বাংলাদেশের অর্থনীতি কোভিড-১৯ মহামারী থেকে পুনরুদ্ধার হয়েছে, কিন্তু মহামারীর পর এই পুনরুদ্ধার উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, স্থায়ী ব্যালান্স অব পেমেন্টস ঘাটতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক ২০২৪ সালের ২ এপ্রিল প্রকাশিত তাদের দ্বি-বার্ষিক আপডেটে এ তথ্য জানিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে যে কোভিড-১৯ মহামারীর আগের দশকে গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৬.৬ শতাংশের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.৬ শতাংশে হ্রাস পাবে।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ-এর (আইসিসিবি) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমান গতকাল ২৯ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত আইসিসিবির ২৯তম বার্ষিক কাউন্সিলে এক্সিকিউটিভ বোর্ড রিপোর্ট উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান।
মাহবুবুর রহমান উল্লেখ করেন, ফেব্রুয়ারী ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বৈশ্বিক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে, কারণ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পেয়েছে উচ্চ আমদানি বিল পরিশোধের কারনে। সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাও অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে, এই লক্ষ্য অর্জন এবং লক্ষ্য অর্জনের পর চ্যালেঞ্জগুলোকে কমিয়ে আনার জন্য আইসিসিবি এক্সিকিউটিভ বোর্ড কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে।
প্রস্তাবনাগুলো হলো: ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম-আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের পথে জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে; এই রূপান্তরের প্রত্যাশায় বাংলাদেশকে বাণিজ্য প্রতিযোগিতা বাড়াতে এবং দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে; অলস ঋণের জন্য একটি কার্যকরী রেজোলিউশন ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে, যাতে জরুরী আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে এবং বেসরকারিখাতের ঋণ পুনরুজ্জীবিত হয়; বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক কাঠামো, উন্নয়নের স্তর এবং বাণিজ্য উন্মুক্ততার ভিত্তিতে সম্ভাব্য রাজস্বের প্রায় অর্ধেক সংগ্রহ করে, স্বল্প রাজস্ব সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নের অভাব ঘটায়, যেমন জ্বালানি, পরিবহন, পৌর অবকাঠামো, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য সামাজিকখাতে ব্যয়; বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উন্নত করতে এবং মুদ্রাস্ফীতি সহজ করতে জরুরী আর্থিক সংস্কার করতে হবে এবং একটি একক বিনিময় হার ব্যবস্থা করতে হবে; বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং একটি টেকসই প্রবৃদ্ধির পথ নিশ্চিত করতে, বাংলাদেশকে শাসন, আইনি পূর্বাভাস এবং একটি স্থিতিশীল আইনি পরিবেশ নির্মাণে মনোনিবেশ করতে হবে; ২০২৪ সালে বাংলাদেশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তবে সূচকগুলো একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করে, অর্থনীতিকে বৈচিত্রময় করতে, ফিজিক্যাল এবং ডিজিটাল উভয় অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করতে হবে এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে মনোনিবেশ করতে হবে।
আরেকটি চ্যালেঞ্জ হবে একটি ক্রমবর্ধমান জটিল বৈশ্বিক শৃঙ্খলায় বহিরাগত অর্থনৈতিক নীতিগুলো নেভিগেট করা, যা বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) জন্য সহজ হবেনা। তাই, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোর সাথে ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
কাউন্সিল ২০২৩ সালের অডিট রিপোর্ট অনুমোদন করেছে এবং ২০২৪ সালের জন্য অডিটর নিয়োগ দিয়েছে। কাউন্সিল আইসিসি বাংলাদেশের নতুন এক্সিকিউটিভ বোর্ডের নামও ঘোষণা করেছে, যার মেয়াদকাল হবে এপ্রিল ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস, এডিবি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ ফারুক ডোমুন বিশেষ অতিথি হিসেবে কাউন্সিল সভায় উপস্থিত ছিলেন।
রোববার, ৩০ জুন ২০২৪
বাংলাদেশের অর্থনীতি কোভিড-১৯ মহামারী থেকে পুনরুদ্ধার হয়েছে, কিন্তু মহামারীর পর এই পুনরুদ্ধার উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, স্থায়ী ব্যালান্স অব পেমেন্টস ঘাটতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক ২০২৪ সালের ২ এপ্রিল প্রকাশিত তাদের দ্বি-বার্ষিক আপডেটে এ তথ্য জানিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে যে কোভিড-১৯ মহামারীর আগের দশকে গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৬.৬ শতাংশের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.৬ শতাংশে হ্রাস পাবে।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ-এর (আইসিসিবি) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমান গতকাল ২৯ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত আইসিসিবির ২৯তম বার্ষিক কাউন্সিলে এক্সিকিউটিভ বোর্ড রিপোর্ট উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান।
মাহবুবুর রহমান উল্লেখ করেন, ফেব্রুয়ারী ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বৈশ্বিক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে, কারণ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পেয়েছে উচ্চ আমদানি বিল পরিশোধের কারনে। সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাও অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে, এই লক্ষ্য অর্জন এবং লক্ষ্য অর্জনের পর চ্যালেঞ্জগুলোকে কমিয়ে আনার জন্য আইসিসিবি এক্সিকিউটিভ বোর্ড কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে।
প্রস্তাবনাগুলো হলো: ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম-আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের পথে জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে; এই রূপান্তরের প্রত্যাশায় বাংলাদেশকে বাণিজ্য প্রতিযোগিতা বাড়াতে এবং দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে; অলস ঋণের জন্য একটি কার্যকরী রেজোলিউশন ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে, যাতে জরুরী আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে এবং বেসরকারিখাতের ঋণ পুনরুজ্জীবিত হয়; বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক কাঠামো, উন্নয়নের স্তর এবং বাণিজ্য উন্মুক্ততার ভিত্তিতে সম্ভাব্য রাজস্বের প্রায় অর্ধেক সংগ্রহ করে, স্বল্প রাজস্ব সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নের অভাব ঘটায়, যেমন জ্বালানি, পরিবহন, পৌর অবকাঠামো, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য সামাজিকখাতে ব্যয়; বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উন্নত করতে এবং মুদ্রাস্ফীতি সহজ করতে জরুরী আর্থিক সংস্কার করতে হবে এবং একটি একক বিনিময় হার ব্যবস্থা করতে হবে; বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং একটি টেকসই প্রবৃদ্ধির পথ নিশ্চিত করতে, বাংলাদেশকে শাসন, আইনি পূর্বাভাস এবং একটি স্থিতিশীল আইনি পরিবেশ নির্মাণে মনোনিবেশ করতে হবে; ২০২৪ সালে বাংলাদেশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তবে সূচকগুলো একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করে, অর্থনীতিকে বৈচিত্রময় করতে, ফিজিক্যাল এবং ডিজিটাল উভয় অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করতে হবে এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে মনোনিবেশ করতে হবে।
আরেকটি চ্যালেঞ্জ হবে একটি ক্রমবর্ধমান জটিল বৈশ্বিক শৃঙ্খলায় বহিরাগত অর্থনৈতিক নীতিগুলো নেভিগেট করা, যা বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) জন্য সহজ হবেনা। তাই, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোর সাথে ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
কাউন্সিল ২০২৩ সালের অডিট রিপোর্ট অনুমোদন করেছে এবং ২০২৪ সালের জন্য অডিটর নিয়োগ দিয়েছে। কাউন্সিল আইসিসি বাংলাদেশের নতুন এক্সিকিউটিভ বোর্ডের নামও ঘোষণা করেছে, যার মেয়াদকাল হবে এপ্রিল ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস, এডিবি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ ফারুক ডোমুন বিশেষ অতিথি হিসেবে কাউন্সিল সভায় উপস্থিত ছিলেন।