তদন্তে দোষী হলে মেনে নেব : উপাচার্য
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনা ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে সামনে আমরণ অনশন করেন ২৪ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১৫ জন ছাত্র ও ৯ জন ছাত্রী রয়েছেন। অনশনরত শিক্ষার্র্থীরা জানিয়েছে, উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
অনশনরত শিক্ষার্র্থী জান্নাতুল নাঈম নিশাত বলেন, শিক্ষার্র্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অনশনে বসেছি। উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব। এর আগে বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। এ সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করায় অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
তদন্তে দোষী হলে মেনে নেব : উপাচার্য
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় উপাচার্যের যদি কোন দোষ থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিবে তাই মেনে নিবে বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। বুধবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষার্থীদের পদত্যাগ দাবি প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় উপাচার্যের যদি কোন দোষ থেকে থাকে তাহলে তদন্ত কমিটি গঠন হবে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিবে তাই মেনে নেব। দরকার হলে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত কমিটি হতে পারে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আমি খুবই মর্মাহত। যখন তাদের দাবি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চলে আসবে তখন কে বা কারা পুলিশের ওপর এ হামলা করেছে তা খতিয়ে দেখবো।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষক প্রতিনিধিরা গালাগাল সহ্য করেও আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করছে। শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে যোগাযোগ করতে গেলেও তারা তাদের ফিরিয়ে দেয়।
নারী শিক্ষকদের উদ্দেশে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদ
আন্দোলন চলাকালে শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী শিক্ষকদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে শিক্ষার্র্থীদের বিরুদ্ধে বুধবার ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা। বুধবার দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. লায়লা আশরাফুন বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষক। আমরা সম্মানের জন্য কাজ করি এবং সম্মানের জন্যই এ পেশায় এসেছি। এদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। সেই বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আমরা ২০২২ সালে এসে কেন এ অপমানের শিকার হবো। আমরা কেমন শিক্ষার্র্থী তৈরি করছি যে, আমাদের নিয়ে যা খুশি তাই বলবে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা লজ্জিত, দুঃখিত ও মর্মাহত। হামলা কে বা কারা করেছে এটি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্র এ তদন্তের কাজ করতে পারে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জাহিদ হাসান বলেন, আমরা দল-মত-নির্বিশেষে সাধারণ শিক্ষকরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। শিক্ষার্থীদের কর্মকান্ডে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। নারী সহকর্মীদের অশালীন ভাষায় গালি দেয়া হচ্ছে, তাদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। আমার সহকর্মী যখন কান্না করে বলে, ভাই আমি কি এ রকম? কিভাবে পরিবারের কাছে মুখ দেখাবো? তখন আমরা বসে থাকতে পারি না।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপড ড. মো. কবীর হোসেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জসিম উদ্দিন, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আমিনা পারভীন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুন্নাহার বেগম প্রমুখ।
বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল প্রভোস্ট বডির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে রোববার (১৬ জানুয়ারি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করতে হলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর হামলার ঘটনায় উপাচার্যকে দায়ী করে এদিন সন্ধ্যা থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
তদন্তে দোষী হলে মেনে নেব : উপাচার্য
বুধবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২২
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনা ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে সামনে আমরণ অনশন করেন ২৪ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১৫ জন ছাত্র ও ৯ জন ছাত্রী রয়েছেন। অনশনরত শিক্ষার্র্থীরা জানিয়েছে, উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
অনশনরত শিক্ষার্র্থী জান্নাতুল নাঈম নিশাত বলেন, শিক্ষার্র্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অনশনে বসেছি। উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব। এর আগে বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। এ সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করায় অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
তদন্তে দোষী হলে মেনে নেব : উপাচার্য
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় উপাচার্যের যদি কোন দোষ থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিবে তাই মেনে নিবে বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। বুধবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষার্থীদের পদত্যাগ দাবি প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় উপাচার্যের যদি কোন দোষ থেকে থাকে তাহলে তদন্ত কমিটি গঠন হবে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিবে তাই মেনে নেব। দরকার হলে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত কমিটি হতে পারে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আমি খুবই মর্মাহত। যখন তাদের দাবি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চলে আসবে তখন কে বা কারা পুলিশের ওপর এ হামলা করেছে তা খতিয়ে দেখবো।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষক প্রতিনিধিরা গালাগাল সহ্য করেও আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করছে। শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে যোগাযোগ করতে গেলেও তারা তাদের ফিরিয়ে দেয়।
নারী শিক্ষকদের উদ্দেশে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদ
আন্দোলন চলাকালে শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী শিক্ষকদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে শিক্ষার্র্থীদের বিরুদ্ধে বুধবার ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা। বুধবার দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. লায়লা আশরাফুন বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষক। আমরা সম্মানের জন্য কাজ করি এবং সম্মানের জন্যই এ পেশায় এসেছি। এদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। সেই বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আমরা ২০২২ সালে এসে কেন এ অপমানের শিকার হবো। আমরা কেমন শিক্ষার্র্থী তৈরি করছি যে, আমাদের নিয়ে যা খুশি তাই বলবে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা লজ্জিত, দুঃখিত ও মর্মাহত। হামলা কে বা কারা করেছে এটি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্র এ তদন্তের কাজ করতে পারে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জাহিদ হাসান বলেন, আমরা দল-মত-নির্বিশেষে সাধারণ শিক্ষকরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। শিক্ষার্থীদের কর্মকান্ডে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। নারী সহকর্মীদের অশালীন ভাষায় গালি দেয়া হচ্ছে, তাদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। আমার সহকর্মী যখন কান্না করে বলে, ভাই আমি কি এ রকম? কিভাবে পরিবারের কাছে মুখ দেখাবো? তখন আমরা বসে থাকতে পারি না।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপড ড. মো. কবীর হোসেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জসিম উদ্দিন, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আমিনা পারভীন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুন্নাহার বেগম প্রমুখ।
বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল প্রভোস্ট বডির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে রোববার (১৬ জানুয়ারি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করতে হলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর হামলার ঘটনায় উপাচার্যকে দায়ী করে এদিন সন্ধ্যা থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।