বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা ও লুটের ১৬ ঘণ্টার মাথায় এবার থানচি উপজেলার দুটি ব্যাংকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা হামলা চালিয়েছে। এ সময় তারা টাকা লুট করেছে।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে একদল সশস্ত্র লোক দুটি গাড়িতে করে এসে পাশাপাশি থাকা কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক শাখায় হামলা চালায় বলে কৃষি ব্যাংকের থানচি উপজেলার শাখার ব্যবস্থাপক হ্লা সুই থোয়াই জানান।
তিনি বলেন, “তারা এসে চোখের পলকে আমাদের ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে ফেলল। তারপর সবাইকে একটি কক্ষে নিয়ে বাইরে থেকে আটকে দিল।
ব্যাংকের টাকা লুট হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পরেননি কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক।
তিনি বলেন, “তারা ব্যাংকে কী করেছে এখনও আমরা বুঝতে পারছি না। সব দেখে তারপর বলতে হবে।”
একই সময় পাশের সোনালী ব্যাংকেও হামলা হয় বলে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের ভাষ্য। তবে এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের কারো বক্তব্য জানা যায়নি।
থানচির ঘটনা নিয়ে জানতে চাইলে বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল করিম বলেন, “আজ কিছুক্ষণ আগে থানচিতে ব্যাংকে হামলা হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। আমাদের ধারণা, গতকালের গ্রুপটিই এটা করেছে। গতকালের ঘটনার তদন্তে কোনো অগ্রগতি এখনও হয়নি।”
ডাকাতির পর থানচি কৃষি ব্যাংক থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, “দুপুরে থানচি বাজারে এসে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে প্রবেশ করে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে বলে জেনেছি।
“সোনালী ব্যাংক থেকে ১৪-১৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। তবে কৃষি ব্যাংক থেকে কত টাকা নিয়েছে জানা যায়নি। সেখান থেকে কাউকে অপহরণ করার সংবাদও পাওয়া যায়নি।”
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শতাধিক সশস্ত্র ব্যক্তি রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকের শাখায় একযোগে হামলা চালায়। এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা, নিরাপত্তা রক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করা হয়। অপহরণ করা হয় এ শাখার ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে।
পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বা বম পার্টি ওই ঘটনায় জড়িত বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।
রুমার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ভরদুপুরে থানচিতে দুটি ব্যাংকে হামলা ও টাকা লুটের ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় এক ব্যক্তির করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। তবে ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভিডিওতে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এ সময় থানচি বাজারের লোকজন ভয় ও আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। দোকানপাট বন্ধ করতে দেখা গেছে। অনেক নারী-পুরুষকে একটি ঘরে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। আবার অনেকে উঁকিঝুঁকি দিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলেন।
এ ঘটনার পর বাজার প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। রাস্তার পাশে ফুটপাতে কিছু দোকান খোলা অবস্থায় দেখা গেছে। অর্থাৎ গোলাগুলির সময় তারা দোকান খোলা রেখেই জান বাঁচাতে পালিয়ে যান।
থানচির সোনালী ব্যাংকের সামনে প্রচুর সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে। তারা কীভাবে সমস্ত্র ব্যক্তিরা এসে হামলা করেছে এ নিয়ে কথা বলছিলেন।
স্থানীয়রা বলছিলেন, ব্যাংকে যারা ডাকাতির জন্য প্রবেশ করেছিলেন তার বাইরেও তাদের আরও লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। তারা বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেন।
থানচি বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, “আজকে থানাচিতে সাপ্তাহিক বাজার। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে লোকজন মালামাল নিতে এখানে এসেছিলেন। বেলা সোয়া ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে তিনটি জিপে কয়েকশ লোক আসে।
“আমরা তিনটি গাড়িতে করে লোকজন আসতে দেখেছি। তার মধ্যে দুটি গাড়ি থেকে নেমে তারা দুই ব্যাংকে যায়। একটি গাড়ি ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল।”
বুধবার সাপ্তাহিক বাজার থাকায় দুই ব্যাংকেই অনেক গ্রাহক ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “সোনালী ব্যাংকে প্রবেশ করে দলটির সদস্যরা ম্যানাজারকে খুঁজতে থাকে। না পেয়ে ক্যাশ বাক্সে থাকা টাকা নিয়ে যেতে দেখা গেছে।”
সশস্ত্র দলটির সঙ্গে কয়েকজন নারীও ছিলেন জানিয়ে ওই ব্যবাসায়ী বলেন, “দলটির লোকজন খাকি পোশাক পরে ছিলেন। আমাদের ধারণা, তারা কুকি-চিন পার্টির সদস্য।”
ব্যাংক লুট শেষে সশস্ত্র দলটি থানচি বাজারে প্রকাশ্যে ব্রাশ ফায়ার করে আতঙ্ক তৈরি করে এবং তিনটি জিপে চড়ে চাঁদাপাড়া এলাকার সড়কের দিকে চলে যায় বলে জানান ওই ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, সিনেমায় যেভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ব্যাংক লুটের দৃশ্য দেখা যায় এ দৃশ্যটাও এমন মনে হয়েছে তার কাছে।
বুধবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৪
বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা ও লুটের ১৬ ঘণ্টার মাথায় এবার থানচি উপজেলার দুটি ব্যাংকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা হামলা চালিয়েছে। এ সময় তারা টাকা লুট করেছে।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে একদল সশস্ত্র লোক দুটি গাড়িতে করে এসে পাশাপাশি থাকা কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক শাখায় হামলা চালায় বলে কৃষি ব্যাংকের থানচি উপজেলার শাখার ব্যবস্থাপক হ্লা সুই থোয়াই জানান।
তিনি বলেন, “তারা এসে চোখের পলকে আমাদের ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে ফেলল। তারপর সবাইকে একটি কক্ষে নিয়ে বাইরে থেকে আটকে দিল।
ব্যাংকের টাকা লুট হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পরেননি কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক।
তিনি বলেন, “তারা ব্যাংকে কী করেছে এখনও আমরা বুঝতে পারছি না। সব দেখে তারপর বলতে হবে।”
একই সময় পাশের সোনালী ব্যাংকেও হামলা হয় বলে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের ভাষ্য। তবে এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের কারো বক্তব্য জানা যায়নি।
থানচির ঘটনা নিয়ে জানতে চাইলে বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল করিম বলেন, “আজ কিছুক্ষণ আগে থানচিতে ব্যাংকে হামলা হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। আমাদের ধারণা, গতকালের গ্রুপটিই এটা করেছে। গতকালের ঘটনার তদন্তে কোনো অগ্রগতি এখনও হয়নি।”
ডাকাতির পর থানচি কৃষি ব্যাংক থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, “দুপুরে থানচি বাজারে এসে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে প্রবেশ করে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে বলে জেনেছি।
“সোনালী ব্যাংক থেকে ১৪-১৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। তবে কৃষি ব্যাংক থেকে কত টাকা নিয়েছে জানা যায়নি। সেখান থেকে কাউকে অপহরণ করার সংবাদও পাওয়া যায়নি।”
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শতাধিক সশস্ত্র ব্যক্তি রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকের শাখায় একযোগে হামলা চালায়। এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা, নিরাপত্তা রক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করা হয়। অপহরণ করা হয় এ শাখার ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে।
পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বা বম পার্টি ওই ঘটনায় জড়িত বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।
রুমার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ভরদুপুরে থানচিতে দুটি ব্যাংকে হামলা ও টাকা লুটের ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় এক ব্যক্তির করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। তবে ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভিডিওতে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এ সময় থানচি বাজারের লোকজন ভয় ও আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। দোকানপাট বন্ধ করতে দেখা গেছে। অনেক নারী-পুরুষকে একটি ঘরে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। আবার অনেকে উঁকিঝুঁকি দিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলেন।
এ ঘটনার পর বাজার প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। রাস্তার পাশে ফুটপাতে কিছু দোকান খোলা অবস্থায় দেখা গেছে। অর্থাৎ গোলাগুলির সময় তারা দোকান খোলা রেখেই জান বাঁচাতে পালিয়ে যান।
থানচির সোনালী ব্যাংকের সামনে প্রচুর সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে। তারা কীভাবে সমস্ত্র ব্যক্তিরা এসে হামলা করেছে এ নিয়ে কথা বলছিলেন।
স্থানীয়রা বলছিলেন, ব্যাংকে যারা ডাকাতির জন্য প্রবেশ করেছিলেন তার বাইরেও তাদের আরও লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। তারা বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেন।
থানচি বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, “আজকে থানাচিতে সাপ্তাহিক বাজার। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে লোকজন মালামাল নিতে এখানে এসেছিলেন। বেলা সোয়া ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে তিনটি জিপে কয়েকশ লোক আসে।
“আমরা তিনটি গাড়িতে করে লোকজন আসতে দেখেছি। তার মধ্যে দুটি গাড়ি থেকে নেমে তারা দুই ব্যাংকে যায়। একটি গাড়ি ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল।”
বুধবার সাপ্তাহিক বাজার থাকায় দুই ব্যাংকেই অনেক গ্রাহক ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “সোনালী ব্যাংকে প্রবেশ করে দলটির সদস্যরা ম্যানাজারকে খুঁজতে থাকে। না পেয়ে ক্যাশ বাক্সে থাকা টাকা নিয়ে যেতে দেখা গেছে।”
সশস্ত্র দলটির সঙ্গে কয়েকজন নারীও ছিলেন জানিয়ে ওই ব্যবাসায়ী বলেন, “দলটির লোকজন খাকি পোশাক পরে ছিলেন। আমাদের ধারণা, তারা কুকি-চিন পার্টির সদস্য।”
ব্যাংক লুট শেষে সশস্ত্র দলটি থানচি বাজারে প্রকাশ্যে ব্রাশ ফায়ার করে আতঙ্ক তৈরি করে এবং তিনটি জিপে চড়ে চাঁদাপাড়া এলাকার সড়কের দিকে চলে যায় বলে জানান ওই ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, সিনেমায় যেভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ব্যাংক লুটের দৃশ্য দেখা যায় এ দৃশ্যটাও এমন মনে হয়েছে তার কাছে।