নতুন গাড়ির তুলনায় পুরনো গাড়ির নিবন্ধন ও হস্তান্তর মাশুল বেশি হওয়াকে বৈষম্যমূলক বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। সংগঠনটি সব ধরনের গাড়ির ওপর শুল্কহার কমানোরও আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক বলেন, "গাড়ির আমদানি শুল্ক বেশি হওয়ায় দেশের বিশাল মধ্যবিত্ত শ্রেণি গাড়ির মালিক হতে পারছেন না। গাড়ি এখন আর বিলাসী নয়, বরং নিরাপদ বাহন। মধ্যবিত্তরা গাড়ি ব্যবহার করতে পারলে বাজারে গাড়ির সংখ্যা এক লাখে উন্নীত হতে পারে।"
তিনি জানান, বর্তমানে দেশে বছরে ২৫ থেকে ৩০ হাজার গাড়ি নিবন্ধন হয়। এটি এক লাখে উন্নীত হলে দেশেই গাড়ি উৎপাদনে আগ্রহী হবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো।
সংগঠনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিতে ন্যূনতম ১২৯ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৮২৬ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয়, যা কমানো জরুরি।
বিআরটিএ’র তথ্য তুলে ধরে বারভিডা জানায়, দেড় হাজার সিসি সক্ষমতার নতুন গাড়ির নিবন্ধন, মালিকানা বদল ও ভ্যাটসহ খরচ ৮০ হাজার ৪০৮ টাকার বেশি হলেও পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে তা ১ লাখ ৭ হাজার টাকার বেশি। একইভাবে সাড়ে তিন হাজার সিসি সক্ষমতার নতুন গাড়িতে নিবন্ধন খরচ ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৮ টাকা, যেখানে পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে খরচ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৬ টাকা।
মডেল ভেদে পুরনো গাড়ির নিবন্ধন খরচ নতুন গাড়ির তুলনায় ২৭ হাজার থেকে ৫৪ হাজার টাকা বেশি হওয়াকে বৈষম্যমূলক বলেও মন্তব্য করেন বারভিডা সভাপতি।
তিনি বলেন, "গাড়ি আমদানির পরবর্তী শুল্কহার বেশি থাকায় মধ্যবিত্তরা গাড়ি কেনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।"
সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ঝুঁকিপূর্ণ ছোট যানবাহনের কারণে প্রতি বছর সড়কে সাড়ে ৮ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৩৫৯টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫৪৩ জন নিহত এবং ১২ হাজার ৬০৮ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার হার ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে যথাক্রমে ১ দশমিক ৫৪ ও ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। এসব দুর্ঘটনায় নিম্নমানের যানবাহনের ভূমিকা রয়েছে।
ব্যাটারিচালিত রিকশাকে পরিবেশ ও দেশের জন্য ক্যান্সার হিসেবে উল্লেখ করে আব্দুল হক বলেন, "গাড়ি এখন বিলাসিতা নয়, নিরাপত্তার প্রয়োজন। গাড়ির ব্যবহার বাড়লে দুর্ঘটনা কমে যাবে।"
তিনি জানান, ২০২৪ সালে দেশে ৩ লাখ ৭ হাজারটি গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে, যা ২০২৩ সালের ৩ লাখ ৬০ হাজার এবং ২০২২ সালের ৫ লাখ ৭৮ হাজার নিবন্ধনের তুলনায় কম। ২০১৫ সালের পর এটি এক বছরে সর্বোচ্চ নিবন্ধনসংখ্যা।
বারভিডা দাবি করেছে, সরকার শুল্কহার কমালে গাড়ির দাম বর্তমানের অর্ধেকে নেমে আসতে পারে।
বর্ধিত গাড়ির চাপ সড়কে সমস্যা সৃষ্টি করবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল হক বলেন, "আমরা গণপরিবহন ব্যবস্থাকে সমর্থন করি। শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি দিয়ে যানজট সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। আমি মেট্রোরেল প্রকল্পের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বাংলাদেশে অনেক কম খরচে মেট্রোরেল নির্মাণ সম্ভব, যাতে ভাড়াও কম হবে।"
‘বারভিডার ব্যবসা-সহায়ক এবং ভোক্তা ও রাজস্ববান্ধব শুল্ক-বাণিজ্য নীতিমালা দাবি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ রহমান, সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান খান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ জগলুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
নতুন গাড়ির তুলনায় পুরনো গাড়ির নিবন্ধন ও হস্তান্তর মাশুল বেশি হওয়াকে বৈষম্যমূলক বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। সংগঠনটি সব ধরনের গাড়ির ওপর শুল্কহার কমানোরও আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক বলেন, "গাড়ির আমদানি শুল্ক বেশি হওয়ায় দেশের বিশাল মধ্যবিত্ত শ্রেণি গাড়ির মালিক হতে পারছেন না। গাড়ি এখন আর বিলাসী নয়, বরং নিরাপদ বাহন। মধ্যবিত্তরা গাড়ি ব্যবহার করতে পারলে বাজারে গাড়ির সংখ্যা এক লাখে উন্নীত হতে পারে।"
তিনি জানান, বর্তমানে দেশে বছরে ২৫ থেকে ৩০ হাজার গাড়ি নিবন্ধন হয়। এটি এক লাখে উন্নীত হলে দেশেই গাড়ি উৎপাদনে আগ্রহী হবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো।
সংগঠনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিতে ন্যূনতম ১২৯ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৮২৬ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয়, যা কমানো জরুরি।
বিআরটিএ’র তথ্য তুলে ধরে বারভিডা জানায়, দেড় হাজার সিসি সক্ষমতার নতুন গাড়ির নিবন্ধন, মালিকানা বদল ও ভ্যাটসহ খরচ ৮০ হাজার ৪০৮ টাকার বেশি হলেও পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে তা ১ লাখ ৭ হাজার টাকার বেশি। একইভাবে সাড়ে তিন হাজার সিসি সক্ষমতার নতুন গাড়িতে নিবন্ধন খরচ ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৮ টাকা, যেখানে পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে খরচ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৬ টাকা।
মডেল ভেদে পুরনো গাড়ির নিবন্ধন খরচ নতুন গাড়ির তুলনায় ২৭ হাজার থেকে ৫৪ হাজার টাকা বেশি হওয়াকে বৈষম্যমূলক বলেও মন্তব্য করেন বারভিডা সভাপতি।
তিনি বলেন, "গাড়ি আমদানির পরবর্তী শুল্কহার বেশি থাকায় মধ্যবিত্তরা গাড়ি কেনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।"
সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ঝুঁকিপূর্ণ ছোট যানবাহনের কারণে প্রতি বছর সড়কে সাড়ে ৮ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৩৫৯টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫৪৩ জন নিহত এবং ১২ হাজার ৬০৮ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার হার ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে যথাক্রমে ১ দশমিক ৫৪ ও ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। এসব দুর্ঘটনায় নিম্নমানের যানবাহনের ভূমিকা রয়েছে।
ব্যাটারিচালিত রিকশাকে পরিবেশ ও দেশের জন্য ক্যান্সার হিসেবে উল্লেখ করে আব্দুল হক বলেন, "গাড়ি এখন বিলাসিতা নয়, নিরাপত্তার প্রয়োজন। গাড়ির ব্যবহার বাড়লে দুর্ঘটনা কমে যাবে।"
তিনি জানান, ২০২৪ সালে দেশে ৩ লাখ ৭ হাজারটি গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে, যা ২০২৩ সালের ৩ লাখ ৬০ হাজার এবং ২০২২ সালের ৫ লাখ ৭৮ হাজার নিবন্ধনের তুলনায় কম। ২০১৫ সালের পর এটি এক বছরে সর্বোচ্চ নিবন্ধনসংখ্যা।
বারভিডা দাবি করেছে, সরকার শুল্কহার কমালে গাড়ির দাম বর্তমানের অর্ধেকে নেমে আসতে পারে।
বর্ধিত গাড়ির চাপ সড়কে সমস্যা সৃষ্টি করবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল হক বলেন, "আমরা গণপরিবহন ব্যবস্থাকে সমর্থন করি। শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি দিয়ে যানজট সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। আমি মেট্রোরেল প্রকল্পের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বাংলাদেশে অনেক কম খরচে মেট্রোরেল নির্মাণ সম্ভব, যাতে ভাড়াও কম হবে।"
‘বারভিডার ব্যবসা-সহায়ক এবং ভোক্তা ও রাজস্ববান্ধব শুল্ক-বাণিজ্য নীতিমালা দাবি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ রহমান, সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান খান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ জগলুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।