ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ কিশোর
ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটে যায় এক ব্যর্থ ডাকাতির চেষ্টার ঘটনা। এই ঘটনায় ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার তারেক মামুন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিন তরুণকে আসামি করা হয়েছে এবং তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন প্রস্তুত করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আটক ডাকাতদের মধ্যে একজন তরুণ এবং দুজন কিশোর। তাদের কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকা, চারটি খেলনা পিস্তল এবং দুটি দেশীয় ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতদের নাম মো. লিয়ন মোল্লা নীরব, মো. আরাফাত এবং সিফাত। তারা সবাই কেরানীগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা।
রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখার কার্যক্রম চলছিল স্বাভাবিক নিয়মে। হঠাৎ তিন তরুণ- কিশোর ব্যাংকে প্রবেশ করে। তাদের হাতে ছিল খেলনা পিস্তল এবং ছুরি। ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মীরা প্রথমে বুঝতে পারেননি যে এটি একটি ডাকাতির চেষ্টা। তবে তাদের সন্দেহ হয় যখন তরুণরা কাউন্টার লক্ষ্য করে অস্বাভাবিকভাবে আচরণ করতে থাকে এবং উপস্থিত লোকজনকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা দ্রুত কৌশলে নিরাপত্তা বাহিনীকে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ডাকাতদের আটক করে। ডাকাতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১৮ লাখ টাকা, যা ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার থেকে লুট করা হয়েছিল।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই তিনজন বেশ কিছুদিন ধরে এই ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল। তারা ধারণা করেছিল, খেলনা পিস্তল ব্যবহার করলেই ব্যাংক কর্মচারীদের ভয় দেখানো সম্ভব হবে এবং সহজেই তারা অর্থ লুট করতে পারবে। তবে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই তারা ধরা পড়ে যায়। আটককৃতদের পেছনে আরও বড় কোনো চক্র থাকতে পারে, যারা তাদের এমন কাজে প্ররোচিত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং আরও তদন্ত চলছে।
ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার তারেক মামুন পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, ওসি মাজহারুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, আটক তিনজনের একজন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার কুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা লিয়ন মোল্লা ওরফে নীরব (২২)। অন্য দুজনের বয়স ১৬ বছর। তারা কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকার বাসিন্দা। নীরব পেশায় একজন গাড়িচালক। অন্য দুজন শিক্ষার্থী। তাদের কাছ থেকে ব্যাংক থেকে লুট করা নগদ ১৮ লাখ টাকা, চারটি খেলনা পিস্তল, দুটি চাকু, একটি লোহার পাইপ, একটি স্কুলব্যাগ, তিনটি মাস্ক, তিন জোড়া হ্যান্ড গ্লাভস ও তিনটি কালো চশমা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এই তরুণরা দ্রুত ধনী হওয়ার আকাক্সক্ষায় এই পথ বেছে নেয়। তাদের মধ্যে একজনের কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে, যেখানে ডাকাতির পরিকল্পনা সংক্রান্ত বেশ কিছু বার্তা পাওয়া গেছে। এছাড়া, তারা সম্প্রতি স্থানীয় কিছু অপরাধীদের সঙ্গেও মেলামেশা করছিল বলে তথ্য মিলেছে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কেরানীগঞ্জ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আরও বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, ‘তরুণ এবং কিশোরদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের বিষয়। আমরা এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে তৎপর আছি। আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে আইনের ধারা অনুযায়ী বিচার করা হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে কারাদ-।’
ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার তারেক মামুন বলেন, ‘আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি যে তারা খেলনা পিস্তল ব্যবহার করছে। তবে সন্দেহ হওয়ায় দ্রুত পুলিশকে খবর দেই। তাদের তৎপরতায় ডাকাতি রোধ করা সম্ভব হয়েছে।’
ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ কিশোর
শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটে যায় এক ব্যর্থ ডাকাতির চেষ্টার ঘটনা। এই ঘটনায় ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার তারেক মামুন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিন তরুণকে আসামি করা হয়েছে এবং তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন প্রস্তুত করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আটক ডাকাতদের মধ্যে একজন তরুণ এবং দুজন কিশোর। তাদের কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকা, চারটি খেলনা পিস্তল এবং দুটি দেশীয় ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতদের নাম মো. লিয়ন মোল্লা নীরব, মো. আরাফাত এবং সিফাত। তারা সবাই কেরানীগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা।
রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখার কার্যক্রম চলছিল স্বাভাবিক নিয়মে। হঠাৎ তিন তরুণ- কিশোর ব্যাংকে প্রবেশ করে। তাদের হাতে ছিল খেলনা পিস্তল এবং ছুরি। ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মীরা প্রথমে বুঝতে পারেননি যে এটি একটি ডাকাতির চেষ্টা। তবে তাদের সন্দেহ হয় যখন তরুণরা কাউন্টার লক্ষ্য করে অস্বাভাবিকভাবে আচরণ করতে থাকে এবং উপস্থিত লোকজনকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা দ্রুত কৌশলে নিরাপত্তা বাহিনীকে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ডাকাতদের আটক করে। ডাকাতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১৮ লাখ টাকা, যা ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার থেকে লুট করা হয়েছিল।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই তিনজন বেশ কিছুদিন ধরে এই ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল। তারা ধারণা করেছিল, খেলনা পিস্তল ব্যবহার করলেই ব্যাংক কর্মচারীদের ভয় দেখানো সম্ভব হবে এবং সহজেই তারা অর্থ লুট করতে পারবে। তবে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই তারা ধরা পড়ে যায়। আটককৃতদের পেছনে আরও বড় কোনো চক্র থাকতে পারে, যারা তাদের এমন কাজে প্ররোচিত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং আরও তদন্ত চলছে।
ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার তারেক মামুন পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, ওসি মাজহারুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, আটক তিনজনের একজন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার কুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা লিয়ন মোল্লা ওরফে নীরব (২২)। অন্য দুজনের বয়স ১৬ বছর। তারা কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকার বাসিন্দা। নীরব পেশায় একজন গাড়িচালক। অন্য দুজন শিক্ষার্থী। তাদের কাছ থেকে ব্যাংক থেকে লুট করা নগদ ১৮ লাখ টাকা, চারটি খেলনা পিস্তল, দুটি চাকু, একটি লোহার পাইপ, একটি স্কুলব্যাগ, তিনটি মাস্ক, তিন জোড়া হ্যান্ড গ্লাভস ও তিনটি কালো চশমা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এই তরুণরা দ্রুত ধনী হওয়ার আকাক্সক্ষায় এই পথ বেছে নেয়। তাদের মধ্যে একজনের কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে, যেখানে ডাকাতির পরিকল্পনা সংক্রান্ত বেশ কিছু বার্তা পাওয়া গেছে। এছাড়া, তারা সম্প্রতি স্থানীয় কিছু অপরাধীদের সঙ্গেও মেলামেশা করছিল বলে তথ্য মিলেছে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কেরানীগঞ্জ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আরও বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, ‘তরুণ এবং কিশোরদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের বিষয়। আমরা এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে তৎপর আছি। আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে আইনের ধারা অনুযায়ী বিচার করা হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে কারাদ-।’
ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার তারেক মামুন বলেন, ‘আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি যে তারা খেলনা পিস্তল ব্যবহার করছে। তবে সন্দেহ হওয়ায় দ্রুত পুলিশকে খবর দেই। তাদের তৎপরতায় ডাকাতি রোধ করা সম্ভব হয়েছে।’