শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষামন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বার বার উদ্যোগ নিচ্ছেন। তবে কর্ণপাত করছে না শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। প্রতিটি ভবনে ঝুলছে তালা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের শর্ত একটাই- উপাচার্যকে পদত্যাগ করতেই হবে। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ কথা বলেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, উপাচার্যের কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় অনেকে বলছেন অমানবিক। আমরা বাধ্য হয়ে কঠোর হয়েছি। শিক্ষামন্ত্রীর বার বার অনশন ভাঙার অনুরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনশন কর্মসূচি থেকে আমাদের সরে আসার কোন সুযোগ নেই। একশ’ ঘণ্টার ওপরে আমাদের সহযোদ্ধারা না খেয়ে আছে। প্রয়োজনে মরবো, তারপরও অনশন ভাঙতে পারব না। অনশন ভেঙে কারও সঙ্গেই আলোচনায় বসবো না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে ভিসি শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছুড়তে পারে, বোমা মারতে পারে, তার পদত্যাগ ছাড়া আলোচনায় বসার প্রশ্নই ওঠে না। আগে পদত্যাগ তারপর আলোচনা।
এখনও অবরুদ্ধ উপাচার্য :
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দ্বারা নিজ বাসভবনে দ্বিতীয় দিনের মতো অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। বিদ্যুৎ, পানি ও ইন্টারনেটের সংযোগ কেটে দেয়ায় মানবিক সংকটে পড়েছেন উপাচার্য ও তার পরিবার। প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও ওষুধ নিয়ে কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না আন্দোলনকারীরা। সোমবার সন্ধ্যায় উপাচার্য ও তার পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও ওষুধ নিয়ে মূল ফটকে প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা ফিরিয়ে দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের বাগবিতন্ডা হয়। বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে ব্যারিকেড দিয়ে শুয়ে পড়তে দেখা যায়।
প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীর, সহকারী প্রক্টর আবু হেনা পহিল, বঙ্গবন্ধু হলের সহকারী প্রভোস্ট মুনিরুজ্জামান সোহাগ মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে বারবার আকুতি জানালেও কর্ণপাত করেনি কেউ।
প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীর গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘শুধু উপাচার্য মহোদয়ের জন্য খাবার নয়, গেস্ট হাউজ ও ডরমেটরিতে আমাদের বেশ কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা আটকা পড়ে আছেন। এদের মধ্যে একজন শিক্ষক অসুস্থ। উনি কি অবস্থায় আছেন তা আমরা জানি না। এমনকি যোগাযোগও সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘উপাচার্যের হার্টের সমস্যা, তার ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। যদি ভেতরে যাওয়ার সুযোগ হতো তবে ওষুধের ব্যবস্থা করা যেত। এখন আর এই সুযোগ নেই।’
এর আগে বিকেল ৫টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার নিয়ে আসেন শিক্ষক প্রতিনিধি দল। খাবার গ্রহণে বার বার অনুরোধ করলেও ফিরিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা অনশনে অসুস্থ হয়ে
হাসপাতালে ১৪ শিক্ষার্থী
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা অনশনের ১২৫ ঘণ্টা পার করেছেন। সোমবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহাইমিনুল বাশার রাজ জানান, সর্বমোট ৭ জন শিক্ষার্থী হাসপাতাল থেকে ফিরলেও নতুন করে আরও তিনজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তিনি বলেন, আন্দোলনে অনশনরত শিক্ষার্থীরা যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা একটু সুস্থতাবোধ করায় ডাক্তারের ছাড়পত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসছেন। তারা সুস্থতাবোধ করায় হাসপাতালে থাকতে চাচ্ছে না। তাই তারা একটু সুস্থ হলেই ক্যাম্পাসে ফিরে আসছেন।
এছাড়া বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৩ জন। সর্বশেষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ নিয়ে মোট ভর্তি রয়েছেন ১৪ জন। বাকি ১৪ জন অনশনরত অবস্থায় উপাচার্য বাস ভবনের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছেন। উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। এর মধ্যে অনশনকারী এক শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্য অসুস্থ হওয়ায় অনশন ভেঙে বাড়ি ফিরে গেছেন তিনি। পরে রোববার অনশনরত স্থানে নতুন করে আরও পাঁচ শিক্ষার্থী যোগ দেন। উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষামন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বার বার উদ্যোগ নিচ্ছেন। তবে কর্ণপাত করছে না শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। প্রতিটি ভবনে ঝুলছে তালা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের শর্ত একটাই- উপাচার্যকে পদত্যাগ করতেই হবে। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ কথা বলেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, উপাচার্যের কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় অনেকে বলছেন অমানবিক। আমরা বাধ্য হয়ে কঠোর হয়েছি। শিক্ষামন্ত্রীর বার বার অনশন ভাঙার অনুরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনশন কর্মসূচি থেকে আমাদের সরে আসার কোন সুযোগ নেই। একশ’ ঘণ্টার ওপরে আমাদের সহযোদ্ধারা না খেয়ে আছে। প্রয়োজনে মরবো, তারপরও অনশন ভাঙতে পারব না। অনশন ভেঙে কারও সঙ্গেই আলোচনায় বসবো না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে ভিসি শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছুড়তে পারে, বোমা মারতে পারে, তার পদত্যাগ ছাড়া আলোচনায় বসার প্রশ্নই ওঠে না। আগে পদত্যাগ তারপর আলোচনা।
এখনও অবরুদ্ধ উপাচার্য :
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দ্বারা নিজ বাসভবনে দ্বিতীয় দিনের মতো অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। বিদ্যুৎ, পানি ও ইন্টারনেটের সংযোগ কেটে দেয়ায় মানবিক সংকটে পড়েছেন উপাচার্য ও তার পরিবার। প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও ওষুধ নিয়ে কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না আন্দোলনকারীরা। সোমবার সন্ধ্যায় উপাচার্য ও তার পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও ওষুধ নিয়ে মূল ফটকে প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা ফিরিয়ে দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের বাগবিতন্ডা হয়। বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে ব্যারিকেড দিয়ে শুয়ে পড়তে দেখা যায়।
প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীর, সহকারী প্রক্টর আবু হেনা পহিল, বঙ্গবন্ধু হলের সহকারী প্রভোস্ট মুনিরুজ্জামান সোহাগ মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে বারবার আকুতি জানালেও কর্ণপাত করেনি কেউ।
প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীর গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘শুধু উপাচার্য মহোদয়ের জন্য খাবার নয়, গেস্ট হাউজ ও ডরমেটরিতে আমাদের বেশ কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা আটকা পড়ে আছেন। এদের মধ্যে একজন শিক্ষক অসুস্থ। উনি কি অবস্থায় আছেন তা আমরা জানি না। এমনকি যোগাযোগও সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘উপাচার্যের হার্টের সমস্যা, তার ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। যদি ভেতরে যাওয়ার সুযোগ হতো তবে ওষুধের ব্যবস্থা করা যেত। এখন আর এই সুযোগ নেই।’
এর আগে বিকেল ৫টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার নিয়ে আসেন শিক্ষক প্রতিনিধি দল। খাবার গ্রহণে বার বার অনুরোধ করলেও ফিরিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা অনশনে অসুস্থ হয়ে
হাসপাতালে ১৪ শিক্ষার্থী
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা অনশনের ১২৫ ঘণ্টা পার করেছেন। সোমবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহাইমিনুল বাশার রাজ জানান, সর্বমোট ৭ জন শিক্ষার্থী হাসপাতাল থেকে ফিরলেও নতুন করে আরও তিনজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তিনি বলেন, আন্দোলনে অনশনরত শিক্ষার্থীরা যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা একটু সুস্থতাবোধ করায় ডাক্তারের ছাড়পত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসছেন। তারা সুস্থতাবোধ করায় হাসপাতালে থাকতে চাচ্ছে না। তাই তারা একটু সুস্থ হলেই ক্যাম্পাসে ফিরে আসছেন।
এছাড়া বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৩ জন। সর্বশেষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ নিয়ে মোট ভর্তি রয়েছেন ১৪ জন। বাকি ১৪ জন অনশনরত অবস্থায় উপাচার্য বাস ভবনের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছেন। উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। এর মধ্যে অনশনকারী এক শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্য অসুস্থ হওয়ায় অনশন ভেঙে বাড়ি ফিরে গেছেন তিনি। পরে রোববার অনশনরত স্থানে নতুন করে আরও পাঁচ শিক্ষার্থী যোগ দেন। উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।