ছবি : দেশি পেয়াজ (ইন্টারনেট)
সোমবার (৩০ অক্টোবর) মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচা বাজারে এক কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়। সেখানে দেশি পেঁয়াজ ও আলুসহ কিছু পণ্য কিনে বের হচ্ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী রিপন মিয়া। তিনি জানান, দেশি পেঁয়াজ কিনতে না পেরে তিনি ভারতীয় পেঁয়াজই কিনেছেন। তবে সেটাও ১২০ টাকা কেজি। অথচ ১৫-২০ দিন আগে এই ভারতীয় পেঁয়াজ তিনি কিনেছিলেন ৭০ টাকা দিয়ে।
বাজারে পণ্যের দামের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু করার নেই। এখন কম খাই।’
তার মতে, ‘সরকার ইচ্ছা করলে’ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা যাতে খাইতে পারি বাঁচতে পারি, সেজন্য অন্তত বাজারটা ঠিক করুক সরকার, নিয়ন্ত্রণ করুক।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে বিডিআর মার্কেট দিয়েছিল। আমরা কিনেকেটে খেতে পারতাম। এখন ওই দোকানগুলো আবার চালু করা দরকার বলে মনে করে তিনি।
তিনি জানান, ছোট এক আঁটি শাকও বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। একটা লাউশাকের আঁটির দামও ৪০ টাকা।
সার্বিকভাবে নিজের পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা না পারি চাইতে, না পারি কিনতে।’
সোমবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২৫ টাকা।
দেশি পেঁয়াজের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচা বাজারের খুচরা আলু, পেঁয়াজ বিক্রেতা বিল্লাল সংবাদকে বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কই গিয়া যে ঠ্যাকে, ঠিক নাই।’
দেশি পেঁয়াজের দাম কি আরও বাড়তে পারে কি না জানতে চাইলে ওই বাজারের আরেক বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘দাম বাড়বো, বাড়ায়ে বেঁচতে হইবো। আমরা তো আর কমাইয়া বেঁচতে পারবো না। তিনি জানান, সোমবারই আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৯০ টাকায়।
রাজধানীর কাঁঠাল বাগান থেকে পাইকার দরে পেঁয়াজ কিনতে কারওয়ান বাজারে এসেছেন খুচরা বিক্রেতা মো. রফিক। পেঁয়াজ কতোটাকা দরে কিনছেন জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমদানি করা পেঁয়াজ কিনেছি কেজি ১৩০ টাকা দিয়ে। পেঁয়াজের দাম বাড়ছে জানি নাই। দোকানে বেইচা আইছি ১১০ টাকা। এখন কতো বেচুম? আর দেশি পেঁয়াজ ”াচ্ছে ১৩৫ টাকা। ৫-৬ দিন আগে আমদানি করা পেঁয়াজ ছিল ৯৬ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ আছিল ১০২ টাকা।’
দেশি পেঁয়াজের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা আল-আমীন বলেন, ‘দেশী পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১৪০ টাকা। আজকে পাইকারিতে কিনতে পড়েছে ১৩২ টাকা।’
কাঁঠাল বাগানে গিয়ে কতো বিক্রি করবেন জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘তাহলে ১৫০ টাকা বেচতে হবে। নিয়ে যেতেই তো সবসহ খরচ পড়বে ১৪০ টাকা। অবস্থা অনেক খারাপ। দোকানে কাস্টমার এসে বলে এত দাম রাখেন ক্যান? দেশি পেঁয়াজের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা আল-আমীন বলেন, ‘দেশী পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১৪০ টাকা। আজকে পাইকারিতে কিনতে পড়েছে ১৩২ টাকা।’
দেশি পেঁয়াজের দরদাম ও বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা আজাদ বলেন, ‘আরে ভ্যাট বাড়াইছে, ভ্যাট। দেশি পেঁয়াজ মোকামেই কিনতে পড়েছে ১২৮ টাকা। বিক্রি করছি ১৩০ থেকে ১৩২ টাকা।’
ফের কবে থেকে এ দাম হইলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাল থেকেই দাম বেশি।’
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আলাউদ্দিন মিয়ার সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘ আগে মাসে যে বেতন পাইতাম, এখনও তাই পাই। আগে বাচ্চারে ডেইলি ডিম দিতাম একটা। এখন সপ্তাহে দেই একটা। আগে মাংস কিনতাম মাসে একবার। এখন তিন মাসে কিনি একবার।’
আমদানিকারক ব্যবসায়ী বাবলু মিয়া বলেন, ‘ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। যার কারণেই দাম বেড়েছে। এটাতে আমাদের কোনো হাত নাই। সরকার যদি কেজিপ্রতি ৯ টাকা রাজস্ব মাফ করে দেয়, তাহলে কিছুটা দাম কমবে।’
হিলি আমদানি রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি সভাপতি হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আজকে যে পেঁয়াজগুলো বন্দরে প্রবেশ করেছে সেগুলো আগের এলসিতে কেনা হলেও ভারতেই দাম বেড়ে যাওয়ায় হিলিতেও দাম বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা রুপিতে কিনতে পারলেও এখন ৬০ টাকা রুপিতে কিনতে হচ্ছে। সঙ্গে রাজস্ব, পরিবহন এবং অন্যান্য খরচ আছে।’
দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাতে দেশি পেঁয়াজের দাম ভোক্তা পর্যায়ে কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সরকারের বেঁধে দেয় দর একমাস পার হলেও কার্যকর হয়নি, উল্টো বেড়েছে।
ছবি : দেশি পেয়াজ (ইন্টারনেট)
সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩
সোমবার (৩০ অক্টোবর) মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচা বাজারে এক কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়। সেখানে দেশি পেঁয়াজ ও আলুসহ কিছু পণ্য কিনে বের হচ্ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী রিপন মিয়া। তিনি জানান, দেশি পেঁয়াজ কিনতে না পেরে তিনি ভারতীয় পেঁয়াজই কিনেছেন। তবে সেটাও ১২০ টাকা কেজি। অথচ ১৫-২০ দিন আগে এই ভারতীয় পেঁয়াজ তিনি কিনেছিলেন ৭০ টাকা দিয়ে।
বাজারে পণ্যের দামের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু করার নেই। এখন কম খাই।’
তার মতে, ‘সরকার ইচ্ছা করলে’ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা যাতে খাইতে পারি বাঁচতে পারি, সেজন্য অন্তত বাজারটা ঠিক করুক সরকার, নিয়ন্ত্রণ করুক।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে বিডিআর মার্কেট দিয়েছিল। আমরা কিনেকেটে খেতে পারতাম। এখন ওই দোকানগুলো আবার চালু করা দরকার বলে মনে করে তিনি।
তিনি জানান, ছোট এক আঁটি শাকও বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। একটা লাউশাকের আঁটির দামও ৪০ টাকা।
সার্বিকভাবে নিজের পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা না পারি চাইতে, না পারি কিনতে।’
সোমবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২৫ টাকা।
দেশি পেঁয়াজের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচা বাজারের খুচরা আলু, পেঁয়াজ বিক্রেতা বিল্লাল সংবাদকে বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কই গিয়া যে ঠ্যাকে, ঠিক নাই।’
দেশি পেঁয়াজের দাম কি আরও বাড়তে পারে কি না জানতে চাইলে ওই বাজারের আরেক বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘দাম বাড়বো, বাড়ায়ে বেঁচতে হইবো। আমরা তো আর কমাইয়া বেঁচতে পারবো না। তিনি জানান, সোমবারই আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৯০ টাকায়।
রাজধানীর কাঁঠাল বাগান থেকে পাইকার দরে পেঁয়াজ কিনতে কারওয়ান বাজারে এসেছেন খুচরা বিক্রেতা মো. রফিক। পেঁয়াজ কতোটাকা দরে কিনছেন জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমদানি করা পেঁয়াজ কিনেছি কেজি ১৩০ টাকা দিয়ে। পেঁয়াজের দাম বাড়ছে জানি নাই। দোকানে বেইচা আইছি ১১০ টাকা। এখন কতো বেচুম? আর দেশি পেঁয়াজ ”াচ্ছে ১৩৫ টাকা। ৫-৬ দিন আগে আমদানি করা পেঁয়াজ ছিল ৯৬ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ আছিল ১০২ টাকা।’
দেশি পেঁয়াজের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা আল-আমীন বলেন, ‘দেশী পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১৪০ টাকা। আজকে পাইকারিতে কিনতে পড়েছে ১৩২ টাকা।’
কাঁঠাল বাগানে গিয়ে কতো বিক্রি করবেন জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘তাহলে ১৫০ টাকা বেচতে হবে। নিয়ে যেতেই তো সবসহ খরচ পড়বে ১৪০ টাকা। অবস্থা অনেক খারাপ। দোকানে কাস্টমার এসে বলে এত দাম রাখেন ক্যান? দেশি পেঁয়াজের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা আল-আমীন বলেন, ‘দেশী পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১৪০ টাকা। আজকে পাইকারিতে কিনতে পড়েছে ১৩২ টাকা।’
দেশি পেঁয়াজের দরদাম ও বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা আজাদ বলেন, ‘আরে ভ্যাট বাড়াইছে, ভ্যাট। দেশি পেঁয়াজ মোকামেই কিনতে পড়েছে ১২৮ টাকা। বিক্রি করছি ১৩০ থেকে ১৩২ টাকা।’
ফের কবে থেকে এ দাম হইলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাল থেকেই দাম বেশি।’
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আলাউদ্দিন মিয়ার সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘ আগে মাসে যে বেতন পাইতাম, এখনও তাই পাই। আগে বাচ্চারে ডেইলি ডিম দিতাম একটা। এখন সপ্তাহে দেই একটা। আগে মাংস কিনতাম মাসে একবার। এখন তিন মাসে কিনি একবার।’
আমদানিকারক ব্যবসায়ী বাবলু মিয়া বলেন, ‘ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। যার কারণেই দাম বেড়েছে। এটাতে আমাদের কোনো হাত নাই। সরকার যদি কেজিপ্রতি ৯ টাকা রাজস্ব মাফ করে দেয়, তাহলে কিছুটা দাম কমবে।’
হিলি আমদানি রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি সভাপতি হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আজকে যে পেঁয়াজগুলো বন্দরে প্রবেশ করেছে সেগুলো আগের এলসিতে কেনা হলেও ভারতেই দাম বেড়ে যাওয়ায় হিলিতেও দাম বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা রুপিতে কিনতে পারলেও এখন ৬০ টাকা রুপিতে কিনতে হচ্ছে। সঙ্গে রাজস্ব, পরিবহন এবং অন্যান্য খরচ আছে।’
দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাতে দেশি পেঁয়াজের দাম ভোক্তা পর্যায়ে কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সরকারের বেঁধে দেয় দর একমাস পার হলেও কার্যকর হয়নি, উল্টো বেড়েছে।