গত ২৬ জুন সকালে দুর্বৃত্তরা লালন অনুসারী চায়না বেগমের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছে। এমনকি রাতের আঁধারে সেখানে তাকে পেলে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। এবার দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন।
১ জুলাই গণমাধ্যমে পাঠানো এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে আমরা লক্ষ্য করি যে বাউল, ফকির, সাধকদের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া, তাদের ঘর-বাড়ি ও বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর করা, তাদের বিতাড়িত করা, সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করাসহ বিভিন্ন রকমের আগ্রাসন ঘটে। বাউল, ফকির, বয়াতি, লালন অনুসারী এবং স্বভাবকবিদের ওপর আগ্রাসন ও নির্যাতন মধ্যযুগে, ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসনামলে ছিল, কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে মানবতাবাদী এ মানুষদের ওপর নির্যাতন বা আগ্রাসনের ঘটনা মোটেও কাম্য নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মধ্যযুগে মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বাউল-ফকিরদের ব্যাপক প্রভাব ছিল। তারা সাধারণত সমাজের প্রান্তিক মানুষদের মধ্যে থেকে উঠে আসতেন এবং তাদের জীবনযাত্রা ও দর্শনের মাধ্যমে সমাজে শান্তি, মানবতা ও প্রেমের বার্তা প্রচার করতেন। ব্রিটিশ সরকার তাদের কার্যক্রম বিপ্লবী ও বিদ্রোহী হিসেবে দেখত এবং তাদের দমন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করত। স্বাধীনতার পরেও বাউল-ফকিরদের ওপর নির্যাতনের বেশ কিছু ঘটনা ঘটে।
লালন অনুসারী চায়না বেগমের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে দাবি করা হয়, বাউল, ফকির, বয়াতি ও লালন অনুসারীদের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ, তাদের ওপর যে কোনো আক্রমণ বা নির্যাতনের দ্রুত বিচার ও শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করা। তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা না দিয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান।পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির দাবি করে আরও বলা হয়- সাধারণ জনগণের মধ্যে বাউল, ফকির, বয়াতি ও লালন অনুসারীদের সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
বিবৃতিতে সম্মতি প্রকাশ করা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্য রয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ (সংগীত শিল্পী), প্রিন্স মাহমুদ (সংগীতজ্ঞ), মাকসুদুল হক (সংগীতশিল্পী, মাকসুদ ও ঢাকা), শারমিন লাকী (আবৃত্তিশিল্পী), বাপ্পা মজুমদার (সংগীতশিল্পী, দলছুট), মনোজ প্রামাণিক (অভিনেতা ও শিক্ষক), মোস্তফা সরয়ার ফারুকী (চলচ্চিত্র নির্মাতা), রাহুল আনন্দ (শিল্পী, জলের গান), শফিক তুহিন (গীতিকার, সুরকার, সংগীত শিল্পী), মানস চৌধুরী (শিক্ষক ও সাহিত্যিক), কিশোর দাশ (সংগীত শিল্পী), জয় শাহরিয়ার (সংগীতশিল্পী), আহমেদ হাসান সানি (সংগীতশিল্পী), আলতাফ শাহনেওয়াজ (সাহিত্যিক), আরিফুর রহমান (চলচ্চিত্র নির্মাতা), আরমীন মূসা (সংগীতশিল্পী), উন্মেষ রায় (শিক্ষক), কনক আদিত্য (শিল্পী), কে পি রাজিব (সংগীতশিল্পী), কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় (চলচ্চিত্র নির্মাতা), গৌতম কে শুভ (সংগীত গবেষক), জর্জ লিংকন ডি কস্টা (সংগীতশিল্পী, আর্টসেল), জিয়াউর রহমান (সংগীতশিল্পী, শিরোনামহীন), জুয়েল কলিন্দ (কবি), রাশেদ জামান (চিত্রগ্রাহক), রেজাউল করিম লিমন (সংগীতশিল্পী), শঙ্খ দাশগুপ্ত (চলচ্চিত্র নির্মাতা), শবনম ফেরদৌসী (চলচ্চিত্র নির্মাতা), শর্মি হোসেন (সংগীতশিল্পী), শহীদ মাহমুদ জঙ্গী (গীতিকবি), শাহরিয়ার শাওন (শিল্পী), শেখ মনিরুল আলম টিপু (সংগীতশিল্পী, ওয়্যারফেজ), শিবু কুমার শীল (সংগীতশিল্পী, মেঘদল) প্রমুখ।
মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪
গত ২৬ জুন সকালে দুর্বৃত্তরা লালন অনুসারী চায়না বেগমের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছে। এমনকি রাতের আঁধারে সেখানে তাকে পেলে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। এবার দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন।
১ জুলাই গণমাধ্যমে পাঠানো এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে আমরা লক্ষ্য করি যে বাউল, ফকির, সাধকদের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া, তাদের ঘর-বাড়ি ও বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর করা, তাদের বিতাড়িত করা, সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করাসহ বিভিন্ন রকমের আগ্রাসন ঘটে। বাউল, ফকির, বয়াতি, লালন অনুসারী এবং স্বভাবকবিদের ওপর আগ্রাসন ও নির্যাতন মধ্যযুগে, ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসনামলে ছিল, কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে মানবতাবাদী এ মানুষদের ওপর নির্যাতন বা আগ্রাসনের ঘটনা মোটেও কাম্য নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মধ্যযুগে মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বাউল-ফকিরদের ব্যাপক প্রভাব ছিল। তারা সাধারণত সমাজের প্রান্তিক মানুষদের মধ্যে থেকে উঠে আসতেন এবং তাদের জীবনযাত্রা ও দর্শনের মাধ্যমে সমাজে শান্তি, মানবতা ও প্রেমের বার্তা প্রচার করতেন। ব্রিটিশ সরকার তাদের কার্যক্রম বিপ্লবী ও বিদ্রোহী হিসেবে দেখত এবং তাদের দমন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করত। স্বাধীনতার পরেও বাউল-ফকিরদের ওপর নির্যাতনের বেশ কিছু ঘটনা ঘটে।
লালন অনুসারী চায়না বেগমের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে দাবি করা হয়, বাউল, ফকির, বয়াতি ও লালন অনুসারীদের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ, তাদের ওপর যে কোনো আক্রমণ বা নির্যাতনের দ্রুত বিচার ও শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করা। তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা না দিয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান।পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির দাবি করে আরও বলা হয়- সাধারণ জনগণের মধ্যে বাউল, ফকির, বয়াতি ও লালন অনুসারীদের সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
বিবৃতিতে সম্মতি প্রকাশ করা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্য রয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ (সংগীত শিল্পী), প্রিন্স মাহমুদ (সংগীতজ্ঞ), মাকসুদুল হক (সংগীতশিল্পী, মাকসুদ ও ঢাকা), শারমিন লাকী (আবৃত্তিশিল্পী), বাপ্পা মজুমদার (সংগীতশিল্পী, দলছুট), মনোজ প্রামাণিক (অভিনেতা ও শিক্ষক), মোস্তফা সরয়ার ফারুকী (চলচ্চিত্র নির্মাতা), রাহুল আনন্দ (শিল্পী, জলের গান), শফিক তুহিন (গীতিকার, সুরকার, সংগীত শিল্পী), মানস চৌধুরী (শিক্ষক ও সাহিত্যিক), কিশোর দাশ (সংগীত শিল্পী), জয় শাহরিয়ার (সংগীতশিল্পী), আহমেদ হাসান সানি (সংগীতশিল্পী), আলতাফ শাহনেওয়াজ (সাহিত্যিক), আরিফুর রহমান (চলচ্চিত্র নির্মাতা), আরমীন মূসা (সংগীতশিল্পী), উন্মেষ রায় (শিক্ষক), কনক আদিত্য (শিল্পী), কে পি রাজিব (সংগীতশিল্পী), কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় (চলচ্চিত্র নির্মাতা), গৌতম কে শুভ (সংগীত গবেষক), জর্জ লিংকন ডি কস্টা (সংগীতশিল্পী, আর্টসেল), জিয়াউর রহমান (সংগীতশিল্পী, শিরোনামহীন), জুয়েল কলিন্দ (কবি), রাশেদ জামান (চিত্রগ্রাহক), রেজাউল করিম লিমন (সংগীতশিল্পী), শঙ্খ দাশগুপ্ত (চলচ্চিত্র নির্মাতা), শবনম ফেরদৌসী (চলচ্চিত্র নির্মাতা), শর্মি হোসেন (সংগীতশিল্পী), শহীদ মাহমুদ জঙ্গী (গীতিকবি), শাহরিয়ার শাওন (শিল্পী), শেখ মনিরুল আলম টিপু (সংগীতশিল্পী, ওয়্যারফেজ), শিবু কুমার শীল (সংগীতশিল্পী, মেঘদল) প্রমুখ।