বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘মুনীর চৌধুরী: জীবন দর্শন ও বাংলা ভাষা এবং বাঙালি সংস্কৃতি’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা এবং সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মোঃ আবুল মনসুর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শহিদ মুনীর চৌধুরীর কনিষ্ঠ সন্তান জনাব আসিফ মুনীর। আলোচক হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এনডিসি। সেমিনার ও আলোচনা সভা শেষে একক সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আফসানা রুনা।
মূল প্রবন্ধে আসিফ মুনীর বলেন মুনীর চৌধুরীর ৪৬ বছরের ঘটনাবহুল জীবনের প্রথম ২০ বছর তাঁর প্রস্তুতিপর্ব, আর বাকি ২৬ বছরে বহুমুখী প্রতিভার আলোকরশ্মি বিতরণ করেন। এই আলকের ঝর্ণাধারায় একাধারে মুনীর চৌধুরী ছিলেন বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক, গবেষক, নাট্যকার, ভাষাতত্ত্ববীদ, ভাষা সৈনিক, বাংলা টাইপরাইটার কী-বোর্ড প্রবর্তক, ছোট গল্পকার, অনুবাদক, শিল্প ও সাহিত্য সমালোচক, কুশলী বক্তা, নাট্য নির্দেশক। ইংরেজী ও আরবিতে পাণ্ডিত্য চোখে পরার মত।
তিনি বলেন, ১৯৪৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় তাঁর জীবন গঠনের নতুন অধ্যায়ের শুরু, যা ছিল আমৃত্যু পর্যন্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থাতেই স্বাধিকার আন্দোলনের সূচনা হয়। মুনীর চৌধুরীর প্রথম প্রকাশিত নাটক ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ ১৭৬১ সালের পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মানবিকতা ও মানব সম্পর্কের বিপর্যয় তাঁকে প্রভাবিত করেছিল। সমগ্র নাটকটি যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও যুদ্ধবিরোধী মনভাবের ছাপ সুস্পষ্ট পরিলক্ষিত হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে কারাগারে বসে ১৯৫৩ সালে লিখিত বাংলাদেশের প্রথম রাজনৈতিক নাটক ‘কবর’।
আলোচনায় অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান শিক্ষক হিসেবে মুনীর চৌধুরীর নানাদিক নিয়ে আলোচনা করেন। এছারাও তিনি মুনীর চৌধুরীকে কিংবদন্তী মানুষ উল্লেখ করেন। অনন্য প্রকৃতির একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি ছাত্রদের সাথে আন্তরিকভাবে কথা বলতেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল প্রখর। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র হলেও বাংলা সাহিত্যেই তিনি সাহিত্যচর্চা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব মোঃ আবুল মনসুর বলেন মুনীর চৌধুরীর অবদান সমাজজীবনে খুব প্রয়োজন। সমাজ নিরমানের সুফলটুকু নতুন প্রজন্ম ভোগ করছে। তাঁদেরকে জীবনবোধ নতুনদের কাছে তুলে ধরা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তাঁদের আদর্শ ও দিকনির্দেশনা পৌঁছে দেওয়াই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক উল্লেখ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা অধ্যাপক ছিলেন মুনীর চৌধুরী। পাকিস্তানী দোসর- রাজাকারা ১৯৭১ সালে অমানুষিক নির্যাতন করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা করেছিলো। আমরা ১৪ই ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি কিন্তু বুদ্ধিজীবীদের হত্যা শুরু হয়েছিলো ২৫ মার্চ থেকে। স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস নতুনদেরকে জানানোই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে ।
শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘মুনীর চৌধুরী: জীবন দর্শন ও বাংলা ভাষা এবং বাঙালি সংস্কৃতি’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা এবং সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মোঃ আবুল মনসুর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শহিদ মুনীর চৌধুরীর কনিষ্ঠ সন্তান জনাব আসিফ মুনীর। আলোচক হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এনডিসি। সেমিনার ও আলোচনা সভা শেষে একক সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আফসানা রুনা।
মূল প্রবন্ধে আসিফ মুনীর বলেন মুনীর চৌধুরীর ৪৬ বছরের ঘটনাবহুল জীবনের প্রথম ২০ বছর তাঁর প্রস্তুতিপর্ব, আর বাকি ২৬ বছরে বহুমুখী প্রতিভার আলোকরশ্মি বিতরণ করেন। এই আলকের ঝর্ণাধারায় একাধারে মুনীর চৌধুরী ছিলেন বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক, গবেষক, নাট্যকার, ভাষাতত্ত্ববীদ, ভাষা সৈনিক, বাংলা টাইপরাইটার কী-বোর্ড প্রবর্তক, ছোট গল্পকার, অনুবাদক, শিল্প ও সাহিত্য সমালোচক, কুশলী বক্তা, নাট্য নির্দেশক। ইংরেজী ও আরবিতে পাণ্ডিত্য চোখে পরার মত।
তিনি বলেন, ১৯৪৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় তাঁর জীবন গঠনের নতুন অধ্যায়ের শুরু, যা ছিল আমৃত্যু পর্যন্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থাতেই স্বাধিকার আন্দোলনের সূচনা হয়। মুনীর চৌধুরীর প্রথম প্রকাশিত নাটক ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ ১৭৬১ সালের পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মানবিকতা ও মানব সম্পর্কের বিপর্যয় তাঁকে প্রভাবিত করেছিল। সমগ্র নাটকটি যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও যুদ্ধবিরোধী মনভাবের ছাপ সুস্পষ্ট পরিলক্ষিত হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে কারাগারে বসে ১৯৫৩ সালে লিখিত বাংলাদেশের প্রথম রাজনৈতিক নাটক ‘কবর’।
আলোচনায় অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান শিক্ষক হিসেবে মুনীর চৌধুরীর নানাদিক নিয়ে আলোচনা করেন। এছারাও তিনি মুনীর চৌধুরীকে কিংবদন্তী মানুষ উল্লেখ করেন। অনন্য প্রকৃতির একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি ছাত্রদের সাথে আন্তরিকভাবে কথা বলতেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল প্রখর। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র হলেও বাংলা সাহিত্যেই তিনি সাহিত্যচর্চা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব মোঃ আবুল মনসুর বলেন মুনীর চৌধুরীর অবদান সমাজজীবনে খুব প্রয়োজন। সমাজ নিরমানের সুফলটুকু নতুন প্রজন্ম ভোগ করছে। তাঁদেরকে জীবনবোধ নতুনদের কাছে তুলে ধরা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তাঁদের আদর্শ ও দিকনির্দেশনা পৌঁছে দেওয়াই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক উল্লেখ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা অধ্যাপক ছিলেন মুনীর চৌধুরী। পাকিস্তানী দোসর- রাজাকারা ১৯৭১ সালে অমানুষিক নির্যাতন করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা করেছিলো। আমরা ১৪ই ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি কিন্তু বুদ্ধিজীবীদের হত্যা শুরু হয়েছিলো ২৫ মার্চ থেকে। স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস নতুনদেরকে জানানোই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে ।