ক্যাম্পাসকে মাদকের হটজোন বানিয়েছে অভিযুক্ত মামুন
গ্রেপ্তারকৃত মামুন ও মুরাদ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রুমে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারিসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে পরিকল্পনাকারী মামুনুর রশিদ ওরফে মামুনকে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে এবং ধর্ষণের সহায়তাকারি মো. মুরাদকে নওগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মূল পরিকল্পনাকারি মামুনুর রশিদ মামুন (৪৪) বহিরাগত ও মাদক ব্যবসায়ী। সে প্রায় ২০ বছর আগে জুরাইনে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করত। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে ৮টি মামলাও রয়েছে। ৪ বার জেল খেটেছে।
অভিযুক্ত মুরাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র। তার বাড়ি নওগাঁর পত্মীতলা উপজেলার আমন্ত গ্রামে।
গতকাল বুধবার রাতে র্যাব-৪, র্যাব-২ এবং র্যাব-৫ টিম টানা অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গণধর্ষণে তাদের জড়িত থাকা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে
গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডর খন্দকার আল মঈন এক প্রেসব্রিফিংয়ে এই সব তথ্য জানান।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত মামুন প্রায় ৬ থেকে ৭ বছর যাবত মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে প্রতি মাসে কয়েক দফায় প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার ইয়াবা সংগ্রহ করে তা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলাসহ আশপাশের এলাকা ও বেশ কিছু মাদকসেবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদক সরবরাহ করত।
অভিযুক্ত মামুন মাদক বিক্রির সুবাধে ধর্ষণ মামলার এক নম্বব আসামি মোস্তাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র ছাত্রদের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। এই সুবাধে সেই জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে মাদকসহ রাতে থাকত এবং অন্য ছাত্রদের সঙ্গে মাদক সেবন করত।
অভিযুক্ত মামুনের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার (ভিকটিম) নারীর স্বামী জাহিদ মিয়া ওরফে রবিনের মাধ্যমেও বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের মাদক সরবরাহ করতো গ্রেপ্তারকৃত মামুন। কিছুদিন আগে অভিযুক্ত মামুনের থাকার সমস্যা হলে ভিকটিমের স্বামীকে ফোন দিয়ে কিছুদিনের জন্য তাদের বাসায় অবস্থান করবে বলে জানায়।
যেভাবে ঘটনা ঘটেছে
গ্রেপ্তারকৃত মামুন ধর্ষণের শিকার নারীর ভাড়াকৃত বাসায় সাবলেট হিসেবে প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর ধরে থাকত। তখন তাদের মধ্যে সখ্যতা তৈরি হয়। ঘটনার আগে ১ নম্বর আসামি মোস্তাফিজুর রহমান অভিযুক্ত মামুনের কাছে অনৈতিক কাজের ইচ্ছা পোষণ করলে পূর্ব পরিকল্পনা মতে, অভিযুক্ত মামুন গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ভিকটিমের স্বামীকে ফোন দিয়ে জানায়, মোস্তাফিজুর রহমান নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে তার থাকার ব্যবস্থা করেছে বিধায় সে এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকবে। তাই অভিযুক্ত মামুন ভিকটিমের স্বামী জাহিদকে মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য বিশ্বদ্যিালয়ে দেখা করতে বলে।
ভিকটিমের স্বামী অভিযুক্ত মামুনের কথামত ওই দিন সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশোররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর রুমে দেখা করতে যায়। তখন মামুন ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের স্বামীকে তার অন্যতম সহযোগী মোস্তাফিজ, মুরাদ, সার্ব্বির, সাগর সিদ্দিক ও হাসানুজ্জামানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, অভিযুক্ত মামুন কৌশলে ভিকটিমের স্বামীকে তাদের বাসায় থাকাকালিন তার ব্যবহৃত কাপড় আনতে তার স্ত্রীকে (ভিকটিম) ফোন দিতে বলে। ভিকটিমের স্বামী মামুনের কথামত ভিকটিমকে ফোন করে মামুনের ব্যবহৃত কাপড় সমূহ ব্যাগে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে আসতে বলে।
রাত প্রায় ৯টার দিকে ভিকটিমের স্বামীর কথামত মামুনের ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় নিয়ে ব্যাগে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের সামনে উপস্থিত হয় ভিকটিম।
ওই সময় পূর্ব পরিকল্পনা মতো, অভিযুক্ত মামুন, ১ নম্বর আসামি মোস্তাফিজ, কৌশলে গ্রেপ্তারকৃত মুরাদকে ভিকটিমের স্বামী ও গ্রেপ্তারকৃত মামুনের ব্যবহৃত কাপড়ের ব্যাগসহ ৩১৭ নম্বর রুমে নিয়ে যেতে বলে।
মুরাদ ভিকটিমের স্বামীকে নিয়ে হলের রুমে অবস্থান করে। তখন অভিযুক্ত মামুন ও মোস্তাফিজ ভিকটিমকে হলের নির্জন স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে।
এরপর ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাসায় চলে যেতে বলে।
ভিকটিমের স্বামী ভিকটিমের কাছে গেলে তাকে গণধর্ষণ করার কথা স্ত্রী জানিয়ে দেয়। এরপরই মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর অভিযুক্ত মামুন আত্মগোপনে যায়।
গ্রেপ্তারকৃত মামুন আশুলিয়া এলাকায় গার্মেন্টেসে চাকরির পাশাপাশি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। পরে গার্মেন্টের চাকরি ছেড়ে মাদক ব্যবসা করত। সেখান থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে তার দোস্তির সম্পর্ক গড়ে উঠায় সে বেপরোয়া হয়ে অপরাধ করত।
উল্লেখ্য, স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আগে মোস্তাফিজসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পালাতক মামুন ও মুরাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ক্যাম্পাসকে মাদকের হটজোন বানিয়েছে অভিযুক্ত মামুন
গ্রেপ্তারকৃত মামুন ও মুরাদ
বৃহস্পতিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রুমে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারিসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে পরিকল্পনাকারী মামুনুর রশিদ ওরফে মামুনকে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে এবং ধর্ষণের সহায়তাকারি মো. মুরাদকে নওগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মূল পরিকল্পনাকারি মামুনুর রশিদ মামুন (৪৪) বহিরাগত ও মাদক ব্যবসায়ী। সে প্রায় ২০ বছর আগে জুরাইনে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করত। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে ৮টি মামলাও রয়েছে। ৪ বার জেল খেটেছে।
অভিযুক্ত মুরাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র। তার বাড়ি নওগাঁর পত্মীতলা উপজেলার আমন্ত গ্রামে।
গতকাল বুধবার রাতে র্যাব-৪, র্যাব-২ এবং র্যাব-৫ টিম টানা অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গণধর্ষণে তাদের জড়িত থাকা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে
গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডর খন্দকার আল মঈন এক প্রেসব্রিফিংয়ে এই সব তথ্য জানান।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত মামুন প্রায় ৬ থেকে ৭ বছর যাবত মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে প্রতি মাসে কয়েক দফায় প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার ইয়াবা সংগ্রহ করে তা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলাসহ আশপাশের এলাকা ও বেশ কিছু মাদকসেবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদক সরবরাহ করত।
অভিযুক্ত মামুন মাদক বিক্রির সুবাধে ধর্ষণ মামলার এক নম্বব আসামি মোস্তাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র ছাত্রদের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। এই সুবাধে সেই জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে মাদকসহ রাতে থাকত এবং অন্য ছাত্রদের সঙ্গে মাদক সেবন করত।
অভিযুক্ত মামুনের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার (ভিকটিম) নারীর স্বামী জাহিদ মিয়া ওরফে রবিনের মাধ্যমেও বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের মাদক সরবরাহ করতো গ্রেপ্তারকৃত মামুন। কিছুদিন আগে অভিযুক্ত মামুনের থাকার সমস্যা হলে ভিকটিমের স্বামীকে ফোন দিয়ে কিছুদিনের জন্য তাদের বাসায় অবস্থান করবে বলে জানায়।
যেভাবে ঘটনা ঘটেছে
গ্রেপ্তারকৃত মামুন ধর্ষণের শিকার নারীর ভাড়াকৃত বাসায় সাবলেট হিসেবে প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর ধরে থাকত। তখন তাদের মধ্যে সখ্যতা তৈরি হয়। ঘটনার আগে ১ নম্বর আসামি মোস্তাফিজুর রহমান অভিযুক্ত মামুনের কাছে অনৈতিক কাজের ইচ্ছা পোষণ করলে পূর্ব পরিকল্পনা মতে, অভিযুক্ত মামুন গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ভিকটিমের স্বামীকে ফোন দিয়ে জানায়, মোস্তাফিজুর রহমান নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে তার থাকার ব্যবস্থা করেছে বিধায় সে এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকবে। তাই অভিযুক্ত মামুন ভিকটিমের স্বামী জাহিদকে মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য বিশ্বদ্যিালয়ে দেখা করতে বলে।
ভিকটিমের স্বামী অভিযুক্ত মামুনের কথামত ওই দিন সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশোররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর রুমে দেখা করতে যায়। তখন মামুন ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের স্বামীকে তার অন্যতম সহযোগী মোস্তাফিজ, মুরাদ, সার্ব্বির, সাগর সিদ্দিক ও হাসানুজ্জামানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, অভিযুক্ত মামুন কৌশলে ভিকটিমের স্বামীকে তাদের বাসায় থাকাকালিন তার ব্যবহৃত কাপড় আনতে তার স্ত্রীকে (ভিকটিম) ফোন দিতে বলে। ভিকটিমের স্বামী মামুনের কথামত ভিকটিমকে ফোন করে মামুনের ব্যবহৃত কাপড় সমূহ ব্যাগে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে আসতে বলে।
রাত প্রায় ৯টার দিকে ভিকটিমের স্বামীর কথামত মামুনের ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় নিয়ে ব্যাগে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের সামনে উপস্থিত হয় ভিকটিম।
ওই সময় পূর্ব পরিকল্পনা মতো, অভিযুক্ত মামুন, ১ নম্বর আসামি মোস্তাফিজ, কৌশলে গ্রেপ্তারকৃত মুরাদকে ভিকটিমের স্বামী ও গ্রেপ্তারকৃত মামুনের ব্যবহৃত কাপড়ের ব্যাগসহ ৩১৭ নম্বর রুমে নিয়ে যেতে বলে।
মুরাদ ভিকটিমের স্বামীকে নিয়ে হলের রুমে অবস্থান করে। তখন অভিযুক্ত মামুন ও মোস্তাফিজ ভিকটিমকে হলের নির্জন স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে।
এরপর ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাসায় চলে যেতে বলে।
ভিকটিমের স্বামী ভিকটিমের কাছে গেলে তাকে গণধর্ষণ করার কথা স্ত্রী জানিয়ে দেয়। এরপরই মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর অভিযুক্ত মামুন আত্মগোপনে যায়।
গ্রেপ্তারকৃত মামুন আশুলিয়া এলাকায় গার্মেন্টেসে চাকরির পাশাপাশি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। পরে গার্মেন্টের চাকরি ছেড়ে মাদক ব্যবসা করত। সেখান থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে তার দোস্তির সম্পর্ক গড়ে উঠায় সে বেপরোয়া হয়ে অপরাধ করত।
উল্লেখ্য, স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আগে মোস্তাফিজসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পালাতক মামুন ও মুরাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।