alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

কিডনি বেচাকেনায় প্রতারণা, প্রতি কিডনি ২০ লাখ টাকা

গ্রেপ্তার ৫

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচা করে সংঘবদ্ধ চক্রটি। তারা প্রতিটি কিডনি বিক্রি করতো ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায়। এখানে ডোনারদের দেয়া হতো মাত্র দুই লাখ টাকা। প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনি বেচাকেনার এই চক্রটির অন্যতম হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। সোমবার (১১ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত র‌্যাব-৫ ও র‌্যাব-২ এবং র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে জয়পুরহাট এবং রাজধানীর নর্দা থেকে কিডনি ক্রয়বিক্রয় এই সিন্ডিকেটের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ (৩৬), মো. মেহেদী হাসান (২৪), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), মো. আবদুল মান্নান (৪৫) এবং মো. তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)। তাদের কাছ থেকে চারটি পাসপোর্ট ও ভিসা সম্পর্কিত কাগজপত্রসহ দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।

র‌্যাব সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার চক্রের অন্যতম আসামি মো. আবদুল মান্নান মূলত ভুক্তভোগী কিডনি ডোনারদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এই অনৈতিক কাজে প্রলুব্ধ করেন। এর আগেও একাধিকবার এই অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে ছয়টির অধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া চক্রের মূলহোতা ও অন্যতম আসামি ইমরান পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত কিডনি ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতায় একটি দালাল চক্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনলাইনের মাধ্যমে আগ্রহী বিত্তশালী কিডনি রোগী এবং বিভিন্ন এলাকা হতে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে কিডনি ডোনার সংগ্রহসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতেন। ইমরান ফেইসবুক এ দুটি পেজের অ্যাডমিন এবং এ পর্যন্ত তিনি কিডনি বিক্রয়ের জন্য শতাধিক মানুষকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করেছেন।

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর কাওরানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা অনলাইনে বিভিন্ন প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাহক ও ডোনারদের আকৃষ্ট করে কিডনি কেনাবেচার কাজ করে। তারা প্রতিটি কিডনি বিক্রি করেন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায়। কিন্তু দুই লাখের বেশি পেতো না ডোনাররা। তিনি জানান, গ্রেপ্তার অভিযানে ভুক্তভোগী কিডনি দাতাদের চারটি পাসপোর্ট, মেডিকেল চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসা সম্পর্কিত বেশ কিছু কাগজপত্র, পাঁচটি মোবাইল এবং দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, চক্রটির মোট সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন এবং তারা তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে অবৈধ এই কিডনি ক্রয়-বিক্রয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে। চক্রের ১ম গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। চক্রের ২য় দলটি ১ম দলের চাহিদা মোতাবেক দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব মানুষদের চিহ্নিত করে এবং তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অর্থের বিনিময়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করে ঢাকায় নিয়ে আসে।

পরবর্তী সময়ে ৩য় একটি গ্রুপ ডোনারদের ঢাকায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন রোগীর সঙ্গে ব্লাড ম্যাচিং এবং অন্যান্য পরীক্ষা সম্পন্ন করে। ব্লাড ম্যাচিং এবং অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্টে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের উপযুক্ততা নিশ্চিত হলে, তার পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিং এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করে। র‌্যাব জানায়, এই চক্রের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানকারী আরেকটি চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে ডোনারকে রিসিভ করা থেকে শুরু করে হাসপাতালের ডকুমেন্টেশন, অস্ত্রপচারসহ যাবতীয় কার্যক্রম শেষে বৈধ/অবৈধ উপায়ে বিমান বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত এলাকার মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠায়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা এর চক্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নিয়েছে বলে স্বীকার করে। প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা রোগীদের কাছে হতে ১৫ হতে ২০ লাখ টাকা গ্রহণ করতো। বিপরীতে তারা কিডনি ডোনারকে দুই লাখ টাকা প্রদান করতো। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের চুপ রাখার চেষ্টা করা হতো। গ্রেপ্তারকৃত এই চক্রটি কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের পার্শ্ববর্তী দেশে কিডনি চিকিৎসায় সহায়তার নাম করে, অর্থ আয়ের উদ্দেশ্যে কিডনি প্রতিস্থাপনে উৎসাহিত করে। কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানের আড়ালে তারা এই ভয়ঙ্কর কিডনি কেনা-বেচার সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছিল বলেও জানায় র‌্যাব।

ছবি

বিএনপির মামলায় সাবেক সিইসি নূরুল হুদার জবানবন্দি রেকর্ড শুরু

ছবি

আবু সাঈদ হত্যা মামলা: বেরোবির সাবেক উপাচার্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

তিনটি হত্যা মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ, আছেন সাবেক এসপিও

ধর্ষণের পর বিবস্ত্র অবস্থায় মারধর, ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫

ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

রূপগঞ্জে মদ্যপ অবস্থায় অশোভন আচরণ, প্রতিবাদ করায় দুই যুবককে গুলি

নাইক্ষ্যংছড়িতে ইমাম হত্যা,৫ জনকে আসামী করে মামলা

ছবি

হত্যা মামলায় ইনু, কামাল, পলকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখালো আদালত

ছবি

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলায় প্রিন্স মামুনের বিচার শুরু

ছবি

ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে দুদক চেয়ারম্যান, টিউলিপকে বাংলাদেশি নাগরিক বলেও মন্তব্য

ছবি

১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ, এস আলম গ্রুপ ও ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতের কঠোর পদক্ষেপ

ছবি

‘ভোটের প্রতারণা’ অভিযোগে রিমান্ড শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি নূরুল হুদার

ছবি

নগদের ১ কোটি টাকার ডাকাতি: রহস্য উদঘাটনের দাবি পুলিশের, উদ্ধার সাড়ে ৩২ লাখ

ছবি

স্বপ্না হত্যা: থানা থেকে সিআইডি, তবু রহস্য অজানা

ছবি

সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালাল অপহরণ ও হত্যার আসামি

ছবি

আদালত অবমাননার মামলায় আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের সহায়তাকারী নিযুক্ত

ছবি

সবজি ব্যবসায়ী শাওন হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমান ৪ দিনের রিমান্ডে, আনিসুল হক গ্রেপ্তার

মিরপুরে প্রকাশ্যে গুলি করে টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৫ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর

ছবি

কেরাণীগঞ্জে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে সৎ বাবার মৃত্যুদণ্ড

ছবি

রংপুরের কাউনিয়ায় টিসিবির কার্ড বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

ছবি

মানিলন্ডারিং তদন্ত: তিন সহযোগীর বিদেশ যাত্রায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা

ছবি

হাজিরা না দিলে অনুপস্থিতিতেই শেখ হাসিনার বিচার শুরু হবে: ট্রাইব্যুনাল

ছবি

যুক্তরাজ্যে বসুন্ধরা মালিকপক্ষসহ কয়েকজনের সম্পদ জব্দে উদ্যোগ: দুদক

ছবি

টিউলিপের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা, তাকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে দেখছে দুদক

ছবি

লাশ টুকরো করে বালু চাপা: ব্যবসায়ী জাকির হত্যা মামলায় চার আসামি আদালতে, একজনের স্বীকারোক্তি

ছবি

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যকে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান

অবশেষে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিএনপির ১৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা

পীরগাছায় ইসলামিক রিলিফের গরুর মাংস বিতরণের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ

খাগড়াছড়ির গুইমারায় এক পাহাড়ি গৃহবধুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে আটক-১

ছবি

রিমান্ড শেষে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন কারাগারে

ছবি

ই-মানি জালিয়াতিতে ‘নগদ’-এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অবমাননার মামলায় দুইজনের অনুপস্থিতি

পাঁচটি মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর

ছবি

ভাড়ার মোটরসাইকেলচালকের ধর্ষণের শিকার বিউটি পার্লারের কর্মী, কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার

ছবি

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দাখিল

কেরাণীগঞ্জে হত্যা করে মরদেহ ১০ টুকরো, দেবর-ভাবির মৃত্যুদণ্ড

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

কিডনি বেচাকেনায় প্রতারণা, প্রতি কিডনি ২০ লাখ টাকা

গ্রেপ্তার ৫

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচা করে সংঘবদ্ধ চক্রটি। তারা প্রতিটি কিডনি বিক্রি করতো ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায়। এখানে ডোনারদের দেয়া হতো মাত্র দুই লাখ টাকা। প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনি বেচাকেনার এই চক্রটির অন্যতম হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। সোমবার (১১ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত র‌্যাব-৫ ও র‌্যাব-২ এবং র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে জয়পুরহাট এবং রাজধানীর নর্দা থেকে কিডনি ক্রয়বিক্রয় এই সিন্ডিকেটের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ (৩৬), মো. মেহেদী হাসান (২৪), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), মো. আবদুল মান্নান (৪৫) এবং মো. তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)। তাদের কাছ থেকে চারটি পাসপোর্ট ও ভিসা সম্পর্কিত কাগজপত্রসহ দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।

র‌্যাব সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার চক্রের অন্যতম আসামি মো. আবদুল মান্নান মূলত ভুক্তভোগী কিডনি ডোনারদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এই অনৈতিক কাজে প্রলুব্ধ করেন। এর আগেও একাধিকবার এই অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে ছয়টির অধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া চক্রের মূলহোতা ও অন্যতম আসামি ইমরান পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত কিডনি ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতায় একটি দালাল চক্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনলাইনের মাধ্যমে আগ্রহী বিত্তশালী কিডনি রোগী এবং বিভিন্ন এলাকা হতে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে কিডনি ডোনার সংগ্রহসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতেন। ইমরান ফেইসবুক এ দুটি পেজের অ্যাডমিন এবং এ পর্যন্ত তিনি কিডনি বিক্রয়ের জন্য শতাধিক মানুষকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করেছেন।

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর কাওরানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা অনলাইনে বিভিন্ন প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাহক ও ডোনারদের আকৃষ্ট করে কিডনি কেনাবেচার কাজ করে। তারা প্রতিটি কিডনি বিক্রি করেন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায়। কিন্তু দুই লাখের বেশি পেতো না ডোনাররা। তিনি জানান, গ্রেপ্তার অভিযানে ভুক্তভোগী কিডনি দাতাদের চারটি পাসপোর্ট, মেডিকেল চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসা সম্পর্কিত বেশ কিছু কাগজপত্র, পাঁচটি মোবাইল এবং দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, চক্রটির মোট সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন এবং তারা তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে অবৈধ এই কিডনি ক্রয়-বিক্রয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে। চক্রের ১ম গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। চক্রের ২য় দলটি ১ম দলের চাহিদা মোতাবেক দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব মানুষদের চিহ্নিত করে এবং তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অর্থের বিনিময়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করে ঢাকায় নিয়ে আসে।

পরবর্তী সময়ে ৩য় একটি গ্রুপ ডোনারদের ঢাকায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন রোগীর সঙ্গে ব্লাড ম্যাচিং এবং অন্যান্য পরীক্ষা সম্পন্ন করে। ব্লাড ম্যাচিং এবং অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্টে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের উপযুক্ততা নিশ্চিত হলে, তার পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিং এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করে। র‌্যাব জানায়, এই চক্রের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানকারী আরেকটি চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে ডোনারকে রিসিভ করা থেকে শুরু করে হাসপাতালের ডকুমেন্টেশন, অস্ত্রপচারসহ যাবতীয় কার্যক্রম শেষে বৈধ/অবৈধ উপায়ে বিমান বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত এলাকার মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠায়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা এর চক্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নিয়েছে বলে স্বীকার করে। প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা রোগীদের কাছে হতে ১৫ হতে ২০ লাখ টাকা গ্রহণ করতো। বিপরীতে তারা কিডনি ডোনারকে দুই লাখ টাকা প্রদান করতো। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের চুপ রাখার চেষ্টা করা হতো। গ্রেপ্তারকৃত এই চক্রটি কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের পার্শ্ববর্তী দেশে কিডনি চিকিৎসায় সহায়তার নাম করে, অর্থ আয়ের উদ্দেশ্যে কিডনি প্রতিস্থাপনে উৎসাহিত করে। কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানের আড়ালে তারা এই ভয়ঙ্কর কিডনি কেনা-বেচার সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছিল বলেও জানায় র‌্যাব।

back to top