নরসিংদী-২ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপের ছোট ভাই সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটনের বিরুদ্ধে সরকারি গোডাউনের ৫৮২ কোটি টাকার সার কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দীর্ঘ ২ বছর অনুসন্ধান শেষে রোববার (২৬ নভেম্বর) দুদকের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেছেন। পোটন ছাড়াও এ মামলার আসামিরা হলেন- পোটন ট্রেডার্সের মহাব্যবস্থাপক মো. শাহাদত হোসেন (নিপু) ও মো. নাজমুল আলম (বাদল), পোটন ট্রেডার্সের উত্তরবঙ্গ প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন এবং প্রতিনিধি (খুলনা ও নওয়াপাড়া) মো. আতাউর রহমান।
কামরুল আশরাফ খান পোটন নরসিংদী-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১৩ সালে পোটনের বড় ভাই ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না দিয়ে মনোনয়ন দেয়া হয় জোট প্রার্থী জায়েদুল কবিরকে। মনোনয়ন না পেয়ে ডা. দিলিপ তার ছোট ভাই কামরুল আশরাফ খান পোটনকে স্বতন্ত্র পার্থী করেন ওই আসনে। পরে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন পোটন। সংসদ সদস্য থাকাকালে পোটনের বিরুদ্ধে এলাকায় নানা ধরনের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ফের দলীয় মনোনয়ন পান ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপ। বড় ভাইয়ের সংসদ সদস্য পদকে ব্যবহার করে পোটন এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে। তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স সরকারি ব্যবস্থাপনায় ইউরিয়া সার বিভিন্ন সরকারি গোডাউনে সরবরাহের জন্য দায়িত্ব পায়। কিন্তু চুক্তি মোতাবেক সার সরবরাহ না করে ৫৮২ কোটি টাকা মূল্যের সার আত্মসাৎ করে কালোবাজারে বিক্রি করে দেন। এ ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী পোটনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের দায়িত্ব পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোটন দলীয় মনোনয়ন না পেলেও তার বড় ভাইকে ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। বর্তমানে সংসদ সদস্য দিলিপ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপও নানা কারণে বিতর্কিত হয়ে পড়েন এলাকায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জিটুজি চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সৌদি আরব, দুবাই ও কাতার থেকে আমদানি করা মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৫.৫৩০ টন ইউরিয়া সার বিভিন্ন গুদামে সরবরাহের জন্য মেসার্স পোটন ট্রেডার্স ও প্রিন্সিপাল ড্রাই বাঙ্ক শিপিং (প্রা.) লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ১৩টি চুক্তি সই হয়। এর মধ্যে ৭টি চুক্তির আওতায় পোটন ট্রেডার্স ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৭ দশমিক ৫৬৬ টন ইউরিয়া সার বুঝে নিয়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৬.২৫৮ টন ইউরিয়া সার গুদামে পৌঁছায়। বাকি ৭১ হাজার ৮০১.৩১ কেজি ইউরিয়া সার সরবরাহ না করে আত্মসাৎ করেন। এসব সারের মূল্য ৫৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৯ হাজার ৬৪ টাকা।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুলাইয়ের ওই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সার ৫০ দিনের মধ্যে গুদামে পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। পোটন ট্রেডার্স সেটা না করে সার ট্রানজিটে রয়েছে বলে বিসিআইসিকে মিথ্যা তথ্য দেয়। সার না পেয়ে বিসিআইসি ট্রানজিটে থাকা সার দ্রুত সরবরাহ করার জন্য পোটন ট্রেডার্সকে ধারাবাহিকভাবে ৪৩টি পত্র দেয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান সার গুদামে পৌঁছায়নি। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব সার আত্মসাতের তথ্য-প্রমাণ পেয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সার কেলেঙ্কারির ঘটনায় গত বছর পোটনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স ও তার মালিক পোটনকে কালো তালিকাভুক্ত করে সরকার। সার আত্মসাতের অভিযোগে পোটনের বিরুদ্ধে যেদিন মামলা হয়েছে, সেইদিন ওই আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার ঘোষণা আসলো বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপের নাম।
এলাকাবাসী বলছে, পোটন-দিলিপ পরিবারের কাছে এলাকাবাসী জিম্মি। সার আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় ছোট ভাই আসামি, আর তার বড় ভাই পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন।
রোববার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩
নরসিংদী-২ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপের ছোট ভাই সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটনের বিরুদ্ধে সরকারি গোডাউনের ৫৮২ কোটি টাকার সার কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দীর্ঘ ২ বছর অনুসন্ধান শেষে রোববার (২৬ নভেম্বর) দুদকের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেছেন। পোটন ছাড়াও এ মামলার আসামিরা হলেন- পোটন ট্রেডার্সের মহাব্যবস্থাপক মো. শাহাদত হোসেন (নিপু) ও মো. নাজমুল আলম (বাদল), পোটন ট্রেডার্সের উত্তরবঙ্গ প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন এবং প্রতিনিধি (খুলনা ও নওয়াপাড়া) মো. আতাউর রহমান।
কামরুল আশরাফ খান পোটন নরসিংদী-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১৩ সালে পোটনের বড় ভাই ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না দিয়ে মনোনয়ন দেয়া হয় জোট প্রার্থী জায়েদুল কবিরকে। মনোনয়ন না পেয়ে ডা. দিলিপ তার ছোট ভাই কামরুল আশরাফ খান পোটনকে স্বতন্ত্র পার্থী করেন ওই আসনে। পরে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন পোটন। সংসদ সদস্য থাকাকালে পোটনের বিরুদ্ধে এলাকায় নানা ধরনের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ফের দলীয় মনোনয়ন পান ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপ। বড় ভাইয়ের সংসদ সদস্য পদকে ব্যবহার করে পোটন এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে। তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স সরকারি ব্যবস্থাপনায় ইউরিয়া সার বিভিন্ন সরকারি গোডাউনে সরবরাহের জন্য দায়িত্ব পায়। কিন্তু চুক্তি মোতাবেক সার সরবরাহ না করে ৫৮২ কোটি টাকা মূল্যের সার আত্মসাৎ করে কালোবাজারে বিক্রি করে দেন। এ ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী পোটনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের দায়িত্ব পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোটন দলীয় মনোনয়ন না পেলেও তার বড় ভাইকে ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। বর্তমানে সংসদ সদস্য দিলিপ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপও নানা কারণে বিতর্কিত হয়ে পড়েন এলাকায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জিটুজি চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সৌদি আরব, দুবাই ও কাতার থেকে আমদানি করা মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৫.৫৩০ টন ইউরিয়া সার বিভিন্ন গুদামে সরবরাহের জন্য মেসার্স পোটন ট্রেডার্স ও প্রিন্সিপাল ড্রাই বাঙ্ক শিপিং (প্রা.) লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ১৩টি চুক্তি সই হয়। এর মধ্যে ৭টি চুক্তির আওতায় পোটন ট্রেডার্স ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৭ দশমিক ৫৬৬ টন ইউরিয়া সার বুঝে নিয়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৬.২৫৮ টন ইউরিয়া সার গুদামে পৌঁছায়। বাকি ৭১ হাজার ৮০১.৩১ কেজি ইউরিয়া সার সরবরাহ না করে আত্মসাৎ করেন। এসব সারের মূল্য ৫৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৯ হাজার ৬৪ টাকা।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুলাইয়ের ওই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সার ৫০ দিনের মধ্যে গুদামে পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। পোটন ট্রেডার্স সেটা না করে সার ট্রানজিটে রয়েছে বলে বিসিআইসিকে মিথ্যা তথ্য দেয়। সার না পেয়ে বিসিআইসি ট্রানজিটে থাকা সার দ্রুত সরবরাহ করার জন্য পোটন ট্রেডার্সকে ধারাবাহিকভাবে ৪৩টি পত্র দেয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান সার গুদামে পৌঁছায়নি। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব সার আত্মসাতের তথ্য-প্রমাণ পেয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সার কেলেঙ্কারির ঘটনায় গত বছর পোটনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স ও তার মালিক পোটনকে কালো তালিকাভুক্ত করে সরকার। সার আত্মসাতের অভিযোগে পোটনের বিরুদ্ধে যেদিন মামলা হয়েছে, সেইদিন ওই আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার ঘোষণা আসলো বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপের নাম।
এলাকাবাসী বলছে, পোটন-দিলিপ পরিবারের কাছে এলাকাবাসী জিম্মি। সার আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় ছোট ভাই আসামি, আর তার বড় ভাই পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন।