ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের এক শিক্ষার্থীকে রুমে ঢুকে বেধড়ক মারধরের পর হল থেকে বের করে দিয়েছে ওই হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এমনকি ভবিষ্যতে যদি হলে ঢুকে তাহলে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২ কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলের বাইরে আছেন বলে জানা যায়।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিৎ দেবনাথের নেতৃত্বে পঁচিশ থেকে তিরিশ জন তার উপর হামলায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করেছেন তিনি। এরা হলো- ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সত্যজিৎ দেবনাথ, একই শিক্ষাবর্ষের বাঁধন (বিভাগ জানা যায়নি), ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের সবুজ কুমার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ব্যাংকিং এন্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের শুভ সাহা, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের রাজিব বিশ্বাস, একই শিক্ষাবর্ষের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের গণেশ ঘোষ, মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের অমিত দে ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রিভু রিদমসহ ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ বর্ষের আরো ১০ থেকে ১৫ জন।
এরা সবাই জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণের অনুসারী। অতনু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী। ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিৎ দেবনাথ পূর্বের হল কমিটিতে জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম উৎসব রায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২ নাম্বার কক্ষে।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে খাওয়ার পর তার নিজ কক্ষে (সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২) বিশ্রাম নিচ্ছিলেন উৎসব রায়। এমন সময় অভিযুক্ত (সত্যজিৎ) এর নেতৃত্বে পঁচিশ থেকে তিরিশ জনের একটি দল তার কক্ষের দরজার ছিটকিনি ভেঙে ভিতরে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা রড, স্ট্যাম্প দিয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করে।তার মাথায়, কানে, পিঠে মারাত্মকভাবে আঘাত করে। এসময় উৎসব নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মারতে মারতে তাকে হল থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেয় এবং তাকে হুমকি দেয়া হয় যাতে আর কোনদিন হলে প্রবেশ না করে। হামলার পর ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে চিকিৎসা নেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিৎ দেবনাথ। তিনি বলেন, আমি এই কাজ করিনি। পুরো হল মিলে তারে মারধর করে হল থেকে বের করে দিছে। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। ছিনতাই করার কারণে সে জেল খেটেছে। মাদক সেবন করে।
কেন তাকে মারধর করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
এদিকে এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণ। তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। ঘটনার দিন আমি সুনামগঞ্জ ছিলাম। গতকাল হলে আসছি।
তবে এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল ও খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, "আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত আবাসিক শিক্ষককে বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে অনুসন্ধান করার জন্য বলেছি। তারপর জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের এক শিক্ষার্থীকে রুমে ঢুকে বেধড়ক মারধরের পর হল থেকে বের করে দিয়েছে ওই হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এমনকি ভবিষ্যতে যদি হলে ঢুকে তাহলে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২ কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলের বাইরে আছেন বলে জানা যায়।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিৎ দেবনাথের নেতৃত্বে পঁচিশ থেকে তিরিশ জন তার উপর হামলায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করেছেন তিনি। এরা হলো- ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সত্যজিৎ দেবনাথ, একই শিক্ষাবর্ষের বাঁধন (বিভাগ জানা যায়নি), ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের সবুজ কুমার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ব্যাংকিং এন্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের শুভ সাহা, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের রাজিব বিশ্বাস, একই শিক্ষাবর্ষের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের গণেশ ঘোষ, মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের অমিত দে ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রিভু রিদমসহ ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ বর্ষের আরো ১০ থেকে ১৫ জন।
এরা সবাই জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণের অনুসারী। অতনু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী। ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিৎ দেবনাথ পূর্বের হল কমিটিতে জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম উৎসব রায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২ নাম্বার কক্ষে।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে খাওয়ার পর তার নিজ কক্ষে (সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২) বিশ্রাম নিচ্ছিলেন উৎসব রায়। এমন সময় অভিযুক্ত (সত্যজিৎ) এর নেতৃত্বে পঁচিশ থেকে তিরিশ জনের একটি দল তার কক্ষের দরজার ছিটকিনি ভেঙে ভিতরে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা রড, স্ট্যাম্প দিয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করে।তার মাথায়, কানে, পিঠে মারাত্মকভাবে আঘাত করে। এসময় উৎসব নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মারতে মারতে তাকে হল থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেয় এবং তাকে হুমকি দেয়া হয় যাতে আর কোনদিন হলে প্রবেশ না করে। হামলার পর ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে চিকিৎসা নেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিৎ দেবনাথ। তিনি বলেন, আমি এই কাজ করিনি। পুরো হল মিলে তারে মারধর করে হল থেকে বের করে দিছে। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। ছিনতাই করার কারণে সে জেল খেটেছে। মাদক সেবন করে।
কেন তাকে মারধর করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
এদিকে এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণ। তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। ঘটনার দিন আমি সুনামগঞ্জ ছিলাম। গতকাল হলে আসছি।
তবে এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল ও খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, "আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত আবাসিক শিক্ষককে বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে অনুসন্ধান করার জন্য বলেছি। তারপর জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"