উপাচার্য-শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অবশেষে খোলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার থেকে অফিস খোলা হলেও ক্লাস শুরু হবে ২৩ জুন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, “রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হবে। যেহেতু শিক্ষার্থীরা অনেকেই বাড়ি চলে গেছেন তাই ঈদ ও গ্রীষ্মের ছুটি শেষে আগামী ২৩ জুন থেকে শ্রেণি কার্যক্রম চালু হবে।”
শিক্ষক সমিতির আন্দোলন এবং উপাচার্যের সঙ্গে দ্বন্দ্বের মধ্যেই গত ১ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় সিন্ডিকেটের এই সভা শুরু হয়। সিন্ডিকেট সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের দপ্তরের পাশের একটি কক্ষে ওই সভা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিন্ডিকেটের সভাপতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন। ১৬ জন সিন্ডিকেট সদস্যের মধ্যে ১১ জন সভায় উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ওই সভা চলে।
সভায় বলা হয়, ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি। ২১ ও ২২ জুন শুক্র-শনিবার। এ অবস্থায় ২৩ জুন থেকে ক্লাস শুরু করতে হবে। অফিস খোলা হবে ৯ জুন থেকে।
সভায় শিক্ষকদের সাত দফা দাবি নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা হয়। দাবিগুলোর বেশির ভাগই পূরণ হওয়ার পথে বলে সিন্ডিকেটকে জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবির বেশির ভাগই পূরণ করা হয়েছে। কিছু দাবি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। সেসব দাবি-দাওয়া নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ড. মাহমুদুল হাছান বলেন, “চলমান আন্দোলনের দাবি-দাওয়া কতটুকু মেনে নেওয়া হয়েছে তা সিন্ডিকেটের লিখিত প্রতিবেদন পেলে জানতে পারব। তারপর আমরা কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।”
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের বাংলোতে শিক্ষক সমিতির নেতা, উপাচার্য ও উপাচার্যের পক্ষের শিক্ষকরা প্রাথমিক আলোচনায় বসেন। সেখানে বিবদমান পক্ষগুলোর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এদিকে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের ‘থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার’ হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
১৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে বিভিন্ন দাবি নিয়ে উপাচার্যের বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা ও কর্মকর্তা সমিতির এক নেতা শিক্ষকদের হেনস্তা করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতি তিন দফা দাবি দেয়। পরবর্তী সময়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক সমিতি।
এরপর ঈদুল ফিতরের বন্ধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে তিন দিন ক্লাস হওয়ার পর আবারও আন্দোলন শুরু হয়।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে ২৮ এপ্রিল দুপুরে উপাচার্য, তাঁর অনুসারী কিছু শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতারা ধাক্কাধাক্কি, কিলঘুষি ও হামলায় জড়িয়ে পড়েন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যসহ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ ২০ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শিক্ষক সমিতির ছয়জনের নামে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন।
এমন পরিস্থিতিতে ৩০ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে শিক্ষকদের দাবি দাওয়া ও ২৮ এপ্রিলের ঘটনা নিয়ে দুটি তদন্ত কমিটি হয়। এরপর থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয় খোলেনি।
বৃহস্পতিবার, ০৬ জুন ২০২৪
উপাচার্য-শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অবশেষে খোলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার থেকে অফিস খোলা হলেও ক্লাস শুরু হবে ২৩ জুন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, “রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হবে। যেহেতু শিক্ষার্থীরা অনেকেই বাড়ি চলে গেছেন তাই ঈদ ও গ্রীষ্মের ছুটি শেষে আগামী ২৩ জুন থেকে শ্রেণি কার্যক্রম চালু হবে।”
শিক্ষক সমিতির আন্দোলন এবং উপাচার্যের সঙ্গে দ্বন্দ্বের মধ্যেই গত ১ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় সিন্ডিকেটের এই সভা শুরু হয়। সিন্ডিকেট সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের দপ্তরের পাশের একটি কক্ষে ওই সভা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিন্ডিকেটের সভাপতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন। ১৬ জন সিন্ডিকেট সদস্যের মধ্যে ১১ জন সভায় উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ওই সভা চলে।
সভায় বলা হয়, ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি। ২১ ও ২২ জুন শুক্র-শনিবার। এ অবস্থায় ২৩ জুন থেকে ক্লাস শুরু করতে হবে। অফিস খোলা হবে ৯ জুন থেকে।
সভায় শিক্ষকদের সাত দফা দাবি নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা হয়। দাবিগুলোর বেশির ভাগই পূরণ হওয়ার পথে বলে সিন্ডিকেটকে জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবির বেশির ভাগই পূরণ করা হয়েছে। কিছু দাবি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। সেসব দাবি-দাওয়া নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ড. মাহমুদুল হাছান বলেন, “চলমান আন্দোলনের দাবি-দাওয়া কতটুকু মেনে নেওয়া হয়েছে তা সিন্ডিকেটের লিখিত প্রতিবেদন পেলে জানতে পারব। তারপর আমরা কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।”
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের বাংলোতে শিক্ষক সমিতির নেতা, উপাচার্য ও উপাচার্যের পক্ষের শিক্ষকরা প্রাথমিক আলোচনায় বসেন। সেখানে বিবদমান পক্ষগুলোর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এদিকে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের ‘থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার’ হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
১৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে বিভিন্ন দাবি নিয়ে উপাচার্যের বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা ও কর্মকর্তা সমিতির এক নেতা শিক্ষকদের হেনস্তা করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতি তিন দফা দাবি দেয়। পরবর্তী সময়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক সমিতি।
এরপর ঈদুল ফিতরের বন্ধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে তিন দিন ক্লাস হওয়ার পর আবারও আন্দোলন শুরু হয়।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে ২৮ এপ্রিল দুপুরে উপাচার্য, তাঁর অনুসারী কিছু শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতারা ধাক্কাধাক্কি, কিলঘুষি ও হামলায় জড়িয়ে পড়েন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যসহ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ ২০ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শিক্ষক সমিতির ছয়জনের নামে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন।
এমন পরিস্থিতিতে ৩০ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে শিক্ষকদের দাবি দাওয়া ও ২৮ এপ্রিলের ঘটনা নিয়ে দুটি তদন্ত কমিটি হয়। এরপর থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয় খোলেনি।