alt

ক্যাম্পাস

স্থানীয়-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ : ফের উত্তপ্ত রাবি ক্যাম্পাস

ওয়াসিফ রিয়াদ, রাবি : রোববার, ১২ মার্চ ২০২৩

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে -সংবাদ

শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে দফায় দফায় বিক্ষোভ, মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারসহ চার দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। রোববার (১২ মার্চ) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব ঘটনা ঘটে চলছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় প্রশাসন কাজ করছে। এ ব্যাপার সবার সহযোগিতা কামনা একান্ত কাম্য।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় নগরীর মতিহার থানায় মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিকেলে মামলার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি হাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় মারধর, হামলা, গুরুতর জখমের অভিযোগ আনা হয়। অন্যদিকে এ মামলায় তসলিম আলী ওরফে পিটার (৪৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল আলম।

জানা গেছে, রোববার সকালে স্থানীয় ও পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অপরাগতার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। এ সময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা একপেশে সংবাদ প্রচারের অভিযোগ তুলে চ্যানেল২৪ এর সাংবাদিক ও সহকারীর ওপর হামলা চালান ও ক্যামেরা ভেঙে ফেলেন। সেখানে শহর ও ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের ওপরও চড়াও হন তারা।

পরে দুপুরে আন্দোলন আরও তীব্র হয়। বিক্ষোভে উত্তাল হয় পুরো ক্যাম্পাস। উপাচার্য উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে গেলে তাকে অবরুদ্ধ করা হয়। এ সময় বিনোদপুর বাজারে গিয়ে এই ঘটনার সুরাহার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। অনেকে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও স্থানীয়দের হামলার বিচার দাবি করেন। আবার কেউ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ তোলেন এবং প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন। এভাবে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে আন্দোলন করেন তারা। দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সব দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য। তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে বাসভবনে পাঠানো হয়। কিন্তু একদল শিক্ষার্থী আবার আন্দোলন শুরু করে। তারা উপাচার্যের বাসভবনে কেউ অবস্থান নেন এবং কেউ ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী পুলিশ ও স্থানীয়দের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে পদত্যাগ দাবি করেন তারা।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক বলেন, আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ সজাগ দৃষ্টি রাখছে। তাছাড়া ক্যাম্পাসের বাইরের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।

এদিকে ক্যাম্পাসে এমন ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলারও অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে এই প্রশাসন ব্যর্থ বলেও জানান তারা। এ সময় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রশাসন কর্তৃক আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের আর্থিক ব্যয়ভার বহন ও বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তবে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ১৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি আছেন। তারা সবাই এখন শঙ্কামুক্ত।

এদিকে বিকেলে জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মধ্যে উদ্ভূত ঘটনাই বিশ্বিবদ্যালয় প্রশাসন মর্মাহত। প্রশাসন সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা চায়। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব শিক্ষার্থীর সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। এছাড়া জানানো হয়, ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে প্রশাসন। এমনকি রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর এলাকাবাসী ও পুলিশের কতিপয় সদস্যের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ দাবি জানায়। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে নগরীর মতিহার থানায় একটি মামলা করাও হয়েছে।

এর আগে গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মধ্যরাত পর্যন্ত দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাজশাহী মেডিকেলে হাসপাতালে ভর্তি হন শতাধিক শিক্ষার্থী। রাতে সংঘর্ষ চলাকালে বিনোদপুর বাজারে বেশ কিছু দোকান ও বিশ্ববিদ্যালয় গেটে পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বাজার ও ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় বিনোদপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ জানান, শিক্ষার্থীরা ৩০টির বেশি দোকান পুড়িয়ে দিয়েছে। এতে তাদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

ছবি

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ভার্সিটিতে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন

ছবি

ঢাবির জসীমউদ্দিন হল ক্যান্টিনের ফ্রিজে রান্না করা মাংসের সাথে কাঁচা মাছ-মাংস

ছবি

চবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে খাবারের দাম বৃদ্ধি প্রত্যাহার

ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ: বাইন্ডার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

ঢাবিতে ৩ কি.মি. জুড়ে লেখা হয়েছে পাইয়ের মান, বিশ্বরেকর্ডের অপেক্ষা

ছবি

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: নগ্নপদে দাঁড়ালেন রাবি অধ্যাপক

ছবি

শিক্ষার্থীদের মারধর: ইবিতে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ

কাল থেকে ক্লাসে ফিরছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা

ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব ছাড়লেন আরও ৩ শিক্ষক

ছবি

রাবিতে সংঘর্ষ, ৩০০ জনকে আসামি করে পুলিশের মামলা

ছবি

ছাত্রলীগের সহায়তায় ২ ঘণ্টা পর মুক্ত রাবি ভিসি

ছবি

প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা

স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ, দোকানে দোকানে অগ্নিসংযোগ, আহত দুই শতাধিক

এবার বদরুন্নেসায় ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ

ছবি

এবার বদরুন্নেসায় ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ

২৯ কেন্দ্রে ঢাবির রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত

ছবি

ফুলপরীকে নির্যাতন: ছাত্রলীগের সানজিদাসহ ৫ ছাত্রী বহিষ্কার

ছবি

জাবির সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, জানতে চায় ইউজিসি

ছবি

‘আত্মহত্যাচেষ্টা’ ঢাবির ছাত্রলীগ নেতার

ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদারকি করতে এসে ছাত্র উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ

ছবি

ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত : তদন্ত কমিটি

ছবি

প্রাধ্যক্ষ, হাউস টিউটরসহ কয়েকজনের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে কমিটি

ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়নের রাগিংবিরোধী মশাল মিছিল

ছবি

ইবি হলে ছাত্রী নির্যাতন: ছাত্রলীগ নেত্রীসহ ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটিকে ফোনে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছি : ফুলপরী

ছবি

এক প্রতিবাদী ফুলপরীর গল্প

ঢাবির বাসে মারধরের শিকার ছাত্রের বিরুদ্ধে উল্টো থানায় অভিযোগের চেষ্টা

ছবি

র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

আমি অভিযুক্তদের চিনিয়ে দিয়েছি প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেবে তাই হবে

ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন : গোপনে ক্যাম্পাসে আসলেন ৫ অভিযুক্ত

তিন দফায় আট ঘণ্টা তদন্তের মুখে অভিযুক্তরা

ছবি

ইবি উপাচার্যের কার্যালয়ে তল্লাশি, কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

সখীপুরে ৫৯ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

ছবি

ক্যাম্পাসে ফিরেছেন ইবির সেই ভুক্তভোগী ছাত্রী

ছবি

ঢাবিতে ছাত্র অধিকারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ

tab

ক্যাম্পাস

স্থানীয়-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ : ফের উত্তপ্ত রাবি ক্যাম্পাস

ওয়াসিফ রিয়াদ, রাবি

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে -সংবাদ

রোববার, ১২ মার্চ ২০২৩

শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে দফায় দফায় বিক্ষোভ, মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারসহ চার দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। রোববার (১২ মার্চ) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব ঘটনা ঘটে চলছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় প্রশাসন কাজ করছে। এ ব্যাপার সবার সহযোগিতা কামনা একান্ত কাম্য।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় নগরীর মতিহার থানায় মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিকেলে মামলার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি হাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় মারধর, হামলা, গুরুতর জখমের অভিযোগ আনা হয়। অন্যদিকে এ মামলায় তসলিম আলী ওরফে পিটার (৪৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল আলম।

জানা গেছে, রোববার সকালে স্থানীয় ও পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অপরাগতার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। এ সময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা একপেশে সংবাদ প্রচারের অভিযোগ তুলে চ্যানেল২৪ এর সাংবাদিক ও সহকারীর ওপর হামলা চালান ও ক্যামেরা ভেঙে ফেলেন। সেখানে শহর ও ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের ওপরও চড়াও হন তারা।

পরে দুপুরে আন্দোলন আরও তীব্র হয়। বিক্ষোভে উত্তাল হয় পুরো ক্যাম্পাস। উপাচার্য উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে গেলে তাকে অবরুদ্ধ করা হয়। এ সময় বিনোদপুর বাজারে গিয়ে এই ঘটনার সুরাহার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। অনেকে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও স্থানীয়দের হামলার বিচার দাবি করেন। আবার কেউ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ তোলেন এবং প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন। এভাবে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে আন্দোলন করেন তারা। দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সব দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য। তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে বাসভবনে পাঠানো হয়। কিন্তু একদল শিক্ষার্থী আবার আন্দোলন শুরু করে। তারা উপাচার্যের বাসভবনে কেউ অবস্থান নেন এবং কেউ ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী পুলিশ ও স্থানীয়দের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে পদত্যাগ দাবি করেন তারা।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক বলেন, আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ সজাগ দৃষ্টি রাখছে। তাছাড়া ক্যাম্পাসের বাইরের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।

এদিকে ক্যাম্পাসে এমন ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলারও অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে এই প্রশাসন ব্যর্থ বলেও জানান তারা। এ সময় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রশাসন কর্তৃক আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের আর্থিক ব্যয়ভার বহন ও বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তবে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ১৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি আছেন। তারা সবাই এখন শঙ্কামুক্ত।

এদিকে বিকেলে জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মধ্যে উদ্ভূত ঘটনাই বিশ্বিবদ্যালয় প্রশাসন মর্মাহত। প্রশাসন সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা চায়। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব শিক্ষার্থীর সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। এছাড়া জানানো হয়, ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে প্রশাসন। এমনকি রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর এলাকাবাসী ও পুলিশের কতিপয় সদস্যের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ দাবি জানায়। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে নগরীর মতিহার থানায় একটি মামলা করাও হয়েছে।

এর আগে গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মধ্যরাত পর্যন্ত দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাজশাহী মেডিকেলে হাসপাতালে ভর্তি হন শতাধিক শিক্ষার্থী। রাতে সংঘর্ষ চলাকালে বিনোদপুর বাজারে বেশ কিছু দোকান ও বিশ্ববিদ্যালয় গেটে পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বাজার ও ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় বিনোদপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ জানান, শিক্ষার্থীরা ৩০টির বেশি দোকান পুড়িয়ে দিয়েছে। এতে তাদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

back to top