ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক জীবন্ত স্বত্বার প্রতিচ্ছবি। শত চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে শতবর্ষ উদযাপন করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এখানকার অফুরন্ত প্রাণসঞ্চার কখনো নিঃশেষ হয় না। কত আড্ডা-গল্প, হাঁসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার স্মৃতি জড়িত হয়ে আছে এ ক্যাম্পাসের প্রতিটি ফরতে ফরতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনি একটি স্মৃতি বিজড়িত স্থান হচ্ছে ‘হাকিম চত্বর’।
১৯৬৭ সালের কথা, বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর। এই ১৫ বছরেই জীবনটাকে যেন নতুন করে আবিষ্কার করেছিলেন। বলছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ষাটের দশকের চা বিক্রেতা হাকিম ভাইয়ের কথা। সংসারে অভাব থাকায় কাজের সন্ধানে সেই কৈশোরেই বাবার হাত ধরে দোহার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।
ষাটের দশকে এই হাকিম ভাইয়ের চা’ই ছিল আড্ডার ফাঁকে গলা ভেজানোর একমাত্র রসদ। তাইতো শত ব্যস্ততার মাঝেও এক কাপ চা খেতে অনেকেই ছুটে যেতেন এই হাকিম চত্বরে। হাকিম ভাই-এর চায়ের দোকানে সবসময় ভিড় জমে থাকতো। তবে ভিড়টা বড় বেশি হতো সকাল এবং সন্ধ্যাবেলাতে। অজস্রজন হাকিম ভাইয়ের চা পান করতে করতে নানা আলোচনায় মাতোয়ারা হয়ে উঠতেন। সেই আলোচনায় রাজনীতি, সাহিত্য, নাটক, গল্প, প্রেম-ভালবাসা কোনো কিছুই বাদ যেত না। আশির দশকে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ‘হাকিম চত্বর’ ছিল আন্দোলনকামী ছাত্র ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সবচেয়ে প্রিয় এক স্থান।
বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে রোকেয়া হল পর্যন্ত এলাকাকে হাকিম চত্বর বলে ধরা হয়ে থাকে। পুরোনো স্মৃতিকে মনে করতে এখনও সেসময়ের ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই সময় পেলে হাকিম চত্বরে হাজির হন। তবে এখন আর গল্পের ফাঁকে খাওয়া হয় না হাকিম ভাইয়ের সেই বিখ্যাত চা।
২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসের আজকের এই দিনে ‘হাকিম ভাই’ আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। আজ থেকে ২১ বছর আগে ‘হাকিম ভাই’ চিরবিদায় নিলেও এখনও তিনি ক্যাম্পাসে অবিনশ্বর এক নাম। এখনও পুরনোদের অনেকেই হাকিম চত্বরে গিয়ে স্মৃতি হাতড়ান।
প্রতিবছর ব্যক্তি উদ্যোগে হাকিম ভাইয়ের স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আলোচনা সভা ও আড্ডার আয়োজন করা হতো। কিন্তু এবার সেটিও হয়নি। এভাবেই হয়তো আস্তে আস্তে ব্যক্তি হাকিম ভাইয়ের স্মৃতি সকলে ভুলে যাবে। কিন্তু যুগের পর যুগ সকলের মুখে মুখে থাকবে হাকিম ভাইয়ের নাম। হাকিমের স্মৃতি বিজড়িত হাকিম চত্বরের বড় বড় বৃক্ষগুলোর গায়ে টিনের পাতে লিখা হাকিম চত্বর নামফলকটি তারই জানান দেয়।
শনিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক জীবন্ত স্বত্বার প্রতিচ্ছবি। শত চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে শতবর্ষ উদযাপন করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এখানকার অফুরন্ত প্রাণসঞ্চার কখনো নিঃশেষ হয় না। কত আড্ডা-গল্প, হাঁসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার স্মৃতি জড়িত হয়ে আছে এ ক্যাম্পাসের প্রতিটি ফরতে ফরতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনি একটি স্মৃতি বিজড়িত স্থান হচ্ছে ‘হাকিম চত্বর’।
১৯৬৭ সালের কথা, বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর। এই ১৫ বছরেই জীবনটাকে যেন নতুন করে আবিষ্কার করেছিলেন। বলছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ষাটের দশকের চা বিক্রেতা হাকিম ভাইয়ের কথা। সংসারে অভাব থাকায় কাজের সন্ধানে সেই কৈশোরেই বাবার হাত ধরে দোহার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।
ষাটের দশকে এই হাকিম ভাইয়ের চা’ই ছিল আড্ডার ফাঁকে গলা ভেজানোর একমাত্র রসদ। তাইতো শত ব্যস্ততার মাঝেও এক কাপ চা খেতে অনেকেই ছুটে যেতেন এই হাকিম চত্বরে। হাকিম ভাই-এর চায়ের দোকানে সবসময় ভিড় জমে থাকতো। তবে ভিড়টা বড় বেশি হতো সকাল এবং সন্ধ্যাবেলাতে। অজস্রজন হাকিম ভাইয়ের চা পান করতে করতে নানা আলোচনায় মাতোয়ারা হয়ে উঠতেন। সেই আলোচনায় রাজনীতি, সাহিত্য, নাটক, গল্প, প্রেম-ভালবাসা কোনো কিছুই বাদ যেত না। আশির দশকে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ‘হাকিম চত্বর’ ছিল আন্দোলনকামী ছাত্র ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সবচেয়ে প্রিয় এক স্থান।
বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে রোকেয়া হল পর্যন্ত এলাকাকে হাকিম চত্বর বলে ধরা হয়ে থাকে। পুরোনো স্মৃতিকে মনে করতে এখনও সেসময়ের ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই সময় পেলে হাকিম চত্বরে হাজির হন। তবে এখন আর গল্পের ফাঁকে খাওয়া হয় না হাকিম ভাইয়ের সেই বিখ্যাত চা।
২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসের আজকের এই দিনে ‘হাকিম ভাই’ আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। আজ থেকে ২১ বছর আগে ‘হাকিম ভাই’ চিরবিদায় নিলেও এখনও তিনি ক্যাম্পাসে অবিনশ্বর এক নাম। এখনও পুরনোদের অনেকেই হাকিম চত্বরে গিয়ে স্মৃতি হাতড়ান।
প্রতিবছর ব্যক্তি উদ্যোগে হাকিম ভাইয়ের স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আলোচনা সভা ও আড্ডার আয়োজন করা হতো। কিন্তু এবার সেটিও হয়নি। এভাবেই হয়তো আস্তে আস্তে ব্যক্তি হাকিম ভাইয়ের স্মৃতি সকলে ভুলে যাবে। কিন্তু যুগের পর যুগ সকলের মুখে মুখে থাকবে হাকিম ভাইয়ের নাম। হাকিমের স্মৃতি বিজড়িত হাকিম চত্বরের বড় বড় বৃক্ষগুলোর গায়ে টিনের পাতে লিখা হাকিম চত্বর নামফলকটি তারই জানান দেয়।