নিষিদ্ধ ওষুধ ট্যাপেন্টাডল ঢুকছে দেশে
ব্যথা নিরাময়ের ওষুধের আড়ালে পাঁচ বছর আগের নিষিদ্ধ ওষুধ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট দেশে এনে মাদক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৭-৮ টাকার ট্যাবলেট মাদক হিসেবে ৫০ থেকে ১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ট্যাপেন্টাডল নামের এ ট্যাবলেট কিনতে ওষুধের দোকানে ভিড় জমান মাদক সেবীরা। ওষুধটি সেবন করলে কিডনি ও হার্টের মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে বলে চিকিৎসা ও রাসায়িনক বিশেষজ্ঞরা জানান।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়িক পরীক্ষক ড. দুলাল কৃষ্ণ সাহা সংবাদকে জানান, ট্যাপেন্টাডল মূলত ব্যাথার ওষুধ। ভারতে ট্রাক চালকসহ শ্রমিকরা দীর্ঘ পথ গাড়ি চালানোর পর ব্যাথানাশক হিসেবে এ ওষুধ সেবন করতেন। বাংলাদেশে এই ওষুধকে এখন শ্রমিকসহ নানা পেশার মানৃুষ ইয়াবার বিকল্প মাদক হিসেবে সেবন করছেন। এটি ব্যাথ্ ানিরাময় ছাড়া নেশাও হয়। দামে কম হওয়ায় অনেকেই এই ওষুধকে দোকান থেকে কিনে সেবন করেন। এই ওষুধ বিক্রিতে লাভও বেশি। ৭ টাকার ট্যাবলেট ৫০ থেকে ১শ টাকায় বিক্রি করা হয়। এই ওষুধ পাচারকারিরা সীমান্ত পথে ভারতে যান। তারা চিকিৎসার কথা বলে গোপনে হাজার হাজার ট্যাবলেট সীমান্ত দিয়ে দেশে এনে বিক্রি করেন। সম্প্রতি এই ওষুধ বিক্রি ব্যাপক বাড়ছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, যেসব মাদক ব্যবসায়ী সড়ক পথে ভারতে যান তারা আর বিমানযোগে এই ওষুৃধ নিয়ে দেশে ফিরে নির্দিষ্ট এলাকায় করেন। সম্প্রতি একাধিক চালান জব্দ করা হয়েছে। আটকও করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে।
আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন-২) অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি আলী আহমদ খান সংবাদকে জানান, গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা চেচুয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্যাপেন্টাডলের একটি চালান আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগেও এপিবিএন-২ টিম আরও অভিযান চালিয়ে একাধিক মাদকের চালান জব্দ করেছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, দেশে ইয়াবার বিকল্প হিসেবে এখন ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট সেবন করা হচ্ছে। এই ট্যাবলেট তারা নেশা হিসেবে সেবন করছেন। আর এই ওষুধ বিক্রিতে ঝুঁকিও কম। সীমান্ত পথ ছাড়াও আকাশ পথে সহজে ওষুধ হিসেবে ভারত থেকে কিনে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। বিপদ কম আবার লাভও বেশি। তাই নিষিদ্ধ এ ওষুধের এখন জমজমাট ব্যবসা চলছে। প্রতিটি ৭ থেকে ৮ টাকার ট্যাবলেট এখন ১শ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হয়। সম্প্রতি বিমানবন্দরে ৪২ হাজারেরও বেশি ট্যাবলেটসহ ৫ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। তারা হলেন, সোলাইমান, রাজু, আবু সাঈদ, আশীষ সাইফ ও মো. ফারুক।
অভিযোগ রয়েছে, মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের দলে থাকা লোকজনকে রোগী সাজিয়ে ও ওষুধের মিথ্যা চিকিৎসাপত্রে (প্রেশক্রিপশান) নেশার ট্যাবলেট ট্যাপেন্টালের নাম উল্লেখ করে নিয়ে আসেন। আবার সীমান্ত দিয়ে অনেকেই চালান নিয়ে আসছেন। মাঝে মধ্যে ধরাও পড়ছে। শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে সবচেয়ে বড় চালান ধরা পড়েছে। এর আগে রাজশাহীতে বড় চালান ধরা পড়েছে। এই ছাড়াও বিচ্ছিন্ন ভাবে এই মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারা গতকাল রাতে সংবাদকে জানান, ২০১৮ সালে এই ওষুধ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শ্রমিকসহ যুব সমাজকে বাঁচাতে এই ওষুধ বিক্রিও নিষিদ্ধ এবং সেবনকারিদের ধরতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাজ চলছে।
একজন চিকিৎসক সংবাদকে বলেন, এই ওষুধ প্রেশক্রিপশান ছাড়া বিক্রি করা যায় না। এটা ব্যাথা নিরাময় হলেও অনেকেই বেশি সেবন কওে নেশা করছেন। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি।
নিষিদ্ধ ওষুধ ট্যাপেন্টাডল ঢুকছে দেশে
শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ব্যথা নিরাময়ের ওষুধের আড়ালে পাঁচ বছর আগের নিষিদ্ধ ওষুধ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট দেশে এনে মাদক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৭-৮ টাকার ট্যাবলেট মাদক হিসেবে ৫০ থেকে ১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ট্যাপেন্টাডল নামের এ ট্যাবলেট কিনতে ওষুধের দোকানে ভিড় জমান মাদক সেবীরা। ওষুধটি সেবন করলে কিডনি ও হার্টের মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে বলে চিকিৎসা ও রাসায়িনক বিশেষজ্ঞরা জানান।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়িক পরীক্ষক ড. দুলাল কৃষ্ণ সাহা সংবাদকে জানান, ট্যাপেন্টাডল মূলত ব্যাথার ওষুধ। ভারতে ট্রাক চালকসহ শ্রমিকরা দীর্ঘ পথ গাড়ি চালানোর পর ব্যাথানাশক হিসেবে এ ওষুধ সেবন করতেন। বাংলাদেশে এই ওষুধকে এখন শ্রমিকসহ নানা পেশার মানৃুষ ইয়াবার বিকল্প মাদক হিসেবে সেবন করছেন। এটি ব্যাথ্ ানিরাময় ছাড়া নেশাও হয়। দামে কম হওয়ায় অনেকেই এই ওষুধকে দোকান থেকে কিনে সেবন করেন। এই ওষুধ বিক্রিতে লাভও বেশি। ৭ টাকার ট্যাবলেট ৫০ থেকে ১শ টাকায় বিক্রি করা হয়। এই ওষুধ পাচারকারিরা সীমান্ত পথে ভারতে যান। তারা চিকিৎসার কথা বলে গোপনে হাজার হাজার ট্যাবলেট সীমান্ত দিয়ে দেশে এনে বিক্রি করেন। সম্প্রতি এই ওষুধ বিক্রি ব্যাপক বাড়ছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, যেসব মাদক ব্যবসায়ী সড়ক পথে ভারতে যান তারা আর বিমানযোগে এই ওষুৃধ নিয়ে দেশে ফিরে নির্দিষ্ট এলাকায় করেন। সম্প্রতি একাধিক চালান জব্দ করা হয়েছে। আটকও করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে।
আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন-২) অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি আলী আহমদ খান সংবাদকে জানান, গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা চেচুয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্যাপেন্টাডলের একটি চালান আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগেও এপিবিএন-২ টিম আরও অভিযান চালিয়ে একাধিক মাদকের চালান জব্দ করেছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, দেশে ইয়াবার বিকল্প হিসেবে এখন ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট সেবন করা হচ্ছে। এই ট্যাবলেট তারা নেশা হিসেবে সেবন করছেন। আর এই ওষুধ বিক্রিতে ঝুঁকিও কম। সীমান্ত পথ ছাড়াও আকাশ পথে সহজে ওষুধ হিসেবে ভারত থেকে কিনে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। বিপদ কম আবার লাভও বেশি। তাই নিষিদ্ধ এ ওষুধের এখন জমজমাট ব্যবসা চলছে। প্রতিটি ৭ থেকে ৮ টাকার ট্যাবলেট এখন ১শ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হয়। সম্প্রতি বিমানবন্দরে ৪২ হাজারেরও বেশি ট্যাবলেটসহ ৫ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। তারা হলেন, সোলাইমান, রাজু, আবু সাঈদ, আশীষ সাইফ ও মো. ফারুক।
অভিযোগ রয়েছে, মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের দলে থাকা লোকজনকে রোগী সাজিয়ে ও ওষুধের মিথ্যা চিকিৎসাপত্রে (প্রেশক্রিপশান) নেশার ট্যাবলেট ট্যাপেন্টালের নাম উল্লেখ করে নিয়ে আসেন। আবার সীমান্ত দিয়ে অনেকেই চালান নিয়ে আসছেন। মাঝে মধ্যে ধরাও পড়ছে। শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে সবচেয়ে বড় চালান ধরা পড়েছে। এর আগে রাজশাহীতে বড় চালান ধরা পড়েছে। এই ছাড়াও বিচ্ছিন্ন ভাবে এই মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারা গতকাল রাতে সংবাদকে জানান, ২০১৮ সালে এই ওষুধ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শ্রমিকসহ যুব সমাজকে বাঁচাতে এই ওষুধ বিক্রিও নিষিদ্ধ এবং সেবনকারিদের ধরতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাজ চলছে।
একজন চিকিৎসক সংবাদকে বলেন, এই ওষুধ প্রেশক্রিপশান ছাড়া বিক্রি করা যায় না। এটা ব্যাথা নিরাময় হলেও অনেকেই বেশি সেবন কওে নেশা করছেন। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি।