জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তথ্যানুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদের মধ্যে পাঁচজন এনবিআরের চলমান ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির নেতৃত্বে রয়েছেন।
রোববার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, “বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে, নিজে লাভবান হয়ে ও রাষ্ট্রের ক্ষতি করার মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের” অভিযোগে এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
তদন্তাধীন ছয় কর্মকর্তা হলেন— এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার ও পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার ও সহসভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার ও সভাপতি হাছান তারেক রিকাবদার এবং অতিরিক্ত কমিশনার ও সদস্য সাধন কুমার কুন্ডু।
বদিউল আলম ছাড়া বাকি পাঁচজনই এনবিআরের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন।
রোববার আন্দোলনকারীদের যে প্রতিনিধি দলের অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল, সেই দলে মির্জা আশিক রানা, মোরশেদ উদ্দীন খান, মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা ও হাছান তারেক রিকাবদারের নাম ছিল। এছাড়া, সাধন কুমার কুন্ডু আন্দোলনকারীদের একাধিক সংবাদ সম্মেলনে সামনের সারিতে ছিলেন।
দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, এনবিআরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে কর ফাঁকির সুযোগ করে দেন। এতে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ঘুষ না পেয়ে কোনো কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, অনেক করদাতা আগাম কর দেন বা অতিরিক্ত কর দিয়ে থাকেন। নিয়ম অনুযায়ী এই অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তা পেতে ঘুষ দিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে কর ফেরতের অর্ধেকেরও বেশি ঘুষ বা উপহারে চলে যায়। এ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে।
মে মাসে এনবিআরকে দুটি ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি পৃথক বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি হলে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। পরবর্তীতে সরকার আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে তাঁরা কাজে ফেরেন। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলতে থাকে।
এ দাবিতে শনিবার থেকে এনবিআর কর্মীরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেন, যার ফলে আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই রোববার সরকার এনবিআরের সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ হিসেবে ঘোষণা করে।
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, “অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সকল কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সকল শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
সরকার এনবিআর কর্মীদের অবিলম্বে কর্মস্থলে ফেরার এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়। তা না হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
সরকারের ওই বিবৃতির পরপরই ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান কার্যক্রমের বিষয়টি সামনে আসে।
রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তথ্যানুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদের মধ্যে পাঁচজন এনবিআরের চলমান ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির নেতৃত্বে রয়েছেন।
রোববার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, “বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে, নিজে লাভবান হয়ে ও রাষ্ট্রের ক্ষতি করার মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের” অভিযোগে এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
তদন্তাধীন ছয় কর্মকর্তা হলেন— এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার ও পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার ও সহসভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার ও সভাপতি হাছান তারেক রিকাবদার এবং অতিরিক্ত কমিশনার ও সদস্য সাধন কুমার কুন্ডু।
বদিউল আলম ছাড়া বাকি পাঁচজনই এনবিআরের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন।
রোববার আন্দোলনকারীদের যে প্রতিনিধি দলের অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল, সেই দলে মির্জা আশিক রানা, মোরশেদ উদ্দীন খান, মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা ও হাছান তারেক রিকাবদারের নাম ছিল। এছাড়া, সাধন কুমার কুন্ডু আন্দোলনকারীদের একাধিক সংবাদ সম্মেলনে সামনের সারিতে ছিলেন।
দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, এনবিআরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে কর ফাঁকির সুযোগ করে দেন। এতে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ঘুষ না পেয়ে কোনো কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, অনেক করদাতা আগাম কর দেন বা অতিরিক্ত কর দিয়ে থাকেন। নিয়ম অনুযায়ী এই অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তা পেতে ঘুষ দিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে কর ফেরতের অর্ধেকেরও বেশি ঘুষ বা উপহারে চলে যায়। এ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে।
মে মাসে এনবিআরকে দুটি ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি পৃথক বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি হলে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। পরবর্তীতে সরকার আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে তাঁরা কাজে ফেরেন। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলতে থাকে।
এ দাবিতে শনিবার থেকে এনবিআর কর্মীরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেন, যার ফলে আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই রোববার সরকার এনবিআরের সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ হিসেবে ঘোষণা করে।
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, “অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সকল কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সকল শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
সরকার এনবিআর কর্মীদের অবিলম্বে কর্মস্থলে ফেরার এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়। তা না হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
সরকারের ওই বিবৃতির পরপরই ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান কার্যক্রমের বিষয়টি সামনে আসে।