ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলের চার শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমানের বড় ভাইয়ের অবৈধভাবে রুম দখলকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, পেটানোর পরে তাদের কাছ থেকে জোড়পূর্বক মুচলেকা নিয়ে হলছাড়া করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন তারা। এছাড়া বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামিদ কারজাই, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ জামান অভি, আব্দুল আহাদ, আপ্যায়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম নীরব ও উপ-আইন সম্পাদক মুহাম্মদ তালহা।
ভুক্তভোগী চার ছাত্র হলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আলম বাদশা, একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের লুৎফুর রহমান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আল-আমিন ও আরবি বিভাগের একই বর্ষের আশিকুর রহমান। তাঁরা সূর্য সেন হলের ৫৩২ নম্বর কক্ষে থাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে আলম বাদশা বলেন, হলের অবৈধ শিক্ষার্থী সুমন আহমেদকে হলে রাখাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার আনুমানিক ৩টার সময় আব্দুল আহাদ (হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) আমাদেরকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে ৪৫০ নম্বর রুমে নিয়ে যান, যেখানে সিয়াম রহমান থাকেন। সেখানে গেলে দেখতে পাই সিয়াম রহমান এবং সুমন আহমেদের সঙ্গে আগে থেকেই লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করছিলেন। এছাড়া হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ জামান অভি, উপ আইন সম্পাদক মুহাম্মদ তালহা, সহ-সভাপতি হামিদ কারজাই এবং আপ্যায়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম নীরব সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা রুমে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। আমাদের মোবাইল চেক করতে থাকে। কিন্তু কোনো কিছুই পাননি তিনি। শুধুমাত্র লুতফুর ভাইয়ের একটা পোস্ট পেয়েছে পদ্মা সেতু নিয়ে। সেটাও ছিল খুব লজিক্যাল। কিন্তু তারা কোনো লজিক শুনার আগেই মারধর শুরু করে। এটা নাকি সরকারবিরোধী ছিল। কিল, ঘুষি ও লাথি দিতে থাকেন আমাদের চারজনকে।
তিনি আরও বলেন, সিয়াম রহমান দফায় দফায় আমাকে মারধর করে। বলা যায় মধ্যযুগীয় কায়দায়। আমাকে চুল ধরে টানে, বুকে লাথি দেয়, চড়-থাপ্পড় মারে। আমাদের চারজনকেই তিনি মেরেছেন। পরে হামিদ কারজাই আমাকে শিবির করিস বলে অতর্কিতভাবে নির্যাতন শুরু করে।
মুচলেকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পরে আমাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক আলাদা চারটি মুচলেকা নেয় এই বলে যে, ‘আমরা বর্তমানে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে একমত নই। অন্যায়ভাবে সুমন আহমেদকে রুম থেকে বের করেছি। হল থেকে স্বেচ্ছায় বের হয়ে যাব।’ নির্যাতনের এক পর্যায়ে আমরা লিখতে বাধ্য হই।
বিচার দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, নির্যাতন করতে করতে আমাদের ৫ ঘণ্টা পর রাত ৮টার সময় বের করে দেয়। আমরা ভয়ে হলে আর অবস্থান করিনি। রাতেই আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। আজ আমরা প্রভোস্ট স্যারকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, প্রক্টর স্যারের কাছেও যাব। আমরা সঠিক বিচার চাই এবং হলে থাকতে চাই। নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে হলে থাকা আমাদের অধিকার।
এদিকে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমান। তার দাবি ভুক্তভোগীরা পদ্মা-সেতু নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট করেছিল এবং সে কারণে কোনো ঝামেলায় না জড়িয়ে স্বেচ্ছায় হল ত্যাগ করবে বলে মুচলেকা দিয়েছিল।
এ ঘটনা তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া।
বুধবার, ২৪ মে ২০২৩
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলের চার শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমানের বড় ভাইয়ের অবৈধভাবে রুম দখলকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, পেটানোর পরে তাদের কাছ থেকে জোড়পূর্বক মুচলেকা নিয়ে হলছাড়া করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন তারা। এছাড়া বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামিদ কারজাই, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ জামান অভি, আব্দুল আহাদ, আপ্যায়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম নীরব ও উপ-আইন সম্পাদক মুহাম্মদ তালহা।
ভুক্তভোগী চার ছাত্র হলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আলম বাদশা, একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের লুৎফুর রহমান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আল-আমিন ও আরবি বিভাগের একই বর্ষের আশিকুর রহমান। তাঁরা সূর্য সেন হলের ৫৩২ নম্বর কক্ষে থাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে আলম বাদশা বলেন, হলের অবৈধ শিক্ষার্থী সুমন আহমেদকে হলে রাখাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার আনুমানিক ৩টার সময় আব্দুল আহাদ (হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) আমাদেরকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে ৪৫০ নম্বর রুমে নিয়ে যান, যেখানে সিয়াম রহমান থাকেন। সেখানে গেলে দেখতে পাই সিয়াম রহমান এবং সুমন আহমেদের সঙ্গে আগে থেকেই লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করছিলেন। এছাড়া হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ জামান অভি, উপ আইন সম্পাদক মুহাম্মদ তালহা, সহ-সভাপতি হামিদ কারজাই এবং আপ্যায়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম নীরব সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা রুমে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। আমাদের মোবাইল চেক করতে থাকে। কিন্তু কোনো কিছুই পাননি তিনি। শুধুমাত্র লুতফুর ভাইয়ের একটা পোস্ট পেয়েছে পদ্মা সেতু নিয়ে। সেটাও ছিল খুব লজিক্যাল। কিন্তু তারা কোনো লজিক শুনার আগেই মারধর শুরু করে। এটা নাকি সরকারবিরোধী ছিল। কিল, ঘুষি ও লাথি দিতে থাকেন আমাদের চারজনকে।
তিনি আরও বলেন, সিয়াম রহমান দফায় দফায় আমাকে মারধর করে। বলা যায় মধ্যযুগীয় কায়দায়। আমাকে চুল ধরে টানে, বুকে লাথি দেয়, চড়-থাপ্পড় মারে। আমাদের চারজনকেই তিনি মেরেছেন। পরে হামিদ কারজাই আমাকে শিবির করিস বলে অতর্কিতভাবে নির্যাতন শুরু করে।
মুচলেকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পরে আমাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক আলাদা চারটি মুচলেকা নেয় এই বলে যে, ‘আমরা বর্তমানে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে একমত নই। অন্যায়ভাবে সুমন আহমেদকে রুম থেকে বের করেছি। হল থেকে স্বেচ্ছায় বের হয়ে যাব।’ নির্যাতনের এক পর্যায়ে আমরা লিখতে বাধ্য হই।
বিচার দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, নির্যাতন করতে করতে আমাদের ৫ ঘণ্টা পর রাত ৮টার সময় বের করে দেয়। আমরা ভয়ে হলে আর অবস্থান করিনি। রাতেই আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। আজ আমরা প্রভোস্ট স্যারকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, প্রক্টর স্যারের কাছেও যাব। আমরা সঠিক বিচার চাই এবং হলে থাকতে চাই। নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে হলে থাকা আমাদের অধিকার।
এদিকে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমান। তার দাবি ভুক্তভোগীরা পদ্মা-সেতু নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট করেছিল এবং সে কারণে কোনো ঝামেলায় না জড়িয়ে স্বেচ্ছায় হল ত্যাগ করবে বলে মুচলেকা দিয়েছিল।
এ ঘটনা তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া।