ইন্সস্পেকশন এজেন্ট (তদারকি প্রতিনিধি) নিয়োগ না হওয়ায় মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৩১ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কাজ আটকে রয়েছে। এই স্তুরের বই ছাপার কাজ এখনও শুরু হয়নি। প্রাথমিক স্তরের প্রায় বই ছাপার কাজ শুরু করেছে। এই স্তরের ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ৪০ কোটি বই ছাপার প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এর মধ্যে মাদ্রাসার এবতেদায়ী এবং মাধ্যমিক স্তরের মোট দুই কোটি ২৪ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য প্রায় ৩১ কোটি ১৬ লাখ বই ছাপা হচ্ছে। আর প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ৯ কোটি ২০ লাখের মতো বই ছাপার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী এবং ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর বই ছাপা, বাঁধাই ও কাগজের মান পরীক্ষা ও তদারকির জন্য পৃথক ‘ইন্সস্পেকশন এজেন্ট’ নিয়োগ দিয়ে থাকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী ছাপাখানা মালিকরা বই ছাপছেন কী না এবং সেটি দেখভাল করা বা মান নিশ্চিত করার দায়িত্ব ইন্সস্পেকশন এজেন্টের।
উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে এনসিটিবি। এবার এনসিটিবি’র প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ ‘অস্বাভাবিক’ কম ব্যয়ে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক তদারকির কাজ নিয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান। এজেন্টের অবকাঠামো, মেশিনারিজ ও দক্ষ জনবল রয়েছে কী না সেটি নিয়েও ‘সন্দিহান’ এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এরপরও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎপরতায় ‘ইন্সস্পেকশন এজেন্ট’ নিয়োগ হয়েছে। এই এজেন্ট নিয়োগের পরই প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ শুরু হয়েছে।
এনসিটিবি থেকে জানা গেছে, এবার মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক ‘ইন্সস্পেকশনের’ দরপত্রে অংশ নিয়েছিল অন্তত ৬টি প্রতিষ্ঠান। প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানই ‘অস্বাভাবিক কম ব্যয়ে’ অর্থাৎ কেউ প্রাক্কলিত ব্যয়ের অর্ধেকের কাছাকাছি এবং কেউ কেউ আরও কম ব্যয়ে এই কাজ পেতে চাই। সেজন্য ছয় প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না এনসিটিবির কর্মকর্তারা।
এজন্য ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের চিন্তাভাবনা করছেন কোনো কোনো কর্মকর্তা। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় চায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান ‘বিএমটিএফ’কে দিয়ে কাজ করাতে। কিন্তু বিএমটিএফের আধুনিক মেশিনারিজ নেই। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা চীন থেকে আধুনিক মেশিন আমদানি করে কাজ করতে চাই বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এই বিষয়ে সিন্ধান্তহীনতায় ভুগছে এনসিটিবি ও শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এই পরিস্থিতিতে পুণরায় দরপত্র আহ্বান করতে হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। সেটি করতে গেলে আরও অন্তত একমাস সময়েরও প্রয়োজন। কিন্তু নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি আছে মাত্র ২৭দিন। ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগের সিন্ধান্ত ‘ঝুলে’ থাকায় পাঠ্যবই ছাপাও শুরু করতে পারছেন না ছাপাখানা মালিকরা।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান সোমবার (২ ডিসেম্বর) সংবাদকে বলেছেন, ‘আমরা ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগ দেয়া এবং একটি বিকল্প প্রস্তাব (শিক্ষা) মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। আশা করছি, খুব শিগগিরই মাধ্যমিকের বই ছাপার কাজ শুরু হয়ে যাবে।’
এজেন্ট নিয়োগ না দিয়ে কীভাবে ছাপার কাজ শুরু করবেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেসব প্রেস কাজ পেয়েছে, তাদের কাগজ আমরা নিজেরাই ল্যাবে পরীক্ষা করে ছাপার অনুমোদন দিয়ে দেব। খুব শিগগিরই তা হবে।’
জানা গেছে, এবার এমনিতেই শিক্ষাবর্ষের শেষ দিকে নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের বই ছাপার উদ্যোগ নেয়া, পান্ডুলিপির পরিমার্জন ও সংশোধন এবং সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনে রদবদলের কারণে পাঠ্যবই ছাপার নানা প্রক্রিয়া অনুমোদনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। নতুন করে টেন্ডার বা দরপত্র আহ্বান করতে হয়েছে। প্রাথমিকের মোট ৯৮টি লটের মধ্যে ২৮টি লটের পুণরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্রের শর্তেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এসব কারণে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে মাত্র ২৭ দিন বাকি থাকলেও মাধ্যমিকের একটি বইও ছাপা হয়নি। প্রাথমিকের বই ছাপার কাজও সবেমাত্র ছাপা শুরু হয়েছে। অথচ বিগত বছরগুলিতে এই সময়ে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বই স্কুল পর্যায়ে বিতরণ হয়ে যেত।
মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার কাজ দেখভালের দায়িত্বে আছেন এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান। তিনি সংবাদকে বলেছেন, ‘বই ছাপার কাজ থেমে নেই। আমরা ছাপাখানা মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেছি, ‘নোয়া’ (অনাপত্তিপত্র) দিয়েছি। এখন ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগ হয়ে গেলেই ছাপাও শুরু হয়ে যাবে।’
এনটিসিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৪১টি ছাপাখানা প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর বই ছাপার কাজ পেয়েছে। চতুর্থ থেকে অন্যান্য শ্রেণীর বই ছাপার দরপত্রের মূল্যায়ন চূড়ান্ত হয়েছে। কার্যাদেশ এখনও দেয়া হয়নি। নবম শ্রেণীর বই ছাপার দরপত্র আগামী ৫ ডিসেম্বর উন্মুক্ত হচ্ছে। আর সেনাবাহিনী দশম শ্রেণীর প্রায় এক কোটি কপি বই ছাপানোর কাজ করবে।
এ বিষয়ে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সহসভাপতি জুনায়েদ আল মাহফুজ সংবাদকে বলেছেন, ‘ছাপাখানা মালিকরা বই ছাপতে পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছেন। কিন্তু কার্যাদেশ পেতে বিলম্ব হচ্ছে। সব শ্রেণীর বই ছাপার কার্যাদেশ এখনও হয়নি। এরপরও আমরা ১ জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিকের সব বই দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
সরকারের প্রস্তুতির ঘাটতির কারণে এবার কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর বই ছাপার ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) হয়েছে; ছাপার কাজও চলছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বই ছাপার ওর্য়াক অর্ডার এখনও হয়নি। ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে প্রেস মালিকরা ছাপা শুরু করতে পারেন।’
মাধ্যমিকের বই ছাপার প্রস্তুতির বিষয়ে জুনায়েদ আল মাহফুজ বলেন, ‘ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর বই ছাপার নোয়া পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অষ্টম ও দশম শ্রেণীর দরপত্রের মূল্যায়ন চলমান রয়েছে। কিন্তু নবম শ্রেণীর বই ছাপার দরপত্র এখনও আহ্বান করা হয়নি।’
এরপরও বিগত বছরগুলোর বই উৎসবের (১ জানুয়ারি) ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নতুন বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বই ছাপার কাজ শেষ করতে চায় এনসিটিবি।
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
ইন্সস্পেকশন এজেন্ট (তদারকি প্রতিনিধি) নিয়োগ না হওয়ায় মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৩১ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কাজ আটকে রয়েছে। এই স্তুরের বই ছাপার কাজ এখনও শুরু হয়নি। প্রাথমিক স্তরের প্রায় বই ছাপার কাজ শুরু করেছে। এই স্তরের ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ৪০ কোটি বই ছাপার প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এর মধ্যে মাদ্রাসার এবতেদায়ী এবং মাধ্যমিক স্তরের মোট দুই কোটি ২৪ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য প্রায় ৩১ কোটি ১৬ লাখ বই ছাপা হচ্ছে। আর প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ৯ কোটি ২০ লাখের মতো বই ছাপার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী এবং ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর বই ছাপা, বাঁধাই ও কাগজের মান পরীক্ষা ও তদারকির জন্য পৃথক ‘ইন্সস্পেকশন এজেন্ট’ নিয়োগ দিয়ে থাকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী ছাপাখানা মালিকরা বই ছাপছেন কী না এবং সেটি দেখভাল করা বা মান নিশ্চিত করার দায়িত্ব ইন্সস্পেকশন এজেন্টের।
উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে এনসিটিবি। এবার এনসিটিবি’র প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ ‘অস্বাভাবিক’ কম ব্যয়ে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক তদারকির কাজ নিয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান। এজেন্টের অবকাঠামো, মেশিনারিজ ও দক্ষ জনবল রয়েছে কী না সেটি নিয়েও ‘সন্দিহান’ এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এরপরও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎপরতায় ‘ইন্সস্পেকশন এজেন্ট’ নিয়োগ হয়েছে। এই এজেন্ট নিয়োগের পরই প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ শুরু হয়েছে।
এনসিটিবি থেকে জানা গেছে, এবার মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক ‘ইন্সস্পেকশনের’ দরপত্রে অংশ নিয়েছিল অন্তত ৬টি প্রতিষ্ঠান। প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানই ‘অস্বাভাবিক কম ব্যয়ে’ অর্থাৎ কেউ প্রাক্কলিত ব্যয়ের অর্ধেকের কাছাকাছি এবং কেউ কেউ আরও কম ব্যয়ে এই কাজ পেতে চাই। সেজন্য ছয় প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না এনসিটিবির কর্মকর্তারা।
এজন্য ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের চিন্তাভাবনা করছেন কোনো কোনো কর্মকর্তা। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় চায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান ‘বিএমটিএফ’কে দিয়ে কাজ করাতে। কিন্তু বিএমটিএফের আধুনিক মেশিনারিজ নেই। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা চীন থেকে আধুনিক মেশিন আমদানি করে কাজ করতে চাই বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এই বিষয়ে সিন্ধান্তহীনতায় ভুগছে এনসিটিবি ও শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এই পরিস্থিতিতে পুণরায় দরপত্র আহ্বান করতে হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। সেটি করতে গেলে আরও অন্তত একমাস সময়েরও প্রয়োজন। কিন্তু নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি আছে মাত্র ২৭দিন। ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগের সিন্ধান্ত ‘ঝুলে’ থাকায় পাঠ্যবই ছাপাও শুরু করতে পারছেন না ছাপাখানা মালিকরা।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান সোমবার (২ ডিসেম্বর) সংবাদকে বলেছেন, ‘আমরা ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগ দেয়া এবং একটি বিকল্প প্রস্তাব (শিক্ষা) মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। আশা করছি, খুব শিগগিরই মাধ্যমিকের বই ছাপার কাজ শুরু হয়ে যাবে।’
এজেন্ট নিয়োগ না দিয়ে কীভাবে ছাপার কাজ শুরু করবেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেসব প্রেস কাজ পেয়েছে, তাদের কাগজ আমরা নিজেরাই ল্যাবে পরীক্ষা করে ছাপার অনুমোদন দিয়ে দেব। খুব শিগগিরই তা হবে।’
জানা গেছে, এবার এমনিতেই শিক্ষাবর্ষের শেষ দিকে নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের বই ছাপার উদ্যোগ নেয়া, পান্ডুলিপির পরিমার্জন ও সংশোধন এবং সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনে রদবদলের কারণে পাঠ্যবই ছাপার নানা প্রক্রিয়া অনুমোদনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। নতুন করে টেন্ডার বা দরপত্র আহ্বান করতে হয়েছে। প্রাথমিকের মোট ৯৮টি লটের মধ্যে ২৮টি লটের পুণরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্রের শর্তেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এসব কারণে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে মাত্র ২৭ দিন বাকি থাকলেও মাধ্যমিকের একটি বইও ছাপা হয়নি। প্রাথমিকের বই ছাপার কাজও সবেমাত্র ছাপা শুরু হয়েছে। অথচ বিগত বছরগুলিতে এই সময়ে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বই স্কুল পর্যায়ে বিতরণ হয়ে যেত।
মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার কাজ দেখভালের দায়িত্বে আছেন এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান। তিনি সংবাদকে বলেছেন, ‘বই ছাপার কাজ থেমে নেই। আমরা ছাপাখানা মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেছি, ‘নোয়া’ (অনাপত্তিপত্র) দিয়েছি। এখন ইন্সস্পেকশন এজেন্ট নিয়োগ হয়ে গেলেই ছাপাও শুরু হয়ে যাবে।’
এনটিসিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৪১টি ছাপাখানা প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর বই ছাপার কাজ পেয়েছে। চতুর্থ থেকে অন্যান্য শ্রেণীর বই ছাপার দরপত্রের মূল্যায়ন চূড়ান্ত হয়েছে। কার্যাদেশ এখনও দেয়া হয়নি। নবম শ্রেণীর বই ছাপার দরপত্র আগামী ৫ ডিসেম্বর উন্মুক্ত হচ্ছে। আর সেনাবাহিনী দশম শ্রেণীর প্রায় এক কোটি কপি বই ছাপানোর কাজ করবে।
এ বিষয়ে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সহসভাপতি জুনায়েদ আল মাহফুজ সংবাদকে বলেছেন, ‘ছাপাখানা মালিকরা বই ছাপতে পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছেন। কিন্তু কার্যাদেশ পেতে বিলম্ব হচ্ছে। সব শ্রেণীর বই ছাপার কার্যাদেশ এখনও হয়নি। এরপরও আমরা ১ জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিকের সব বই দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
সরকারের প্রস্তুতির ঘাটতির কারণে এবার কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর বই ছাপার ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) হয়েছে; ছাপার কাজও চলছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বই ছাপার ওর্য়াক অর্ডার এখনও হয়নি। ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে প্রেস মালিকরা ছাপা শুরু করতে পারেন।’
মাধ্যমিকের বই ছাপার প্রস্তুতির বিষয়ে জুনায়েদ আল মাহফুজ বলেন, ‘ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর বই ছাপার নোয়া পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অষ্টম ও দশম শ্রেণীর দরপত্রের মূল্যায়ন চলমান রয়েছে। কিন্তু নবম শ্রেণীর বই ছাপার দরপত্র এখনও আহ্বান করা হয়নি।’
এরপরও বিগত বছরগুলোর বই উৎসবের (১ জানুয়ারি) ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নতুন বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বই ছাপার কাজ শেষ করতে চায় এনসিটিবি।