প্রতারণার মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য প্রতিষ্ঠান মশিউর সিকিউরিটিজ বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্রোকারেজ হাউজটির প্রতারণার ফাঁদে পড়ে বিনিয়োগ করা সব অর্থ হারিয়েছেন অসংখ্য বিনিয়োগকারী। এই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা তাদের হারানো অর্থ ফেরত পেতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বৃহস্পতিবারক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ জানান ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ফারহান জাফরিন নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘আমার ২৫ বছরের চাকরির সব টাকা মেরে দিয়েছে মশিউর সিকিউরিটিজ, কোটি টাকার ওপরে হবে। আমি এখন পথের ভিখারি। আমাদের বাংলাদেশে কি কেউ নেই বাটপারের বিচার করতে পারেন? আমি প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
আরেক ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মশিউর সিকিউরিটিজ অভিনব কায়দায় আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমাদের যে চেক দেওয়া হয়, তা ব্যাংক থেকে প্রত্যক্ষত হয়েছে। মশিউর সিকিউরিটিজের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে আমরা সব হারিয়েছি। আমরা এর প্রতিকার চায়। আমরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী গাজী মো ইলিয়াস। তিনি বলেন, ‘মশিউর সিকিউরিটিজ বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের অ্যাকাউন্টে রক্ষিত শেয়ার ও জমা করা অর্থ বাবদ প্রায় ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সংশ্লিষ্ট হাউজ থেকে ডিপিএ-৬ সিডিবিএলের প্রতিবেদন সংগ্রহপূর্বক দেখতে পাই যে, বাহ্যিকভাবে পোর্টফোলিও সঠিক রেখে অভ্যন্তরীণভাবে সমুদয় শেয়ার বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। এতে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী নিঃস্ব ও অসহায় হয়ে প্রতিকারের আশায় আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা স্তম্ভিত ও বিস্মিত। কারণ দেশের স্বনামধন্য বিএসইসি ও ডিএসসির মতো দুটো নিয়ন্ত্রণকারী কার্যালয়ের দৃষ্টি এড়িয়ে হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্ট থেকে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের টাকা মশিউর সিকিউরিটিজ আত্মসাৎ করেছে যা আমাদের বোধগম্য নয়।’
ক্ষতিগ্রস্ত এই বিনিয়োগকারী বলেন, ‘এরই মধ্যে বহু বিনিয়োগকারী ব্যক্তিগতভাবে লিখিত আকারে ডিএসই ও বিএসইসিকে অবহিত করেছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় গেলেও এ সংক্রান্ত অগ্রগতি অদ্যাবধি আমরা জানতে পারিনি। ভুক্তভোগীদের মধ্যে বহু বিনিয়োগকারী সিনিয়র সিটিজেনসহ অনেক কর্মকর্তা/কর্মচারী সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অবসর গ্রহণপূর্বক অবসরোত্তর প্রাপ্ত অর্থ সংশ্লিষ্ট হাউজে বিনিয়োগ করে বর্তমানে হাহাকার জীবনযাপন করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২৩ ও ২০২৪ সালের প্রাপ্ত ডিভিডেন্ড, বোনাস শেয়ার ও রাইট শেয়ার না পাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা চরমভাবে বিপর্যস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাছাড়া অধিকাংশ বিনিয়োগকারী প্রাপ্য ডিভিডেন্ড/মুনাফায় পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণের ব্যয় নির্বাহ করে আসছে। সব কিছু হারিয়ে বিনিয়োগকারীরা বৃহস্পতিবার নির্বাক-নির্বিকার।’
এ সময় মশিউর সিকিউরিটিজ কীভাবে প্রতারণা করেছে তার একটি চিত্র তুলে ধরেন এই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী। এর মধ্যে রয়েছে- বিনিয়োগকারীকে না জানিয়ে শেয়ার বিক্রি। বিশেষ সফট্ওয়্যার তৈরি করে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিং দেওয়া। বিনিয়োগকারীর মোবাইল ফোন বাদ দিয়ে নিজেদের ফোনে সিডিবিএল-এর মেসেজ আদান-প্রদান। শেয়ার বিক্রির পর চাহিদা দিলে টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ। বিনিয়োগকারীদের চেক দেওয়ার পর ব্যাংক থেকে চেক ডিজঅর্ডার অনার করা হয়। বিশেষ সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে শেয়ার সেল এবং বিনিয়োগকারীদের ভুয়া পোর্টফোলিং তৈরি।
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
প্রতারণার মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য প্রতিষ্ঠান মশিউর সিকিউরিটিজ বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্রোকারেজ হাউজটির প্রতারণার ফাঁদে পড়ে বিনিয়োগ করা সব অর্থ হারিয়েছেন অসংখ্য বিনিয়োগকারী। এই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা তাদের হারানো অর্থ ফেরত পেতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বৃহস্পতিবারক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ জানান ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ফারহান জাফরিন নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘আমার ২৫ বছরের চাকরির সব টাকা মেরে দিয়েছে মশিউর সিকিউরিটিজ, কোটি টাকার ওপরে হবে। আমি এখন পথের ভিখারি। আমাদের বাংলাদেশে কি কেউ নেই বাটপারের বিচার করতে পারেন? আমি প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
আরেক ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মশিউর সিকিউরিটিজ অভিনব কায়দায় আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমাদের যে চেক দেওয়া হয়, তা ব্যাংক থেকে প্রত্যক্ষত হয়েছে। মশিউর সিকিউরিটিজের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে আমরা সব হারিয়েছি। আমরা এর প্রতিকার চায়। আমরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী গাজী মো ইলিয়াস। তিনি বলেন, ‘মশিউর সিকিউরিটিজ বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের অ্যাকাউন্টে রক্ষিত শেয়ার ও জমা করা অর্থ বাবদ প্রায় ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সংশ্লিষ্ট হাউজ থেকে ডিপিএ-৬ সিডিবিএলের প্রতিবেদন সংগ্রহপূর্বক দেখতে পাই যে, বাহ্যিকভাবে পোর্টফোলিও সঠিক রেখে অভ্যন্তরীণভাবে সমুদয় শেয়ার বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। এতে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী নিঃস্ব ও অসহায় হয়ে প্রতিকারের আশায় আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা স্তম্ভিত ও বিস্মিত। কারণ দেশের স্বনামধন্য বিএসইসি ও ডিএসসির মতো দুটো নিয়ন্ত্রণকারী কার্যালয়ের দৃষ্টি এড়িয়ে হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্ট থেকে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের টাকা মশিউর সিকিউরিটিজ আত্মসাৎ করেছে যা আমাদের বোধগম্য নয়।’
ক্ষতিগ্রস্ত এই বিনিয়োগকারী বলেন, ‘এরই মধ্যে বহু বিনিয়োগকারী ব্যক্তিগতভাবে লিখিত আকারে ডিএসই ও বিএসইসিকে অবহিত করেছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় গেলেও এ সংক্রান্ত অগ্রগতি অদ্যাবধি আমরা জানতে পারিনি। ভুক্তভোগীদের মধ্যে বহু বিনিয়োগকারী সিনিয়র সিটিজেনসহ অনেক কর্মকর্তা/কর্মচারী সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অবসর গ্রহণপূর্বক অবসরোত্তর প্রাপ্ত অর্থ সংশ্লিষ্ট হাউজে বিনিয়োগ করে বর্তমানে হাহাকার জীবনযাপন করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২৩ ও ২০২৪ সালের প্রাপ্ত ডিভিডেন্ড, বোনাস শেয়ার ও রাইট শেয়ার না পাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা চরমভাবে বিপর্যস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাছাড়া অধিকাংশ বিনিয়োগকারী প্রাপ্য ডিভিডেন্ড/মুনাফায় পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণের ব্যয় নির্বাহ করে আসছে। সব কিছু হারিয়ে বিনিয়োগকারীরা বৃহস্পতিবার নির্বাক-নির্বিকার।’
এ সময় মশিউর সিকিউরিটিজ কীভাবে প্রতারণা করেছে তার একটি চিত্র তুলে ধরেন এই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী। এর মধ্যে রয়েছে- বিনিয়োগকারীকে না জানিয়ে শেয়ার বিক্রি। বিশেষ সফট্ওয়্যার তৈরি করে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিং দেওয়া। বিনিয়োগকারীর মোবাইল ফোন বাদ দিয়ে নিজেদের ফোনে সিডিবিএল-এর মেসেজ আদান-প্রদান। শেয়ার বিক্রির পর চাহিদা দিলে টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ। বিনিয়োগকারীদের চেক দেওয়ার পর ব্যাংক থেকে চেক ডিজঅর্ডার অনার করা হয়। বিশেষ সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে শেয়ার সেল এবং বিনিয়োগকারীদের ভুয়া পোর্টফোলিং তৈরি।