চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় ‘শরৎ উৎসব’ । ছবি: সংবাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ‘শরৎ উৎসব’ উদযাপিত হয়েছে। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর এই উৎসবের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম খালিদ প্রধান অতিথি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি ড. নিগার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ এবং সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট বক্তব্য রাখেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম খালিদ বলেন, শরৎ উৎসবসহ বাঙালি সংস্কৃতির সব উৎসব এদেশের মানুষ ধর্ম, বর্ণ, দল, মত নির্বিশেষ উদযাপন করে। এ ধরনের উৎসবের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের মেলবন্ধন আরও জোরালো হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এসময় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এই শরৎ উৎসব। কবিতা, নাচ, গান, নৃত্য ও আনন্দের মাধ্যমে এটি উদযাপন করা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি এদেশের সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আবহমান বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য চর্চার মধ্যে দিয়ে মানুষের মনের উদারতা ও গভীরতা আরও প্রসারিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাংস্কৃতি জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, “প্রকৃতির যে অপরূপ সৃষ্টি, সেটি আজকে আমরা হারাতে বসেছি। ক্রমাগতভাবে বৃক্ষ নিধন, শিল্পোন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, সবকিছু মিলিয়ে আমরা ঋতুগুলোকে প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছি।
“সুতরাং শরৎ, হেমন্তকে বাঁচিয়ে রাখতে, সমস্ত ঋতুকে যদি বাঁচিয়ে রাখতে হয়, তাহলে প্রকৃতিকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। বৃক্ষরোপণ করতে হবে, পলিথিন থেকে শুরু করে যেগুলো প্রকৃতি ধ্বংস করছে সেগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।”
চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় ‘শরৎ উৎসব’ । ছবি: সংবাদ
শরৎ উৎসবের সভাপতি ও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি ড. নিগার চৌধুরী বলেন, “নগর জীবনে যারা তার প্রকৃতির দিকে তাকানোর সুযোগ পায় না, তাদেরকে জানান দিতে আমাদের এই উৎসব যে, প্রকৃতিতে শরৎ এসেছে।
“শরতের আমেজ আমাদের মাঝে বিরাজ করুক। শরৎ হচ্ছে সমৃদ্ধির ঋতু। যে কারণে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘বর্ষায় আমরা যখন আকাশের দিকে তাকাই, শরতে আমরা মাঠ ভরা ফসলের দিকে তাকাই’। এই উৎসব থেকে আমরা একটি বার্তা দিতে চাই, সেটি হল আসুন আমরা প্রকৃতির প্রতি সচেতন ও যত্নশীল হই।”
উৎসবে একক আবৃত্তি পর্বে নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি পাঠ করেন নির্মলেন্দু গুণের ‘কাঁশফুলের কাব্য’, আহসান উল্লাহ পাঠ করেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছিন্নপত্র’ থেকে। সেবতি প্রভা পড়েন মো. নাসির উদ্দিনের ‘শরৎকাল’ কবিতাটি।
একক সংগীত পর্বে ফাহিম হোসেন চৌধুরী শোনান রবীন্দ্রসংগীত ‘এবার অবগুণ্ঠন খোলো’, অনিমা রায় শোনান ‘শরৎ আলোর কোমল বনে’, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস শোনান লোকসংগীত ‘হিংসা হিন্দা ছাড়ো’।
দলীয় সংগীত পর্বে বহ্নিশিখা পরিবেশন করেন আগমনী সংগীত ‘শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে ভোরের আগমনী’, সুরনন্দনের শিল্পীরা শোনান ‘এসো শারদ প্রাতের প্রতীক’, পঞ্চভাস্করে শিল্পীরা শোনান ‘আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়’, সুরবিহারের শিল্পীরা গেয়েছেন ‘শিউলি তলায় ভোরবেলায়’, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা শোনান ‘দেখ দেখ শুকতারা আঁখি মেলে চায়’ ও ‘নম নম নম বাংলাদেশ মম’।
রবীন্দ্রসংগীত ‘ওগো শেফালী ওগো শেফালী’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্য সংগঠন ভাবনার শিল্পীরা। ‘আজ শরতে আলোর বাঁশি বাজলো’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনায় ছিল নৃত্যাক্ষ।
রবীন্দ্রসংগীত ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলী’ গানের সঙ্গে মঞ্চে আসে নৃত্য সংগঠন নৃত্যজনের শিল্পীরা; বাফার শিল্পীরা নজরুল সংগীত ‘এসো শারদ প্রাতের পথিক’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন। এ ছাড়া নৃত্য সংগঠন স্পন্দন আগমনী নৃত্য পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট।
শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় ‘শরৎ উৎসব’ । ছবি: সংবাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ‘শরৎ উৎসব’ উদযাপিত হয়েছে। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর এই উৎসবের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম খালিদ প্রধান অতিথি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি ড. নিগার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ এবং সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট বক্তব্য রাখেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম খালিদ বলেন, শরৎ উৎসবসহ বাঙালি সংস্কৃতির সব উৎসব এদেশের মানুষ ধর্ম, বর্ণ, দল, মত নির্বিশেষ উদযাপন করে। এ ধরনের উৎসবের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের মেলবন্ধন আরও জোরালো হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এসময় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এই শরৎ উৎসব। কবিতা, নাচ, গান, নৃত্য ও আনন্দের মাধ্যমে এটি উদযাপন করা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি এদেশের সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আবহমান বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য চর্চার মধ্যে দিয়ে মানুষের মনের উদারতা ও গভীরতা আরও প্রসারিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাংস্কৃতি জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, “প্রকৃতির যে অপরূপ সৃষ্টি, সেটি আজকে আমরা হারাতে বসেছি। ক্রমাগতভাবে বৃক্ষ নিধন, শিল্পোন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, সবকিছু মিলিয়ে আমরা ঋতুগুলোকে প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছি।
“সুতরাং শরৎ, হেমন্তকে বাঁচিয়ে রাখতে, সমস্ত ঋতুকে যদি বাঁচিয়ে রাখতে হয়, তাহলে প্রকৃতিকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। বৃক্ষরোপণ করতে হবে, পলিথিন থেকে শুরু করে যেগুলো প্রকৃতি ধ্বংস করছে সেগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।”
চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় ‘শরৎ উৎসব’ । ছবি: সংবাদ
শরৎ উৎসবের সভাপতি ও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি ড. নিগার চৌধুরী বলেন, “নগর জীবনে যারা তার প্রকৃতির দিকে তাকানোর সুযোগ পায় না, তাদেরকে জানান দিতে আমাদের এই উৎসব যে, প্রকৃতিতে শরৎ এসেছে।
“শরতের আমেজ আমাদের মাঝে বিরাজ করুক। শরৎ হচ্ছে সমৃদ্ধির ঋতু। যে কারণে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘বর্ষায় আমরা যখন আকাশের দিকে তাকাই, শরতে আমরা মাঠ ভরা ফসলের দিকে তাকাই’। এই উৎসব থেকে আমরা একটি বার্তা দিতে চাই, সেটি হল আসুন আমরা প্রকৃতির প্রতি সচেতন ও যত্নশীল হই।”
উৎসবে একক আবৃত্তি পর্বে নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি পাঠ করেন নির্মলেন্দু গুণের ‘কাঁশফুলের কাব্য’, আহসান উল্লাহ পাঠ করেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছিন্নপত্র’ থেকে। সেবতি প্রভা পড়েন মো. নাসির উদ্দিনের ‘শরৎকাল’ কবিতাটি।
একক সংগীত পর্বে ফাহিম হোসেন চৌধুরী শোনান রবীন্দ্রসংগীত ‘এবার অবগুণ্ঠন খোলো’, অনিমা রায় শোনান ‘শরৎ আলোর কোমল বনে’, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস শোনান লোকসংগীত ‘হিংসা হিন্দা ছাড়ো’।
দলীয় সংগীত পর্বে বহ্নিশিখা পরিবেশন করেন আগমনী সংগীত ‘শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে ভোরের আগমনী’, সুরনন্দনের শিল্পীরা শোনান ‘এসো শারদ প্রাতের প্রতীক’, পঞ্চভাস্করে শিল্পীরা শোনান ‘আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়’, সুরবিহারের শিল্পীরা গেয়েছেন ‘শিউলি তলায় ভোরবেলায়’, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা শোনান ‘দেখ দেখ শুকতারা আঁখি মেলে চায়’ ও ‘নম নম নম বাংলাদেশ মম’।
রবীন্দ্রসংগীত ‘ওগো শেফালী ওগো শেফালী’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্য সংগঠন ভাবনার শিল্পীরা। ‘আজ শরতে আলোর বাঁশি বাজলো’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনায় ছিল নৃত্যাক্ষ।
রবীন্দ্রসংগীত ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলী’ গানের সঙ্গে মঞ্চে আসে নৃত্য সংগঠন নৃত্যজনের শিল্পীরা; বাফার শিল্পীরা নজরুল সংগীত ‘এসো শারদ প্রাতের পথিক’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন। এ ছাড়া নৃত্য সংগঠন স্পন্দন আগমনী নৃত্য পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট।