একাদশ শ্রেণীতে গত ৮ আগস্ট ক্লাস শুরু হয়েছে। সেই হিসেবে প্রায় সাড়ে তিনমাস চলে গেছে। এখনও বাজারজাতকরণ হয়নি একাদশ শ্রেণীর পাঁচটি আবশ্যিক বই। পাণ্ডুলিপি ‘পরিমার্জন’ এবং প্রকাশকদের তা দেরিতে সরবরাহের কারণে এখনও বইগুলো বাজারজাতকরণ হয়নি বলে একাধিক প্রকাশক সংবাদকে জানিয়েছেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সিন্ধান্ত অনুযায়ী এবার একাদশ শ্রেণীর আবশ্যিক বাংলা সাহিত্য পাঠ, বাংলা সহপাঠ, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বইয়ের বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের পাণ্ডুলিপি ‘প্রয়োজনীয়’ সংশোধন ও পরিমার্জন আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান শনিবার (১৬ নভেম্বর) সংবাদকে বলেন, ‘আমরা ১৫দিন আগেই প্রকাশকদের পাণ্ডুলিপি দিয়েছি। আশা করছি শিক্ষার্থী এই সপ্তাহে বই পাবে।’
পাঁচটি বইয়ের পাণ্ডুলিপিতে ‘কিছু চেঞ্জ’ আনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেজন্য একটু বিলম্ব হয়েছে।’
এবার সারাদেশে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। এরমধ্যে প্রায় ১৩ লাখ ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন করেছিল। আবেদনকারীদের মধ্যে ১৩ লাখের মতো শিক্ষার্থী কলেজ ও সমস্তরের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
এনসিটিবি থেকে জানা গেছে, একাদশ শ্রেণীর ওই পাঁচটি বইয়ে ‘জাতীয় ও রাজনৈতিক বিষয় এবং জাতীয় ব্যক্তিদের’ সর্ম্পকে কিছু বিষয় থাকে। সেজন্য এসব বইয়ের পাণ্ডুলিপি অনুমোদন দেয়; সেই অনুযায়ী প্রকাশরা বই ছাপেন এবং এনসিটিবি নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করেন। এই বই থেকে সরকারকে নূন্যতম ‘রয়্যালটি’ দিয়ে থাকেন উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিভাগভিত্তিক (মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা) বইগুলো পাণ্ডুলিপিতে এনসিটিবি হস্তক্ষেপ করে না। ক্লাস শুরুর আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা বিভাগভিত্তিক বইগুলো বাজারে কিনতে পায়।
শিক্ষার্থীরা কবে নাগাদ পাঁচটি বই বাজারে পেতে পারেন জানতে জানতে চাইলে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল শনিবার সংবাদকে বলেছেন, ‘আমরা গত সপ্তাহে পাঁচটি বইয়ের পান্ডুলিপি পেয়েছি। আগামীকাল (আজ) থেকে বইগুলো বাজারজাতকরণ হবে। সোমবার থেকেই শিক্ষার্থী বই কিনতে পারবে।’
এই সমিতির অপর একজন নেতা শনিবার সংবাদকে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট প্রকাশকরা ইতোমধ্যে পাঁচটি বই বাজারজাতকরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। প্রতিবছরই এসব বই বাজারজাতকরণের আগে ‘নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সহায়তা’ চাওয়া হয়। এনসিটিবি’রও সহযোগিতা প্রয়োজন। এসব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে দু’একদিন লাগতে পারে।
এনসিটিবি এবার যথাসময়েই আবশ্যিক পাঁচটি বিষয়ের প্রায় ৩১ লাখ বই ছাপার দরপত্র আহ্বান করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে অন্তর্বর্তী সরকার বইগুলোর পাণ্ডুলিপি ‘সংশোধন ও পরিমার্জনের’ উদ্যোগ নেয়।
যেসব পরিবর্তন আসছে :
এনসিটিবি জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীর বাংলা বইয়ের পাঠ্য সূচি থেকে বাদ পড়ছে শেখ মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, দিলওয়ার ও মহাদেব সাহা। ইংরেজি বইয়ের কতগুলো অধ্যায় পুরোপুরি অধ্যায় বাদ দেয়া হয়েছে এবং নম্বর বিভাজনেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বইয়ের পরিধিও বেড়েছে। গত বছর ইংরেজি বই ছিল ২৭ ফর্মার এবং এ বছর এই ৩৭ ফর্মার হচ্ছে। সেজন্য বইয়ের দামও কিছুটা বেড়েছে।
বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’, মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’, দিলওয়ারের ‘মানুষ সকল সত্য’ এবং মহাদেব সাহার ‘শান্তির গান’ বাদ পড়েছে।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৪ সালে একাদশ শ্রেণীর পাঠ্যবই পরিবর্তন করা হয়েছিল। ২০২৬ সালে এই স্তরের বই পরিবর্তনের সিন্ধান্ত থাকলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে তা সেই সিন্ধান্ত বাতিল হয়েছে।
রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
একাদশ শ্রেণীতে গত ৮ আগস্ট ক্লাস শুরু হয়েছে। সেই হিসেবে প্রায় সাড়ে তিনমাস চলে গেছে। এখনও বাজারজাতকরণ হয়নি একাদশ শ্রেণীর পাঁচটি আবশ্যিক বই। পাণ্ডুলিপি ‘পরিমার্জন’ এবং প্রকাশকদের তা দেরিতে সরবরাহের কারণে এখনও বইগুলো বাজারজাতকরণ হয়নি বলে একাধিক প্রকাশক সংবাদকে জানিয়েছেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সিন্ধান্ত অনুযায়ী এবার একাদশ শ্রেণীর আবশ্যিক বাংলা সাহিত্য পাঠ, বাংলা সহপাঠ, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বইয়ের বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের পাণ্ডুলিপি ‘প্রয়োজনীয়’ সংশোধন ও পরিমার্জন আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান শনিবার (১৬ নভেম্বর) সংবাদকে বলেন, ‘আমরা ১৫দিন আগেই প্রকাশকদের পাণ্ডুলিপি দিয়েছি। আশা করছি শিক্ষার্থী এই সপ্তাহে বই পাবে।’
পাঁচটি বইয়ের পাণ্ডুলিপিতে ‘কিছু চেঞ্জ’ আনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেজন্য একটু বিলম্ব হয়েছে।’
এবার সারাদেশে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। এরমধ্যে প্রায় ১৩ লাখ ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন করেছিল। আবেদনকারীদের মধ্যে ১৩ লাখের মতো শিক্ষার্থী কলেজ ও সমস্তরের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
এনসিটিবি থেকে জানা গেছে, একাদশ শ্রেণীর ওই পাঁচটি বইয়ে ‘জাতীয় ও রাজনৈতিক বিষয় এবং জাতীয় ব্যক্তিদের’ সর্ম্পকে কিছু বিষয় থাকে। সেজন্য এসব বইয়ের পাণ্ডুলিপি অনুমোদন দেয়; সেই অনুযায়ী প্রকাশরা বই ছাপেন এবং এনসিটিবি নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করেন। এই বই থেকে সরকারকে নূন্যতম ‘রয়্যালটি’ দিয়ে থাকেন উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিভাগভিত্তিক (মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা) বইগুলো পাণ্ডুলিপিতে এনসিটিবি হস্তক্ষেপ করে না। ক্লাস শুরুর আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা বিভাগভিত্তিক বইগুলো বাজারে কিনতে পায়।
শিক্ষার্থীরা কবে নাগাদ পাঁচটি বই বাজারে পেতে পারেন জানতে জানতে চাইলে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল শনিবার সংবাদকে বলেছেন, ‘আমরা গত সপ্তাহে পাঁচটি বইয়ের পান্ডুলিপি পেয়েছি। আগামীকাল (আজ) থেকে বইগুলো বাজারজাতকরণ হবে। সোমবার থেকেই শিক্ষার্থী বই কিনতে পারবে।’
এই সমিতির অপর একজন নেতা শনিবার সংবাদকে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট প্রকাশকরা ইতোমধ্যে পাঁচটি বই বাজারজাতকরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। প্রতিবছরই এসব বই বাজারজাতকরণের আগে ‘নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সহায়তা’ চাওয়া হয়। এনসিটিবি’রও সহযোগিতা প্রয়োজন। এসব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে দু’একদিন লাগতে পারে।
এনসিটিবি এবার যথাসময়েই আবশ্যিক পাঁচটি বিষয়ের প্রায় ৩১ লাখ বই ছাপার দরপত্র আহ্বান করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে অন্তর্বর্তী সরকার বইগুলোর পাণ্ডুলিপি ‘সংশোধন ও পরিমার্জনের’ উদ্যোগ নেয়।
যেসব পরিবর্তন আসছে :
এনসিটিবি জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীর বাংলা বইয়ের পাঠ্য সূচি থেকে বাদ পড়ছে শেখ মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, দিলওয়ার ও মহাদেব সাহা। ইংরেজি বইয়ের কতগুলো অধ্যায় পুরোপুরি অধ্যায় বাদ দেয়া হয়েছে এবং নম্বর বিভাজনেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বইয়ের পরিধিও বেড়েছে। গত বছর ইংরেজি বই ছিল ২৭ ফর্মার এবং এ বছর এই ৩৭ ফর্মার হচ্ছে। সেজন্য বইয়ের দামও কিছুটা বেড়েছে।
বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’, মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’, দিলওয়ারের ‘মানুষ সকল সত্য’ এবং মহাদেব সাহার ‘শান্তির গান’ বাদ পড়েছে।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৪ সালে একাদশ শ্রেণীর পাঠ্যবই পরিবর্তন করা হয়েছিল। ২০২৬ সালে এই স্তরের বই পরিবর্তনের সিন্ধান্ত থাকলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে তা সেই সিন্ধান্ত বাতিল হয়েছে।