অমর একুশে বইমেলা-২০২৩
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারীর পর ব্যাপক আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। নির্দিষ্ট তারিখ থেকে পুরোদমে চললেও এবং গত বছরের চেয়ে বেশি বই প্রকাশিত হলেও এবার মেলায় গত বছরের তুলনায় কম বই বিক্রি হয়েছে। টাকার মূল্যে যার পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
প্রকাশনা মালিকরা বলছেন, কাগজসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে পাঠকরা বই ক্রয় কমিয়ে দিয়েছেন। ইচ্ছে থাকলেও তারা বই কিনতে পারেনি। যদিও বিষয়টি মানতে নারাজ বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, বইয়ের বেচাকেনা কোনভাবেই কম হয়নি। প্রকাশনা মালিকরা প্রকৃত তথ্য গোপন করেছে। প্রকৃতপক্ষে বিক্রির পরিমাণ আরও বেশি।
বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্রের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৩০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে গত বছর ৩ হাজার ৪১৬টি নতুন বই বের হয়েছিল। অনেক প্রকাশক তাদের নতুন সব বইয়ের তথ্য না দেয়ায় মেলায় প্রকৃতপক্ষে কত নতুন বই এসেছে এই তথ্য পাওয়া যায়নি। নিবন্ধনকৃত মোট মোড়ক উন্মোচিত বইয়ের সংখ্যা ৭২২টি। এর বাইরেও অনেকে স্টল বা মেলার অন্য স্থানে অনেক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। এর সঠিক তথ্য জানা যায়নি। এদিকে, ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি মেলার মোট ৩১ দিনে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। যেখানে চলতি বছরে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৭ দিনে বাংলা একাডেমি ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছে। ২০২২ অমর একুশে বই মেলায় ৫২ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। এবার ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সম্ভাব্য বিক্রি যুক্ত করলে এবার প্রায় ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে।
এ বিষয়ে ইত্যাদি প্রকাশনীর প্রকাশক জহিরুল আবেদীন জুয়েল বলেন, এবার বই কম বিক্রি হয়েছে। বিষয়টা সত্য। কেননা জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। মানুষ আগে নিজের মৌলিক চাহিদা পূরণ করবে। তারপর অন্যদিকে মনোযোগ দিবে। বইতো মৌলিক চাহিদার মধ্যে পড়ে না। যে পরিমাণ দর্শনার্থী মেলায় ছিল, সে পরিমাণ ক্রেতা ছিল না। বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহও আগের তুলনায় কমেছে।
শোভা প্রকাশনীর প্রকাশক মিজানুর রহমান বলেন, জাতিগতভাবে আমরা এখনও বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারিনি। অন্য অনেক মূল্যহীন কাজে আমরা অনেক টাকা খরচ করলেও বই ক্রয়ের ক্ষেত্রে আমরা সেটি করিনা। পাশাপাশি কাগজের দাম বৃদ্ধির একটা প্রভাবতো অবশ্যই আছে।
সার্বিক বিষয়ে মেলার সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের দিক থেকে বিষয়টি পরিস্কার করেছি। যারা মেলা নিয়ে ভবিষ্যতে রিসার্চ করতে চায়, আমরা চেয়েছি তাদের সঠিক তথ্যটা দেয়ার জন্য। কিন্তু আমরা স্টল মালিকদের কাছ থেকে সঠিক তথ্য পাইনি। বড় বড় প্যাভিলিয়নগুলো যারা এক থেকে দশের মধ্যে আছে তাদের প্রায় তিন-চারজন হিসাবই দেয়নাই। কম বিক্রির বিষয়টা ছোট দোকানগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও, বড় দোকানগুলোর ক্ষেত্রে একেবারেই প্রযোজ্য নয়।
অমর একুশে বইমেলা-২০২৩
বুধবার, ০১ মার্চ ২০২৩
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারীর পর ব্যাপক আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। নির্দিষ্ট তারিখ থেকে পুরোদমে চললেও এবং গত বছরের চেয়ে বেশি বই প্রকাশিত হলেও এবার মেলায় গত বছরের তুলনায় কম বই বিক্রি হয়েছে। টাকার মূল্যে যার পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
প্রকাশনা মালিকরা বলছেন, কাগজসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে পাঠকরা বই ক্রয় কমিয়ে দিয়েছেন। ইচ্ছে থাকলেও তারা বই কিনতে পারেনি। যদিও বিষয়টি মানতে নারাজ বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, বইয়ের বেচাকেনা কোনভাবেই কম হয়নি। প্রকাশনা মালিকরা প্রকৃত তথ্য গোপন করেছে। প্রকৃতপক্ষে বিক্রির পরিমাণ আরও বেশি।
বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্রের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৩০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে গত বছর ৩ হাজার ৪১৬টি নতুন বই বের হয়েছিল। অনেক প্রকাশক তাদের নতুন সব বইয়ের তথ্য না দেয়ায় মেলায় প্রকৃতপক্ষে কত নতুন বই এসেছে এই তথ্য পাওয়া যায়নি। নিবন্ধনকৃত মোট মোড়ক উন্মোচিত বইয়ের সংখ্যা ৭২২টি। এর বাইরেও অনেকে স্টল বা মেলার অন্য স্থানে অনেক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। এর সঠিক তথ্য জানা যায়নি। এদিকে, ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি মেলার মোট ৩১ দিনে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। যেখানে চলতি বছরে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৭ দিনে বাংলা একাডেমি ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছে। ২০২২ অমর একুশে বই মেলায় ৫২ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। এবার ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সম্ভাব্য বিক্রি যুক্ত করলে এবার প্রায় ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে।
এ বিষয়ে ইত্যাদি প্রকাশনীর প্রকাশক জহিরুল আবেদীন জুয়েল বলেন, এবার বই কম বিক্রি হয়েছে। বিষয়টা সত্য। কেননা জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। মানুষ আগে নিজের মৌলিক চাহিদা পূরণ করবে। তারপর অন্যদিকে মনোযোগ দিবে। বইতো মৌলিক চাহিদার মধ্যে পড়ে না। যে পরিমাণ দর্শনার্থী মেলায় ছিল, সে পরিমাণ ক্রেতা ছিল না। বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহও আগের তুলনায় কমেছে।
শোভা প্রকাশনীর প্রকাশক মিজানুর রহমান বলেন, জাতিগতভাবে আমরা এখনও বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারিনি। অন্য অনেক মূল্যহীন কাজে আমরা অনেক টাকা খরচ করলেও বই ক্রয়ের ক্ষেত্রে আমরা সেটি করিনা। পাশাপাশি কাগজের দাম বৃদ্ধির একটা প্রভাবতো অবশ্যই আছে।
সার্বিক বিষয়ে মেলার সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের দিক থেকে বিষয়টি পরিস্কার করেছি। যারা মেলা নিয়ে ভবিষ্যতে রিসার্চ করতে চায়, আমরা চেয়েছি তাদের সঠিক তথ্যটা দেয়ার জন্য। কিন্তু আমরা স্টল মালিকদের কাছ থেকে সঠিক তথ্য পাইনি। বড় বড় প্যাভিলিয়নগুলো যারা এক থেকে দশের মধ্যে আছে তাদের প্রায় তিন-চারজন হিসাবই দেয়নাই। কম বিক্রির বিষয়টা ছোট দোকানগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও, বড় দোকানগুলোর ক্ষেত্রে একেবারেই প্রযোজ্য নয়।