করোনার দুঃসময় অনেকটাই কেটেছে, দু’বছর পর গত বৃহস্পতিবার বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে রাজধানীতে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। ছিল উৎসবমুখর, সংগীতে, নৃত্যে, মুক্তচিন্তার বাঁধভাঙা জোয়ার - সোহরাব আলম
করোনার দুঃসময় কাটিয়ে দু’বছর পর প্রাণের জোয়ারে বিপুল উৎসবে বাঙালি বরণ করে নিয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪২৯। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের প্রথম সকালে সারা দেশে ঢাকের-বাদ্য, গান ও নৃত্যের চিরায়ত আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের সব মানুষের মঙ্গল কামনায় আবাহন করা হয় নতুন বছরকে।
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা- কবিগুরুর এই বাণীকে ধারণ করে পুরনো বছরের সাফল্য-ব্যর্থতার সব গ্লানি মুছে দিয়ে নতুন উদ্দীপনায় নতুন বছর বরণ করে নিয়েছে বাঙালি। সব ব্যর্থতা, শোক ও হাহাকারকে বিদায় জানিয়ে গ্রহণ করেছে নতুন বছরকে। নববর্ষের প্রধান আয়োজন রাজধানীর রমনা বটমূলের অনুষ্ঠান থেকে সব অশুভ শক্তি, অমঙ্গল, অত্যাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অবিচল হওয়ার ডাক দেয়া হয়েছে।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়া হয় গান আর রাগালাপের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর হয়ে উঠে রমনার বটমূল। করোনা অতিমারীর কারণে গত দুইবছর রমনা বটমূলে বর্ষবরণে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী প্রভাতি সংগীতানুষ্ঠানটি হতে পারেনি। এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে। নতুন বছরে এ নতুন বাস্তবতাকে তুলে ধরতে আনন্দের গান নিয়ে সাজানো হয় এবারের ছায়ানটের গানের অনুষ্ঠান। মূল ভাব ছিল নব আনন্দে জাগো।
ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুন এ নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন। নব্বই বছরে পা রাখা সনজীদা খাতুন শারীরিক দুর্বলতায় এবার অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত হতে পারেননি। শেষে ধারণ করা তার গাওয়া নব আনন্দে জাগো গানটি বাজিয়ে শোনানো হয়। নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী।
অনুষ্ঠানে সম্মেলক কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত মন, জাগো মঙ্গললোকে আহির ভৈরব রাগে এবাদুল হক সৈকতের সেতারবাদন, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী পরিবেশন করেন নজরুলসংগীত অরুণকান্তিকে গো যোগী ভিখারি। তোড়ি রাগে ছোট আলাপ শোনান বিটু কুমার শীল। সুস্মিতা দেবদনাথ পরিবেশন করেন নজরুলর জাগো জাগো খোলো গো আঁখি। এছাড়া একক সংগীত পরিবেশন করেন অন্য শিল্পীরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টার এ অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুল প্রসাদ সেন, রজনীকান্ত সেন এই পাঁচ কবির গানের সঙ্গে লালন সাঁই, গুরুসদয় দত্তের ব্রতচারীর গান, গিরীন চক্রবর্তীর পল্লীগীতি এবং নুরুল ইসলাম জাদিদের ভাওয়াইয়া দিয়ে সাজানো হয়েছিল ছায়ানটের অনুষ্ঠানমালা। সঙ্গে ছিল আবৃত্তি ও পাঠ। বর্ষবরণে এই আয়োজন শেষ হয় ৮টা ৩০ মিনিটে।
আয়োজনে প্রবেশে এবার গেটের সংখ্যা ছিল আটটি। প্রবেশপথ তিনটি ছিল অরুণোদয়, রমনা রেস্তোরাঁ ও অস্তাচল। বের হওয়ার পথ দুটি- বৈশাখী ও উত্তরায়ন। একইসঙ্গে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্যও ছিল তিনটি পথ- শ্যামলিমা, স্টার গেট ও নতুন গেট। রমনায় দর্শনার্থীদের জন্য জরুরি চিকিৎসাসেবা, সিনিয়র সিটিজেন, শিশু ও নারীদের জন্য জন্য বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। তবে রমজান মাস হওয়ায় এবার কোন খাবারের দোকান ছিল না।
এদিকে, নতুন বছরকে বরণে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দীর্ঘ দুই বছর পর মহাসমারোহে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। সকাল ৯টার দিকে চারুকলা অনুষদের শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন মুখোশ, কাঠামো ও প্রতীক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন। এবারের শোভাযাত্রায় ঘোড়া ও টেপা পুতুলসহ মোট পাঁচটি বড় মোটিভ রয়েছে। এছাড়া রঙতুলির আঁচড়ে আঁকা বাঘ, সিংহসহ নানা রকমের মুখোশের দেখা মিলেছে।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সম্প্রীতির, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘ দুই বছর পর পহেলা বৈশাখ ১৪২৯ অনুষ্ঠান তার প্রাণ চাঞ্চল্য, উৎসব ও আমেজের চিরাচরিত ছোঁয়া ফিরে পেয়েছে বলে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব। এটি একটি অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনায় উজ্জীবিত উৎসব। এটি সব জনগোষ্ঠী, সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষের একটি প্রাণের জায়গা, সাধনার জায়গা, সম্পৃক্ততার জায়গা। ধর্ম যার যার সেটি থাকবে; কিন্তু উৎসব ও আমেজ সবার। মানুষের মধ্যে ধর্মের সম্প্রীতি, মানবিক বন্ধন সুদৃঢ় হোক সেই প্রত্যাশা করি।’
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারীর কারণে আমরা দুই বছর আমাদের উৎসবটি করতে পারিনি। ২ বছর পর আমরা আবার আমাদের প্রাণে মেলা, হৃদয়ের উৎসবে হাজির হয়েছি। দৃশ্যমান ও ?অদৃশ্যমান যে শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি, সেই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ার জন্য এই পহেলা বৈশাখ দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমরা মনে করি আমাদের এই ঐতিহ্যময়ী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমরা জঙ্গিবাদ ও অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর র্যাব, সোয়াট ও পুলিশ সদস্যরা তিন স্তরের নিরাপত্তা প্রদান করে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিম, বিএনসিসি, রোভারস্কাউটও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিল। মঙ্গল শোভাযাত্রা টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বরের স্মৃতি চিরন্তন হয়ে আবার টিএসসি গিয়ে শেষ হয়।
করোনার দুঃসময় অনেকটাই কেটেছে, দু’বছর পর গত বৃহস্পতিবার বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে রাজধানীতে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। ছিল উৎসবমুখর, সংগীতে, নৃত্যে, মুক্তচিন্তার বাঁধভাঙা জোয়ার - সোহরাব আলম
শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল ২০২২
করোনার দুঃসময় কাটিয়ে দু’বছর পর প্রাণের জোয়ারে বিপুল উৎসবে বাঙালি বরণ করে নিয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪২৯। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের প্রথম সকালে সারা দেশে ঢাকের-বাদ্য, গান ও নৃত্যের চিরায়ত আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের সব মানুষের মঙ্গল কামনায় আবাহন করা হয় নতুন বছরকে।
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা- কবিগুরুর এই বাণীকে ধারণ করে পুরনো বছরের সাফল্য-ব্যর্থতার সব গ্লানি মুছে দিয়ে নতুন উদ্দীপনায় নতুন বছর বরণ করে নিয়েছে বাঙালি। সব ব্যর্থতা, শোক ও হাহাকারকে বিদায় জানিয়ে গ্রহণ করেছে নতুন বছরকে। নববর্ষের প্রধান আয়োজন রাজধানীর রমনা বটমূলের অনুষ্ঠান থেকে সব অশুভ শক্তি, অমঙ্গল, অত্যাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অবিচল হওয়ার ডাক দেয়া হয়েছে।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়া হয় গান আর রাগালাপের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর হয়ে উঠে রমনার বটমূল। করোনা অতিমারীর কারণে গত দুইবছর রমনা বটমূলে বর্ষবরণে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী প্রভাতি সংগীতানুষ্ঠানটি হতে পারেনি। এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে। নতুন বছরে এ নতুন বাস্তবতাকে তুলে ধরতে আনন্দের গান নিয়ে সাজানো হয় এবারের ছায়ানটের গানের অনুষ্ঠান। মূল ভাব ছিল নব আনন্দে জাগো।
ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুন এ নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন। নব্বই বছরে পা রাখা সনজীদা খাতুন শারীরিক দুর্বলতায় এবার অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত হতে পারেননি। শেষে ধারণ করা তার গাওয়া নব আনন্দে জাগো গানটি বাজিয়ে শোনানো হয়। নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী।
অনুষ্ঠানে সম্মেলক কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত মন, জাগো মঙ্গললোকে আহির ভৈরব রাগে এবাদুল হক সৈকতের সেতারবাদন, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী পরিবেশন করেন নজরুলসংগীত অরুণকান্তিকে গো যোগী ভিখারি। তোড়ি রাগে ছোট আলাপ শোনান বিটু কুমার শীল। সুস্মিতা দেবদনাথ পরিবেশন করেন নজরুলর জাগো জাগো খোলো গো আঁখি। এছাড়া একক সংগীত পরিবেশন করেন অন্য শিল্পীরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টার এ অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুল প্রসাদ সেন, রজনীকান্ত সেন এই পাঁচ কবির গানের সঙ্গে লালন সাঁই, গুরুসদয় দত্তের ব্রতচারীর গান, গিরীন চক্রবর্তীর পল্লীগীতি এবং নুরুল ইসলাম জাদিদের ভাওয়াইয়া দিয়ে সাজানো হয়েছিল ছায়ানটের অনুষ্ঠানমালা। সঙ্গে ছিল আবৃত্তি ও পাঠ। বর্ষবরণে এই আয়োজন শেষ হয় ৮টা ৩০ মিনিটে।
আয়োজনে প্রবেশে এবার গেটের সংখ্যা ছিল আটটি। প্রবেশপথ তিনটি ছিল অরুণোদয়, রমনা রেস্তোরাঁ ও অস্তাচল। বের হওয়ার পথ দুটি- বৈশাখী ও উত্তরায়ন। একইসঙ্গে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্যও ছিল তিনটি পথ- শ্যামলিমা, স্টার গেট ও নতুন গেট। রমনায় দর্শনার্থীদের জন্য জরুরি চিকিৎসাসেবা, সিনিয়র সিটিজেন, শিশু ও নারীদের জন্য জন্য বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। তবে রমজান মাস হওয়ায় এবার কোন খাবারের দোকান ছিল না।
এদিকে, নতুন বছরকে বরণে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দীর্ঘ দুই বছর পর মহাসমারোহে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। সকাল ৯টার দিকে চারুকলা অনুষদের শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন মুখোশ, কাঠামো ও প্রতীক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন। এবারের শোভাযাত্রায় ঘোড়া ও টেপা পুতুলসহ মোট পাঁচটি বড় মোটিভ রয়েছে। এছাড়া রঙতুলির আঁচড়ে আঁকা বাঘ, সিংহসহ নানা রকমের মুখোশের দেখা মিলেছে।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সম্প্রীতির, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘ দুই বছর পর পহেলা বৈশাখ ১৪২৯ অনুষ্ঠান তার প্রাণ চাঞ্চল্য, উৎসব ও আমেজের চিরাচরিত ছোঁয়া ফিরে পেয়েছে বলে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব। এটি একটি অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনায় উজ্জীবিত উৎসব। এটি সব জনগোষ্ঠী, সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষের একটি প্রাণের জায়গা, সাধনার জায়গা, সম্পৃক্ততার জায়গা। ধর্ম যার যার সেটি থাকবে; কিন্তু উৎসব ও আমেজ সবার। মানুষের মধ্যে ধর্মের সম্প্রীতি, মানবিক বন্ধন সুদৃঢ় হোক সেই প্রত্যাশা করি।’
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারীর কারণে আমরা দুই বছর আমাদের উৎসবটি করতে পারিনি। ২ বছর পর আমরা আবার আমাদের প্রাণে মেলা, হৃদয়ের উৎসবে হাজির হয়েছি। দৃশ্যমান ও ?অদৃশ্যমান যে শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি, সেই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ার জন্য এই পহেলা বৈশাখ দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমরা মনে করি আমাদের এই ঐতিহ্যময়ী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমরা জঙ্গিবাদ ও অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর র্যাব, সোয়াট ও পুলিশ সদস্যরা তিন স্তরের নিরাপত্তা প্রদান করে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিম, বিএনসিসি, রোভারস্কাউটও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিল। মঙ্গল শোভাযাত্রা টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বরের স্মৃতি চিরন্তন হয়ে আবার টিএসসি গিয়ে শেষ হয়।