বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ তাঁর পুরো জীবন বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনের সংগ্রামে উৎসর্গ করেছেন। তাঁর ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় নেতৃবৃন্দ তাঁর অবদানকে গভীরভাবে স্মরণ করেন। সিপিবির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংগ্রামী জীবন
সভায় বক্তারা মোহাম্মদ ফরহাদের সংগ্রামী জীবন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বলেন, তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানি আমলে স্বৈরাচারবিরোধী লড়াই, ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। নিষিদ্ধ থাকা কমিউনিস্ট পার্টির কার্যক্রমকে জনমানুষের মাঝে তুলে ধরার জন্য তিনি নিরলসভাবে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পরও তিনি গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা, স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রাম এবং সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে আমৃত্যু লড়াই চালিয়ে গেছেন। তাঁর অবদান আজও জাতির কাছে স্মরণীয়।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা
বক্তারা বলেন, মোহাম্মদ ফরহাদ এবং কমিউনিস্ট পার্টি স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ের গণ-অভ্যুত্থানেও কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা স্পষ্ট, যেখানে সাধারণ মানুষ দুর্নীতি, বৈষম্য এবং দুর্নীতি–লুটপাটের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। বক্তারা আরও বলেন, "এই আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য হলো সব মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, আর সেই লক্ষ্যে মোহাম্মদ ফরহাদের আদর্শ অনুসরণ করা হবে।"
মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন পূরণ হয়নি
বক্তারা অভিযোগ করেন যে, মুক্তিযুদ্ধের পর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে স্বৈরাচারী ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এ অবস্থার অবসান ঘটিয়ে বৈষম্য ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার জন্য নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন নেতারা।
রাজনৈতিক সংকট ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বক্তারা আরও বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা নিরসন করা জরুরি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।" তাঁরা আরও বলেন, চলমান সংকট সমাধানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কারের কাজ এগিয়ে নিতে হবে।
স্মরণসভায় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, মিহির ঘোষ, মাহবুবুর আলম, সাজ্জাদ জহির চন্দনসহ সিপিবির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তারা মোহাম্মদ ফরহাদের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং তাঁর অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁর আদর্শকে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
শ্রদ্ধাঞ্জলি
এর আগে সকালে ঢাকার বনানী কবরস্থানে মোহাম্মদ ফরহাদের কবরস্থানে সিপিবির নেতৃবৃন্দ এবং পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় সিপিবির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পঞ্চগড়ের বোদাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোহাম্মদ ফরহাদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে তাঁর অবদানকে গভীরভাবে স্মরণ করা হয়।
মোহাম্মদ ফরহাদের সংগ্রামী জীবন ও আদর্শ আজও তরুণ প্রজন্মকে প্রভাবিত করে চলেছে এবং তার মতো নেতাদের সঠিক মূল্যায়নই দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ তাঁর পুরো জীবন বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনের সংগ্রামে উৎসর্গ করেছেন। তাঁর ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় নেতৃবৃন্দ তাঁর অবদানকে গভীরভাবে স্মরণ করেন। সিপিবির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংগ্রামী জীবন
সভায় বক্তারা মোহাম্মদ ফরহাদের সংগ্রামী জীবন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বলেন, তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানি আমলে স্বৈরাচারবিরোধী লড়াই, ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। নিষিদ্ধ থাকা কমিউনিস্ট পার্টির কার্যক্রমকে জনমানুষের মাঝে তুলে ধরার জন্য তিনি নিরলসভাবে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পরও তিনি গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা, স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রাম এবং সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে আমৃত্যু লড়াই চালিয়ে গেছেন। তাঁর অবদান আজও জাতির কাছে স্মরণীয়।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা
বক্তারা বলেন, মোহাম্মদ ফরহাদ এবং কমিউনিস্ট পার্টি স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ের গণ-অভ্যুত্থানেও কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা স্পষ্ট, যেখানে সাধারণ মানুষ দুর্নীতি, বৈষম্য এবং দুর্নীতি–লুটপাটের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। বক্তারা আরও বলেন, "এই আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য হলো সব মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, আর সেই লক্ষ্যে মোহাম্মদ ফরহাদের আদর্শ অনুসরণ করা হবে।"
মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন পূরণ হয়নি
বক্তারা অভিযোগ করেন যে, মুক্তিযুদ্ধের পর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে স্বৈরাচারী ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এ অবস্থার অবসান ঘটিয়ে বৈষম্য ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার জন্য নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন নেতারা।
রাজনৈতিক সংকট ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বক্তারা আরও বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা নিরসন করা জরুরি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।" তাঁরা আরও বলেন, চলমান সংকট সমাধানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কারের কাজ এগিয়ে নিতে হবে।
স্মরণসভায় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, মিহির ঘোষ, মাহবুবুর আলম, সাজ্জাদ জহির চন্দনসহ সিপিবির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তারা মোহাম্মদ ফরহাদের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং তাঁর অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁর আদর্শকে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
শ্রদ্ধাঞ্জলি
এর আগে সকালে ঢাকার বনানী কবরস্থানে মোহাম্মদ ফরহাদের কবরস্থানে সিপিবির নেতৃবৃন্দ এবং পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় সিপিবির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পঞ্চগড়ের বোদাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোহাম্মদ ফরহাদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে তাঁর অবদানকে গভীরভাবে স্মরণ করা হয়।
মোহাম্মদ ফরহাদের সংগ্রামী জীবন ও আদর্শ আজও তরুণ প্রজন্মকে প্রভাবিত করে চলেছে এবং তার মতো নেতাদের সঠিক মূল্যায়নই দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।