alt

ক্যাম্পাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

খাসি তুমি কার!

প্রতিনিধি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪

পবিত্র ঈদুল আজহার দিন দুপুরে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারা শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৫ টি খাসি দিয়ে আপ্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন। ঘোষণার পর সেটার বাস্তবায়নও হয়েছে। প্রশাসন আপ্যায়নের ঘোষণা দিলেও আয়োজন বাস্তবায়ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা প্রশাসনের অর্থায়নের বিষয়টি স্বীকার করলেও অন্যান্য নেতাকর্মীরা এই আয়োজনে প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে ফেসবুকে ট্রোল করছেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দেড় লক্ষাধিক টাকা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, আর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে ছাত্রলীগ। এঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের খাসি আসলে কার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারা শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপ্যায়নের ঘোষণা দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ৫ টি খাসির মাংস রান্না করে সাথে পোলাও-কোরমার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করা হবে বলে জানানো হয়। এর জন্য দেড় লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ৬ টি খাসি কিনেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন। ৬ টি খাসির মূল্য ৭০ হাজার টাকার বেশি নয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। ৬ টি খাসি থেকে ৬৫-৬৮ কেজির মতো মাংস হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মাংস এবং পোলাও রান্না করে সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের বিতরণও করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের পাতে মাংস দেয়া হয় মাত্র ২ পিস করে। সাথে পোলাও ও কোমল পানীয় এবং একটি করে ডিম দেয়া হয়।

এদিকে শাখা ছাত্রলীগ সাংবাদিকদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রচার করছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের ক্রেডিট নিতে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের দিয়ে ফেসবুকে পোস্টও করানো হচ্ছে। তারা প্রশাসনকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে ছাত্রলীগ আপ্যায়ন করেছে বলে প্রচার করছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মীরা ফেসবুকে পোস্ট করে প্রশাসনের আয়োজন কোথায় জানতে চেয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের উদ্যোগটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এর জন্য তারা অর্থও বরাদ্দ দিয়েছে। উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে শাখা ছাত্রলীগ।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, ব্যানার টানিয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঈদের দিন শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করা হয়েছে বলে পোস্ট দিচ্ছেন অনেক নেতাকর্মী। কোনো কোনো পোস্টে শিক্ষার্থীদের জন্য জবি প্রশাসন আপ্যায়নের কোনো ব্যবস্থা করেনি জানিয়ে ছাত্রলীগ থেকে সব আয়োজন করা হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বে থাকা একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফিস্ট আয়োজন করার আগ্রহ অনেক আগেই প্রকাশ করেন। ঈদের কিছুদিন আগে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আক্তার হোসাইনও একটি আয়োজনের বিষয়ে অনুরোধ করে প্রশাসনকে। তখন প্রশাসন থেকে বলা হয় উপাচার্য বরাবর শিক্ষার্থীরা আবেদন দিলে ব্যবস্থা করা যাবে। পরে শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে আবেদন দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবেদন মঞ্জুর করে।

ফিস্ট আয়োজনে উপাচার্যের আগ্রহের বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য আপ্যায়নের উদ্যোগ নিতে চেয়েছিলেন। সেজন্য ঈদ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে ক্যাম্পাসে থেকে যাওয়া শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য আপ্যয়নের ব্যবস্থা করা হয়। ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সুষ্ঠুভাবে তা বণ্টন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে আয়োজনে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সার্বিক খোঁজ-খবর রাখা হয়েছে। রাতেও আমাদের সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার ও মনির উপস্থিত থেকে দেখাশোনা করেছে।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস. এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার পক্ষ থেকে এমন একটি আয়োজন করার চিন্তাভাবনা আমরা অনেক আগেই করেছি। পরবর্তীতে উপাচার্যকে জানালে তিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি আবেদন করতে বলেন। আমরা আবেদন করি, প্রশাসন থেকে কন্ট্রিবিউশানও করা হয় বাকি টাকা আমরা ম্যানেজ করি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে।

তবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি বলছেন, আয়োজনে ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয়ই অর্থায়ন করেছে। তিনি বলেন, ‘আয়োজন আলহামদুলিল্লাহ ভালোভাবে হয়েছে। অর্থায়ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও করেছে। আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও করেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় এই মহানুভবতার একটি কাজ করেছেন, আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আয়োজনের দায়িত্বও শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়।’

ছবি

জাবিতে উপড়ে ফেলা হলো অর্ধশতাধিক গাছ

ছবি

বিচার না হওয়া ও ‘স্বচ্ছতার অভাব’—জাকসু নির্বাচন পেছানোর পেছনে নানা ব্যাখ্যা

রাবিতে প্রেমঘটিত হতাশায় শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা প্রচেষ্টা’

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কমিশন গঠনের আশ্বাস, ঘোষণা আসতে পারে সোমবার

ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ঢাবিতে বিশেষ ভর্তি সুবিধা

ছবি

সাম্য হত্যা: তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি

ছবি

রাবির বঙ্গবন্ধু হলের নাম এখন ‘বিজয়-২৪’

ছবি

চবিতে ক্লাস করতে আসা বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর, মুচলেকা নিয়ে ছাড়

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠন

ছবি

সরকারি সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসক অধ্যাপক ইলিয়াস

ছবি

রায় বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে হাইকোর্টে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের অবস্থান

দাবি মানার প্রতিশ্রুতিতে আন্দোলন স্থগিত করেন জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

ছবি

যমুনার উদ্দেশে জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লং মার্চ শুরু

ছবি

ছুরিকাঘাতে ঢাবি ছাত্রদল নেতা সাম্যের মৃত্যু, বিক্ষোভ

ছবি

বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে জবি শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ’ ঘোষণা

ছবি

চায়ের দোকানের মালিকানা নিয়ে ঝামেলা, তালা ঝুলিয়ে ‘দিলেন জবি ছাত্রদল নেতা’

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের খবরে ঢাবিতে স্লোগানে মুখর রাত

আবু সাঈদের জীবন দান দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দার্শনিক ঘটনা: ফরহাদ মজহার

ছবি

কুয়েট উপাচার্যের দায়িত্বে হযরত আলী

ছবি

রাকসু নির্বাচন: ধীরগতি, ঝুলে আছে বিধিমালা ও ভোটার তালিকা

ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: গভীর রাতে রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

ছবি

৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, ভোট ৩১ জুলাই

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চার মাসে চারজনের আত্মহত্যা, প্রবণতা কি বাড়ছে? কী করছে কাউন্সেলিং সেন্টার?

ছবি

গলায় ফাঁস দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, পুলিশ হেফাজতে ১

ছবি

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হলো ইউআইইউ

ছবি

কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ছবি

জবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বুকশেলফ প্রদান

ছবি

পিএসসি সংস্কারে ৮ দফা দাবি জবি শিক্ষার্থীদের

ছবি

জবি রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি: ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম, কুশপুত্তলিকা দাহ

ছবি

‘এলাকার কলেজে পড়লে পারতে, … গেট আউট’, জবি শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রার

ছবি

কুয়েট শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ শিক্ষা উপদেষ্টার

ছবি

বাউবিতে ‘উন্মুক্ত ও দূরশিক্ষণের জন্য মিডিয়া ও ডিজিটাল প্রোডাকশন কৌশল’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ

ছবি

‎জবি শিক্ষার্থীদের কাঁথা-বালিশ কর্মসূচি ঘোষণা

কুয়েট উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

ছবি

খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণ, ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ

tab

ক্যাম্পাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

খাসি তুমি কার!

প্রতিনিধি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪

পবিত্র ঈদুল আজহার দিন দুপুরে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারা শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৫ টি খাসি দিয়ে আপ্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন। ঘোষণার পর সেটার বাস্তবায়নও হয়েছে। প্রশাসন আপ্যায়নের ঘোষণা দিলেও আয়োজন বাস্তবায়ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা প্রশাসনের অর্থায়নের বিষয়টি স্বীকার করলেও অন্যান্য নেতাকর্মীরা এই আয়োজনে প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে ফেসবুকে ট্রোল করছেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দেড় লক্ষাধিক টাকা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, আর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে ছাত্রলীগ। এঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের খাসি আসলে কার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারা শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপ্যায়নের ঘোষণা দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ৫ টি খাসির মাংস রান্না করে সাথে পোলাও-কোরমার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করা হবে বলে জানানো হয়। এর জন্য দেড় লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ৬ টি খাসি কিনেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন। ৬ টি খাসির মূল্য ৭০ হাজার টাকার বেশি নয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। ৬ টি খাসি থেকে ৬৫-৬৮ কেজির মতো মাংস হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মাংস এবং পোলাও রান্না করে সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের বিতরণও করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের পাতে মাংস দেয়া হয় মাত্র ২ পিস করে। সাথে পোলাও ও কোমল পানীয় এবং একটি করে ডিম দেয়া হয়।

এদিকে শাখা ছাত্রলীগ সাংবাদিকদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রচার করছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের ক্রেডিট নিতে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের দিয়ে ফেসবুকে পোস্টও করানো হচ্ছে। তারা প্রশাসনকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে ছাত্রলীগ আপ্যায়ন করেছে বলে প্রচার করছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মীরা ফেসবুকে পোস্ট করে প্রশাসনের আয়োজন কোথায় জানতে চেয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের উদ্যোগটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এর জন্য তারা অর্থও বরাদ্দ দিয়েছে। উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে শাখা ছাত্রলীগ।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, ব্যানার টানিয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঈদের দিন শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করা হয়েছে বলে পোস্ট দিচ্ছেন অনেক নেতাকর্মী। কোনো কোনো পোস্টে শিক্ষার্থীদের জন্য জবি প্রশাসন আপ্যায়নের কোনো ব্যবস্থা করেনি জানিয়ে ছাত্রলীগ থেকে সব আয়োজন করা হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বে থাকা একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফিস্ট আয়োজন করার আগ্রহ অনেক আগেই প্রকাশ করেন। ঈদের কিছুদিন আগে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আক্তার হোসাইনও একটি আয়োজনের বিষয়ে অনুরোধ করে প্রশাসনকে। তখন প্রশাসন থেকে বলা হয় উপাচার্য বরাবর শিক্ষার্থীরা আবেদন দিলে ব্যবস্থা করা যাবে। পরে শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে আবেদন দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবেদন মঞ্জুর করে।

ফিস্ট আয়োজনে উপাচার্যের আগ্রহের বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য আপ্যায়নের উদ্যোগ নিতে চেয়েছিলেন। সেজন্য ঈদ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে ক্যাম্পাসে থেকে যাওয়া শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য আপ্যয়নের ব্যবস্থা করা হয়। ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সুষ্ঠুভাবে তা বণ্টন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে আয়োজনে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সার্বিক খোঁজ-খবর রাখা হয়েছে। রাতেও আমাদের সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার ও মনির উপস্থিত থেকে দেখাশোনা করেছে।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস. এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার পক্ষ থেকে এমন একটি আয়োজন করার চিন্তাভাবনা আমরা অনেক আগেই করেছি। পরবর্তীতে উপাচার্যকে জানালে তিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি আবেদন করতে বলেন। আমরা আবেদন করি, প্রশাসন থেকে কন্ট্রিবিউশানও করা হয় বাকি টাকা আমরা ম্যানেজ করি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে।

তবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি বলছেন, আয়োজনে ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয়ই অর্থায়ন করেছে। তিনি বলেন, ‘আয়োজন আলহামদুলিল্লাহ ভালোভাবে হয়েছে। অর্থায়ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও করেছে। আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও করেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় এই মহানুভবতার একটি কাজ করেছেন, আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আয়োজনের দায়িত্বও শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়।’

back to top