alt

ক্যাম্পাস

ছাত্রদল ‘দমনে’ ব্যবহৃত হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা

খালেদ মাহমুদ, ঢাবি : শনিবার, ২৮ মে ২০২২

প্রতিদিন সকাল ৮টার মধ্যে হলের কোন একটি নির্দিষ্ট স্থানে সব শিক্ষার্থীকে এক সঙ্গে জড়ো হতে হয়। তারপর গ্রুপ লিডার তথা হলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে শোডাউন বের হয়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে মধুর ক্যান্টিন, টিএসসি, কার্জন হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এসব শোডাউনে অবস্থান করতে হয় পুরোদিন, কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে রাত পর্যন্ত। শিক্ষার্থীদের কাজ হচ্ছে, ‘মিছিলে অংশগ্রহণ এবং স্লোগান ও হাতে তালি দেয়া।’ প্রতিদিন রাতে নির্দেশনা দেয়া হয়, ‘আগামীকাল ভাইটাল (গুরুত্বপূর্ণ) প্রোগ্রাম আছে। সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।’

গত এক সপ্তাহ ধরে এটি নিত্যদিনকার চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ছাত্রদল যাতে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারে সেজন্য সতর্ক অবস্থানে ছাত্রলীগ। প্রতিদিন চলছে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া। ‘ছাত্রদল দমনে’ সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতেও তুলে দেয়া হচ্ছে রড, স্টাম্প, লাঠি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘প্রতিদিন আমাদের ভাইদের নির্দেশে বাধ্যতামূলকভাবে প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ’ করতে হয়। আমাদের ক্লাস-পরীক্ষা থাকলেও সেটি বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না। হলে থাকার বিনিময়ে ছাত্রলীগের কথাই মেনে চলতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনতো এখানে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘদিন আমরা পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। এখন আমাদের সেমিস্টার ইয়ার ছয় মাস থেকে চার মাসে নিয়ে আসা হয়েছে। ঘনঘন ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিদিনই আমাদের রাজনৈতিক প্রোগ্রামে উপস্থিত হতে হচ্ছে। ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে আমাদের মহড়ায় অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে। আমি আমার পড়ালেখা নিয়ে চিন্তিত।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের ত্রাসের রাজত্ব থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখার জন্য শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছে। এটা ছাত্রলীগের কোন ঘোষিত কর্মসূচি নয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ শুধু সংহতি জানিয়েছে। ভবিষ্যতেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছাত্রলীগ প্রতিহত করবে।’

শিক্ষার্থীদের জোর করে এসব কর্মসূচিতে নেয়া হয়, এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের কেউ আমাদের এ বিষয়ে কোন অভিযোগ দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এখন স্বাভাবিক আছে। এখানে সবসময়ই বিভিন্ন দল-মতের সংগঠন সহাবস্থানে ছিল, এখনো আছে। কিন্তু প্রস্তুতি নিয়ে এসে ক্যাম্পাসে কোন ধরনের জঙ্গি তৎপরতা আমরা বরদাস্ত করবো না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সব বলে দেয়া হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানে নাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তথা আমাদের দায়িত্ব ছিল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের পড়াশোনার পরিবেশ সুষ্ঠু রাখা। কিন্তু আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছি না। রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য আমরা বিষয়গুলা আমরা আমলে নেই না। যার জন্য এ ধরনের ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটছে।

এ শিক্ষক আরও বলেন, চলমান অস্থিরতার প্রভাবটা বেশি পড়ে যারা আবাসিক হলগুলোতে থাকে তাদের ওপর। এমনিতেই আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের অনেক অনাচারের মধ্যে থাকতে হয়। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন যে অনাচারটা করে এই সময়ে তাদের অনেককেই বাধ্য হয়ে লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক নিয়ে মারামারি করতে হয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। তাদের এ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সাধারণ ছাত্রদের কোন স্বার্থ নেই। তাদের দিয়ে জোর করে মিছিল-মিটিং করানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদের এক বক্তব্যের পর রোববার (২২ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। মঙ্গলবার (২৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সেখানে যাওয়ার পথে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ছাত্রদলের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। পরে দোয়েল চত্বর ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে।

ছবি

জাবিতে উপড়ে ফেলা হলো অর্ধশতাধিক গাছ

ছবি

বিচার না হওয়া ও ‘স্বচ্ছতার অভাব’—জাকসু নির্বাচন পেছানোর পেছনে নানা ব্যাখ্যা

রাবিতে প্রেমঘটিত হতাশায় শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা প্রচেষ্টা’

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কমিশন গঠনের আশ্বাস, ঘোষণা আসতে পারে সোমবার

ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ঢাবিতে বিশেষ ভর্তি সুবিধা

ছবি

সাম্য হত্যা: তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি

ছবি

রাবির বঙ্গবন্ধু হলের নাম এখন ‘বিজয়-২৪’

ছবি

চবিতে ক্লাস করতে আসা বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর, মুচলেকা নিয়ে ছাড়

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠন

ছবি

সরকারি সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসক অধ্যাপক ইলিয়াস

ছবি

রায় বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে হাইকোর্টে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের অবস্থান

দাবি মানার প্রতিশ্রুতিতে আন্দোলন স্থগিত করেন জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

ছবি

যমুনার উদ্দেশে জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লং মার্চ শুরু

ছবি

ছুরিকাঘাতে ঢাবি ছাত্রদল নেতা সাম্যের মৃত্যু, বিক্ষোভ

ছবি

বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে জবি শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ’ ঘোষণা

ছবি

চায়ের দোকানের মালিকানা নিয়ে ঝামেলা, তালা ঝুলিয়ে ‘দিলেন জবি ছাত্রদল নেতা’

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের খবরে ঢাবিতে স্লোগানে মুখর রাত

আবু সাঈদের জীবন দান দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দার্শনিক ঘটনা: ফরহাদ মজহার

ছবি

কুয়েট উপাচার্যের দায়িত্বে হযরত আলী

ছবি

রাকসু নির্বাচন: ধীরগতি, ঝুলে আছে বিধিমালা ও ভোটার তালিকা

ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: গভীর রাতে রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

ছবি

৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, ভোট ৩১ জুলাই

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চার মাসে চারজনের আত্মহত্যা, প্রবণতা কি বাড়ছে? কী করছে কাউন্সেলিং সেন্টার?

ছবি

গলায় ফাঁস দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, পুলিশ হেফাজতে ১

ছবি

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হলো ইউআইইউ

ছবি

কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ছবি

জবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বুকশেলফ প্রদান

ছবি

পিএসসি সংস্কারে ৮ দফা দাবি জবি শিক্ষার্থীদের

ছবি

জবি রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি: ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম, কুশপুত্তলিকা দাহ

ছবি

‘এলাকার কলেজে পড়লে পারতে, … গেট আউট’, জবি শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রার

ছবি

কুয়েট শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ শিক্ষা উপদেষ্টার

ছবি

বাউবিতে ‘উন্মুক্ত ও দূরশিক্ষণের জন্য মিডিয়া ও ডিজিটাল প্রোডাকশন কৌশল’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ

ছবি

‎জবি শিক্ষার্থীদের কাঁথা-বালিশ কর্মসূচি ঘোষণা

কুয়েট উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

ছবি

খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণ, ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ

tab

ক্যাম্পাস

ছাত্রদল ‘দমনে’ ব্যবহৃত হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা

খালেদ মাহমুদ, ঢাবি

শনিবার, ২৮ মে ২০২২

প্রতিদিন সকাল ৮টার মধ্যে হলের কোন একটি নির্দিষ্ট স্থানে সব শিক্ষার্থীকে এক সঙ্গে জড়ো হতে হয়। তারপর গ্রুপ লিডার তথা হলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে শোডাউন বের হয়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে মধুর ক্যান্টিন, টিএসসি, কার্জন হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এসব শোডাউনে অবস্থান করতে হয় পুরোদিন, কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে রাত পর্যন্ত। শিক্ষার্থীদের কাজ হচ্ছে, ‘মিছিলে অংশগ্রহণ এবং স্লোগান ও হাতে তালি দেয়া।’ প্রতিদিন রাতে নির্দেশনা দেয়া হয়, ‘আগামীকাল ভাইটাল (গুরুত্বপূর্ণ) প্রোগ্রাম আছে। সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।’

গত এক সপ্তাহ ধরে এটি নিত্যদিনকার চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ছাত্রদল যাতে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারে সেজন্য সতর্ক অবস্থানে ছাত্রলীগ। প্রতিদিন চলছে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া। ‘ছাত্রদল দমনে’ সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতেও তুলে দেয়া হচ্ছে রড, স্টাম্প, লাঠি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘প্রতিদিন আমাদের ভাইদের নির্দেশে বাধ্যতামূলকভাবে প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ’ করতে হয়। আমাদের ক্লাস-পরীক্ষা থাকলেও সেটি বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না। হলে থাকার বিনিময়ে ছাত্রলীগের কথাই মেনে চলতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনতো এখানে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘদিন আমরা পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। এখন আমাদের সেমিস্টার ইয়ার ছয় মাস থেকে চার মাসে নিয়ে আসা হয়েছে। ঘনঘন ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিদিনই আমাদের রাজনৈতিক প্রোগ্রামে উপস্থিত হতে হচ্ছে। ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে আমাদের মহড়ায় অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে। আমি আমার পড়ালেখা নিয়ে চিন্তিত।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের ত্রাসের রাজত্ব থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখার জন্য শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছে। এটা ছাত্রলীগের কোন ঘোষিত কর্মসূচি নয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ শুধু সংহতি জানিয়েছে। ভবিষ্যতেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছাত্রলীগ প্রতিহত করবে।’

শিক্ষার্থীদের জোর করে এসব কর্মসূচিতে নেয়া হয়, এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের কেউ আমাদের এ বিষয়ে কোন অভিযোগ দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এখন স্বাভাবিক আছে। এখানে সবসময়ই বিভিন্ন দল-মতের সংগঠন সহাবস্থানে ছিল, এখনো আছে। কিন্তু প্রস্তুতি নিয়ে এসে ক্যাম্পাসে কোন ধরনের জঙ্গি তৎপরতা আমরা বরদাস্ত করবো না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সব বলে দেয়া হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানে নাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তথা আমাদের দায়িত্ব ছিল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের পড়াশোনার পরিবেশ সুষ্ঠু রাখা। কিন্তু আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছি না। রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য আমরা বিষয়গুলা আমরা আমলে নেই না। যার জন্য এ ধরনের ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটছে।

এ শিক্ষক আরও বলেন, চলমান অস্থিরতার প্রভাবটা বেশি পড়ে যারা আবাসিক হলগুলোতে থাকে তাদের ওপর। এমনিতেই আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের অনেক অনাচারের মধ্যে থাকতে হয়। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন যে অনাচারটা করে এই সময়ে তাদের অনেককেই বাধ্য হয়ে লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক নিয়ে মারামারি করতে হয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। তাদের এ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সাধারণ ছাত্রদের কোন স্বার্থ নেই। তাদের দিয়ে জোর করে মিছিল-মিটিং করানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদের এক বক্তব্যের পর রোববার (২২ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। মঙ্গলবার (২৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সেখানে যাওয়ার পথে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ছাত্রদলের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। পরে দোয়েল চত্বর ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে।

back to top