চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় এক চালককে হত্যা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু- এলাকার বাইপাসে অটোরিকশা-সিএনজি চালাতে হলে সন্ত্রাসীদেরকে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। আর সিএনজি, অটোরিকশা লাইনে ড্রাইভার হিসেবে নাম লেখাতে হলে প্রথমে ৫ হাজার টাকা এক কালীন চাঁদা দিতে হবে। আর দিনে ৬০ থেকে ৭০ টাকা চাঁদা বাধ্যতামূলক। না দিলে নির্যাতন ও হত্যা। ওই চাঁদাবাজ চক্র শতাধিক সিএনজিচালককে জিম্মি করে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করত।
মহাসড়কে অটোরিকশাচালক একরাম হোসেন হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করতে গিয়ে গত বুধবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অনুসন্ধানী টিম সীতাকু-সহ আশপাশে এলাকায় টানা অভিযান চালিয়ে সন্দেহ ভাজন ৪ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা গত রোববার আদালতে নিজেদেরকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
আজ সোমবার পিবিআইয়ের ধানমন্ডিস্থ প্রধান কার্যালয় ও চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এবং উপ-পুলিশ পরিদর্শক শাহদাত হোসেন এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জাহেদ হোসেন (২০), প্রধান অভিযুক্ত নুর আহম্মদ (৪০), সহযোগী মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে সাকিব (২০) ও ইসমাইল হোসেন ওরফে রানা। তারা গত রোববার আদালতে নিজেদেরকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসছে মহাসড়কে অটোরিকশাচালকদের গাড়ি নিয়ে নামতে প্রথমে এককালীন ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। না দিলে প্রথমে হুমকি, পরে কিল-ঘুসি। এরপর পরিকল্পিতভাবে হত্যা। এই চক্র মহাসড়কের চট্টগ্রাম থেকে সীতাকু- ও আশপাশের বাইপাস সড়ক নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের কথা না শুনলে পরিণতি মৃত্যু। এমন কাহিনী বেরিয়ে আসছে তদন্তে।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, সীতাকু- মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলায় বাদী নূরুল হুদা লিখিত অভিযোগ করে বলেন, অজ্ঞাত নামা আসামিরা তার ভাই একরাম হোসেনকে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইপসা অফিসের সামনে মহাসড়কে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ওই মামলায় আসামিদেরকে অজ্ঞাত হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ বিকেল ৫টার দিকে ভাড়া অটোরিকশা নিয়ে মহাসড়কে চালানোর উদ্দেশে বের হয় একরাম হোসেন। ওই দিন রাত ৮টা ২৫ মিনিটের তারা খবর পায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইপসা অফিসের কাছে তার ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে। পথচারীরা তার ভাইকে গাড়িসহ উদ্ধার করে প্রথমে সীতাকু- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেয়ার আগে তার অবস্থার অবনতি ঘটে এবং মারা যায়। পরবর্তীতে সীতাকু- স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার তদারকি কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান ও তদন্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন সংবাদ প্রতিবেদককে জানান, মহাসড়কে আলোচিত এই হত্যাকা-ের ঘটনায় ৪ আসামিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দেয়া তথ্যমতে, হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি ও অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহদাত হোসেন জানান, পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমারের নির্দেশনায় আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যা মামলার আসামিদেরকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ৪ জনই আসামি। তারা ৪ জন ঘটনায় নিজেদেরকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তারা মহাসড়কে ৪ জন মিলে একটি সমিতি করেছে। ওই সমিতি করে চাঁদা আদায় করছে। দিনে কমপক্ষে ৭০ থেকে ৮০টি অটোরিকশা থেকে চাঁদা নেয়। আর চাঁদা না দিলে নির্যাতন। এইভাবে ৪ অভিযুক্ত আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। শীঘ্রই তাদেরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে।
চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় এক চালককে হত্যা
সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু- এলাকার বাইপাসে অটোরিকশা-সিএনজি চালাতে হলে সন্ত্রাসীদেরকে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। আর সিএনজি, অটোরিকশা লাইনে ড্রাইভার হিসেবে নাম লেখাতে হলে প্রথমে ৫ হাজার টাকা এক কালীন চাঁদা দিতে হবে। আর দিনে ৬০ থেকে ৭০ টাকা চাঁদা বাধ্যতামূলক। না দিলে নির্যাতন ও হত্যা। ওই চাঁদাবাজ চক্র শতাধিক সিএনজিচালককে জিম্মি করে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করত।
মহাসড়কে অটোরিকশাচালক একরাম হোসেন হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করতে গিয়ে গত বুধবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অনুসন্ধানী টিম সীতাকু-সহ আশপাশে এলাকায় টানা অভিযান চালিয়ে সন্দেহ ভাজন ৪ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা গত রোববার আদালতে নিজেদেরকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
আজ সোমবার পিবিআইয়ের ধানমন্ডিস্থ প্রধান কার্যালয় ও চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এবং উপ-পুলিশ পরিদর্শক শাহদাত হোসেন এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জাহেদ হোসেন (২০), প্রধান অভিযুক্ত নুর আহম্মদ (৪০), সহযোগী মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে সাকিব (২০) ও ইসমাইল হোসেন ওরফে রানা। তারা গত রোববার আদালতে নিজেদেরকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসছে মহাসড়কে অটোরিকশাচালকদের গাড়ি নিয়ে নামতে প্রথমে এককালীন ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। না দিলে প্রথমে হুমকি, পরে কিল-ঘুসি। এরপর পরিকল্পিতভাবে হত্যা। এই চক্র মহাসড়কের চট্টগ্রাম থেকে সীতাকু- ও আশপাশের বাইপাস সড়ক নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের কথা না শুনলে পরিণতি মৃত্যু। এমন কাহিনী বেরিয়ে আসছে তদন্তে।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, সীতাকু- মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলায় বাদী নূরুল হুদা লিখিত অভিযোগ করে বলেন, অজ্ঞাত নামা আসামিরা তার ভাই একরাম হোসেনকে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইপসা অফিসের সামনে মহাসড়কে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ওই মামলায় আসামিদেরকে অজ্ঞাত হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ বিকেল ৫টার দিকে ভাড়া অটোরিকশা নিয়ে মহাসড়কে চালানোর উদ্দেশে বের হয় একরাম হোসেন। ওই দিন রাত ৮টা ২৫ মিনিটের তারা খবর পায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইপসা অফিসের কাছে তার ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে। পথচারীরা তার ভাইকে গাড়িসহ উদ্ধার করে প্রথমে সীতাকু- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেয়ার আগে তার অবস্থার অবনতি ঘটে এবং মারা যায়। পরবর্তীতে সীতাকু- স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার তদারকি কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান ও তদন্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন সংবাদ প্রতিবেদককে জানান, মহাসড়কে আলোচিত এই হত্যাকা-ের ঘটনায় ৪ আসামিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দেয়া তথ্যমতে, হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি ও অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহদাত হোসেন জানান, পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমারের নির্দেশনায় আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যা মামলার আসামিদেরকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ৪ জনই আসামি। তারা ৪ জন ঘটনায় নিজেদেরকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তারা মহাসড়কে ৪ জন মিলে একটি সমিতি করেছে। ওই সমিতি করে চাঁদা আদায় করছে। দিনে কমপক্ষে ৭০ থেকে ৮০টি অটোরিকশা থেকে চাঁদা নেয়। আর চাঁদা না দিলে নির্যাতন। এইভাবে ৪ অভিযুক্ত আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। শীঘ্রই তাদেরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে।