-রেস্তোরাঁয়

চুয়াডাঙ্গার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

বাঁকখালী নদীতে ডুবে কলেজছাত্রের মৃত্যু

ছবি

রাঙ্গুনিয়ায় কৃষিজমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়, খালের গতিপথ বিপন্ন

ছবি

গাছ ও পাহাড় কেটে সীমান্তে তৈরি হচ্ছে চোরাই পথ

অপারেশন ডেভিল হান্টে আ’লীগ নেতাসহ আটক ৩

চাটখিলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ গ্রেপ্তার ৯

অনলাইন জুয়ায় সর্বস্ব হারিয়ে যুবকের দুধ দিয়ে গোসল

ছবি

তিল চাষ লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

মাদারগঞ্জে সংযোগ সড়কে ধস, ৫ মাসে সংস্কারের উদ্যোগ

মুন্সীগঞ্জে বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার

নকল শিশু খাদ্যের কারখানায় অভিযান, জরিমানা

নাসিরনগরে পূর্বশত্রুতার জেরে নিহত ১

হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ৪ ছাত্রকে পিটিয়ে আহত

ছবি

ভালুকায় বোরো ধান কাটায় শ্রমিক সংকট, হিমশিম খাচ্ছে কৃষক

ছবি

ভোলায় বাস শ্রমিকদের বাধা ও আরোপিত শর্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিক্ষোভ

যশোরে ‘ছদ্মবেশে’ পালিয়ে থাকা ৩৩ মামলার আসামি কাজী তারেক আটক

পোরশায় বর্গাচাষিদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা, আটক ২

রাজশাহী সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার

লোহাগড়ায় নিখোঁজ তরুণের মরদেহ উদ্ধার

বেরোবিতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া যুবক আটক

রংপুরে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিল

ছবি

আঙুর চাষে ঝুঁকি নিয়ে সফল কালীগঞ্জের আলামিন

tab

সারাদেশ

৩শ’বর্ষী ‘ঝাউদি গিরি’ অবহেলায় : সংরক্ষণ দাবি

রিপন চন্দ্র মল্লিক, মাদারীপুর

মাদারীপুর : মগদের দিক নির্দেশনার কাজে ব্যবহৃত ধংসপ্রায় ‘ঝাউদি গিরি’ স্তম্ভ -সংবাদ

শনিবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২২

মাদারীপুরের মগদের দিক নির্দেশনার কাজে ব্যবহৃত স্তম্ভ ‘ঝাউদি গিরি’ এখন জমি-জমা পরিমাপের মূল স্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার করা হচেছ। একশ ফুট উচ্চতার এই গিরিটি এখন কালের গর্ভে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দশকে প্রায় দশ ফুটেরও বেশি মাটির নিচে দেবে গেছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এক সময় পুরোপুরি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই সুউচ্চ গিরিটিকে এখন জমি-জমা পরিমাপ করার মূলস্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। মাদারীপুরের ইতিহাস ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নিয়ে ঝাউদি গিরিটিকে স্থানীয়রা সংরক্ষণ করার দাবি জানিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মতান্তরে প্রায় সাড়ে তিন’শ বছর আগে ১৭১৫ সাল থেকে ১৭২০ সালের মধ্যে আরাকানের মগ দস্যুরা মাদারীপুর অঞ্চলে আসে। তখন তারা দিক নির্দেশনার জন্য গহীন জঙ্গলে ঘেরা এই অঞ্চলে দুই শতাংশ জমির ওপরে একশ ফুট উচ্চতার এই গিরিটি নির্মাণ করে। যা ঝাউদি এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় এটি ‘ঝাউদি গিরি’ নামে পরিচিতি পায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদারীপুর শহর দক্ষিণে মোবারকদী এলাকা হয়ে কয়েক কিলোমিটার পথ আরো দক্ষিণের দিকে গেলেই ঝাউদি গিরি। গিরিটি কয়েক দশকে প্রায় দশ ফুটের বেশি মাটির নিচে দেবে গেছে। তবে, এখনো ৭০ ফুটের মত মাটির উপরে গিরিটি টিকে আছে। গিরিটির ছাদ অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে। ইটগুলো পুরনো হয়ে যাওয়ায় অনেক স্থানে ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়ে গেছে। পশ্চিম পাশের দেওয়ালে বড় একটি ফাটলও দেখা দিয়েছে। গিরিটির পশ্চিম ও পূর্ব দিকে দুটি বড় প্রবেশ পথ রয়েছে। বর্তমানে গিরিটি পুরোপুরি অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংসে হতে চলেছে। গিরিটি যে স্থানে নির্মিত হয়েছে সেই জমির মালিক দাবি করা ঝাউদি এলাকাবার বাসিন্দা রোকেয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এই গিরিটি বর্তমানে যে স্থানে অবস্থিত এই এখন আমাদের। আমার স্বামী সিরাজ ভুইয়া এই জমিটি কিনেছে। গিরিটির চারপাশের গাছ-গাছালি সব আমাদের। আমরাই এগুলো ভোগ দখল করে খাই। তবে, এই গিরিটি কখন এখানে বানানো হয়েছিল তিনি তা বলতে পারেননি। তবে, গিরিটিকে কেন্দ্র করে আমাদের এলাকার লোকজনে জমি জমা মাপঝোপ করে।’

বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সদস্য সুবল বিশ^াস বলেন, ‘মাদারীপুরের ঝাউদি গিরি মগদের এই অঞ্চলে বিচরণের একটি কালের সাক্ষী হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। অযত্ন আর অবহেলায় ঝাউদি গিরি ইতিহাসটুকুও এখন আর অনেকেই জানেন না। সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর যদি গিরিটিকে তাদের অধীনে নিয়ে সংস্কার করে সংরক্ষণ করত। তাহলে গিরিটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানতে পারত। সরকার সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে কয়েকশ বছর ধরে ঝাউদিতে দাড়িয়ে থাকা এই গিরিটি একসময় হারিয়ে যাবে।’

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘ঝাউদি গিরি কি? এটিই এখন স্থানীয়রা ভাল করে বলতে পারি না। সরকারিভাবে যদি এটিকে আরও অনেক আগেই সংরক্ষণ করা হতো, তাহলে কমবেশি অনেকেই মাদারীপুরের ঝাউদি গিরি সম্পর্কে কমবেশি ধারণা রাখতে পারতো। তাই সরকারের কাছে দাবি করছি, মাদারীপুর অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য যেসকল স্থাপনা রয়েছে সেগুলোকে সংরক্ষণ করা হোক। আমি দাবি করছি, মাদারীপুরে প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ হিসেবে ঝাউদি গিরিটিকে দ্রুত সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হোক।’

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মাদারীপুরে যে সকল ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্থাপনা রয়েছে। সেইগুলোকে সংরক্ষণের জন্য একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে সদর উপজেলার ঝাউদি গিরিও রয়েছে। আমি আশা করছি, ঝাউদি গিরিটিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় নিয়ে আসা হলে এটিকে নতুন ভাবে সংস্কার করে দীর্ঘস্থায়ী ভাবে সংরক্ষণ করা যাবে।

back to top