আমনের ভরা মৌসুমেও বেড়েছে চালের দাম। দুই সপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৮ টাকা। সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশের ওপর। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজের দামও, কেজিতে ১০ টাকা। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি। বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দাম।
চালের দাম বৃদ্ধির তথ্য সরকারি সংস্থা টিসিবি’র গতকালের ঢাকা মহানগরের বাজার দরের তালিকাতে মেলে। ১ বছরের ব্যবধানে সরু চালের দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশ, মাঝারি চালে ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ আর মোটা চালে বেড়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ।
রাজধানীর শ্যামলীতে একটি খাবারের হোটেলে ১ প্লেট ভাত ২০ টাকা আর ১ জনের পরিমান সবজির বাটি বিক্রি করছেন ৩০ টাকায়। ওই খাবারের হোটেলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন দেলওয়ার হোসেন। তার কাছে জানতে চাই ‘সবজির দামতো কমেছে এখনও ৩০ টাকা রাখছেন কেন?’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘হ্যাঁ, দাম কমছে। চালের দাম বাড়ছে, তেলের দাম বাড়ছে। আর গাড়ী ভাড়া কি কমছে?
তিনি বলেন, ‘দুইদিন ধরে মোবাইলে আমরা যে সবজির দেখি, ওইভাবে দাম কিন্তু কমে নাই। কেউ কফি কেনে না, বাজারে গিয়ে দেখি ৪০ টাকা। যদিও আমরা আড়তদার থেকে পাইকারি দরে চাল কিনি তারপরও কয়েক দিন আগে যে চাল কেজি কিনেছি ৭২ টাকায়, সেই চালই আজ ৭৬ টাকায় কিনতে হয়েছে। পাম তেলেরও একই অবস্থা। কেজি কিনতে হচ্ছে ১৭২ টাকায়।’
চালের দামের বিষয়ে গতকাল কথা হয় রাজধানীর শান্তি নগর কাঁচা বাজারের ফিরোজ রাইস এজেন্সির স্বত্তাধিকারী ফিরোজ আলমের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘চালের দাম বাড়ছে। মিনিকেট চাল কেজি ৮০ টাকা। এই চাল কয়েকদিন আগেও বিক্রি করেছি ৭২ টাকা। আর বিআর-২৮ চাল কেজি ৬৫ টাকা। আমরা যেখান থেকে চাল নিয়ে আসি তারা বলে চালের সংকট।’
ওই বাজার থেকে তিন কেজি চাল কিনে অন্যপণ্য কেনার জন্য ঘুরছেন বেসরকারি চাকরিজীবী। তার ক্রয়কৃত চালের জাত ও দাম জানতে চাই তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এটাও নাজিরে কয়, কেজি নিলো ৬৮ টাকা। আরেক নাজির চাল আছে তার কেজি ৮৫ টাকা। আজ যে চাল ৬৮ টাকা দিয়ে নিলাম কয়েকদিন আগেও এই চাল কিনছি ৬০ টাকায়। এই চাল ৬৮ টাকায় খামু ক্যা, এই চালতো খামু ৫০ টাকায়।
দেশে ৩০ লাখ রহিঙ্গ আছে, তারপর চোর-ডাকাত, সিন্ডিকেট-মিন্ডিকেট আছে বুঝেনে তো আপনি। বাংলাদেশে কিছুর (পণ্য) দাম বাড়লে আর কমে না।’
‘ব্যাংকে ১ বছরে ১০ লাখ টাকা লেন-দেন করছি, মোবাইলে ম্যসেজ আইছে ২৭৫০ টাকা কাটি নিয়া গেছে। কেন, আগে কোনো সময় কাটেনি তো?,’ এমন অভিযোগ করেন তিনি।
বাজারভেদে দেশি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। যা ৩ দিন আগেও বিক্রি হয়েছে কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা আর একসপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দামও ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৯০ টাকায়।
প্রায় দেড় মাসেও সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট পুরোপুরি কাটেনি। বেশিরভাগ দোকানে তেল পাওয়া গেলেও অনেক মুদি দোকানে চাহিদা অনুযায় তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোনো কোনো দোকানে তেলেই মিলছে না। গত ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানো হয়। কিন্তু ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো এখনো বাজারে ঠিকভাবে বোতলজাত সয়াবিন সরবরাহ করছে না বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতাদের। তবে, যে সব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে সরকারের নতুন বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
সয়াবিন তেলের সরবরাহের বিষয়ে জানতে চাইলে শান্তিনগর কাঁচা বাজারের মুদি দোকানি মেহেদি হাসান সংবাদকে বলেন, ‘১৫ দিন ধরে হাফ লিাটার, ১ লিটার ও ২ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল নাই। দোকানে শুধু কয়েকটা ৫ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল আছে। নতুন দামেই বিক্রি করছি।’
বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। সোনালী জাতের মুরগি ৩৫০ টাকা আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকায়। এছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা আর খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায়।
বাজারে ঢেঁড়স-করলা-ধুন্দল-ঝিঙা কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি-টমেটো ৮০ টাকা, পটল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এছাড়া চিচিঙ্গা- শিম-লম্বা বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। আকারভেদে প্রতি পিস লাউ ও চাল কুমড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ফুলকপি প্রতিপিস ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫
আমনের ভরা মৌসুমেও বেড়েছে চালের দাম। দুই সপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৮ টাকা। সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশের ওপর। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজের দামও, কেজিতে ১০ টাকা। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি। বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দাম।
চালের দাম বৃদ্ধির তথ্য সরকারি সংস্থা টিসিবি’র গতকালের ঢাকা মহানগরের বাজার দরের তালিকাতে মেলে। ১ বছরের ব্যবধানে সরু চালের দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশ, মাঝারি চালে ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ আর মোটা চালে বেড়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ।
রাজধানীর শ্যামলীতে একটি খাবারের হোটেলে ১ প্লেট ভাত ২০ টাকা আর ১ জনের পরিমান সবজির বাটি বিক্রি করছেন ৩০ টাকায়। ওই খাবারের হোটেলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন দেলওয়ার হোসেন। তার কাছে জানতে চাই ‘সবজির দামতো কমেছে এখনও ৩০ টাকা রাখছেন কেন?’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘হ্যাঁ, দাম কমছে। চালের দাম বাড়ছে, তেলের দাম বাড়ছে। আর গাড়ী ভাড়া কি কমছে?
তিনি বলেন, ‘দুইদিন ধরে মোবাইলে আমরা যে সবজির দেখি, ওইভাবে দাম কিন্তু কমে নাই। কেউ কফি কেনে না, বাজারে গিয়ে দেখি ৪০ টাকা। যদিও আমরা আড়তদার থেকে পাইকারি দরে চাল কিনি তারপরও কয়েক দিন আগে যে চাল কেজি কিনেছি ৭২ টাকায়, সেই চালই আজ ৭৬ টাকায় কিনতে হয়েছে। পাম তেলেরও একই অবস্থা। কেজি কিনতে হচ্ছে ১৭২ টাকায়।’
চালের দামের বিষয়ে গতকাল কথা হয় রাজধানীর শান্তি নগর কাঁচা বাজারের ফিরোজ রাইস এজেন্সির স্বত্তাধিকারী ফিরোজ আলমের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘চালের দাম বাড়ছে। মিনিকেট চাল কেজি ৮০ টাকা। এই চাল কয়েকদিন আগেও বিক্রি করেছি ৭২ টাকা। আর বিআর-২৮ চাল কেজি ৬৫ টাকা। আমরা যেখান থেকে চাল নিয়ে আসি তারা বলে চালের সংকট।’
ওই বাজার থেকে তিন কেজি চাল কিনে অন্যপণ্য কেনার জন্য ঘুরছেন বেসরকারি চাকরিজীবী। তার ক্রয়কৃত চালের জাত ও দাম জানতে চাই তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এটাও নাজিরে কয়, কেজি নিলো ৬৮ টাকা। আরেক নাজির চাল আছে তার কেজি ৮৫ টাকা। আজ যে চাল ৬৮ টাকা দিয়ে নিলাম কয়েকদিন আগেও এই চাল কিনছি ৬০ টাকায়। এই চাল ৬৮ টাকায় খামু ক্যা, এই চালতো খামু ৫০ টাকায়।
দেশে ৩০ লাখ রহিঙ্গ আছে, তারপর চোর-ডাকাত, সিন্ডিকেট-মিন্ডিকেট আছে বুঝেনে তো আপনি। বাংলাদেশে কিছুর (পণ্য) দাম বাড়লে আর কমে না।’
‘ব্যাংকে ১ বছরে ১০ লাখ টাকা লেন-দেন করছি, মোবাইলে ম্যসেজ আইছে ২৭৫০ টাকা কাটি নিয়া গেছে। কেন, আগে কোনো সময় কাটেনি তো?,’ এমন অভিযোগ করেন তিনি।
বাজারভেদে দেশি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। যা ৩ দিন আগেও বিক্রি হয়েছে কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা আর একসপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দামও ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৯০ টাকায়।
প্রায় দেড় মাসেও সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট পুরোপুরি কাটেনি। বেশিরভাগ দোকানে তেল পাওয়া গেলেও অনেক মুদি দোকানে চাহিদা অনুযায় তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোনো কোনো দোকানে তেলেই মিলছে না। গত ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানো হয়। কিন্তু ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো এখনো বাজারে ঠিকভাবে বোতলজাত সয়াবিন সরবরাহ করছে না বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতাদের। তবে, যে সব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে সরকারের নতুন বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
সয়াবিন তেলের সরবরাহের বিষয়ে জানতে চাইলে শান্তিনগর কাঁচা বাজারের মুদি দোকানি মেহেদি হাসান সংবাদকে বলেন, ‘১৫ দিন ধরে হাফ লিাটার, ১ লিটার ও ২ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল নাই। দোকানে শুধু কয়েকটা ৫ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল আছে। নতুন দামেই বিক্রি করছি।’
বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। সোনালী জাতের মুরগি ৩৫০ টাকা আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকায়। এছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা আর খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায়।
বাজারে ঢেঁড়স-করলা-ধুন্দল-ঝিঙা কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি-টমেটো ৮০ টাকা, পটল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এছাড়া চিচিঙ্গা- শিম-লম্বা বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। আকারভেদে প্রতি পিস লাউ ও চাল কুমড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ফুলকপি প্রতিপিস ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।