alt

সংস্কৃতি

আগামী বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার জায়গা বরাদ্দ নাওদিতে পারে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বাড়তি দুইদিন সময় পেয়ে বইমেলা সংশ্লিষ্টরা যতোটা উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন, বইমেলার স্থান পরিবর্তন হতে পারে এ খবরে তারচেয়ে বেশী যেন মর্মাহত হয়েছেন।

জানা গেছে, আগামী বছর বইমেলার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জায়গা আর বরাদ্দ দেবে না বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বই, বইমেলা সংশ্লিষ্টরা এমনটাই আলোচনা করছেন।

শোনা যাচ্ছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে পূর্বাচলে নিয়ে যাওয়া হবেবইমেলা। যদিও মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ঘোষণা আসে নি। চূড়ান্ত করে কিছু জানানো হয়নি। মেলা প্রাঙ্গনে এই গুঞ্জন অনেকের মধ্যে সংশয়ের সৃষ্টি করেছে।

মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড তৈরির অংশ হিসেবে কিছু প্রকল্পের কাজ মার্চ মাস থেকে শুরু করতে চাইছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

তারা বলেন, ‘সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে নান্দনিকতা বৃদ্ধিসহ অনেক ধরনের প্রকল্পের কাজ চলছে। তার বাস্তবায়ন শুরু হলে, ওই জায়গাটি আগামী বছর হয়ত আর ব্যবহার করা যাবে না। সেক্ষেত্রে আগামী বছর মেলা এখান থেকে সরিয়ে নেয়া হতে পারে।

প্রাথমিকভাবেএমনসিদ্ধান্ত জানিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়’।

এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘যদি আগামী বছরসোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতি না পাওয়া যায়, তখন মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন।

‘তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি চাই, বইমেলা বাংলা একাডেমিতেই থাকুক। কারণ এই বইমেলার সঙ্গে একুশের চেতনা, শহীদ মিনার এবং বাংলা একাডেমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বইমেলার স্থানিক দূরত্ব কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল জানিয়েছেন, ‘এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া একদমই ঠিক হবে না। বইমেলা বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হতে হবে। পূর্বাচলে হলে আমাদের প্রকাশকদের কেউই অংশগ্রহণ করবে না’।

বইমেলা অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হবে শুনেই অবাক হয়ে লেখকও প্রকাশক রোকসানা রহমান বলেন, ‘ত্রিশ বছরের ওপর এই মেলার সাথে যুক্ত আছি। প্রতিবছর অপেক্ষা থাকে বইমেলার জন্য। সেই বইমেলা অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হবে এটা মানতেই পারছি না’।

তিনি আরো বলেন, ‘বইমেলা আমাদের সংস্কৃতিকে ধারণ করে। এই মেলায় কে আসে না-৫ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধ। এই মেলা আমাদের প্রাণের মেলা। এই মেলাকে নিয়ে এ ধরণের সিদ্ধান্ত হবে হঠকারী সিদ্ধান্ত’।

লিটল ম্যাগ চত্ত্বরে রোকসানা রহমানের স্টলে বই দেখছিলেন শাহানাজ বেগম সুমি। তিনি বিস্ময়ের সাথে বলেন,‘এটা তো শুনে ভালো লাগলো না। এই একটা মাস আমরা বাচ্চাদের নিয়ে আসি। বই কিনি বা না কিনি বইয়ের সংস্পর্শে থাকি। ছেলে মেয়েরা আড্ডা দেয়, বইকে ঘিরে। শাহাবাগ একদম মধ্যে হওয়ায় সবাই আসতে পারে সহজে। এবার তো মেট্্েরারেল হওয়ায় যারা আসতো না তারাও আসছে। বিষয়টা কি হবে জানি না। তবে আপনারা লেখেন যেন বাইরে নিয়ে না যাওয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য মেলার মতো হায় হায় অবস্থা হবে।শুনেছি দুরে চলে যাওয়ায় বাণিজ্য মেলা আর জমছে না। আমি বা আমার আত্মীয়স্বজন কেউই যায় নাই দূরে চলে যাওয়ার পর। অথচ এখানে যেমন শিশু সাহিত্যিক ও শিক্ষক জ্যোস্না লিপি বলেন, ‘বইমেলার স্থান বাংলা একডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই রাখা উচিত। কারণ এই বইমেলার সাথে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের অনেক কিছ্ইু জড়িত। কোনো অজুহাতেই এটা স্থানান্তর করা ঠিক হবে না’।

লেখক-প্রকাশকসহ বইমেলা সংশ্লিষ্টরা চান বইমেলা বাংলা একাডেমি এবং সোহাওয়ার্দী উদ্যানেই হোক। পূর্বাচলে যদি বইমেলায় নেওয়া হয়, তবে প্রকাশরা সেখানে যেতে আগ্রহী নন।

বইমেলা নিয়ে বর্ষিয়ান লেখক ইউসুফ শরীফ। তিনি বলেন, এই মেলা এখান থেকে সরে গেলে চিত্তরঞ্জন সাহা যে সৃষ্টি করে গেছেন তাকে অমর্যাদা করা হবে। তিনি বলেন,১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেইটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন চিত্তরঞ্জন সাহা। তারপ্রতিষ্ঠিতপ্রকাশনা সংস্থা মুক্তধারা’র বই নিয়ে। এরপর ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি একুশের যে অনুষ্ঠান করতো সেখানে একাডেমির ভেতরে ছোট একটি স্টল দিয়েমুক্তধারাবই বিক্রি করা শুরু করে। এরপর ১৯৭৭ সালে মুক্তধারার সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দেয়।

এরপর ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী একাডেমিকে এ বইমেলার সাথেযুক্ত করেন। এর পরের বছর বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি যুক্ত হয়।সেই থেকে শুরু একুশে বইমেলার।

২০১৪ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার বিস্তার ঘটানো হয় সৃজনশীলপ্রকাশকদের স্টল বরাদ্দের মাধ্যমে। আর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, মেলার মূল মঞ্চ এবং তথ্যকেন্দ্র রাখা হয় একাডেমি প্রাঙ্গণেই। এই এক দশক ধরে বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হওয়া বইমেলা এখন বাঙালির প্রাণের মেলায় রূপ নিয়েছে। এই মেলা এখানে থেকে সরে গেলে মেলার সৌন্দর্য মেলায় জনসমাগম হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন লেখক ও প্রকাশকরা।

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

ছবি

রোটারি ঢাকা নর্থ ওয়েস্ট ভোকেশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান

ছবি

দর্শক নে, ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে ময়মনসিংহের পূরবী সিনেমা হল

প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে পদত্যাগপত্র, চার শর্ত মানলে ফিরবেন জামিল আহমেদ

ছবি

বইমেলায় তপন কান্তি সরকারের বই ‘নতুন বিশ্বের নতুন ক্যারিয়ার’

ছবি

পর্দা নেমেছে সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের

ছবি

পাঠাও-এর ‘অগ্রযাত্রার অগ্রদূত’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

শেষ মুহূর্তে স্থগিত ঘোষণা ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব

ছবি

হুমকির মুখে স্থগিত ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব

ছবি

শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব

ছবি

বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে কবি আয়েশা মুন্নির ‘গুলবাহার ভোর’

ছবি

সোনারগাঁয়ে লোককারুশিল্প মেলা, লুপ্তপ্রায় ঐতিহ্য শীতল পাটির প্রদর্শনী

ছবি

সোনারগাঁয়ে ছুটির দিনে লোকারন্য লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব

ছবি

বাংলা একাডেমি পুরস্কারের খবর নেই, এবার সরে গেলেন জুরি সদস্য

ছবি

কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রত্যাখ্যান করেছেন

এবার দশজন পাচ্ছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।

ছবি

সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন

ছবি

বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদীচী যশোর জেলা সংসদের ২২তম সম্মেলন শুরু

ছবি

ভিভো ও এসওএস এর যৌথ উদ্যোগে ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী

ছবি

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দিনব্যাপী চ্যারিটি মেলা

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হককে জাতীয় অধ্যাপক করার দাবি

ছবি

শিল্পকলা একাডেমিতে চলচ্চিত্রের জন্য পৃথক বিভাগ চায় চলচ্চিত্রকর্মীরা

ছবি

শিল্পকর্মে বুড়িগঙ্গা পাড়ের জীবন

ছবি

শিল্পকর্মে বুড়িগঙ্গা পাড়ের জীবন

ছবি

এবার শিল্পকলায় নাটক বন্ধের প্রতিবাদ সমাবেশে হামলা

ছবি

রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকী আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী

ছবি

শহীদদের স্মরণে সাংস্কৃতিক ঐক্যের আহ্বান: ভয়কে জয় করে চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়

ছবি

রিয়েলমি’র আয়োজনে ন্যাশনাল মোবাইল ফটোগ্রাফি কনটেস্ট ২০২৪

ছবি

ময়মনসিংহে ৩ শতাধিক আলোকচিত্র নিয়ে ’ফ্যাসিস্ট প্রদর্শনী’

ছবি

ফ্লোরিডায় সোহরাব আলমের একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী

ছবি

ডিজিটাল মিডিয়ার আসক্তি পৃথিবীকে অশান্ত করছে

জাতীয় সাংস্কৃতিক মৈত্রী নামে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ

ছবি

মাসজুড়ে ভিভো’র ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা

ছবি

শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী পদত্যাগ

ছবি

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মো. হারুন-উর-রশীদ আসকারীর পদত্যাগ

tab

সংস্কৃতি

আগামী বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার জায়গা বরাদ্দ নাওদিতে পারে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বাড়তি দুইদিন সময় পেয়ে বইমেলা সংশ্লিষ্টরা যতোটা উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন, বইমেলার স্থান পরিবর্তন হতে পারে এ খবরে তারচেয়ে বেশী যেন মর্মাহত হয়েছেন।

জানা গেছে, আগামী বছর বইমেলার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জায়গা আর বরাদ্দ দেবে না বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বই, বইমেলা সংশ্লিষ্টরা এমনটাই আলোচনা করছেন।

শোনা যাচ্ছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে পূর্বাচলে নিয়ে যাওয়া হবেবইমেলা। যদিও মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ঘোষণা আসে নি। চূড়ান্ত করে কিছু জানানো হয়নি। মেলা প্রাঙ্গনে এই গুঞ্জন অনেকের মধ্যে সংশয়ের সৃষ্টি করেছে।

মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড তৈরির অংশ হিসেবে কিছু প্রকল্পের কাজ মার্চ মাস থেকে শুরু করতে চাইছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

তারা বলেন, ‘সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে নান্দনিকতা বৃদ্ধিসহ অনেক ধরনের প্রকল্পের কাজ চলছে। তার বাস্তবায়ন শুরু হলে, ওই জায়গাটি আগামী বছর হয়ত আর ব্যবহার করা যাবে না। সেক্ষেত্রে আগামী বছর মেলা এখান থেকে সরিয়ে নেয়া হতে পারে।

প্রাথমিকভাবেএমনসিদ্ধান্ত জানিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়’।

এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘যদি আগামী বছরসোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতি না পাওয়া যায়, তখন মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন।

‘তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি চাই, বইমেলা বাংলা একাডেমিতেই থাকুক। কারণ এই বইমেলার সঙ্গে একুশের চেতনা, শহীদ মিনার এবং বাংলা একাডেমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বইমেলার স্থানিক দূরত্ব কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল জানিয়েছেন, ‘এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া একদমই ঠিক হবে না। বইমেলা বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হতে হবে। পূর্বাচলে হলে আমাদের প্রকাশকদের কেউই অংশগ্রহণ করবে না’।

বইমেলা অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হবে শুনেই অবাক হয়ে লেখকও প্রকাশক রোকসানা রহমান বলেন, ‘ত্রিশ বছরের ওপর এই মেলার সাথে যুক্ত আছি। প্রতিবছর অপেক্ষা থাকে বইমেলার জন্য। সেই বইমেলা অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হবে এটা মানতেই পারছি না’।

তিনি আরো বলেন, ‘বইমেলা আমাদের সংস্কৃতিকে ধারণ করে। এই মেলায় কে আসে না-৫ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধ। এই মেলা আমাদের প্রাণের মেলা। এই মেলাকে নিয়ে এ ধরণের সিদ্ধান্ত হবে হঠকারী সিদ্ধান্ত’।

লিটল ম্যাগ চত্ত্বরে রোকসানা রহমানের স্টলে বই দেখছিলেন শাহানাজ বেগম সুমি। তিনি বিস্ময়ের সাথে বলেন,‘এটা তো শুনে ভালো লাগলো না। এই একটা মাস আমরা বাচ্চাদের নিয়ে আসি। বই কিনি বা না কিনি বইয়ের সংস্পর্শে থাকি। ছেলে মেয়েরা আড্ডা দেয়, বইকে ঘিরে। শাহাবাগ একদম মধ্যে হওয়ায় সবাই আসতে পারে সহজে। এবার তো মেট্্েরারেল হওয়ায় যারা আসতো না তারাও আসছে। বিষয়টা কি হবে জানি না। তবে আপনারা লেখেন যেন বাইরে নিয়ে না যাওয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য মেলার মতো হায় হায় অবস্থা হবে।শুনেছি দুরে চলে যাওয়ায় বাণিজ্য মেলা আর জমছে না। আমি বা আমার আত্মীয়স্বজন কেউই যায় নাই দূরে চলে যাওয়ার পর। অথচ এখানে যেমন শিশু সাহিত্যিক ও শিক্ষক জ্যোস্না লিপি বলেন, ‘বইমেলার স্থান বাংলা একডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই রাখা উচিত। কারণ এই বইমেলার সাথে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের অনেক কিছ্ইু জড়িত। কোনো অজুহাতেই এটা স্থানান্তর করা ঠিক হবে না’।

লেখক-প্রকাশকসহ বইমেলা সংশ্লিষ্টরা চান বইমেলা বাংলা একাডেমি এবং সোহাওয়ার্দী উদ্যানেই হোক। পূর্বাচলে যদি বইমেলায় নেওয়া হয়, তবে প্রকাশরা সেখানে যেতে আগ্রহী নন।

বইমেলা নিয়ে বর্ষিয়ান লেখক ইউসুফ শরীফ। তিনি বলেন, এই মেলা এখান থেকে সরে গেলে চিত্তরঞ্জন সাহা যে সৃষ্টি করে গেছেন তাকে অমর্যাদা করা হবে। তিনি বলেন,১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেইটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন চিত্তরঞ্জন সাহা। তারপ্রতিষ্ঠিতপ্রকাশনা সংস্থা মুক্তধারা’র বই নিয়ে। এরপর ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি একুশের যে অনুষ্ঠান করতো সেখানে একাডেমির ভেতরে ছোট একটি স্টল দিয়েমুক্তধারাবই বিক্রি করা শুরু করে। এরপর ১৯৭৭ সালে মুক্তধারার সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দেয়।

এরপর ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী একাডেমিকে এ বইমেলার সাথেযুক্ত করেন। এর পরের বছর বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি যুক্ত হয়।সেই থেকে শুরু একুশে বইমেলার।

২০১৪ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার বিস্তার ঘটানো হয় সৃজনশীলপ্রকাশকদের স্টল বরাদ্দের মাধ্যমে। আর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, মেলার মূল মঞ্চ এবং তথ্যকেন্দ্র রাখা হয় একাডেমি প্রাঙ্গণেই। এই এক দশক ধরে বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হওয়া বইমেলা এখন বাঙালির প্রাণের মেলায় রূপ নিয়েছে। এই মেলা এখানে থেকে সরে গেলে মেলার সৌন্দর্য মেলায় জনসমাগম হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন লেখক ও প্রকাশকরা।

back to top