বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলা। ছুটিরদিন ছাড়া প্রতিদিন মেলা শুরু হচ্ছে বেলা ৩টা থেকে এবং শেষ হচ্ছে যথারীতি রাত ৯টায়। তবে বেলা ৩টা থেকেই জমে উঠছে না মেলা। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই জমজমাট হয়ে উঠে মেলা প্রাঙ্গণ।
দর্শনার্থী আর লেখক প্রকাশকদের আনাগোনায় প্রাণ ফিরে পায় মেলা। সাধারণত দিনের বেলা সবারই কিছু না কিছু কর্মব্যস্ততা থাকে। তাই সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে অবসর সময়ে মেলায় আসেন লেখক প্রকাশক ও পাঠকরা। লেখক-প্রকাশক ও পাঠকদের সম্মিলিত পদচারণায় সন্ধ্যায় জমজমাট হয়ে উঠে বইমেলা।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, মেলা ঘিরে জমে ওঠে আড্ডা খোশগল্প। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। লেখক পাঠকদের মধ্যেও জমে উঠে আড্ডা খোশগল্প। মেলা ঘুরে দেখা যায় বরাবরের মতো অন্যপ্রকাশ, তাম্রলিপি, ঐতিহ্য, মাওলা ব্রাদার্স, আগামী প্রকাশনী এরকম পরিচিত প্রকাশনীগুলোর স্টলগুলোতে সন্ধ্যায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
নতুন বইয়ের সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করে তোলেন পাঠক। কিনে নেন পছন্দের বই। আর এভাবেই কেটে যায় বেলা। প্রকাশকরাও বলছেন সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে বাড়ছে পাঠকের সংখ্যা। বিকিকিনিও এ সময় একটু ভালো। এভাবে চলতে থাকলে মেলা জমতে বেশি সময় লাগবে না।
অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ বলেন, ছুটির দিন ছাড়া দুপুরে তেমন পাঠক থাকে না। কিছু দর্শনার্থী আসলেও তেমন বিক্রি হয় না। তবে বিকেল থেকে পাঠকরা দলবেঁধে আসতে থাকে এবং পাঠকদের মাঝে সংখ্যাগরিষ্ঠই যেহেতু তরুণ সে কারণেও সন্ধ্যার আগে মেলা ততটা জমে উঠে না। কারণ তরুণদের প্রায় সবাই দিনের বেলা কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকেন।
বিক্রয়কর্মী ইসরাফিল বলেন, অনেকে জব করেন যারা বিকেল পাঁচটার পর অবসর পান। তাই তারা চাইলেও বেলা দুই কিংবা তিনটায় মেলায় আসতে পারেন না।
অনুপম প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক শাহিন বলেন, সন্ধ্যার সময়টাই হচ্ছে মেলার জন্য বেটার টাইম। কারণ মোটামুটি সবাই এ সময় একটু অবসর টাইম পায়। তাই সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে মানুষ বইয়ের ঘ্রাণ নিতে এ সময়টাতেই মেলায় এসে হাজির হয়।
বুধবারের অনুষ্ঠানসূচি
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের লিটল ম্যাগাজিন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শহীদ ইকবাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন হাফিজ রশিদ খান, অনিকেত শামীম এবং সরকার আশরাফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাজ্জাদ আরেফিন।
প্রাবন্ধিক বলেন, লিটল ম্যাগাজিন একটা চির নতুন প্ল্যাটফর্ম। সময়ের সেবা না করে সময়কে সৃষ্টি করার চেষ্টা। এ সবই লিটল ম্যাগাজিনের মূল বৈশিষ্ট্য। লিটল ম্যাগাজিনের দিগ্বলয় চলিষ্ণু ও ক্রমবর্ধমান। এর ধারণা-বৈশিষ্ট্য কিংবা পন্থা ও পরিণাম অনতিক্রান্ত নয়, ক্রমবিকশিত ও পরিবর্তিত। আর তা নিশ্চয়ই এ দেশের মৃত্তিকা ও সংস্কৃতিকে অনুরুদ্ধ করেই পরিচালিত ও বিকিরিত। পরিচর্যায় পথটিও সে লক্ষ্যেই নির্ধারিত।
আলোচকরা বলেন, প্রচলিত ও গতানুগতিক সাহিত্যচর্চার বাইরে নতুন চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করে যে পত্রিকা, সেটাই লিটল ম্যাগাজিন। নতুন ও তরুণ লেখকরাই লিটল ম্যাগাজিনের ধারক। প্রাতিষ্ঠানিকতার বাইরে থেকে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার একটি মাধ্যম লিটল ম্যাগাজিন। আধুনিক ও প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার স্ফূরণ ঘটে এই পত্রিকায়। প্রচলিত ধারণাকে অস্বীকার করে নতুন কিছু বিনির্মাণ করতে চায় বলে লিটল ম্যাগাজিন সবসময়ই স্পর্ধিত এক চর্চার নাম।
সভাপতির বক্তব্যে সাজ্জাদ আরেফিন বলেন, সাহিত্য আন্দোলনকে বেগবান করতে প্রথাবিরোধী তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে লিটল ম্যাগাজিনের গৌরবকে সমুজ্জ্বল রাখতে হবে। লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের গতিময়তা ফিরিয়ে আনার জন্য তরুণদের উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে হবে।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন দিলারা হাফিজ, হাকিম আরিফ, আঁখি সিদ্দিকা এবং জয় শাহরিয়ার। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন মোহাম্মদ সাদিক, কামরুল হাসান, সাজ্জাদ আরেফিন, টিমুনী খান রীনো, কৌমুদী নার্গিস। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আফতাব আহমেদ মাহাবুব, পলি পারভীন, কাজী মদীনা। এছাড়া ছিল সুলতানা আক্তারের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘স্কেচ একাডেমি অব ফাইন আর্টস’ এবং দীপ্তি রাজবংশীর পরিচালনায় ‘বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদ’-এর পরিবেশনা।
সংগীত পরিবেশন করেন লীনা তাপসী খান, ফাতেমা-তুজ-জোহরা, খায়রুল আনাম শাকিল, সুমন মজুমদার, মাহবুবা রহমান, সম্পা দাস, ডা. তাপস বোস, শহীদ কবীর পলাশ, আফরিদা জাহিন জয়ীতা।
বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানমালা
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকেন্দ্রীকরণ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ফরিদ আহমেদ দুলাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মাহমুদ কামাল, হেনরী স্বপন, নজিবুল ইসলাম এবং সাজ্জাদ আহসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অনীক মাহমুদ।
বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলা। ছুটিরদিন ছাড়া প্রতিদিন মেলা শুরু হচ্ছে বেলা ৩টা থেকে এবং শেষ হচ্ছে যথারীতি রাত ৯টায়। তবে বেলা ৩টা থেকেই জমে উঠছে না মেলা। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই জমজমাট হয়ে উঠে মেলা প্রাঙ্গণ।
দর্শনার্থী আর লেখক প্রকাশকদের আনাগোনায় প্রাণ ফিরে পায় মেলা। সাধারণত দিনের বেলা সবারই কিছু না কিছু কর্মব্যস্ততা থাকে। তাই সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে অবসর সময়ে মেলায় আসেন লেখক প্রকাশক ও পাঠকরা। লেখক-প্রকাশক ও পাঠকদের সম্মিলিত পদচারণায় সন্ধ্যায় জমজমাট হয়ে উঠে বইমেলা।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, মেলা ঘিরে জমে ওঠে আড্ডা খোশগল্প। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। লেখক পাঠকদের মধ্যেও জমে উঠে আড্ডা খোশগল্প। মেলা ঘুরে দেখা যায় বরাবরের মতো অন্যপ্রকাশ, তাম্রলিপি, ঐতিহ্য, মাওলা ব্রাদার্স, আগামী প্রকাশনী এরকম পরিচিত প্রকাশনীগুলোর স্টলগুলোতে সন্ধ্যায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
নতুন বইয়ের সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করে তোলেন পাঠক। কিনে নেন পছন্দের বই। আর এভাবেই কেটে যায় বেলা। প্রকাশকরাও বলছেন সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে বাড়ছে পাঠকের সংখ্যা। বিকিকিনিও এ সময় একটু ভালো। এভাবে চলতে থাকলে মেলা জমতে বেশি সময় লাগবে না।
অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ বলেন, ছুটির দিন ছাড়া দুপুরে তেমন পাঠক থাকে না। কিছু দর্শনার্থী আসলেও তেমন বিক্রি হয় না। তবে বিকেল থেকে পাঠকরা দলবেঁধে আসতে থাকে এবং পাঠকদের মাঝে সংখ্যাগরিষ্ঠই যেহেতু তরুণ সে কারণেও সন্ধ্যার আগে মেলা ততটা জমে উঠে না। কারণ তরুণদের প্রায় সবাই দিনের বেলা কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকেন।
বিক্রয়কর্মী ইসরাফিল বলেন, অনেকে জব করেন যারা বিকেল পাঁচটার পর অবসর পান। তাই তারা চাইলেও বেলা দুই কিংবা তিনটায় মেলায় আসতে পারেন না।
অনুপম প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক শাহিন বলেন, সন্ধ্যার সময়টাই হচ্ছে মেলার জন্য বেটার টাইম। কারণ মোটামুটি সবাই এ সময় একটু অবসর টাইম পায়। তাই সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে মানুষ বইয়ের ঘ্রাণ নিতে এ সময়টাতেই মেলায় এসে হাজির হয়।
বুধবারের অনুষ্ঠানসূচি
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের লিটল ম্যাগাজিন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শহীদ ইকবাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন হাফিজ রশিদ খান, অনিকেত শামীম এবং সরকার আশরাফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাজ্জাদ আরেফিন।
প্রাবন্ধিক বলেন, লিটল ম্যাগাজিন একটা চির নতুন প্ল্যাটফর্ম। সময়ের সেবা না করে সময়কে সৃষ্টি করার চেষ্টা। এ সবই লিটল ম্যাগাজিনের মূল বৈশিষ্ট্য। লিটল ম্যাগাজিনের দিগ্বলয় চলিষ্ণু ও ক্রমবর্ধমান। এর ধারণা-বৈশিষ্ট্য কিংবা পন্থা ও পরিণাম অনতিক্রান্ত নয়, ক্রমবিকশিত ও পরিবর্তিত। আর তা নিশ্চয়ই এ দেশের মৃত্তিকা ও সংস্কৃতিকে অনুরুদ্ধ করেই পরিচালিত ও বিকিরিত। পরিচর্যায় পথটিও সে লক্ষ্যেই নির্ধারিত।
আলোচকরা বলেন, প্রচলিত ও গতানুগতিক সাহিত্যচর্চার বাইরে নতুন চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করে যে পত্রিকা, সেটাই লিটল ম্যাগাজিন। নতুন ও তরুণ লেখকরাই লিটল ম্যাগাজিনের ধারক। প্রাতিষ্ঠানিকতার বাইরে থেকে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার একটি মাধ্যম লিটল ম্যাগাজিন। আধুনিক ও প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার স্ফূরণ ঘটে এই পত্রিকায়। প্রচলিত ধারণাকে অস্বীকার করে নতুন কিছু বিনির্মাণ করতে চায় বলে লিটল ম্যাগাজিন সবসময়ই স্পর্ধিত এক চর্চার নাম।
সভাপতির বক্তব্যে সাজ্জাদ আরেফিন বলেন, সাহিত্য আন্দোলনকে বেগবান করতে প্রথাবিরোধী তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে লিটল ম্যাগাজিনের গৌরবকে সমুজ্জ্বল রাখতে হবে। লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের গতিময়তা ফিরিয়ে আনার জন্য তরুণদের উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে হবে।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন দিলারা হাফিজ, হাকিম আরিফ, আঁখি সিদ্দিকা এবং জয় শাহরিয়ার। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন মোহাম্মদ সাদিক, কামরুল হাসান, সাজ্জাদ আরেফিন, টিমুনী খান রীনো, কৌমুদী নার্গিস। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আফতাব আহমেদ মাহাবুব, পলি পারভীন, কাজী মদীনা। এছাড়া ছিল সুলতানা আক্তারের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘স্কেচ একাডেমি অব ফাইন আর্টস’ এবং দীপ্তি রাজবংশীর পরিচালনায় ‘বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদ’-এর পরিবেশনা।
সংগীত পরিবেশন করেন লীনা তাপসী খান, ফাতেমা-তুজ-জোহরা, খায়রুল আনাম শাকিল, সুমন মজুমদার, মাহবুবা রহমান, সম্পা দাস, ডা. তাপস বোস, শহীদ কবীর পলাশ, আফরিদা জাহিন জয়ীতা।
বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানমালা
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকেন্দ্রীকরণ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ফরিদ আহমেদ দুলাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মাহমুদ কামাল, হেনরী স্বপন, নজিবুল ইসলাম এবং সাজ্জাদ আহসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অনীক মাহমুদ।