অসহায় দরিদ্র, ছিন্নমুল ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কাছে শীত মানেই বিভীষিকা, রাত মানেই দুঃস্বপ্ন। আর মায়ের হাতের পিঠাপুলি খাওয়াতো শুধু স্বপ্নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
শিশুদের এই দুঃস্বপ্ন দূর করতে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সম্ভাবনা’ দ্বাদশবারের মতো আয়োজন করেছে ‘পুষ্পকলিদের শীত উৎসব’। প্রায় ৩০০ জন সুবিধা বঞ্চিত শিশুকে সাথে নিয়ে সম্ভাবনা উৎসবে মেতে উঠেছিলো। গত ১৫ জানুয়ারী মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের ৫ নম্বর গেটের ভেতরের খোলা অংশে উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়।
সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য আয়োজিত এই উৎসবে ছিলো হরেক রকমের পিঠা পুলি খাওয়া, দিনের শীত নিবারণের জন্য দেওয়া হয় ভারী জ্যাকেট এবং অন্যান্য শীত নিবারন সামগ্রী, উৎসবের মাত্রাবাড়িয়ে দিতে ছিলো জলপুতুল পাপেটস্ এর পরিবেশনায় পাপেট শো, এবং পুষ্পকলিদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এছাড়া এবছর ৫০০০ হাজার শীতার্ত মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হবে।
ইতিমধ্যে ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের রংপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, বগুড়া, বরিশালের ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শীতবস্ত্র বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। চলমান আছে সিলেট, রংপুর ও পাবানা’র সম্প্রসারিত কার্যক্রম।
শিশুদের সাথে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করতে মিরপুরে উপস্থিত ছিলেন সম্ভাবনা’র পৃষ্ঠপোষক সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুসলিম চৌধুরী, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের নির্বাহি পরিচালক মোঃ তোফাজ্জল আলী, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক সচিব মোঃ নুরুন নবী তালুকদার সহ সম্ভাবনার স্বেচ্ছাসেবী এবং শুভাকাংক্ষী বৃন্দ।
সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে এ আয়োজন সম্পর্কে মোহাম্মাদ মুসলিম চৌধুরী জানান, সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সম্ভাবনা নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সাথে সম্পৃক্ত হতে পেরে আমি ভীষন আনন্দিত। আমি বিশ্বাস করি আমরা সবাই যদি সবার জায়গা থেকে শিশুদের পাশে দাড়াই তবে ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তুলতে পারবো ইনশাল্লাহ।
আয়োজন সম্পর্কে মোঃ তোফাজ্জল আলী জানান, প্রতি বছর এই উৎসবে শিশুদের আনন্দ আমাকে মুগ্ধ করে। শিশুরা যে আনন্দ এবং উৎসাহ নিয়ে এখানে বিভিন্ন পরিবেশনা করে তা সত্যিই মনমুগ্ধ কর। সম্ভাবনার স্বেচ্ছাসেবীরা যে আন্তরিকতা নিয়ে শিশুদের পাশে থাকে সেটি অনুপ্রেরনাদায়ক।
আয়োজন সম্পর্কে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক সচিব মোঃ নুরুন নবী তালুকদার জানান, সমাজে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা ও মেধা বিকাশে সম্ভাবনার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। দীর্ঘদিন আমি তাদের সাথে আছি। আমাদের উচিৎ প্রত্যেকের জায়গা থেকে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির পাশে থাকা।
এ আয়োজন সম্পর্কে সম্ভাবনা’র প্রতিষ্ঠাতা আরিফুল ইসলাম জানান, শীতের এই আমেজটা কিংবা মমতাময়ী মায়ের হাতের পিঠাপুলির খাওয়ার সুযোগ সমাজের সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা পায় না। সম্ভাবনা চায়, বিভিন্ন উৎসব আমরা যেভাবে পালন করি, শিশুরাও যেন সেভাবে পালন করতে পারে। যে কেউ চাইলেই আমাদের শিশুদের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারে। তিনি আরও বলেন, সম্ভাবনা’র উদ্দ্যোগে চলছে দেশব্যপী প্রাথমিক বিদ্যালয়, এনজিও স্কুল ও মাদ্রাসার শিশুদের শীতের পোশাক বিতরণ কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, ‘সম্ভাবনা’র পথ চলা শুরু হয় ২০১১ সালে। সূচনালগ্ন থেকে সংগঠনটি দেশে দারিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠান বিগত ১২ বছরে সাফল্যের সাথে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার জন্য ‘পুষ্পকলি স্কুল’, সুবিধা বঞ্চিত নারীদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে স্বাবলম্বি করতে ‘অনিন্দিত নারী’ ও যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘স্বনির্ভর’ প্রকল্প পরিচালনা করে আসছে। সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠির বিনামূল্যে আইটি প্রশিক্ষন প্রদানের লক্ষ্যে সম্ভাবনা ‘সম্ভাবনা আইসিটি সেন্টার’ নামে একটি নতুন উদ্দ্যোগ হাতে নিয়েছে। “প্রযুক্তির অধিকার আলোকিত জীবনের অঙ্গিকার” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে দেশের সকল স্তরের মানুষের মাঝে প্রযুক্তি আলো পৌঁছে দিতে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত, কর্মহারানো, শিক্ষা বঞ্চিত নারী ও পুরুষদের স্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে চলছে। এছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত নারীদের জন্য বিনামূল্যে স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষন প্রকল্প পরিচালনা করছে সম্ভাবনা। এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬৪ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া ও সুবিধা বঞ্চিত নারীদের বিনামূল্যে স্বল্প মেয়াদি হস্তশিল্প ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষন দিচ্ছে সম্ভাবনা।
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
অসহায় দরিদ্র, ছিন্নমুল ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কাছে শীত মানেই বিভীষিকা, রাত মানেই দুঃস্বপ্ন। আর মায়ের হাতের পিঠাপুলি খাওয়াতো শুধু স্বপ্নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
শিশুদের এই দুঃস্বপ্ন দূর করতে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সম্ভাবনা’ দ্বাদশবারের মতো আয়োজন করেছে ‘পুষ্পকলিদের শীত উৎসব’। প্রায় ৩০০ জন সুবিধা বঞ্চিত শিশুকে সাথে নিয়ে সম্ভাবনা উৎসবে মেতে উঠেছিলো। গত ১৫ জানুয়ারী মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের ৫ নম্বর গেটের ভেতরের খোলা অংশে উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়।
সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য আয়োজিত এই উৎসবে ছিলো হরেক রকমের পিঠা পুলি খাওয়া, দিনের শীত নিবারণের জন্য দেওয়া হয় ভারী জ্যাকেট এবং অন্যান্য শীত নিবারন সামগ্রী, উৎসবের মাত্রাবাড়িয়ে দিতে ছিলো জলপুতুল পাপেটস্ এর পরিবেশনায় পাপেট শো, এবং পুষ্পকলিদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এছাড়া এবছর ৫০০০ হাজার শীতার্ত মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হবে।
ইতিমধ্যে ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের রংপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, বগুড়া, বরিশালের ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শীতবস্ত্র বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। চলমান আছে সিলেট, রংপুর ও পাবানা’র সম্প্রসারিত কার্যক্রম।
শিশুদের সাথে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করতে মিরপুরে উপস্থিত ছিলেন সম্ভাবনা’র পৃষ্ঠপোষক সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুসলিম চৌধুরী, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের নির্বাহি পরিচালক মোঃ তোফাজ্জল আলী, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক সচিব মোঃ নুরুন নবী তালুকদার সহ সম্ভাবনার স্বেচ্ছাসেবী এবং শুভাকাংক্ষী বৃন্দ।
সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে এ আয়োজন সম্পর্কে মোহাম্মাদ মুসলিম চৌধুরী জানান, সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সম্ভাবনা নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সাথে সম্পৃক্ত হতে পেরে আমি ভীষন আনন্দিত। আমি বিশ্বাস করি আমরা সবাই যদি সবার জায়গা থেকে শিশুদের পাশে দাড়াই তবে ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তুলতে পারবো ইনশাল্লাহ।
আয়োজন সম্পর্কে মোঃ তোফাজ্জল আলী জানান, প্রতি বছর এই উৎসবে শিশুদের আনন্দ আমাকে মুগ্ধ করে। শিশুরা যে আনন্দ এবং উৎসাহ নিয়ে এখানে বিভিন্ন পরিবেশনা করে তা সত্যিই মনমুগ্ধ কর। সম্ভাবনার স্বেচ্ছাসেবীরা যে আন্তরিকতা নিয়ে শিশুদের পাশে থাকে সেটি অনুপ্রেরনাদায়ক।
আয়োজন সম্পর্কে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক সচিব মোঃ নুরুন নবী তালুকদার জানান, সমাজে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা ও মেধা বিকাশে সম্ভাবনার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। দীর্ঘদিন আমি তাদের সাথে আছি। আমাদের উচিৎ প্রত্যেকের জায়গা থেকে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির পাশে থাকা।
এ আয়োজন সম্পর্কে সম্ভাবনা’র প্রতিষ্ঠাতা আরিফুল ইসলাম জানান, শীতের এই আমেজটা কিংবা মমতাময়ী মায়ের হাতের পিঠাপুলির খাওয়ার সুযোগ সমাজের সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা পায় না। সম্ভাবনা চায়, বিভিন্ন উৎসব আমরা যেভাবে পালন করি, শিশুরাও যেন সেভাবে পালন করতে পারে। যে কেউ চাইলেই আমাদের শিশুদের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারে। তিনি আরও বলেন, সম্ভাবনা’র উদ্দ্যোগে চলছে দেশব্যপী প্রাথমিক বিদ্যালয়, এনজিও স্কুল ও মাদ্রাসার শিশুদের শীতের পোশাক বিতরণ কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, ‘সম্ভাবনা’র পথ চলা শুরু হয় ২০১১ সালে। সূচনালগ্ন থেকে সংগঠনটি দেশে দারিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠান বিগত ১২ বছরে সাফল্যের সাথে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার জন্য ‘পুষ্পকলি স্কুল’, সুবিধা বঞ্চিত নারীদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে স্বাবলম্বি করতে ‘অনিন্দিত নারী’ ও যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘স্বনির্ভর’ প্রকল্প পরিচালনা করে আসছে। সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠির বিনামূল্যে আইটি প্রশিক্ষন প্রদানের লক্ষ্যে সম্ভাবনা ‘সম্ভাবনা আইসিটি সেন্টার’ নামে একটি নতুন উদ্দ্যোগ হাতে নিয়েছে। “প্রযুক্তির অধিকার আলোকিত জীবনের অঙ্গিকার” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে দেশের সকল স্তরের মানুষের মাঝে প্রযুক্তি আলো পৌঁছে দিতে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত, কর্মহারানো, শিক্ষা বঞ্চিত নারী ও পুরুষদের স্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে চলছে। এছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত নারীদের জন্য বিনামূল্যে স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষন প্রকল্প পরিচালনা করছে সম্ভাবনা। এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬৪ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া ও সুবিধা বঞ্চিত নারীদের বিনামূল্যে স্বল্প মেয়াদি হস্তশিল্প ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষন দিচ্ছে সম্ভাবনা।