দীর্ঘ ৩৫ বছর পর প্রকাশ্যে আসলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। জাবি শাখা শিবিরের সভাপতি হিসেবে হারুনুর রশিদ রাফি, প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকি এবং সেক্রেটারি হিসেবে মুহিবুর রহমান মুহিবের নাম জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরকে অবাঞ্ছিত দাবি করে তাদের আত্মপ্রকাশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকির সই করা এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে জাকসু সচলসহ ক্যাম্পাসে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির দাবি জানায় সংগঠনটি। পরবর্তীতে, রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করেন শিক্ষার্থীরা। সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিবিরে আত্মপ্রকাশ পাওয়া কমিটিতে থাকা হারুনুর রশিদ রাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের (২০১৬-১৭ সেশন) শিক্ষার্থী। এছাড়াও মুহিবুর রহমান মুহিব বাংলা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের (২০১৭-১৮ সেশন) শিক্ষার্থী এবং প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকি একই ব্যাচের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে সুস্থ ধারার রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে ছাত্রশিবির সবসময় প্রস্তুত। আবাসিক হলগুলোতে কোনো ধরনের দখলদারত্ব, চাঁদাবাজি, মাদকের বিস্তার রোধে ছাত্রশিবির অঙ্গীকারবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ আনা, গবেষণামুখী শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তবায়ন, সুস্থ ধারার সংস্কৃতির বিকাশ ও নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে ছাত্রশিবির কাজ করে যাবে। ছাত্রশিবির চায় ছাত্র সংসদকেন্দ্রিক সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসুক।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ছাত্রশিবিরকে আদর্শিক মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে নিষিদ্ধের একটি বয়ান তৈরি করে এসেছে। আদতে এই বয়ানের কোনো সত্যতা নেই। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪২তম সভায় শিবির নিষিদ্ধের প্রস্তাবনা আসলেও এমন কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। বরং সভার সিদ্ধান্ত ছিল ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাবহির্ভূত বিধায় এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয়’। কোনো মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে না। ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করা ও ট্যাগিং রাজনীতি মূলত ফ্যাসিবাদ কায়েমের সহায়ক শক্তি হিসেবেই কাজ করেছে।
শিবিরের আত্মপ্রকাশ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইজা মেহজাবিন বলেন, ১৯৭১ সালের গণহত্যার সহযোগী সংগঠন জামায়াত-শিবির। শেখ হাসিনার সরকারের হাতে যেমন ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতাকে হত্যার খুনের দাগ রয়েছে, তেমনি ৭১ এর গণহত্যার রক্তের দাগও জামায়াত-শিবিরের হাতে লেগে রয়েছে। এই গণহত্যার দায় তারা অস্বীকার করতে পারে না।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, ১৯৭১ এবং ২০২৪ এই দুই সালকে যারা অস্বীকার করবে তাদের কখনোই জনগণ ক্ষমা করবে না। আজকে দেখলাম যে, শিবির প্রেস রিলিজ দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। ছাত্র শিবিরকে কোনোদিন দেখিনি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আন্দোলন করতে। কোনোদিন কি ওরা শ্রমিক হত্যা নিয়ে আন্দোলন করেছে?
তিনি আরো বলেন, তারা সবসময় শাহবাগ আর শাপলা ভাগাভাগি করতে ব্যস্ত। এরকম বিভাজনের রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ। যে রাজনৈতিক দলের হাতে রক্তের দাগ রয়েছে সেই সংগঠনকে রাজনীতি করতে হলে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে। সেটা সামাজিক বিচারও হতে পারে, আইনি বিচার হতে পারে। এজন্য তাদের ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে ক্যাম্পাসে আসতে হবে।
এদিকে ইসলামী ছাত্রশিবির সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ জানান, গত ১৫ বছরে ধরে আওয়ামী দুঃশাসনের কারণে রাজনীতির ধরণ পাল্টে গেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের রাজনীতি চাই। চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার আলোকে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক সংস্কার হোক। ছাত্ররাজনীতির এ যৌক্তিক সংস্কারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর প্রকাশ্যে আসলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। জাবি শাখা শিবিরের সভাপতি হিসেবে হারুনুর রশিদ রাফি, প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকি এবং সেক্রেটারি হিসেবে মুহিবুর রহমান মুহিবের নাম জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরকে অবাঞ্ছিত দাবি করে তাদের আত্মপ্রকাশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকির সই করা এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে জাকসু সচলসহ ক্যাম্পাসে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির দাবি জানায় সংগঠনটি। পরবর্তীতে, রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করেন শিক্ষার্থীরা। সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিবিরে আত্মপ্রকাশ পাওয়া কমিটিতে থাকা হারুনুর রশিদ রাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের (২০১৬-১৭ সেশন) শিক্ষার্থী। এছাড়াও মুহিবুর রহমান মুহিব বাংলা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের (২০১৭-১৮ সেশন) শিক্ষার্থী এবং প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকি একই ব্যাচের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে সুস্থ ধারার রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে ছাত্রশিবির সবসময় প্রস্তুত। আবাসিক হলগুলোতে কোনো ধরনের দখলদারত্ব, চাঁদাবাজি, মাদকের বিস্তার রোধে ছাত্রশিবির অঙ্গীকারবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ আনা, গবেষণামুখী শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তবায়ন, সুস্থ ধারার সংস্কৃতির বিকাশ ও নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে ছাত্রশিবির কাজ করে যাবে। ছাত্রশিবির চায় ছাত্র সংসদকেন্দ্রিক সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসুক।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ছাত্রশিবিরকে আদর্শিক মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে নিষিদ্ধের একটি বয়ান তৈরি করে এসেছে। আদতে এই বয়ানের কোনো সত্যতা নেই। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪২তম সভায় শিবির নিষিদ্ধের প্রস্তাবনা আসলেও এমন কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। বরং সভার সিদ্ধান্ত ছিল ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাবহির্ভূত বিধায় এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয়’। কোনো মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে না। ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করা ও ট্যাগিং রাজনীতি মূলত ফ্যাসিবাদ কায়েমের সহায়ক শক্তি হিসেবেই কাজ করেছে।
শিবিরের আত্মপ্রকাশ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইজা মেহজাবিন বলেন, ১৯৭১ সালের গণহত্যার সহযোগী সংগঠন জামায়াত-শিবির। শেখ হাসিনার সরকারের হাতে যেমন ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতাকে হত্যার খুনের দাগ রয়েছে, তেমনি ৭১ এর গণহত্যার রক্তের দাগও জামায়াত-শিবিরের হাতে লেগে রয়েছে। এই গণহত্যার দায় তারা অস্বীকার করতে পারে না।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, ১৯৭১ এবং ২০২৪ এই দুই সালকে যারা অস্বীকার করবে তাদের কখনোই জনগণ ক্ষমা করবে না। আজকে দেখলাম যে, শিবির প্রেস রিলিজ দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। ছাত্র শিবিরকে কোনোদিন দেখিনি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আন্দোলন করতে। কোনোদিন কি ওরা শ্রমিক হত্যা নিয়ে আন্দোলন করেছে?
তিনি আরো বলেন, তারা সবসময় শাহবাগ আর শাপলা ভাগাভাগি করতে ব্যস্ত। এরকম বিভাজনের রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ। যে রাজনৈতিক দলের হাতে রক্তের দাগ রয়েছে সেই সংগঠনকে রাজনীতি করতে হলে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে। সেটা সামাজিক বিচারও হতে পারে, আইনি বিচার হতে পারে। এজন্য তাদের ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে ক্যাম্পাসে আসতে হবে।
এদিকে ইসলামী ছাত্রশিবির সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ জানান, গত ১৫ বছরে ধরে আওয়ামী দুঃশাসনের কারণে রাজনীতির ধরণ পাল্টে গেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের রাজনীতি চাই। চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার আলোকে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক সংস্কার হোক। ছাত্ররাজনীতির এ যৌক্তিক সংস্কারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।