বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, প্রতিবেশী দুটি দেশের পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নে সাংস্কৃতিক বিনিময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত- বাংলাদেশ দুটি ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ। এই দুদেশের মধ্যে সম্প্রীতির সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। সেই সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গ নানা কারণেই হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের। এখানকার মানুষ, ভাষা ও সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য সীমান্তের দু-পাড়ের মানুষকে এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। বিভিন্ন সময়ে তারা ভাবনা ও ভালোবাসায় পরস্পরকে গ্রহণ করেছে গভীর সংবেদনশীলতায়।
কলকাতার কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণে শুরু হওয়া ‘১০ম বাংলাদেশ বইমেলা-২০২২’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দীপু মনি। শুক্রবার এ বইমেলা শুরু হয়েছে।
দীপু মনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষার যে প্রচার ও প্রসার তাতে বাংলাদেশ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষাকে গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছিলেন। এরপর ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়ে এই ভাষাকে আরো উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি যখন বাংলায় জাতিসংঘে ভাষণ দিলেন তারপর এই ভাষা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জাতিসংঘে বাংলায় বক্তৃতা দিয়েছেন।
দীপু মনি ছাড়াও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যালয় ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ, কথা সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, তৃণমুল কংগ্রেস বিধায়ক দেবাশীষ কুমার, উপ হাই কমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, দেজ পাবলিকেশন হাউজের কর্ণধার ও আন্তর্জাতিক কলকাতা বই মেলার সভাপতি সুধাংশু শেখর দে, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, কলকাতা পৌরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুপর্ণা দত্ত প্রমুখ।
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, এই মেলা দুই বাংলার মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে। কাঁটা তার, ভিসা, পাসপোর্ট এই সব শব্দপুঞ্জকে একটা জিনিসই অতিক্রম করতে পারে- সেটি হল বই। বইই আমাদেরকে জুড়তে পারে।
এ সময় পাশে থাকা বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে উদ্দেশ্য করে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের আপা দীপু মনি আজ এখানে উপস্থিত আছেন।আমরা তো তার বক্তব্য শুনতে চাই কিন্তু দেশে গুরুত্বপূর্ণ কজের জন্য তাকে কিছু সময়ের মধ্যেই চলে যেতে হবে। আমরা সব সময় চাই অতিথিরা কলকাতায় বেশি আসুক।
যারা বইয়ের খোঁজে এসেছেন তাদের অভিনন্দন জানিয়ে ড. সৈয়দ মনজুরুল বলেন, কলেজ স্ট্রিট হলো বইয়ের আঁতুড়ঘর। এটি কলকাতার বই পাড়া। আমি কলকাতায় আসলেই এখান থেকে বই কিনি। ফলে এখানে এবার বইমেলা হওয়াটা আমার জন্যতো বটে বাংলাদেশের জন্যও খুব গর্বের বিষয়।
কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার সভাপতি সুধাংশু শেখর দে বলেন, গত এক দশক ধরেই কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলা চলছে।মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর আমলে এই মেলা আরও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। এখন বই এর সংখ্যা বেড়েছে, পাঠকও বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বইয়ের বিক্রি বাংলাদেশেও বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বই এর সম্ভার নিয়ে ওপার বাংলায় বইমেলা করার আবেদন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সুধাংশু দে।
এবারের বাংলাদেশ বইমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। আর প্রথমবারের মতো এবারই মেলা প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’। এদিন এই বঙ্গবন্ধু কর্নারটি ঘুরে দেখেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন, বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির উদ্যোগে এই বইমেলা হচ্ছে। মেলা চলবে আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের শিল্পী মেহের আফরোজ শাওন। দশ দিনব্যাপী এই বইমেলায় বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও থাকছে। উজান, মনভাষা, সহজ মানুষ এর মতো বাংলা ব্যান্ডও এই বই মেলায় অংশগ্রহণ করবে।
প্রতিদিন দুপুর ১ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এই মেলা চলবে। অন্বেষা প্রকাশন, আহমেদ পাবলিশিং হাউস, মাওলা ব্রাদার্স, অনিন্দ্য প্রকাশ, নালন্দা, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, সাহিত্য প্রকাশ, অবসর প্রকাশনা সংস্থা, সৃজনী, আগামী প্রকাশনী, সময় প্রকাশনসহ বাংলাদেশের ৬৮ টি শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে।
শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২
বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, প্রতিবেশী দুটি দেশের পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নে সাংস্কৃতিক বিনিময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত- বাংলাদেশ দুটি ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ। এই দুদেশের মধ্যে সম্প্রীতির সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। সেই সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গ নানা কারণেই হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের। এখানকার মানুষ, ভাষা ও সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য সীমান্তের দু-পাড়ের মানুষকে এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। বিভিন্ন সময়ে তারা ভাবনা ও ভালোবাসায় পরস্পরকে গ্রহণ করেছে গভীর সংবেদনশীলতায়।
কলকাতার কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণে শুরু হওয়া ‘১০ম বাংলাদেশ বইমেলা-২০২২’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দীপু মনি। শুক্রবার এ বইমেলা শুরু হয়েছে।
দীপু মনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষার যে প্রচার ও প্রসার তাতে বাংলাদেশ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষাকে গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছিলেন। এরপর ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়ে এই ভাষাকে আরো উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি যখন বাংলায় জাতিসংঘে ভাষণ দিলেন তারপর এই ভাষা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জাতিসংঘে বাংলায় বক্তৃতা দিয়েছেন।
দীপু মনি ছাড়াও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যালয় ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ, কথা সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, তৃণমুল কংগ্রেস বিধায়ক দেবাশীষ কুমার, উপ হাই কমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, দেজ পাবলিকেশন হাউজের কর্ণধার ও আন্তর্জাতিক কলকাতা বই মেলার সভাপতি সুধাংশু শেখর দে, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, কলকাতা পৌরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুপর্ণা দত্ত প্রমুখ।
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, এই মেলা দুই বাংলার মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে। কাঁটা তার, ভিসা, পাসপোর্ট এই সব শব্দপুঞ্জকে একটা জিনিসই অতিক্রম করতে পারে- সেটি হল বই। বইই আমাদেরকে জুড়তে পারে।
এ সময় পাশে থাকা বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে উদ্দেশ্য করে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের আপা দীপু মনি আজ এখানে উপস্থিত আছেন।আমরা তো তার বক্তব্য শুনতে চাই কিন্তু দেশে গুরুত্বপূর্ণ কজের জন্য তাকে কিছু সময়ের মধ্যেই চলে যেতে হবে। আমরা সব সময় চাই অতিথিরা কলকাতায় বেশি আসুক।
যারা বইয়ের খোঁজে এসেছেন তাদের অভিনন্দন জানিয়ে ড. সৈয়দ মনজুরুল বলেন, কলেজ স্ট্রিট হলো বইয়ের আঁতুড়ঘর। এটি কলকাতার বই পাড়া। আমি কলকাতায় আসলেই এখান থেকে বই কিনি। ফলে এখানে এবার বইমেলা হওয়াটা আমার জন্যতো বটে বাংলাদেশের জন্যও খুব গর্বের বিষয়।
কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার সভাপতি সুধাংশু শেখর দে বলেন, গত এক দশক ধরেই কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলা চলছে।মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর আমলে এই মেলা আরও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। এখন বই এর সংখ্যা বেড়েছে, পাঠকও বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বইয়ের বিক্রি বাংলাদেশেও বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বই এর সম্ভার নিয়ে ওপার বাংলায় বইমেলা করার আবেদন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সুধাংশু দে।
এবারের বাংলাদেশ বইমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। আর প্রথমবারের মতো এবারই মেলা প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’। এদিন এই বঙ্গবন্ধু কর্নারটি ঘুরে দেখেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন, বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির উদ্যোগে এই বইমেলা হচ্ছে। মেলা চলবে আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের শিল্পী মেহের আফরোজ শাওন। দশ দিনব্যাপী এই বইমেলায় বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও থাকছে। উজান, মনভাষা, সহজ মানুষ এর মতো বাংলা ব্যান্ডও এই বই মেলায় অংশগ্রহণ করবে।
প্রতিদিন দুপুর ১ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এই মেলা চলবে। অন্বেষা প্রকাশন, আহমেদ পাবলিশিং হাউস, মাওলা ব্রাদার্স, অনিন্দ্য প্রকাশ, নালন্দা, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, সাহিত্য প্রকাশ, অবসর প্রকাশনা সংস্থা, সৃজনী, আগামী প্রকাশনী, সময় প্রকাশনসহ বাংলাদেশের ৬৮ টি শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে।