বর্তমানে জীবিত থাকা মেয়ে ও নারীদের মধ্যে প্রতি আটজনে একজনই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার। ইউনিসেফের হিসেব মতে বিশ্বে ৩৭ কোটির বেশি মেয়ে ও নারী ১৮ বছর হওয়ার আগেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। নন-কন্টাক্ট বা সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ ছাড়া যৌন সহিংসতার হিসাবে করলে এই সংখ্যা ৬৫ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ওঠে এসেছে পুরুষ ও ছেলে শিশুর যৌন নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর তথ্যও। যৌন নির্যাতন নিয়ে এই প্রথম একটি বৈশ্বিক সমীক্ষা করেছে ইউনিসেফ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
ইউনিসেফ বলছে, যৌন নির্যাতনে নারী ও মেয়ে শিশুরা যখন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তখন শৈশবে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে প্রতি ১১ জনের মধ্যে একজন পুরুষ ও ছেলে শিশু। বিশ্বে এই নির্যাতনের শিকার ২৪ থেকে ৩১ কোটি পুরুষ ও ছেলে শিশুর রয়েছে।
গবেষণাপত্রে ‘এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাত্রা অপ্রতিরোধ্য’ বলে উল্লেখ করেছে ইউনিসেফ। এতে আরও বলা হয়, ‘কলঙ্কের ভয়, সংখ্যা পরিমাপের চ্যালেঞ্জ ও ডেটা সংগ্রহে সীমিত বিনিয়োগের কারণে এর ভয়াবহতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করতে পারা কঠিন।’
ইউনিসেফ বলেছে, গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলগুলো আইনকে শক্তিশালী করা এবং শিশুদের যৌন সহিংসতা শনাক্ত করতে ও সেগুলো নথিভুক্ত করাসহ কঠোর বৈশ্বিক পদক্ষেপের জরুরি প্রয়োজনকে তুলে ধরছে।
যৌন সহিংসতা যদিও ভৌগলিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সীমানাকে অতিক্রম করে যায়, তবে সাব-সাহারান আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মেয়ে ও নারী এই নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে জানায় ইউনিসেফ। এই সংখ্যা ৭ কোটি ৯০ লাখ বা মোট সংখ্যার ২২ শতাংশ। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই সংখ্যা ৭ কোটি ৫০ লাখ বা ৮ শতাংশ।
ইউনিসেফের তথ্যে দেখা গেছে, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় আনুমানিক ৭ কোটি ৩০ লাখ বা ৯ শতাংশ নারী ও মেয়ে শিশু এই নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৬ কোটি ৮০ লাখ বা ১৪ শতাংশ, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ানে ৪ কোটি ৫০ লাখ বা ১৮ শতাংশ, এবং উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় ২ কোটি ৯০ লাখ বা ১৫ শতাংশ।
শতাংশের হিসেবে ওশেনিয়ায় যৌন নির্যাতনের শিকার মেয়ে ও নারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ৩৪ শতাংশ।
শিশুদের ওপর যৌন সহিংসতাকে ‘আমাদের নৈতিক বিবেকে একটি কলঙ্কের দাগ’ বলে অভিহিত করে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘এটি গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী ট্রমা দেয়। প্রায়ই এমন কারোর কাছেই শিশুরা এই নির্যাতনের শিকার হয়, যাকে তারা চেনে ও বিশ্বাস করে, যেখানে তাদের সবচেয়ে নিরাপদ বোধ করার কথা।’
ইউনিসেফ বলেছে, বয়ঃসন্ধিকালে অধিকাংশ যৌন সহিংসতার ঘটনা ঘটে থাকে, বিশেষ করে ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের সঙ্গে। যারা এই নির্যাতনের শিকার হয় তারা যৌন সংক্রামিত রোগ, ওষুধের অপব্যবহার ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে ও ভোগে।
ইউনিসেফ আরও জানায়, ‘শিশুরা যখন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে দেরি করে…বা নির্যাতনের বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন রাখে তখন এর প্রভাব আরও জটিল হয়।’
এই সমস্যাটি নিয়ে ক্রমাগত ডেটার ফাঁকফোকরের সমাধান করতে, বিশেষ করে ছেলেদের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণরূপে জানার জন্য ডেটা সংগ্রহে বর্ধিত বিনিয়োগের প্রয়োজন ছিল বলে জানায় ইউনিসেফ।
২০১০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের নারী ও শিশুদের ওপর জাতীয় প্রতিনিধিত্বমূলক সমীক্ষায় পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ইউনিসেফ জানায়, ছেলে শিশু ও পুরুষের আনুমানিক সংখ্যা একটি ব্যাপক পরিসরের ডেটা উৎস এবং কিছু পরোক্ষ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
বর্তমানে জীবিত থাকা মেয়ে ও নারীদের মধ্যে প্রতি আটজনে একজনই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার। ইউনিসেফের হিসেব মতে বিশ্বে ৩৭ কোটির বেশি মেয়ে ও নারী ১৮ বছর হওয়ার আগেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। নন-কন্টাক্ট বা সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ ছাড়া যৌন সহিংসতার হিসাবে করলে এই সংখ্যা ৬৫ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ওঠে এসেছে পুরুষ ও ছেলে শিশুর যৌন নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর তথ্যও। যৌন নির্যাতন নিয়ে এই প্রথম একটি বৈশ্বিক সমীক্ষা করেছে ইউনিসেফ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
ইউনিসেফ বলছে, যৌন নির্যাতনে নারী ও মেয়ে শিশুরা যখন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তখন শৈশবে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে প্রতি ১১ জনের মধ্যে একজন পুরুষ ও ছেলে শিশু। বিশ্বে এই নির্যাতনের শিকার ২৪ থেকে ৩১ কোটি পুরুষ ও ছেলে শিশুর রয়েছে।
গবেষণাপত্রে ‘এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাত্রা অপ্রতিরোধ্য’ বলে উল্লেখ করেছে ইউনিসেফ। এতে আরও বলা হয়, ‘কলঙ্কের ভয়, সংখ্যা পরিমাপের চ্যালেঞ্জ ও ডেটা সংগ্রহে সীমিত বিনিয়োগের কারণে এর ভয়াবহতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করতে পারা কঠিন।’
ইউনিসেফ বলেছে, গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলগুলো আইনকে শক্তিশালী করা এবং শিশুদের যৌন সহিংসতা শনাক্ত করতে ও সেগুলো নথিভুক্ত করাসহ কঠোর বৈশ্বিক পদক্ষেপের জরুরি প্রয়োজনকে তুলে ধরছে।
যৌন সহিংসতা যদিও ভৌগলিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সীমানাকে অতিক্রম করে যায়, তবে সাব-সাহারান আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মেয়ে ও নারী এই নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে জানায় ইউনিসেফ। এই সংখ্যা ৭ কোটি ৯০ লাখ বা মোট সংখ্যার ২২ শতাংশ। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই সংখ্যা ৭ কোটি ৫০ লাখ বা ৮ শতাংশ।
ইউনিসেফের তথ্যে দেখা গেছে, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় আনুমানিক ৭ কোটি ৩০ লাখ বা ৯ শতাংশ নারী ও মেয়ে শিশু এই নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৬ কোটি ৮০ লাখ বা ১৪ শতাংশ, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ানে ৪ কোটি ৫০ লাখ বা ১৮ শতাংশ, এবং উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় ২ কোটি ৯০ লাখ বা ১৫ শতাংশ।
শতাংশের হিসেবে ওশেনিয়ায় যৌন নির্যাতনের শিকার মেয়ে ও নারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ৩৪ শতাংশ।
শিশুদের ওপর যৌন সহিংসতাকে ‘আমাদের নৈতিক বিবেকে একটি কলঙ্কের দাগ’ বলে অভিহিত করে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘এটি গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী ট্রমা দেয়। প্রায়ই এমন কারোর কাছেই শিশুরা এই নির্যাতনের শিকার হয়, যাকে তারা চেনে ও বিশ্বাস করে, যেখানে তাদের সবচেয়ে নিরাপদ বোধ করার কথা।’
ইউনিসেফ বলেছে, বয়ঃসন্ধিকালে অধিকাংশ যৌন সহিংসতার ঘটনা ঘটে থাকে, বিশেষ করে ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের সঙ্গে। যারা এই নির্যাতনের শিকার হয় তারা যৌন সংক্রামিত রোগ, ওষুধের অপব্যবহার ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে ও ভোগে।
ইউনিসেফ আরও জানায়, ‘শিশুরা যখন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে দেরি করে…বা নির্যাতনের বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন রাখে তখন এর প্রভাব আরও জটিল হয়।’
এই সমস্যাটি নিয়ে ক্রমাগত ডেটার ফাঁকফোকরের সমাধান করতে, বিশেষ করে ছেলেদের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণরূপে জানার জন্য ডেটা সংগ্রহে বর্ধিত বিনিয়োগের প্রয়োজন ছিল বলে জানায় ইউনিসেফ।
২০১০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের নারী ও শিশুদের ওপর জাতীয় প্রতিনিধিত্বমূলক সমীক্ষায় পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ইউনিসেফ জানায়, ছেলে শিশু ও পুরুষের আনুমানিক সংখ্যা একটি ব্যাপক পরিসরের ডেটা উৎস এবং কিছু পরোক্ষ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছিল।