ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ফের সড়ক অবরোধ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুর ২টার দিকে বিক্ষোভ সমাপ্ত করে ২৪ ঘণ্টার নতুন আল্টিমেটাম দিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবরোধ তুলে নেন তারা। এ সময় প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ থাকা যান চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা গত সোমবারও ঢাকার নীলক্ষেত ও সায়েন্সল্যাব মোড়ে সড়ক অবরোধ করে তাদের তিন দফা দাবির পক্ষে বিক্ষোভ করেছিল। সেই সময় তারা কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের দাবির বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় বুধবার পুনরায় সড়ক অবরোধে নামেন তারা।
আন্দোলনের পুনরাবৃত্তি ও সড়ক অবরোধ
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে এসে অবস্থান নেন। তারা বিভিন্ন স্লোগানে অধিভুক্তি বাতিল এবং আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবিতে তাদের প্রতিবাদ জানান। সড়ক অবরোধের কারণে সায়েন্সল্যাব মোড় ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়, যা মিরপুর রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তির মুখে ফেলে।
সাত কলেজের এক শিক্ষার্থী বিক্ষোভের সময় বলেন, “আমরা অধিভুক্তির মাধ্যমে সাত কলেজকে যেভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে, তা মেনে নিতে পারছি না। আমাদের শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে না, পরীক্ষা এবং ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ার কারণে সেশনজটের সমস্যায় পড়ছি। আমাদের দাবি, এই সাত কলেজকে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে হবে।”
নতুন আল্টিমেটাম ঘোষণা
বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা তাদের বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার আগে কর্তৃপক্ষকে আরও ২৪ ঘণ্টার নতুন আল্টিমেটাম দেন। আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা গত সোমবার ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই আমরা নতুন করে আরও ২৪ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে, আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করব।”
তিন দফা দাবি
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি জানিয়েছেন, যা হলো:
১. অনতিবিলম্বে সাত কলেজের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করতে হবে।
২. এই কমিশন বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে ৩০ দিনের মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করবে।
৩. স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়ায় কোনো সেশনজট সৃষ্টি হতে পারবে না। যতদিন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন না হবে, ততদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজট এড়ানোর জন্য কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হবে।
সাত কলেজের অধিভুক্তি এবং পূর্বের পটভূমি
সাত কলেজের অধিভুক্তির বিষয়টি প্রথম শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে। মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজধানীর সাতটি কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত প্রকাশ করা। এই সাতটি কলেজ হলো: ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ।
অধিভুক্তির পর থেকে এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া, পরীক্ষা এবং শিক্ষার অন্যান্য কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, অধিভুক্তির পরেও শিক্ষার গুণগত মান উন্নত হয়নি। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সেশনজটের মুখোমুখি হচ্ছেন এবং সঠিক সময়ে তাদের শিক্ষা জীবন শেষ হচ্ছে না।
আন্দোলনের ফলাফল ও পরবর্তী কর্মসূচি
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দেওয়া নতুন ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম কতটা কার্যকর হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার ও কর্তৃপক্ষ কীভাবে তাদের দাবি মেনে নেবে এবং স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে কিনা, তা নিয়ে সকলের নজর এখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে।
বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ফের সড়ক অবরোধ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুর ২টার দিকে বিক্ষোভ সমাপ্ত করে ২৪ ঘণ্টার নতুন আল্টিমেটাম দিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবরোধ তুলে নেন তারা। এ সময় প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ থাকা যান চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা গত সোমবারও ঢাকার নীলক্ষেত ও সায়েন্সল্যাব মোড়ে সড়ক অবরোধ করে তাদের তিন দফা দাবির পক্ষে বিক্ষোভ করেছিল। সেই সময় তারা কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের দাবির বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় বুধবার পুনরায় সড়ক অবরোধে নামেন তারা।
আন্দোলনের পুনরাবৃত্তি ও সড়ক অবরোধ
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে এসে অবস্থান নেন। তারা বিভিন্ন স্লোগানে অধিভুক্তি বাতিল এবং আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবিতে তাদের প্রতিবাদ জানান। সড়ক অবরোধের কারণে সায়েন্সল্যাব মোড় ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়, যা মিরপুর রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তির মুখে ফেলে।
সাত কলেজের এক শিক্ষার্থী বিক্ষোভের সময় বলেন, “আমরা অধিভুক্তির মাধ্যমে সাত কলেজকে যেভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে, তা মেনে নিতে পারছি না। আমাদের শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে না, পরীক্ষা এবং ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ার কারণে সেশনজটের সমস্যায় পড়ছি। আমাদের দাবি, এই সাত কলেজকে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে হবে।”
নতুন আল্টিমেটাম ঘোষণা
বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা তাদের বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার আগে কর্তৃপক্ষকে আরও ২৪ ঘণ্টার নতুন আল্টিমেটাম দেন। আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা গত সোমবার ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই আমরা নতুন করে আরও ২৪ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে, আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করব।”
তিন দফা দাবি
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি জানিয়েছেন, যা হলো:
১. অনতিবিলম্বে সাত কলেজের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করতে হবে।
২. এই কমিশন বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে ৩০ দিনের মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করবে।
৩. স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়ায় কোনো সেশনজট সৃষ্টি হতে পারবে না। যতদিন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন না হবে, ততদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজট এড়ানোর জন্য কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হবে।
সাত কলেজের অধিভুক্তি এবং পূর্বের পটভূমি
সাত কলেজের অধিভুক্তির বিষয়টি প্রথম শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে। মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজধানীর সাতটি কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত প্রকাশ করা। এই সাতটি কলেজ হলো: ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ।
অধিভুক্তির পর থেকে এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া, পরীক্ষা এবং শিক্ষার অন্যান্য কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, অধিভুক্তির পরেও শিক্ষার গুণগত মান উন্নত হয়নি। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সেশনজটের মুখোমুখি হচ্ছেন এবং সঠিক সময়ে তাদের শিক্ষা জীবন শেষ হচ্ছে না।
আন্দোলনের ফলাফল ও পরবর্তী কর্মসূচি
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দেওয়া নতুন ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম কতটা কার্যকর হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার ও কর্তৃপক্ষ কীভাবে তাদের দাবি মেনে নেবে এবং স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে কিনা, তা নিয়ে সকলের নজর এখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে।