দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বেশ কয়েক জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে কয়েক জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে এবং বাকিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত কাজ চলছে। যদিও দু’জন শিক্ষকের গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব নেই। এমনকি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।
ওই দুই শিক্ষক হলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ও সঙ্গীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহসিনা আক্তার খানম ওরফে লীনা তাপসী খান।
জানা যায়, সঙ্গীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লীনা তাপসী খানের বিরুদ্ধে এ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য বরাবর চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ দেন জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) সাবেক মহাপরিচালক ও সংগীত শিল্পী ইফফাত আরা নার্গিস। অভিযোগে বলা হয়, লীনা তাপসী খানের পিএইচডি অভিসন্দর্ভের ওপর ভিত্তি করে রচিত ‘নজরুল-সঙ্গীতে রাগের ব্যবহার’ গ্রন্থে ২৭৭ পৃষ্ঠার মধ্যে ৮০ পৃষ্ঠার স্বরলিপিসহ ১৬৯ পৃষ্ঠা লীনা তাপসী খানের রচনা নয়। এগুলো অন্যের গ্রন্থ থেকে হুবহু গৃহীত। যথাযথ অনুসন্ধান হলে প্রমাণিত হতে পারে যে ওই পৃষ্ঠাগুলোতে ব্যবহৃত তথ্যও লেখকের নয়।
অভিযোগটি দীর্ঘদিন আমলে না নিয়ে গোপন রাখা হয়। পরে ১৩ জুন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করে সংবাদ সম্মেলন করা হলে ঢাবি উপাচার্য বিষয়টি দেখবেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। যদিও গত আট মাসেও এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
অভিযোগকারী ইফফাত আরা নার্গিস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত। তাই এ বিষয়গুলো (তদন্ত) কিভাবে ও কাকে দিয়ে করাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে। কারণ অন্য দলের শিক্ষক দিয়ে তদন্ত করালে অসাধু কাজের সম্ভাবনা থাকে। সেইজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হয়তো কাজ করতে পারছে না। তাই বিষয়গুলো ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে।
এদিকে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে থেকে ঢাবি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিমের নামও বাদ পড়েনি। চলতি বছরের মার্চে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এ বিষয়ে ঢাবি উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়, ‘পার্টিসিপেশন অব উইমেন ইন অ্যাকুয়াকালচার ইন থ্রি কোস্টাল ডিসট্রিক অব বাংলাদেশ: অ্যাপ্রোচেস টুওয়ার্ডস সাসটেইনেবল লাইভলিহুড’ শিরোনামে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধটির ৮৮ শতাংশ অন্য প্রকাশনার সঙ্গে মিল রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও জানান তারা। কিন্তু এ অভিযোগটিও সুরাহা করার দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ নেয়নি ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
সাদেকা হালিম ও লীনা তাপসী খানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ দুটির বয়স প্রায় বছর গড়িয়েছে। যদিও এসবের ভিত্তিতে কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে এ সব আমাদের নজরে নেই। তথ্যগুলো কোথায় আছে, কি অবস্থায় আছে জানতে হবে।”
এত দীর্ঘ সময়েও অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন না করার কারণ জানতে চাইলে উপাচার্য প্রশ্নটি এড়িয়ে যান এবং সংশ্লিষ্টদেরকে বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য(প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহম্মদ সামাদ বলেন, এটা একটা আলোচিত ঘটনা। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো এজেন্ডা আমার হাতে আসেনি। সিন্ডিকেটে যেকোনো বিষয়ে এজেন্ডা অন্তর্ভুক্ত করার প্রধান দায়িত্ব উপাচার্যের।
বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বেশ কয়েক জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে কয়েক জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে এবং বাকিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত কাজ চলছে। যদিও দু’জন শিক্ষকের গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব নেই। এমনকি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।
ওই দুই শিক্ষক হলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ও সঙ্গীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহসিনা আক্তার খানম ওরফে লীনা তাপসী খান।
জানা যায়, সঙ্গীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লীনা তাপসী খানের বিরুদ্ধে এ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য বরাবর চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ দেন জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) সাবেক মহাপরিচালক ও সংগীত শিল্পী ইফফাত আরা নার্গিস। অভিযোগে বলা হয়, লীনা তাপসী খানের পিএইচডি অভিসন্দর্ভের ওপর ভিত্তি করে রচিত ‘নজরুল-সঙ্গীতে রাগের ব্যবহার’ গ্রন্থে ২৭৭ পৃষ্ঠার মধ্যে ৮০ পৃষ্ঠার স্বরলিপিসহ ১৬৯ পৃষ্ঠা লীনা তাপসী খানের রচনা নয়। এগুলো অন্যের গ্রন্থ থেকে হুবহু গৃহীত। যথাযথ অনুসন্ধান হলে প্রমাণিত হতে পারে যে ওই পৃষ্ঠাগুলোতে ব্যবহৃত তথ্যও লেখকের নয়।
অভিযোগটি দীর্ঘদিন আমলে না নিয়ে গোপন রাখা হয়। পরে ১৩ জুন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করে সংবাদ সম্মেলন করা হলে ঢাবি উপাচার্য বিষয়টি দেখবেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। যদিও গত আট মাসেও এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
অভিযোগকারী ইফফাত আরা নার্গিস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত। তাই এ বিষয়গুলো (তদন্ত) কিভাবে ও কাকে দিয়ে করাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে। কারণ অন্য দলের শিক্ষক দিয়ে তদন্ত করালে অসাধু কাজের সম্ভাবনা থাকে। সেইজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হয়তো কাজ করতে পারছে না। তাই বিষয়গুলো ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে।
এদিকে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে থেকে ঢাবি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিমের নামও বাদ পড়েনি। চলতি বছরের মার্চে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এ বিষয়ে ঢাবি উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়, ‘পার্টিসিপেশন অব উইমেন ইন অ্যাকুয়াকালচার ইন থ্রি কোস্টাল ডিসট্রিক অব বাংলাদেশ: অ্যাপ্রোচেস টুওয়ার্ডস সাসটেইনেবল লাইভলিহুড’ শিরোনামে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধটির ৮৮ শতাংশ অন্য প্রকাশনার সঙ্গে মিল রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও জানান তারা। কিন্তু এ অভিযোগটিও সুরাহা করার দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ নেয়নি ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
সাদেকা হালিম ও লীনা তাপসী খানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ দুটির বয়স প্রায় বছর গড়িয়েছে। যদিও এসবের ভিত্তিতে কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে এ সব আমাদের নজরে নেই। তথ্যগুলো কোথায় আছে, কি অবস্থায় আছে জানতে হবে।”
এত দীর্ঘ সময়েও অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন না করার কারণ জানতে চাইলে উপাচার্য প্রশ্নটি এড়িয়ে যান এবং সংশ্লিষ্টদেরকে বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য(প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহম্মদ সামাদ বলেন, এটা একটা আলোচিত ঘটনা। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো এজেন্ডা আমার হাতে আসেনি। সিন্ডিকেটে যেকোনো বিষয়ে এজেন্ডা অন্তর্ভুক্ত করার প্রধান দায়িত্ব উপাচার্যের।