alt

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর আশা

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফলতা, খাদ্য নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ খাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ, যা চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। তবে, সরকার অর্থনীতির উন্নতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে চেষ্টা চালাচ্ছে।

এই বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাময়িক হিসাবে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ বৃদ্ধির আশা অনুযায়ী ছিল, তবে চূড়ান্ত হিসাবে এটি ১ দশমিক ৬ শতাংশ পয়েন্ট কমে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ হয়েছে। সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, যা পরবর্তীতে কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে প্রবৃদ্ধি তার চেয়েও কম হয়েছে।

গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল, কিন্তু এরপর মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়, যা ছিল দেশটির ইতিহাসের সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি। এর পরবর্তীতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই প্রবৃদ্ধি আরো কমে যায়।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষে বাংলাদেশের মোট জিডিপি দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ২৭ বিলিয়ন টাকা বা প্রায় ৪৫০ বিলিয়ন ডলার। এটি সাময়িক হিসাবের চেয়ে কম। গত বছরের আগস্টে প্রকাশিত সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, জিডিপির আকার ছিল ৪৫৯ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া, মাথাপিছু আয় (পার ক্যাপিটা জিএনআই) দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার, যা পূর্ববর্তী প্রাক্কলন ২ হাজার ৭৮৪ ডলার থেকে কম।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশের অর্থনীতি দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

তিনি জানান, রপ্তানি আয় এবং মূল্যস্ফীতি সহ অন্যান্য অর্থনৈতিক সূচকগুলো ইতিবাচক উন্নতি করেছে। শফিকুল আলম আরো জানান, রপ্তানি আয় গত পাঁচ মাসে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অর্থনৈতিক উন্নতির একটি সূচক।

এছাড়া, নতুন চাকরি সৃষ্টির পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল করে সরকারের সরকারি খরচ হ্রাসের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

দেশের মূল্যস্ফীতি একসময় ১২ শতাংশে পৌঁছেছিল, কিন্তু তা এখন কমে এক অংকের ঘরে চলে এসেছে। সরকার এর জন্য সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি এবং সহায়ক রাজস্ব নীতি গ্রহণ করেছে।

প্রেস সচিব জানিয়েছেন, সরকার ঋণের সুদহার বাড়ানোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। এর ফলে, তিনি আশা করেন, জুলাইয়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এর মধ্যে চলে আসবে।

প্রেস সচিব খাদ্য নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেছেন। গত বছর দেশব্যাপী বন্যা হওয়ায় অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে, কিন্তু সরকার আমদানি করে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করেছে।

তিনি জানান, দেশের ফসল উৎপাদন কিছুটা কম হলেও, সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। গত বছর আউশ এবং আমন ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়েছে, কিন্তু খাদ্য আমদানির মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হয়েছে।

আগামীতে খাদ্য শস্য আরও ৯ লাখ টন আমদানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, ইউরিয়া সারের বাফার স্টক ৮ লাখ টনে উন্নীত করা হয়েছে যা মার্চ মাস পর্যন্ত চলবে।

বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া কমানোর লক্ষ্যে ভর্তুকির পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। সরকারের উদ্যোগে বিদ্যুৎ খাতের উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

এছাড়া, বিদ্যুৎ খাতে নতুন কূপ খনন এবং গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও সিলেট অঞ্চলে গ্যাস উত্তোলনের নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশের গ্যাস খাতের সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হবে।

প্রেস সচিব ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এর কার্যক্রম এবং কমান্ড সেন্টারের উদ্বোধন সম্পর্কেও কথা বলেছেন। এই কমান্ড সেন্টার চালু হওয়ার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে এবং দ্রুত কুইক রেসপন্স প্রদান করা সম্ভব হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, যেমন পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড, এবং র্যাব এই কমান্ড সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সমন্বিত হবে।

প্রেস সচিব বলেন, সামনে আরও কিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে, বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। তবে সরকারের সংকোচনমূলক অর্থনৈতিক নীতি, উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল, এবং চাকরি সৃষ্টির উদ্যোগ অর্থনীতির শক্তি বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি আশাবাদী যে, মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বিশেষত, বিদ্যুৎ খাতের উন্নতি এবং বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহ প্রদান বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী উপকার বয়ে আনবে।

সর্বশেষ, শফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে রয়েছে এবং এর উন্নতির জন্য সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।”

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরও কমতে পারে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

বাজারে গিগাবাইট এআই টপ ১০০ জেড৮৯০ পিসি

ছবি

কর্মসংস্থানের জরুরি পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা

ছবি

শেয়ারবাজারে বড় পতন, এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার সফটওয়্যার চালু করলো এনবিআর

ছবি

ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম ও ডেবিট কার্ডসেবা সাময়িক বন্ধ থাকবে

ছবি

বেপজার ইপিজেডগুলোতে শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু

ছবি

বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আরও ৫ সেবা যুক্ত

ছবি

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছাতে ব্যবসায়ীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান

ছবি

আড়াইগুণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনে বাজার মূলধন কমলো ৩ হাজার কোটি টাকা

ছবি

পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে রোববার ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল

ছবি

বাংলাদেশে ব্লুটুথ হেডফোন ও ডেটা কেবল তৈরির কারখানা করবে চীন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার নিয়ম

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে অপো এ৫ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট

ছবি

নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির সঙ্গে বেড়েছে চাল ও মুরগির দামও

ছবি

ডিসেম্বরের মধ্যে এনবিআরের কার্যক্রম দুই ভাগ হয়ে যাবে

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৭ মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ

ছবি

শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর আমানত এক মাসে বেড়েছে ৮ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা

ছবি

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে মূসক অব্যাহতি

ছবি

অর্থ বিভাগের পরিপত্র: ৯ মাসে ৬০ শতাংশ খরচ করতে না পারলে অর্থছাড় বন্ধ

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে মিতসুবিশি’র নতুন এক্সপ্যান্ডার ব্ল্যাক সিরিজ

ছবি

বেসিসের নতুন প্রশাসক আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ্ খান

ছবি

দারাজ বাংলাদেশের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৯.৯ অ্যানিভার্সারি মেগা সেল

ছবি

শাওমি বাজারে নিয়ে এলো রেডমি প্যাড ২

ছবি

নভেম্বরের মধ্যেই একীভূত হবে পাঁচ ব্যাংক

ছবি

আইএমএফ-এর এমডি’র সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ভিডিও কনফারেন্স ১৬ সেপ্টেম্বর

ছবি

স্যালভো কেমিক্যালের শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব ফের বাতিল করলো বিএসইসি

ছবি

সর্ববৃহৎ-অত্যাধুনিক ওয়াটার প্রোডাকশন প্ল্যান্ট উদ্বোধন করলো আকিজ ভেঞ্চার

ছবি

বহুজাতিক কোম্পানির অর্থপাচার ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়া নজরদারি, প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

ছবি

পুনঃঅর্থায়ন তহবিল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংকের চুক্তি সই

ছবি

বিভিন্ন ধরনের বন্ডে সংশোধনী আনতে যাচ্ছে বিএসইসি

ছবি

শেয়ারে কারসাজি, ছয় ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা, একজন ৫ বছর নিষিদ্ধ শেয়ারবাজারে

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে ইপিএ করতে জাপান আগ্রহী: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

রপ্তানিকারকদের শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেবে এনবিআর: চেয়ারম্যান

ছবি

আটাব নির্বাচন: প্যানেল প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবেন প্রশাসক

tab

news » business

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর আশা

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফলতা, খাদ্য নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ খাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ, যা চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। তবে, সরকার অর্থনীতির উন্নতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে চেষ্টা চালাচ্ছে।

এই বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাময়িক হিসাবে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ বৃদ্ধির আশা অনুযায়ী ছিল, তবে চূড়ান্ত হিসাবে এটি ১ দশমিক ৬ শতাংশ পয়েন্ট কমে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ হয়েছে। সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, যা পরবর্তীতে কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে প্রবৃদ্ধি তার চেয়েও কম হয়েছে।

গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল, কিন্তু এরপর মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়, যা ছিল দেশটির ইতিহাসের সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি। এর পরবর্তীতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই প্রবৃদ্ধি আরো কমে যায়।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষে বাংলাদেশের মোট জিডিপি দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ২৭ বিলিয়ন টাকা বা প্রায় ৪৫০ বিলিয়ন ডলার। এটি সাময়িক হিসাবের চেয়ে কম। গত বছরের আগস্টে প্রকাশিত সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, জিডিপির আকার ছিল ৪৫৯ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া, মাথাপিছু আয় (পার ক্যাপিটা জিএনআই) দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার, যা পূর্ববর্তী প্রাক্কলন ২ হাজার ৭৮৪ ডলার থেকে কম।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশের অর্থনীতি দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

তিনি জানান, রপ্তানি আয় এবং মূল্যস্ফীতি সহ অন্যান্য অর্থনৈতিক সূচকগুলো ইতিবাচক উন্নতি করেছে। শফিকুল আলম আরো জানান, রপ্তানি আয় গত পাঁচ মাসে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অর্থনৈতিক উন্নতির একটি সূচক।

এছাড়া, নতুন চাকরি সৃষ্টির পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল করে সরকারের সরকারি খরচ হ্রাসের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

দেশের মূল্যস্ফীতি একসময় ১২ শতাংশে পৌঁছেছিল, কিন্তু তা এখন কমে এক অংকের ঘরে চলে এসেছে। সরকার এর জন্য সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি এবং সহায়ক রাজস্ব নীতি গ্রহণ করেছে।

প্রেস সচিব জানিয়েছেন, সরকার ঋণের সুদহার বাড়ানোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। এর ফলে, তিনি আশা করেন, জুলাইয়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এর মধ্যে চলে আসবে।

প্রেস সচিব খাদ্য নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেছেন। গত বছর দেশব্যাপী বন্যা হওয়ায় অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে, কিন্তু সরকার আমদানি করে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করেছে।

তিনি জানান, দেশের ফসল উৎপাদন কিছুটা কম হলেও, সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। গত বছর আউশ এবং আমন ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়েছে, কিন্তু খাদ্য আমদানির মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হয়েছে।

আগামীতে খাদ্য শস্য আরও ৯ লাখ টন আমদানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, ইউরিয়া সারের বাফার স্টক ৮ লাখ টনে উন্নীত করা হয়েছে যা মার্চ মাস পর্যন্ত চলবে।

বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া কমানোর লক্ষ্যে ভর্তুকির পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। সরকারের উদ্যোগে বিদ্যুৎ খাতের উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

এছাড়া, বিদ্যুৎ খাতে নতুন কূপ খনন এবং গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও সিলেট অঞ্চলে গ্যাস উত্তোলনের নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশের গ্যাস খাতের সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হবে।

প্রেস সচিব ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এর কার্যক্রম এবং কমান্ড সেন্টারের উদ্বোধন সম্পর্কেও কথা বলেছেন। এই কমান্ড সেন্টার চালু হওয়ার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে এবং দ্রুত কুইক রেসপন্স প্রদান করা সম্ভব হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, যেমন পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড, এবং র্যাব এই কমান্ড সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সমন্বিত হবে।

প্রেস সচিব বলেন, সামনে আরও কিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে, বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। তবে সরকারের সংকোচনমূলক অর্থনৈতিক নীতি, উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল, এবং চাকরি সৃষ্টির উদ্যোগ অর্থনীতির শক্তি বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি আশাবাদী যে, মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বিশেষত, বিদ্যুৎ খাতের উন্নতি এবং বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহ প্রদান বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী উপকার বয়ে আনবে।

সর্বশেষ, শফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে রয়েছে এবং এর উন্নতির জন্য সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।”

back to top