জাহাজ কিছুটা কম এলেও দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে কন্টেইনার ওঠানামা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ; তবে কমেছে কার্গোতে আনা পণ্যের পরিমাণ।
জাহাজ আসার সংখ্যা ও কার্গো হ্যান্ডলিং কিছুটা কম হলেও কন্টেইনার ওঠানো-নামানোর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং জাহাজের গড় অবস্থানকাল কমে আসাকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বন্দরের কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, অগাস্ট মাসের আগে- পরে যে অস্থিরতা ছিল সেটি কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। এটা ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, জাহাজ আসার সংখ্যা কম মানে আমদানি-রপ্তানি কম তা ঠিক নয়। আগে যেখানে ছোট আকারের জাহাজে ১২০০ থেকে ১৫০০ মতো কন্টেইনার আসতো সেখানে একটু বড় আকারের জাহাজে করে ২০০০ পর্যন্ত কন্টেইনার আসছে। এ অগ্রগতির ধারাবাহিকতা কতটুকু থাকছে তা নতুন বছরের শুরুতে আরও পরিষ্কার হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে আমদানি ও রপ্তানি মিলিয়ে বন্দরে ওঠানামা হয়েছে ১১ লাখ ১ হাজার ৯১৭ টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের হিসেবে) কন্টেইনার।
২০২৩ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৭ টিইইউস। এ হিসাবে ৭১ হাজার ১৬০টি কন্টেইনার বেশি হ্যান্ডলিং হয়েছে; শতকরা হিসাবে বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ২০২২ সালের একই সময়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৯ টিইইউস।
এ বছরের জুলাইয়ে ২ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৫ টিইইউস, অগাস্টে ২ লাখ ৭১ হাজার ৮৬৯ টিইইউস, সেপ্টেম্বরে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩২৪ টিইইউস ও অক্টোবরে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৩৮৯ টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়।
অপরদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই, অগাস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মিলিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কার্গো (খোলা পণ্য) হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ কোটি ৯১ লাখ ১৬ হাজার ৫০২ মেট্রিক টন। ২০২৩ সালের এ সময়ে যা ছিল ৪ কোটি ৬ লাখ ১৬ হাজার ২৮৩ টন। কার্গো হ্যান্ডলিং কমেছে ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৭৮১ টন। ২০২২ সালে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩ কোটি ৯৮ লাখ ২৯ হাজার ৩৬২ টন।
চট্টগ্রাম বন্দরে গত চার মাসে জাহাজ এসেছে ১২৮১টি, যা গত বছরের এ সময়ের তুলনায় ১৬১টি কম। ২০২৩ সালের এ সময়ে এসেছিল ১৩৯২টি। ২০২২ সালের একই সময়ে বন্দরে আসা জাহাজের সংখ্যা ছিল ১৪৬০টি।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, অতীতে যে সংকট ছিল তা কাটিয়ে উঠছে চট্টগ্রাম বন্দর। এর প্রমাণ গত চার মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া সামগ্রিক পরিস্থিতি ভালো থাকায় বন্দরে জমে থাকা কন্টেইনারের সংখ্যাও আগের চেয়ে অনেক কমেছে।
তিনি বলেন, বন্দরে জাহাজ কম এলেও সেটি গুরুত্বপূর্ণ না। কারণ অতীতে কিছুটা ছোট জাহাজে কম কন্টেইনার আসত। এখন বড় জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারছে। সেসব জাহাজ বেশি সংখ্যক কন্টেইনার নিয়ে চট্টগ্রামে আসছে।
কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ বাড়া বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অগ্রগতির সূচক নির্দেশ করে বলে মনে করেন বন্দর সচিব।
গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানও আন্দোলন পরবর্তী সময়ে তিন মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিন মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৮২ টিইইউস, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৬ হাজার ৯৮৬ টিইইউস বেশি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ২২ শতাংশ।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৬ জুলাই পড়ে থাকা কন্টেইনার ছিল সাড়ে ৪৫ হাজার, যা ধারণক্ষমতার প্রায় ৮৫ শতাংশ। গত তিন মাসে তা কমে ৩৪ হাজারে নেমে এসেছে। এছাড়া বন্দরে জাহাজের গড় অপেক্ষমান সময়ও কমে একদিনে নেমে এসেছে।
জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল দেশের প্রধান এ সমুদ্র বন্দরে জাহাজের গড় অবস্থানকালও এক থেকে দেড় দিনে নেমে এসেছে। বন্দরে এলেই সঙ্গে সঙ্গে বার্থিং পাওয়ার তথ্য দেন বন্দর সচিব।
রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
জাহাজ কিছুটা কম এলেও দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে কন্টেইনার ওঠানামা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ; তবে কমেছে কার্গোতে আনা পণ্যের পরিমাণ।
জাহাজ আসার সংখ্যা ও কার্গো হ্যান্ডলিং কিছুটা কম হলেও কন্টেইনার ওঠানো-নামানোর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং জাহাজের গড় অবস্থানকাল কমে আসাকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বন্দরের কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, অগাস্ট মাসের আগে- পরে যে অস্থিরতা ছিল সেটি কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। এটা ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, জাহাজ আসার সংখ্যা কম মানে আমদানি-রপ্তানি কম তা ঠিক নয়। আগে যেখানে ছোট আকারের জাহাজে ১২০০ থেকে ১৫০০ মতো কন্টেইনার আসতো সেখানে একটু বড় আকারের জাহাজে করে ২০০০ পর্যন্ত কন্টেইনার আসছে। এ অগ্রগতির ধারাবাহিকতা কতটুকু থাকছে তা নতুন বছরের শুরুতে আরও পরিষ্কার হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে আমদানি ও রপ্তানি মিলিয়ে বন্দরে ওঠানামা হয়েছে ১১ লাখ ১ হাজার ৯১৭ টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের হিসেবে) কন্টেইনার।
২০২৩ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৭ টিইইউস। এ হিসাবে ৭১ হাজার ১৬০টি কন্টেইনার বেশি হ্যান্ডলিং হয়েছে; শতকরা হিসাবে বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ২০২২ সালের একই সময়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৯ টিইইউস।
এ বছরের জুলাইয়ে ২ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৫ টিইইউস, অগাস্টে ২ লাখ ৭১ হাজার ৮৬৯ টিইইউস, সেপ্টেম্বরে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩২৪ টিইইউস ও অক্টোবরে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৩৮৯ টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়।
অপরদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই, অগাস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মিলিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কার্গো (খোলা পণ্য) হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ কোটি ৯১ লাখ ১৬ হাজার ৫০২ মেট্রিক টন। ২০২৩ সালের এ সময়ে যা ছিল ৪ কোটি ৬ লাখ ১৬ হাজার ২৮৩ টন। কার্গো হ্যান্ডলিং কমেছে ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৭৮১ টন। ২০২২ সালে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩ কোটি ৯৮ লাখ ২৯ হাজার ৩৬২ টন।
চট্টগ্রাম বন্দরে গত চার মাসে জাহাজ এসেছে ১২৮১টি, যা গত বছরের এ সময়ের তুলনায় ১৬১টি কম। ২০২৩ সালের এ সময়ে এসেছিল ১৩৯২টি। ২০২২ সালের একই সময়ে বন্দরে আসা জাহাজের সংখ্যা ছিল ১৪৬০টি।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, অতীতে যে সংকট ছিল তা কাটিয়ে উঠছে চট্টগ্রাম বন্দর। এর প্রমাণ গত চার মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া সামগ্রিক পরিস্থিতি ভালো থাকায় বন্দরে জমে থাকা কন্টেইনারের সংখ্যাও আগের চেয়ে অনেক কমেছে।
তিনি বলেন, বন্দরে জাহাজ কম এলেও সেটি গুরুত্বপূর্ণ না। কারণ অতীতে কিছুটা ছোট জাহাজে কম কন্টেইনার আসত। এখন বড় জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারছে। সেসব জাহাজ বেশি সংখ্যক কন্টেইনার নিয়ে চট্টগ্রামে আসছে।
কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ বাড়া বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অগ্রগতির সূচক নির্দেশ করে বলে মনে করেন বন্দর সচিব।
গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানও আন্দোলন পরবর্তী সময়ে তিন মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিন মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৮২ টিইইউস, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৬ হাজার ৯৮৬ টিইইউস বেশি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ২২ শতাংশ।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৬ জুলাই পড়ে থাকা কন্টেইনার ছিল সাড়ে ৪৫ হাজার, যা ধারণক্ষমতার প্রায় ৮৫ শতাংশ। গত তিন মাসে তা কমে ৩৪ হাজারে নেমে এসেছে। এছাড়া বন্দরে জাহাজের গড় অপেক্ষমান সময়ও কমে একদিনে নেমে এসেছে।
জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল দেশের প্রধান এ সমুদ্র বন্দরে জাহাজের গড় অবস্থানকালও এক থেকে দেড় দিনে নেমে এসেছে। বন্দরে এলেই সঙ্গে সঙ্গে বার্থিং পাওয়ার তথ্য দেন বন্দর সচিব।