alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

বহিষ্কৃত পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে অপহরণ চক্র, টার্গেট পর্যটকরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, কক্সবাজার : শনিবার, ২০ মে ২০২৩

মুক্তিপণ দেয়ার পরও মেলে না মুক্তি, স্বামীর হাত-মুখ বেঁধে তারই সামনে লুণ্ঠিত হয় স্ত্রীর সম্ভ্রম! কক্সবাজার কেন্দ্রিক ভয়ঙ্কর পুলিশের বহিষ্কৃত কর্মকর্তার নেতৃত্বে গড়ে উঠা একটি অপহরণ চক্রের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার এবং নারীসহ পাঁচ অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব -১৫।

শুক্রবার (১৯ মে) কক্সবাজারের র‌্যাব-১৫ ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে একটি দল শহরের কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার মূল হোতা হলেন পুলিশের বহিষ্কৃত উপপরিদর্শক (এসআই) এসএম ইকবাল পারভেজ (৪০)। তিনি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার মাইতুল সরকারবাড়ি এলাকার মৃত এরশাদ আলমের ছেলে। চক্রের বাকি দুই সদস্য হলেন, কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নতুন বাহারছড়া এলাকার মো. ইউনুসের ছেলে এমডি মুন্না (৩০) এবং একই এলাকার মৃত আব্দুল করিমের ছেলে মো. ইউসুফ।

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, গেল ১৬ মে কক্সবাজার বেড়াতে এসে নিখোঁজ হন ঢাকা উত্তরার বাসিন্দা মো. শাহজাহান কবির ও মঞ্জুর আলম। পরে একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে আংশিক মুক্তিপণ পরিশোধ করা হলেও মুক্তি মেলেনি শাহজাহান ও মঞ্জুরের।

অপহৃত আরেক দম্পতিকে অপহরণ করে দাবিকৃত মোটা অংকের টাকা না পেয়ে স্বামীর হাত-মুখ বেঁধে স্ত্রীকে একে একে ধর্ষণ করে চক্রের সদস্যরা। স্বামীর ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। অপহৃত ব্যক্তিদের স্বজনরা বিকাশে দুই লাখের বেশি টাকা মুক্তিপণ দিলেও তাদের ছাড়া হয়নি। অপহরণকারীদের দাবি ছিল আরও অনেক বেশি টাকা। বেদম মারধরের পাশাপাশি চাহিদা মতো মুক্তিপণ না দিলে অপহৃতদের মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে স্বজনরা বিষয়টি র‌্যাবকে জানালে কাজ শুরু করে র‌্যাব।

এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার শহরের কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় এই সিন্ডিকেটের দুটি সুরক্ষিত ও গোপন আস্তানার সন্ধান পায় র‌্যাব। পরে রাতভর এসব আস্তানায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে কলাতলী থেকে চক্রের দুই সদস্যকে এবং পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সুগন্ধা এলাকার অপর গোপন আস্তানায় অভিযান চালিয়ে চক্রের প্রধান ও পুলিশের বহিষ্কৃত উপপরিদর্শক (এসআই) এসএম ইকবাল পারভেজকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, চক্রের প্রধান ইকবাল পারভেজ ২০২১ সালের ১৭ ডিসেম্বর পুলিশের এসআই হিসেবে কর্মরত অবস্থায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েন। ওই ঘটনায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পাশাপাশি চাকরিও হারান তিনি। সব হারিয়ে এসআই ইকবাল তার শ্যালক মুন্নাসহ ৭ থেকে ৮ জন সহযোগী নিয়ে গড়ে তোলেন অপহরণ বাণিজ্যের রমরমা এই সিন্ডিকেট। চক্রের সদস্যরা দেশের নানা প্রান্ত থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা মানুষদের টার্গেট করে অপহরণ করে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে ফোন করে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করত।

শুক্রবার (১৯ মে) অপহরণের শিকার শাহজাহান কবিরের বোন আমেনা বেগম বাদী হয়ে গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামি ও উদ্ধারকৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য কক্সবাজার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে র‌্যাব।

এ বিষয়ে কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, কক্সবাজার কেন্দ্রিক অপহরণ-মুক্তিপণ সিন্ডিকেটের মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে র‌্যাবের যে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, তারই অংশ হিসেবে আমরা এই অভিযান পরিচালনা করেছি।

এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি, তদন্তের স্বার্থে যা এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এই চক্রের অন্য সদস্যদেরও শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।

ছবি

বগুড়ায় ছিনতাই চক্রের সাত সদস্য গ্রেফতার

ছবি

মাদারীপুরে জঙ্গল থেকে মহিলার মরদেহ উদ্ধার

ছবি

ভিসা পাওয়ার আগেই বিমান টিকেট, এজেন্সিকে শোকজ

হাতিয়ায় স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা: স্বামী গ্রেফতার

৭ হাজার গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে

বিমানবন্দরে ১০ লাখ টাকার ইয়াবাসহ একজন আটক

ছবি

খোকন-শিরিনসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

জামালপুরে পাঁচ স্কুল ছাত্রকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন

নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষে যুবক খুন, আটক

সমবায় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

ঈশ্বরগঞ্জে পুলিশ সদস্যকে মারপিট

ছবি

নরসিংদীতে ছাত্রদলের শোভাযাত্রায় গুলি দুই জন নিহত, অগ্নিসংযোগ ভাংচুর

জাজিরায় জমি বিরোধে আপন ভাই সহ পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে জখম

পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা : ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ১

জিডি থানায়, উদ্ধার করে এপিবিএন

ছবি

রিভিউ খারিজ, ফালুর খালাসের রায় বহাল

ছবি

পাহাড়ি জনপদে অস্ত্রের মুখে অপহরণ : ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

ফারদিন হত্যা মামলার প্রতিবেদন ২৪ জুন

‘সিন্ডিকেট করে’ পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা : কৃষিমন্ত্রী

রংপুরে পুলিশ কনষ্টেবলের বিরুদ্ধে স্ত্রীর নারী নির্যাতন মামলা

ছবি

সার্ভার হ্যাক, বিআরটিএ ও ডেসকোর টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার : র‌্যাব

ছবি

ওসি প্রদীপের সম্পদের খোঁজে ৭ দেশে চিঠি

টেলিগ্রাম অ্যাপসে গ্রুপ তৈরি করে তরুণীদের নগ্ন ভিডিও বিক্রি

কিশোর গ্যাং বেপরোয়া, ইজিবাইক চালককে গলা কেটে হত্যা

ছবি

মদের টাকা জোগাতে ইজিবাইক চালককে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪

রংপুরের কাউনিয়ায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং এর হাতে কলেজ ছাত্র নিহত

নরসিংদীতে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে জবাই করে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদন্ড

কক্সবাজারে ইয়াবাসহ সস্ত্রীক এপিবিএন পুলিশের এসআই আটক

ছবি

চকলেট খাইয়ে অপহরণ করে শিশুকে দুই লাখ টাকায় বিক্রি

নিখোঁজের ৫ মাস পর ঢাকার মাওনা থেকে বেগমগঞ্জের আমির হোসেনের লাশ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩

ছবি

মিয়ানমারে মানুষ বন্ধক রেখে ইয়াবা কারবার, মাদক সম্রাট জকিরসহ গ্রেপ্তার ২

ছবি

রোগীর সেবায় রাঁধুনি-মালি, তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট

সখীপুরে বিরোধ জমির ফসল কাটা দ্বন্দ্বে আ.লীগ নেতা হত‍্যা, দুই আসামি গ্রেপ্তার

সাতক্ষীরায় দুর্নীতি দমন কমিশনের গণশুনানি,৩৬টি অভিযোগ উত্থাপিত

সখীপুরে জমির ফসল কাটা দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের হামলায় বৃদ্ধ নিহত

জাল সনদ : যবিপ্রবির ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত, দুজনকে বাধ্যতামূলক অবসর

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

বহিষ্কৃত পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে অপহরণ চক্র, টার্গেট পর্যটকরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, কক্সবাজার

শনিবার, ২০ মে ২০২৩

মুক্তিপণ দেয়ার পরও মেলে না মুক্তি, স্বামীর হাত-মুখ বেঁধে তারই সামনে লুণ্ঠিত হয় স্ত্রীর সম্ভ্রম! কক্সবাজার কেন্দ্রিক ভয়ঙ্কর পুলিশের বহিষ্কৃত কর্মকর্তার নেতৃত্বে গড়ে উঠা একটি অপহরণ চক্রের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার এবং নারীসহ পাঁচ অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব -১৫।

শুক্রবার (১৯ মে) কক্সবাজারের র‌্যাব-১৫ ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে একটি দল শহরের কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার মূল হোতা হলেন পুলিশের বহিষ্কৃত উপপরিদর্শক (এসআই) এসএম ইকবাল পারভেজ (৪০)। তিনি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার মাইতুল সরকারবাড়ি এলাকার মৃত এরশাদ আলমের ছেলে। চক্রের বাকি দুই সদস্য হলেন, কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নতুন বাহারছড়া এলাকার মো. ইউনুসের ছেলে এমডি মুন্না (৩০) এবং একই এলাকার মৃত আব্দুল করিমের ছেলে মো. ইউসুফ।

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, গেল ১৬ মে কক্সবাজার বেড়াতে এসে নিখোঁজ হন ঢাকা উত্তরার বাসিন্দা মো. শাহজাহান কবির ও মঞ্জুর আলম। পরে একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে আংশিক মুক্তিপণ পরিশোধ করা হলেও মুক্তি মেলেনি শাহজাহান ও মঞ্জুরের।

অপহৃত আরেক দম্পতিকে অপহরণ করে দাবিকৃত মোটা অংকের টাকা না পেয়ে স্বামীর হাত-মুখ বেঁধে স্ত্রীকে একে একে ধর্ষণ করে চক্রের সদস্যরা। স্বামীর ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। অপহৃত ব্যক্তিদের স্বজনরা বিকাশে দুই লাখের বেশি টাকা মুক্তিপণ দিলেও তাদের ছাড়া হয়নি। অপহরণকারীদের দাবি ছিল আরও অনেক বেশি টাকা। বেদম মারধরের পাশাপাশি চাহিদা মতো মুক্তিপণ না দিলে অপহৃতদের মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে স্বজনরা বিষয়টি র‌্যাবকে জানালে কাজ শুরু করে র‌্যাব।

এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার শহরের কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় এই সিন্ডিকেটের দুটি সুরক্ষিত ও গোপন আস্তানার সন্ধান পায় র‌্যাব। পরে রাতভর এসব আস্তানায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে কলাতলী থেকে চক্রের দুই সদস্যকে এবং পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সুগন্ধা এলাকার অপর গোপন আস্তানায় অভিযান চালিয়ে চক্রের প্রধান ও পুলিশের বহিষ্কৃত উপপরিদর্শক (এসআই) এসএম ইকবাল পারভেজকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, চক্রের প্রধান ইকবাল পারভেজ ২০২১ সালের ১৭ ডিসেম্বর পুলিশের এসআই হিসেবে কর্মরত অবস্থায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েন। ওই ঘটনায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পাশাপাশি চাকরিও হারান তিনি। সব হারিয়ে এসআই ইকবাল তার শ্যালক মুন্নাসহ ৭ থেকে ৮ জন সহযোগী নিয়ে গড়ে তোলেন অপহরণ বাণিজ্যের রমরমা এই সিন্ডিকেট। চক্রের সদস্যরা দেশের নানা প্রান্ত থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা মানুষদের টার্গেট করে অপহরণ করে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে ফোন করে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করত।

শুক্রবার (১৯ মে) অপহরণের শিকার শাহজাহান কবিরের বোন আমেনা বেগম বাদী হয়ে গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামি ও উদ্ধারকৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য কক্সবাজার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে র‌্যাব।

এ বিষয়ে কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, কক্সবাজার কেন্দ্রিক অপহরণ-মুক্তিপণ সিন্ডিকেটের মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে র‌্যাবের যে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, তারই অংশ হিসেবে আমরা এই অভিযান পরিচালনা করেছি।

এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি, তদন্তের স্বার্থে যা এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এই চক্রের অন্য সদস্যদেরও শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।

back to top