হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো উত্তাল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
আজ শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল ৩টায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে এসে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। তারা প্রায় এক ঘন্টার মতো শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখে।
অবরোধ শেষে নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল রোববার বিকেল তিনটা থেকে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করা হবে। অর্থাৎ সকল ক্যাম্পাসের সামনের সড়ক অবরোধ করবেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া রেলপথ অবরোধেরও ঘোষণা দেন তারা।
কর্মসূচি ঘোষণার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়য়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আজকে আমাদের শাহবাগ ব্লকেড হয়েছে। আগামীকাল থেকে বাংলাদেশ ব্লকেড শুরু হবে। আজকের মতো কালকেও যদি আমাদের শিক্ষার্থী ভাই-বোনেরা আমাদের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
কর্মসূচী ঘোষণা করে আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামীকাল বিকাল তিনটা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। শুধু শাহবাগ মোড় নয়, সাইন্সল্যাব, চানখারপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকার প্রতিটি পয়েন্ট অবরোধ করা হবে। এসব পয়েন্টে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন এবং বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি সফল করবেন। আর ঢাকার বাইরে যেসব শিক্ষার্থীরা আছেন আপনারা জেলায় জেলায় মহাসড়কগুলো অবরোধ করবেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকার মনে করেছে আমরা দুই-তিনদিন রাস্তা অবরোধ করে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে যাব। সরকারের এই ধারণা যে ভুল সেটি আমাদের প্রমাণ করে দিতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি প্রয়োজনে আমরা হরতাল দিতে বাধ্য হবো।
তিনি আরো বলেন, কোর্ট এবং ছাত্রসমাজকে মুখোমুখি করে সরকার কেন দায়িত্বহীন ভূমিকা পালন করছে? নির্বাহী বিভাগ এর দায় এড়াতে পারে না। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী যেখানে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে কোটা থাকবে না, সেই কোটা এখন কেন ফিরে আসলো এর জবাব আমরা চাই। শুধু প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতেই নয় তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণীর চাকরিতেও কোটার বৈষম্য দূর করতে হবে। আমাদের এই আন্দোলন শুধু প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর কোটার জন্য নয়, সকল গ্রেডের কোটা বাতিল করতে হবে।
ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা দিয়ে নাহিদ বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলন একদিন বন্ধ হয়ে যাবে কিন্তু আমাদের আন্দোলন বন্ধ হবে না। শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে গেলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরব না
এদিকে পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী আজ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘটও পালন করবে আন্দোলনকারীরা। এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৬৩টি বিভাগ ও বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবী হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা ভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন পূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধা বঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত); সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধা ভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪
হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো উত্তাল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
আজ শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল ৩টায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে এসে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। তারা প্রায় এক ঘন্টার মতো শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখে।
অবরোধ শেষে নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল রোববার বিকেল তিনটা থেকে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করা হবে। অর্থাৎ সকল ক্যাম্পাসের সামনের সড়ক অবরোধ করবেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া রেলপথ অবরোধেরও ঘোষণা দেন তারা।
কর্মসূচি ঘোষণার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়য়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আজকে আমাদের শাহবাগ ব্লকেড হয়েছে। আগামীকাল থেকে বাংলাদেশ ব্লকেড শুরু হবে। আজকের মতো কালকেও যদি আমাদের শিক্ষার্থী ভাই-বোনেরা আমাদের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
কর্মসূচী ঘোষণা করে আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামীকাল বিকাল তিনটা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। শুধু শাহবাগ মোড় নয়, সাইন্সল্যাব, চানখারপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকার প্রতিটি পয়েন্ট অবরোধ করা হবে। এসব পয়েন্টে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন এবং বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি সফল করবেন। আর ঢাকার বাইরে যেসব শিক্ষার্থীরা আছেন আপনারা জেলায় জেলায় মহাসড়কগুলো অবরোধ করবেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকার মনে করেছে আমরা দুই-তিনদিন রাস্তা অবরোধ করে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে যাব। সরকারের এই ধারণা যে ভুল সেটি আমাদের প্রমাণ করে দিতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি প্রয়োজনে আমরা হরতাল দিতে বাধ্য হবো।
তিনি আরো বলেন, কোর্ট এবং ছাত্রসমাজকে মুখোমুখি করে সরকার কেন দায়িত্বহীন ভূমিকা পালন করছে? নির্বাহী বিভাগ এর দায় এড়াতে পারে না। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী যেখানে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে কোটা থাকবে না, সেই কোটা এখন কেন ফিরে আসলো এর জবাব আমরা চাই। শুধু প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতেই নয় তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণীর চাকরিতেও কোটার বৈষম্য দূর করতে হবে। আমাদের এই আন্দোলন শুধু প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর কোটার জন্য নয়, সকল গ্রেডের কোটা বাতিল করতে হবে।
ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা দিয়ে নাহিদ বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলন একদিন বন্ধ হয়ে যাবে কিন্তু আমাদের আন্দোলন বন্ধ হবে না। শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে গেলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরব না
এদিকে পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী আজ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘটও পালন করবে আন্দোলনকারীরা। এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৬৩টি বিভাগ ও বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবী হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা ভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন পূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধা বঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত); সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধা ভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।