আলোর সন্ধান পেতে হাল না ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে এবার রমনার বটমূলে বর্ষবরণ উদযাপন করবে ছায়ানট।
সোমবার বিকালে ঢাকার ধানমণ্ডিতে ছায়ানট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই জানাল সাংস্কৃতিক সংগঠনটি।
পহেলা বৈশাখের আয়োজনের কথা বলতে গিয়ে ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা জানালেন, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মাস দুয়েক আগে থেকেই গান তোলা আর গলা মেলানোর কাজে শতাধিক ক্ষুদে ও বড় শিল্পী নেমেছে।
ইতোমধ্যে মঞ্চ তৈরি হয়ে গেছে, যেখানে শ-দেড়েক শিল্পী-কর্মী থাকবেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, গোটা অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন- জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে, সত্য-সুন্দরকে পাওয়ার অভিলাষী ছায়ানটের আহ্বান, ‘দূর করো অতীতের সকল আবর্জনা, ধর নির্ভয় গান’।
কোভিড মহামারীকে দমানো গেলেও বাঙালি এখন নতুন সংকটের মুখোমুখি মন্তব্য করে লিসা বলেন, “শুধু এই ভূখণ্ডই নয়, বিশ্বব্যাপী ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, দেশে ক্রমান্বয় অবক্ষয় মূল্যবোধের। আমরা আশাহত হই না, দিশা হারাই না, স্বপ্ন দেখি হাতে হাত রেখে সকলে একসাথে মিলবার, চলবার।
“বাঙালি জাগবেই, সবাই মিলে সুন্দর দিন কাটানোর সময় ফেরাবে, পরম বিশ্বাসে বলবে- সবারে বাসরে ভালো নইলে, মনের কালো ঘুচবে নারে। সার্থক হবেই হবে, মানুষ- দেশ, এ পৃথিবীকে ভালবেসে চলবার মন্ত্র। শুভ কর্মপথে আঁধার কাটিয়ে আলোর সন্ধানে সুদিনের পথে চলব আমরা, বাঙালিকে বলব- হাল ছেড় না।
মহড়ার সমন্বয়ক বশির আল হেলাল জানান, বর্ষবরণে সম্মিলিত গান থাকবে ১০টি, একক গান ১১টি, আবৃত্তি থাকবে দুটি এবং সবশেষে জাতীয় সঙ্গীতে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে।
রমনা উদ্যানের প্রায় দুঘণ্টাব্যাপী এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও।
নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার এ আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণপূর্ত অধিদপ্তর সহায়তা দিচ্ছে জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক লিসা বলেন, ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী, লাউড ওয়ার্কস ও থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের নির্বাচিত সদস্যরা কাজ করছেন।
বাংলা বর্ষবরণকে ঘিরে এবার ২৫ হাজার কোটি টাকার বাজার তৈরি হবে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ছায়ানটের সহ সভাপতি আতিউর রহমান।
পহেলা বৈশাখের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব রয়েছে মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই উৎসবের অর্থনীতি বহুল মাত্রা পাচ্ছে। একটি জরিপে আমরা জানি, ২০১৯ সালে ১৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য এই উৎসবকে ঘিরে বিক্রি হয়েছিল। জরিপে বলছিল, প্রতি বছর ২০ শতাংশ করে এটা বাড়বে।
পহেলা বৈশাখের রমনার বটমূলের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি জানাতে সোমবার বিকালে ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
তিনি বলেন, “কোভিডের কারণে দু’বছর আমরা সেভাবে বর্ষবরণ করতে পারিনি। কিন্তু এবার আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই বর্ষবরণ করব।
ছায়ানটের আরেক সহ সভাপতি খাইরুল আনাম শাকিল বলেন, “পাকিস্তান সরকারের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে ছায়ানটের বর্ষবরণের সূচনা। এই উৎসবটি এখন অনেক বড় হয়েছে। এখন সবাইকে নিয়ে আমরা দিনটি পালন করি। সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষেরা এতে অংশ নেন। সব মিলিয়ে প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।
অন্যদের মধ্যে যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটি থাকবে। এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ মঙ্গল শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
গত ২০ মার্চ সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে শিল্পকলা একাডেমিতে এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখী শোভাযাত্রা আয়োজন করা হবে। তাছাড়া রচনা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকজ মেলার আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন।
শিল্পকলা একাডেমি দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। বাংলা একাডেমি ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশণ (বিসিক) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন নিজেদের কার্যালয়ের সামনে নববর্ষ মেলা, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩
আলোর সন্ধান পেতে হাল না ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে এবার রমনার বটমূলে বর্ষবরণ উদযাপন করবে ছায়ানট।
সোমবার বিকালে ঢাকার ধানমণ্ডিতে ছায়ানট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই জানাল সাংস্কৃতিক সংগঠনটি।
পহেলা বৈশাখের আয়োজনের কথা বলতে গিয়ে ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা জানালেন, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মাস দুয়েক আগে থেকেই গান তোলা আর গলা মেলানোর কাজে শতাধিক ক্ষুদে ও বড় শিল্পী নেমেছে।
ইতোমধ্যে মঞ্চ তৈরি হয়ে গেছে, যেখানে শ-দেড়েক শিল্পী-কর্মী থাকবেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, গোটা অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন- জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে, সত্য-সুন্দরকে পাওয়ার অভিলাষী ছায়ানটের আহ্বান, ‘দূর করো অতীতের সকল আবর্জনা, ধর নির্ভয় গান’।
কোভিড মহামারীকে দমানো গেলেও বাঙালি এখন নতুন সংকটের মুখোমুখি মন্তব্য করে লিসা বলেন, “শুধু এই ভূখণ্ডই নয়, বিশ্বব্যাপী ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, দেশে ক্রমান্বয় অবক্ষয় মূল্যবোধের। আমরা আশাহত হই না, দিশা হারাই না, স্বপ্ন দেখি হাতে হাত রেখে সকলে একসাথে মিলবার, চলবার।
“বাঙালি জাগবেই, সবাই মিলে সুন্দর দিন কাটানোর সময় ফেরাবে, পরম বিশ্বাসে বলবে- সবারে বাসরে ভালো নইলে, মনের কালো ঘুচবে নারে। সার্থক হবেই হবে, মানুষ- দেশ, এ পৃথিবীকে ভালবেসে চলবার মন্ত্র। শুভ কর্মপথে আঁধার কাটিয়ে আলোর সন্ধানে সুদিনের পথে চলব আমরা, বাঙালিকে বলব- হাল ছেড় না।
মহড়ার সমন্বয়ক বশির আল হেলাল জানান, বর্ষবরণে সম্মিলিত গান থাকবে ১০টি, একক গান ১১টি, আবৃত্তি থাকবে দুটি এবং সবশেষে জাতীয় সঙ্গীতে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে।
রমনা উদ্যানের প্রায় দুঘণ্টাব্যাপী এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও।
নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার এ আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণপূর্ত অধিদপ্তর সহায়তা দিচ্ছে জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক লিসা বলেন, ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী, লাউড ওয়ার্কস ও থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের নির্বাচিত সদস্যরা কাজ করছেন।
বাংলা বর্ষবরণকে ঘিরে এবার ২৫ হাজার কোটি টাকার বাজার তৈরি হবে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ছায়ানটের সহ সভাপতি আতিউর রহমান।
পহেলা বৈশাখের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব রয়েছে মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই উৎসবের অর্থনীতি বহুল মাত্রা পাচ্ছে। একটি জরিপে আমরা জানি, ২০১৯ সালে ১৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য এই উৎসবকে ঘিরে বিক্রি হয়েছিল। জরিপে বলছিল, প্রতি বছর ২০ শতাংশ করে এটা বাড়বে।
পহেলা বৈশাখের রমনার বটমূলের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি জানাতে সোমবার বিকালে ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
তিনি বলেন, “কোভিডের কারণে দু’বছর আমরা সেভাবে বর্ষবরণ করতে পারিনি। কিন্তু এবার আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই বর্ষবরণ করব।
ছায়ানটের আরেক সহ সভাপতি খাইরুল আনাম শাকিল বলেন, “পাকিস্তান সরকারের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে ছায়ানটের বর্ষবরণের সূচনা। এই উৎসবটি এখন অনেক বড় হয়েছে। এখন সবাইকে নিয়ে আমরা দিনটি পালন করি। সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষেরা এতে অংশ নেন। সব মিলিয়ে প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।
অন্যদের মধ্যে যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটি থাকবে। এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ মঙ্গল শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
গত ২০ মার্চ সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে শিল্পকলা একাডেমিতে এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখী শোভাযাত্রা আয়োজন করা হবে। তাছাড়া রচনা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকজ মেলার আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন।
শিল্পকলা একাডেমি দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। বাংলা একাডেমি ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশণ (বিসিক) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন নিজেদের কার্যালয়ের সামনে নববর্ষ মেলা, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।